১৯৭১ সনের এই দিনে আমাদের দলের মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্হান ছিল কুমিল্লা জেলার দেবিদ্ধার উপজেলার পুর্ব পাশে। কুমিল্লার গোলাম ফারুক ভাই, আলী হোসেন চৌধুরী, এহসান,জুয়েল, খসরু, সেলিম, হুমায়ুন ভাই, ওয়ালী হোসেন, জাকির ভাই সহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা আমাদের সাথে ছিল।
আমাদের দেবিদ্ধার অন্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ইন্জিনিয়ার মোস্তাফিজ, রেহান, সামাদ সিকদার, হালিম মুন্সি, মমতাজ মামু, মনির এবং আওলাদসহ অনেক সহযোদ্ধা তখন একসাথে মুভ করি। (তালিকা লম্বা হয়ে যাবে বিধায় সকলের নাম দেয়া হলো না। আর অনেকের নাম মনেও নেই)। ফুলমিয়া ভাই ও রনজিৎদা আমাদের গাইড হিসেবে সহায়তা করেন। খাবার-দাবারেরও ব্যবস্হা করেন।
নভেম্বর মাসের শেষের দিক থেকেই দেবিদ্ধার, বুড়িচং, ময়নামতি এবং চান্দিনা এলাকায় আমরা বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেই। অপারেশনের প্ল্যান করি, রিভিউ করি এবং পাকিস্তানী হানাদার নিদনের জন্য শিকারী বিড়ালের মতো ওৎ পেতে থাকি।
জাফরগন্জ বাজারের পশ্চিম-উত্তরে মেইনরোডের ওপর ফাঁদ পাতি (বুবিট্র্যাপের আশ্রয় নেই)। তাতে কখনও কাজ হয়, কখনও ওরা ( হানাদারেরা) টের পেয়ে বিকল্প পথের আশ্রয় নেয়। শেষের দিকটায় এভাবেই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যস্ততম দিন-রাত কাটাতে থাকি, চরম উৎকন্ঠার সাথে।
সারা দেশের খোঁজ- খবর রাখা আমাদের পক্ষে মোটেই সম্ভব ছিলো না। আমাদের কমান্ডার এবং হাইকমান্ড কিছু কিছু জানতেন কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক কিছুই জানা বা বলা হতো না। আমাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়া হতো গোপনীয়তার বিষয়টি। সিক্রেসি হচ্ছে গেরিলার বড় অস্ত্র।
( ক্রমশঃ)