ঠোঁটে ঊষার সংগীত,
জোড়া নাইটিংগেল ওপার থেকে এপারে পাড়ি দেয় নির্দিধায়–
সীমান্তে দাঁড়িয়ে আমি
আমার সামনে কাঁটাতারের ওপরে ঝুলছে ফেলানীর দেহ!
আমার স্মৃতির করোটি বেয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় নেমে আসছে তার রক্ত
দাঁড়িয়ে আমি সীমান্তে, দিন গুনি–
আমার সামনে নির্মিত কাঁটাতারের বেড়া
আমার বোধের আকাশে সূর্যকে নিয়ত ঢেকে দেয় পৃথিবীর সব উঁচু সীমান্ত প্রাচীর
আমি দেখি শেষ নিশার চাঁদ তার নিজস্ব গতিপথে,
এপার থেকে ওপারে হেলে পড়েছে আপন নিয়মে
আর-
একটি একক পৃথিবীর স্বপ্নে, এক পৃথিবী ভালোবাসার প্রত্যাশায়,
বুকের অর্গল খুলে আমি দাঁড়িয়ে থাকি পৃথিবীর সব সীমান্তে
তোমরা তাকে ইউটোপিয়া (Utopia) বলো কেন?

আমার স্নায়ুকে অবশ করে দিয়ে অনর্গল ধারায় নেমে আসে
অগুনিত ফেলানীর রক্ত
আমি দেখি সীমান্ত শিশু চিরতরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তার মার বুক থেকে
সভ্যতার লাশ হয়ে পড়ে থাকে ভূমধ্যসাগরের তলায়!
আমি দাঁড়িয়ে থাকি সীমান্তে, দিন গুনি-
বুকের অর্গল খুলে প্রতীক্ষায় থাকি—
এক পৃথিবী ভালোবাসার প্রতীক্ষা,
এ প্রতীক্ষা আমৃত্যু, এ প্রতীক্ষা অনন্ত—

যে সভ্যতায় ফেলানী হতে কোন অপরাধ করতে হয় না
মায়ের ছিন্ন বুক শিশু হতে কোন অপরাধ করতে হয় না
ভূমধ্যসাগরের তলদেশের শিশু হতে কোন অপরাধ করতে হয় না…
তোমরা তাকে সভ্যতা বলো কেন!?

হীন স্বার্থের বিভাজন ই যদি হয় মূখ্য
তবে তোমরা এখনো আমাকে মানুষ বলো কেন!?

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন