টুটুল অস্বস্তিকর এক পরিস্থিতিতে পড়েছে। স্ত্রী ত্রপা তাকে শাড়ির কুচি ঠিক করতে বলেছে। রান্না করা, থালাবাটি-বাসনপত্র ধোয়া, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা, বাচ্চার ডায়পার চেঞ্জ করা ইত্যাদি কাজে টুটুলের কর্মদক্ষতা ঈষার্ণিত পর্যায়ে। কিন্তু এই শাড়ির কুচি ঠিক করার ব্যাপারটি যেন কিছুতেই টুটুলের আয়ত্তে আসতে পাচ্ছে না। ত্রপা বললো, ‘তোমাকে একশোবার বলছি আমি ওপর থেকে যেভাবে কুচি ধরে আছি তুমি নিচের দিক থেকে টান টান করে কুচিগুলি সোজা করে ধরবে, কিছুতেই আমার কথা বুঝতে পাচ্ছ না।’

এদিকে বেচারা টুটুল মেঝেতে হাটুগেড়ে বসে যতবারই এ কাজটি করছে ততবারই ত্রপা সব কুচি ছেড়ে দিয়ে রেগে যেয়ে বলছে,’কিচ্ছু হয়নি’। টুটুল রবার্ট ব্রুস সাহেবের উদাহরণ অনুসরণ করে গভীর মনোযোগে আবার নতুন করে ত্রপার শাড়ির কুচি ঠিক করার মতো এক অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোনিবেশ করলো। এমন সময় তৃনা হাসতে হাসতে বললো, ‘বাবা তোমার আরো ট্রেনিং দরকার, আমি অনলাইনে তোমার জন্য শাড়ির কুচি ঠিক করার ট্রেনিংএর জন্য রেজেস্ট্রেশন করছি’।

অগত্যা ত্রপা নিজে নিজেই উপর হয়ে শাড়ির কুচি ঠিক করলো। কিন্তু এবার ত্রপা টুটুলকে আগের চেয়োও কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দিলো। কতগুলি গলার চেইন /লকেট একটার পর একটা গলায় ঝুলে এবং কানের দুল কানের কাছে ধরে টুটুলকে বলতে থাকলো, ‘এই ভালো করে দেখে ঠিক ঠাক ভাবে বলো’তো কোনটা এই শাড়ির সাথে ম্যাচিং হচ্ছে ? টুটুল প্রমাদ গুনলো। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে টুটুল দেখেছে ত্রপার এই ম্যাচিং পর্বের পরিণতি দ্রুত ভয়াবহ রূপ ধারণ করে । হয়তো কোনো সেট পছন্দ হয়েছে, আবার কিছুক্ষন পরেই বলবে পচা হয়েছে, তোমার বিচার বুদ্ধি নিম্ন স্তরের, আমাকে দেখতে সং এর মতো লাগছে। এক পর্যায়ে, ত্রপা আবার শাড়ি চেঞ্চ করে আরেকটি শাড়ি পরবে এবং আবারো টুটুলকে কুচি ঠিক করতে ডাকবে।

তবে আজ অবশ্য টুটুলের ভাগ্য সুপ্রসন্ন মনে হচ্ছে। টুটুলের সিলেক্ট করা কানের দুল ও গলার চেইন ত্রপার বেশ মনে ধরেছে। ত্রপা সাজসজ্জা পর্ব শেষ করে ড্রেসিং টেবিলের আয়না থেকে পেছন দিকে ঘুরে টুটুলের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বললো, ‘আমার দিকে ভালো করে তাকাও তো, ভালো করে দেখে বলো তোমার বউকে কেমন লাগছে ? ত্রপার এই দ্রুত মুডের পরিবর্তনে টুটুল খুশিতে আত্মহারা হয়ে ভয়ানক ঝুঁকি নিয়ে ত্রপাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরলো। অনেক অনেক দিন পরে সর্বদা কলহে লিপ্ত এই দম্পতির মধ্যে আজ ভালোবাসা যেন ভর করেছে। ত্রপা কপট রাগ দেখিয়ে বললো, ‘এই ছাড়ো, কি হচ্ছে এসব, তৃনার ঘরের দরজা খোলা।’

প্রকৃতি মাঝে মাঝে অদ্ভুত সব আয়োজন করে। দাম্পত্য জীবনে সংসারে হঠাৎ হঠাৎ করে এমন সব মুহূর্ত তৈরী করে যা হাজব্যান্ড ওয়াইফের মধ্যে দুরত্ব অনেক কমিয়ে ফেলে। সেই মুহূর্ত আনন্দের হতে পারে। আবার দুঃখেরও হতে পারে। যখন আনন্দের ব্যাপার ঘটে তখন সেই আনন্দ স্বামী- স্ত্রীর গন্ডিকে ছাড়িয়ে সমগ্রঃ পরিবারে যেন সুখের বান ডাকে। একই ভাবে দুঃখের ব্যাপারের ক্ষেত্রে সমগ্র পরিবার যেন দুঃখের সাগরে ডুবে থাকে। বেশ কিছু বছর আগে টুটুল ত্রপা’রা সবেমাত্র ঢাকায় সংসার পেতেছে। টুটুলের বি সি এস পরীক্ষায় ভাইবা পর্যন্ত যেয়ে অকৃতকার্য হওয়া নিয়ে ত্রপার সাথে টুটুলের বেশ মনোমালিন্য হলো। ত্রপা স্বপ্ন দেখেছিলো তার পন্ডিত জামাই ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব হবে। সেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ায় দুজনের মধ্যে প্রায়ই খটাখুটি লেগেই থাকে। এরই মধ্যে টুটুলের ইউনিভার্সিটির এক বড়ো ভাই তার কনস্ট্রাকশন ফার্মে টুটুলকে চাকরিতে ঢুকালো। চাকরিতে জয়েন করে টুটুলের যে কি আনন্দ! সেই আনন্দ ত্রপাকেও স্পর্শ করলো।

পরের মাসেই তৃনার প্রথম জন্মদিন। তৃনার প্রথম জন্মদিনে টুটুল এলাহী কান্ড করে বসলো। তাদের ফ্ল্যাটের ছাদে ছামিয়ানা টেঙ্গে ডেকোরেটর থেকে চেয়ার টেবিল ভাড়া করে আনলো। কুপার্স ব্যাকারী থেকে মস্তবড় এক কেকের অর্ডার দিলো। নিচে মেইন গেটের এক পাশে মাটিতে গর্ত করে চুলা বানিয়ে বাবুর্চি ডেকে এনে তেহেরী রান্নার আয়োজন চললো। বিকাল থেকে ত্রপা আর টুটুলের অফিসের কলিগরা জড়ো হতে লাগলো। এক মহা ধুমধামে তৃনার জন্মদিন পালন করা হলো। একই ভাবে টুটুলদের একটি বিষাদময় দিন রয়েছে। এপ্রিল মাসের একুশ তারিখ। চার মাসের প্রেগনেন্ট ত্রপা বাথরুমে পা পিছলে পড়ে গেল। ত্রপার এবরশন হয়ে গেল। টুটুল-ত্রপাদের প্রথম সন্তান এই পৃথিবীর আলোবাতাস দেখা থেকে বঞ্চিত থেকে গেল। অনেকদিন ত্রপা টুটুল নির্ঘুম রাত কাটালো।

হাউজ হাজব্যান্ড টুটুলের সংসারে অনেক অনেক দিন আনন্দের ব্যাপার ঘটেনি। আজকের বৈশাখের রৌদ্রোজ্জ্বল ঝকঝকে দুপুরে শাড়ির কুচি নিয়ে শুরুতে ত্রপার সাথে খুটখাট লাগলেও পরবর্তীতে সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় তা মিটে যেয়ে টুটুলের দিনটাকেই পাল্টে ফেললো। টুটুল-ত্রপাদের আকস্মিক ভালোবাসার রেশ এর স্থায়িত্ব আরো দীর্ঘায়িত হলো। ধানমন্ডির সাতাইশ নাম্বার রোডের এই কমিউনিটি সেন্টারে ত্রপার এক কাজিনের ছেলের বিয়ের জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে এসে টুটুল ত্রপাদের চমৎকার সময় কাটছে। ত্রপা তার বেকার স্বামীকে সবার সাথে পরিচয় করে দিলো। সম্প্রতি ইতালি থেকে দেশে বেড়াতে আসা ত্রপার এক কাজিন শিহাব সাহেব টুটুলের সাথে খোশ গল্পে মেতে উঠলেন। শিহাব সাহেব বললেন, ‘ভাই দেশে আপনারা যে কি করতে পড়ে আছেন, দুনিয়ার সৌন্দর্য দেখতে হলে দেশ ছেড়ে বের হতে হবে। আমি সেই ইন্টারমিডিয়েটের পরে রাশিয়া গিয়েছিলাম, তার পর ফ্রান্স, নরওয়ে হয়ে এখন ইতালিতে থিতু হয়েছি। রোমের সভ্যতা না দেখে মারা যাওয়া মানে এক বিরাট বোকামি করা। আপনাকে শুরু করতে হবে রোমের বিখ্যাত থিয়েটার থেকে এঁরা একে Colosseum বলে। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ কয়েকটি Amphitheater এর একটি । এখানের আশেপাশে প্রায় দুই হাজার বছর আগের স্ট্রাকচার দেখতে পাবেন। সার ধরে নামিদামি সব রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু পিজা খেলেন মনে করবেন বেহেস্তি খাবার খাচ্ছেন। এর পরে হেঁটেই Trevi Fountain এ যাবেন। যায়গায় যায়গায় পুরা হিস্ট্রি নানান কারুকাজ করে বিভিন্ন ভাস্কর্য দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকটা আমাদের দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরের মতো। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে, পৃথিবীর এই দুই প্রান্তের এই দুইটি স্থাপত্য একই সময়ে অর্থাৎ অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়েছে। টুরিস্টরা এই Trevi Fountain এ এসে কয়েন ছুড়ে দিয়ে উইশ করে থাকে । এই পর্যায়ে টুটুল হাই তুললো।

টুটুলরা বসেছে কোনার দিকের একটি টেবিলে। টুটুলদের চেয়ারে বসিয়ে ত্রপা তার আত্মীয়স্বজন্দের সাথে গল্প করছে, ছবি তুলছে, হাসাহাসি করছে। প্রতিটি টেবিলে এপেটাইজার হিসাবে চিকেন পাকোড়া, জুস্ রাখা হয়েছে। একেকটি টেবিলে গোটা দুয়েক ফ্যামিলি প্রায় সাত/আট জনের দল করে বসানো হয়েছে। টুটুলদের টেবিলে যে ফ্যামিলি বসেছে টুটুল কাউকেই চেনে না। তবুও টুটুল আগবাড়িয়ে ভদ্রলোক সালাম দিয়েছে। ভদ্রলোক ওলাইকুম সালাম বলে গভীর মনোযোগে মোবাইল ফোনে কি যেন দেখছেন।

সেই টেবিলের অন্য যারা বসেছিলেন সবাই সম্ভবতো টুটুলদের কথা ভেবে মাত্র দুইটি চিকেন পাকোড়া রেখে সব নিজ নিজ প্লেটে নিয়ে নিলেন। টুটুল ত্রপার কানে কানে বললো , হ্যাবি ক্ষিদে লেগেছে , কখন মেইন খাবার দিবে ঠিক নেই, তুই একটা আর আমি একটা পাকোড়া খেয়ে জুস খেয়ে নেই, ‘ এই বলে টুটুল একটি পাকোড়া নিজের প্লেটে আরেকটি তৃনার প্লেটে তুলে দিলো।

তৃনা ফিসফিস করে বাবার কানে বললো , ‘বাবা, আমার একদম ক্ষিদে নেই , তুমি দুটাই খেয়ে ফেলো’। তৃনা যে মিথ্যা কথা বলছে টুটুল নিশ্চিত। বাবার ক্ষুধার কথা ভেবে নিজের ক্ষুধাকে অগ্রাহ্য করে এতটুকু মেয়ে মিথ্যা কথা বলছে। বাবার জন্য মেয়ের এই মিথ্যা অভিনয়ে টুটুলের চোখে পানি এসে গেল।

দুপুর থেকে টুটুলের মধ্যে যে ফুরফুরে একটা ভাব ছিল তা এখন কমতে শুরু করেছে। টুটুলের কিছুটা অস্বস্তিও লাগছে। শশুর বাড়ির কোনো প্রোগ্রামে তাকে তেমন যে পাত্তা দেয়া হয় না এটি পুরাতন ইস্যু। শশুর বাড়ির বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠানে শালা-শালিরা সাধারণত দুলাভাইদের সঙ্গে দিয়ে থাকে, হাসি-তামাশা করে। টুটুলের মন্দ ভাগ্য। টুটুলের কোনো শালা শালী নেই। তার মধ্যে সে এখন বেকার। বেকার জামাইকে সঙ্গ দেয়ার জন্য টুটুলের আশেপাশে আজ এই বিয়ের অনুষ্ঠানে তেমন কাউলেই দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে ত্রপা পাশে নেই, বিয়ের রং ঢং নিয়ে ব্যাস্ত। এতক্ষন কি করছে সে ?  তার কথা না হয় বাদ থাকলো, কিন্তু মা হয়ে বাচ্চাদের কথা একেবারে বেমালুম ভুলে এতক্ষন থাকবে, ছোট্ট টুসির কাছে একবারও আসবে না এটা কি করে সম্ভব ?

হঠাৎ করে টুটুল খেয়াল কোলো স্টেজের কোনার দিকে ত্রপা কাজিন হাসিব ভাইয়ের সাথে বেশ হেসে হেসে কথা বলছে। হাসিব ভাই কি যেন বলছে আর ত্রপা হোহো করে হাসছে। টুটুলের বুক ছেত করে উঠলো। হাজবেন্ড সে যতই হাউজ হাজব্যান্ড হোক বা স্মার্ট হাজব্যান্ড হোক না কেন নিজ স্ত্রী যখন পর পুরুষের সাথে অট্টহাসিতে মেতে ওঠে, সব স্বামীদের বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে।

আমাদের গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র টুটুল ঠিক ট্রেডিশন্যাল সন্দেহবাতিক হাজব্যান্ড পর্যায়ে পড়ে না। বরং টুটুলের  চরিত্রের মধ্যে প্রবল বিনয়ীভাব এবং সরলতা তার বেকারত্বকে ম্লান করে দেয়। সুতরাং টুটুলকে একজন আদর্শ হাউজ হাজব্যান্ড ক্যাটাগরিতে রাখাকে আমি তেমন অন্যায় কিছু দেখছি না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে পারিপার্শিক বাস্তবতা এই সহজ সরল স্বামী স্ত্রীদেরকে বারবার অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়ে পরিবারেবারের মধ্যে অশান্তির বীজ রোপন করে। তারপর সেই বীজ অঙ্কুরিত হয়ে অনেক শাখা-প্রশাখা ছড়ায়ে সংসারকে বিষাদময়ঃ করে তোলে ।

কমিউনিটি সেন্টারের প্রকান্ড বড়ো হলরুমে স্টেজে রাখা হাতল ওয়ালা সুসজ্জিত দুটি চেয়ারে বর-কনেকে পাশাপাশি বসিয়ে রাখা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আসা অতিথিরা জোড়ায় জোড়ায় স্টেজে উঠে বর-কনেকে মিষ্টি, শরবত ইত্যাদি খাওয়াচ্ছে। হাসিহাসি মুখ করে বর-কনে সে সব খাবার খেয়ে যাচ্ছে। ক্যামেরাম্যান মহা ব্যাস্ততার সাথে সেসব দৃশ্যাবলী ক্যামেরাবন্দি করছেন। তৃনা বললো, ‘বাবা, আমরা স্টেজে বর-কনের কাছে যাবো না ? মেয়ের কথায় কি উত্তর দিবে টুটুল ভেবে না পেয়ে কায়দা করে কথা ঘুরিয়ে বললো, ‘মামনি আমার দেখতে দেখতেই বড়ো হয়ে যাচ্ছে, আমাদের মামুনিকে এবার বিয়ে দিতে হবে।’ তৃনার মুখ লজ্জায় রঙিন হয়ে উঠলো। বিয়ের অনুষ্ঠানের নজরকাড়া ঝলমলে আলোকসজ্জায় সেই মুখ যেন আরোও উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।

টুটুল দোটানায় পড়েছে’। তার ছোট বাথরুম পেয়েছে। স্ট্রোলারে ছোট্ট টুসিকে তৃনার কাছে রেখে বাথরুমে যাওয়া ঠিক হবে কি না, ঠিক বুঝতে পাচ্ছে না। ওদিকে ত্রপা মহা ব্যাস্ত। টুটুল তৃনাকে বললো, ‘ মামনি তুমি স্ট্রলার ধরে এইখানে বসে থাকো আমি বাথরুমে যাচ্ছি,’ এই বলে টুটুল বাথরুমে ঢুকলো।
বাথরুম থেকে ফিরে টুটুল দেখলো তৃনা এবং স্ট্রোলারে ঘুমন্ত টুসি কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। টুটুল ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গেল।

আগের পর্বগুলির লিংক:

পর্ব ১-পর্ব ১
পর্ব ২-পর্ব ২
পর্ব ৩-পর্ব ৩

(চলবে)

পূর্ববর্তী নিবন্ধUnited BAU Alumni in Canada Inc এর চারা বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৩
পরবর্তী নিবন্ধআবাকান এর চারা বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৩
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন