প্রায় আসন্ন কিংবা—
সদ্য সমাপ্ত শিরোচ্ছেদ গুলো এখন আর কোন বিকার আনে না মনে!

পৃথিবীর সম্ভাষণ গুলো বোধের সীমানা পেরিয়ে বহুদূর—
আশীর্বাদের সিঁড়ি বেয়ে যখন নেমে আসে প্রবঞ্চনার ধারাবাহিক ইতিহাস
নিজের হাতেই যখন চলে নিজের আদ্যপান্ত সৎকার
আমি তখন কেবল শির আর মুন্ডের তফাত খুঁজে বেড়াই
মাথা গুনে গুনে আমি শুধু মানুষ আর জনগনের মাঝে—
পার্থক্য নিরুপণে হয়রান হই!

কতোটুকু মমতা বিছিয়ে দেয় ফুটপাতের শিলা প্রস্তর—
ঘর হারা শিশুর দিকভ্রান্ত চোখে, কতোটা তার শক্তি
আমি এখনো তা বুঝতে উঠতে পারিনা–!
এখনো ওদের অমলিন হাসির দৌরাত্ম্যে—
ভীষণ কোনঠাসা হয়ে পড়ে আমার অনেক যত্নে ধারণ করা
পোশাকী সভ্যতার ভব চিহ্ন!
কেতাবী রিহার্সালের হাসির মতো, তা কোন দুর্গন্ধ ছড়ায় না
পাঠের দুর্বোধ্যতা নেই—
নেই কোন তিন তলা মুখোশের পরিপাট্য!
আমি বিভ্রান্ত হয়ে যাই—!
আমি কি জানিয়ে দিবো ওদের নিঃস্বতার কথা?
আমি কি ওদের বলে দিবো যে—
রক্তপাতহীন রক্ত শোষণের উন্নত পদ্ধতিতে
তোমাদের শিরোচ্ছেদ হয়ে গেছে জন্মেরও অনেক অনেক আগে,
বাটোয়ারা হয়ে গেছে তোমাদের অধিকার!
নাকি এ-ও এক ভুল ধারণা আমার–?
হয়তো ওরা নয়—
আমরাই বরং নিঃস্ব হয়ে গেছি–!
আমরাই নিঃস্ব হয়ে গেছি—
যারা এমন হাসি হাসতে ভুলে গিয়েছি বহুদিন—
বহুদিন—
যখন ভোগ আর লোভের কারাগারে জিম্মি রেখে এসেছি,
জন্মের উত্তরাধিকারে পাওয়া প্রকৃতির ঐশ্বর্য্য!
আর ডুগডুগির খোলের ভেতরে শূণ্যতার মতো
কেবল এক দৈহিক খোলস নিয়ে ছুটে চলেছি দিগ্বিদিক—
অলীক সুখের ডঙ্কা বাজিয়ে!

সময়ই উন্মুক্ত করে দেয় সব অনিবার্য সত্য
জীবনের আমলনামা তো এখন ভুলের পাতায় ই খুব বেশী ভারী
সুখের ভগ্নাংশ পেতে আমিও যে বেদনার বৃত্ত কুড়িয়ে—
‘হৃদয়ের চিতা সাজাই নিয়ত!’

খুন হওয়া ভালোবাসা এখন বেওয়ারিশ লাশ নিয়তির বাজারে
যাকে বুকে নিয়ে কালের কুঞ্চিত রেখায় হতে চেয়েছি অক্ষয়ের শিরোনাম,
যার হৃদকমলে সব সত্যের অনাবৃত সমর্পণে সাজাতে চেয়েছি হৃদয় নৈবেদ্য,
মোমের নিভন্ত আলোয়—
সে ও যে এখন এক অবলুপ্ত প্রতিমার প্রতিকৃতি মাত্র!
নিশাচর বাতাস তো তবু শোনে না সে কথা!
তার দস্যুতার আলোড়নে কেঁপে ওঠা ঝরা পাতার দীর্ঘশ্বাসে
জড়িয়ে থাকে যে মায়াবী নিঃসঙ্গতা—
দ্বিধাহীন সে ঘোষণা করে যায় পৃথিবী সমান আমার এই একাকীত্বকে!
জীবনের নিষ্ঠুরতম স্বরলিপিতে জাগিয়ে দিয়ে যায়—
বুকের গহীনে এখনো পুষে রাখা তার নিভৃত আঁচলের ঘ্রাণ!

‘পুরনো নক্ষত্রের দিকে তখন আর আমি তাকাতে পারি না!
নত মুন্ডে শুধু প্রহর গুনি—
যদি কোনদিন ফিরে আসে সেই ইহলৌকিক ভোর!’

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন