ঘোরের মধ্যে মানুষ নানান কথা বলে শুনি। আজ অব্দি আমার কেনো হলো না বুঝলাম না কিছু কিছু বিষয় নেশার মত থাকে যত খারাপ লাগুক বা কষ্ট হোক মনে হয় ওর একটু স্পর্শ ছাড়ে না কাঁঠালের আঠার মত লেগেই থাকবে।

… বকর আলির বকর বকর ছাড়া জীবন অতিষ্ঠ । ঝাপসা চোখেও কি জেনো মনে এলো..

ঠিক ছেলেদের সিগারেটের স্পর্শের মত বলে ছেড়ে দেবে কিন্তু পারে না, এই ছেড়ে দিবে, ছেড়ে দিবে করতে করতেই জীবনটা শেষ করে দেয়। দেবদাস এর ডায়লগের মত * বাবুজি বলে পারুকে ছেড়ে দাও * আর পারু বলে নেশা ছেড়ে দাও … না হ পারু, না চন্দ্রবতী নাহ নেশা … সবটাই জীবনের অলেখ্য দর্পন।

নাহ মেকআপ বক্স নিয়ে আজীবনের কোন মাথা ধরা ছিলো না। যেটা সচরাচর মেয়েদের বেলায় হয়। তাই বলে কেউ আবার বলতে পারবে না যে সাজগোজের বালাই নাই। ঐ করতে গেলেই স্বয়ং মা কালি এসে সাক্ষাৎ করে। বলে দেখ তোরে আয়নায় কিন্তু …….

ওহ্হো কি করছি বলোতো, ঘুমের ঘোরে কিন্তু আমি নাই। তবে কিছুর একটা ঘোরে আছি এটা নিশ্চিত। এই মূহুর্তে ভীষণ ইচ্ছে করছে এই কাঁপুনি কাঁপুনি শরীরে রুপসা ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে দূর পাল্লার গাড়ি গুলোর ফসফস করে চলে যাওয়া দেখতে। গায়ে কালো কাশ্মীরী শাল জড়িয়ে নৌকায় বসে রাতের মাছ ধরা দেখতে। কি অবাক করা সব আজগুবি নক্ষত্র। হু স্বপ্ন গুলো মাঝে মধ্যে নক্ষত্র হয়ে যায়। ধরাছোঁয়ার বাহিরে হলেই নক্ষত্র।

ওহহো কি জেনো … এ মূহুর্তে বাথটাব পানিতে টইটম্বুর। প্রচন্ড কাঁপুনি আর গরম পানি। কিছু অনুভূতি দূর করতে গেলে কিছু অনুভূতির আগমনটা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। নাকটা অব্দি যদি ডুবিয়ে দেয়া যায় তবে কি আমিও শ্রীদেবি ……

একটা কথা হঠাৎ করে মনে পড়লো… কিছু মানুষের নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোটা স্বভাব জানি।

একটা সময় , দিদি, দিনকাল ভালো না মেয়ে এমন ঢ্যাংঢ্যাং করে বেড়ায় মোটেও ঠিক না, খালাম্মা / মাসীমা মেয়ে কি কিছু করতে পারে? ওর যে কি হবে? রান্না তো মনে হয় পারবে না … শ্বাশুড়ি আর ননদদের কথা শুনতেই হবে আপনার মেয়ের ।

দিদি , মেয়ের তো বয়স কমছে না, ফ্রক আর এসকার্ট পড়লেই কি আর পঁচিশ পনেরো হবে বলুন তো?

এরপর আর ভালো কোন ছেলেও আসবে না তাছাড়া বয়স বেড়ে গেলে ছেলেপুলেও হবে না। আর একটা মেয়ের বাচ্চা না হলে তো তার কোন মূল্য নাই। কোন ছেলেই আর তাকে চাইবে না বরং ঐ ফূর্তি পর্যন্ত … এমন কত রঙ্গ দেখলাম … শুনেন দিদি ,

ছেলেরা ওমন আশ্বাস দেয় তাই বলে আপনার মেয়ে কেনো বিশ্বাস করলো, ছেলেরা বিয়ে করার আশ্বাস দেয় কিন্তু শেষ অব্দি পরিবারের কথা বলে পিছিয়ে যায় নতুন কোন কুঁড়ির জন্য পরিবারের পছন্দে করে। ঐ ভালোবাসার কথা বলে কদিন ঘুড়িয়েছে মজা নিয়েছে । এখন এ মেয়ের কি হবে গো দিদি ?

ছেলে বিদেশে থাকে ও বাবা আপনার মেয়ে তো আবার বাংলা মিডিয়াম তো পারবে জামাই এর সাথে তাল মিলায় চলতে? তো ইংরেজি কথা বলতে পারবে? আপনার মেয়ের তো আবার একটা ইংলিশও বের হয় না । বলতে গেলে হাত পা কাঁপে, ঘেমে যায়। আপনার ভাগ্য টা কি দিদি আপনার এই মেয়ের জন্য এমন হিরার টুকরা পি এই ডি বা সার্টিফিকেটেড ছেলে … তা পয়তাল্লিশ বা পঞ্চাশ কোন ব্যাপার পুরুষ মানুষের। আপনার মেয়ের ও তো বয়স আছে। বলছেন সাতাশ দেখে তো মনে হয় ত্রিশ বা পয়ত্রিশ। এর বেশি হলে ছেলেপুলে হবে না তখন বাড়ি পাঠিয়ে দিবে। তাছাড়া পঞ্চাশ তো কি হয়েছে এ তো একেবারে সেট। পুরো ইংরেজি বলা নাতি নাতনি নিয়ে বাড়ি ফিরবে। আপনার মেয়ে তো আবার একটু সেঁকেলে তাও ছেলে পছন্দ করছে। আপনারই তো কপাল…

মাসীমা মেয়ের বয়স জানতে চায়, তো কত বলবো … কি বললেন ৩৭ সর্বনাশ দেখো তো ৪৭ মনে হয়। এ বাবা যতই সাজগোজ করুক বয়সটা কিভাবে লুকোবে বলুন…

মেয়ের এতো সমস্যা রাজি হয়ে যান, মেয়ে তো একটু না হয় মানিয়ে চলুক,

সংসার সুখের হয় রমনির গুনে। মুখ বুজে একটু এডজাস্ট করে নিবে। পুরুষদের একটু আাধটু ওলোট পালোট স্বভাব থাকতেই পারে আপনার মেয়ো কেনো মানিয়ে চলতে পারে না? আরে ছেলেরা প্রেম করবেই তুই এডজাস্ট করে নিবি। পরকীয়া করছে না হয়, খুন তো আর করে নি। তাই না দিদি ?

তুই না মেয়ে, আরে একটা পুরুষকে ধরে রাখতে পারিস না । তোর তো দেখছি এই গুনটুকুও নেই।

শোন, একটু মানিয়ে চললে লাইফ সেট। তিন চার বাচ্চার বাপ তো কি হয়েছে। বৌ তো গেছে মরে। তোরে ভালোবাসলো কি বাসলো না সেটাও দেখার দরকার কি? তুই ঐ বাচ্চা গুলোর মা হয়ে যাবি । আরে তোর লাইফ সেট।

মেয়েকে রাজি করান, ওনার জায়গা জমি আছে। বৌ ছেড়ে চলে গেছে ও এই বিয়ে তে রাজি হলে বাড়ি গাড়ি শখ আল্লাদ কোনটার অভাব হবে না। তা ছাড়া আপনার মেয়েই বা কোন ঐশ্বরিয়া রায়? হাজারো সমস্যা রাজি হয়ে যান … আপনার মেয়ের তো আবার …..

ছেলে তো রাজি, কিন্তু সমস্যা ছেলের পরিবার তো আপনার মেয়েকে ঠিক। আসলে সমস্যা তো আপনার মেয়ের এমন যে হবে জানাই ছিলো।

এ মা মেয়ে তো হিজাব পড়ে না আপনাদের কে দেখি কত ভদ্র আর আপনার মেয়ে মাথা আলগা করে ঘুরে বেড়ায়। সর্বনাশ একটা ভালো ছেলে পেয়েছিলাম খালাম্মা কিন্তু আপনার মেয়ের এই অবস্থা দেখে ছেলের পরিবার বললো মেয়ে ধার্মিক না। এতো ভালো ছেলে আপনার মেয়ের এমন চালচলনের জন্য হাতছাড়া হয়ে গেলো।

সেলাই করে জামা পড়তে হয় না কি জামার কাপড় শরীরে দিয়ে সেলাই করা হয় ভীষণ চিন্তিত। তার মাঝে মাথায় হেজাব দেওয়া হয় না বলেও অনেকের ঘুম হারাম। আচ্ছা বাবা, ভাই, মা, বোন এরপর প্রেমিক অথবা স্বামীর যদি কোন ধরনের আপত্তি না থাকে তবে পাশের বাসার আন্টি, দিদি, মাসি, পিসি, খালাম্মা, চাচীআম্মা বা আপা আপনার এতো গায়ে কেনো জ্বালা …

পাশের বাসার মানুষগুলো কাঁকড়া কেনো হয় ?

ভাবতে পারছি না, কাঁপুনি টা জোরালো, মন্দ নয়। কিন্তু ঐ যে নেশার মত তুমি তাই তোমাকেই কয়েক লাইন আবিস্কার করলাম।

গরম পানি, ছোট্ট পুকুর, নিজেকে শ্রীদেবীর মত পজিশনে রাখা আর মাইকেল জ্যাকসন ..

You have to show them that you’re really not scared
You’re playin’ with your life, this ain’t no truth or dare
They’ll kick you, then they beat you,
Then they’ll tell you it’s fair
So beat it, but you want to be bad
Just beat it, beat it, beat it, beat it
No one wants to be defeated
Showin’ how funky and strong is your fight
It doesn’t matter who’s wrong or right
Just beat it, beat it, beat it, beat it

_______________ অন্তরীক্ষ কথন

অপেক্ষাকৃত সুদর্শন বা সুদর্শনি হওয়ার থেকেও তাৎক্ষণিকতার বুদ্ধি বিচার বিচক্ষণতা অতি আকর্ষনীয়।

আজ উঠি আমায় যেতে হবে।

অবসর সময়ে অফিস রুমে বসে সবাই যখন নানান খোশমেজাজে আপ্লূত তখন জয়ীতা উসখুস করছে কখন সে এই জমজমাট আয়োজন থেকে বেরিয়ে একটু বাইরের হওয়া নিবে।

মিস. জয়ীতা সরকার আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।

কথা বলার জন্য তাকানোটা জরুরি তাই চোখে চোখ পড়লো। আবিদ রহমান যিনি গত সপ্তাহ নাগাদ যুক্ত হয়েছেন অতি অপরিচিত এই কলেজের সঙ্গে।

আপনি কিছু আগে বললেন একটা কথা, তার জের ধরেই বলছি, সুদর্শন বা সুদর্শনা হবার প্রয়োজন নিয়ে বলেছেন ? আসলেই কি তাই …

অপরিচিত একজন মানুষ। হাসি মুখেই উওর টি দিতে হবে। কিন্তু আমার তো সবার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না কাজের সুবাদে একপ্রকার বাধ্য। তাই এক কথায় ঠোঁট প্রসস্থ করে বললাম মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারার উপর বিবেচ্য।

ভদ্রলোক কি বুজলেন জানি না, হয়ত সঠিক নয়ত বেঠিক। অনেকে বলে বুঝে নাই আবার অনেকে বুঝে যায়। সত্যি কি না বুঝে থাকে? নাকি অন্যের মনের মনোভাব বোঝা এবং সেটার সাথে নিজেরটাকে মিলানোর সঠিকতার পথ খুঁজে।

মনে হচ্ছে লোকটা আমার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে? আমি কি পিছনে ফিরে দেখবো ? নাহ্ তাকাবো না কারণ তাকালে আরোও স্যার আপাদের চোখাচোখি হতেই হবে আর ৯৮/৯৯ সালের সিনেমার মত দৃশ্য হবে। আপন মনে কথা বলতে সাতটা সিঁড়ির শেষ সিঁড়ি তে।

চমকে উঠলাম কোথায় জেনো অতি পরিচিত একটা লাইন দূর থেকে আসছে ভেসে …

আজও একজনকে পুরিয়ে ছাঁই করা হবে তারপর তারপর সেই ছাঁই ভাসিয়ে ….

নিতাইদা বলে প্রতিদিন তার মা,বাবা, দাদাঠাকুর সবই তার মুদির দোকানে আসে ভোর বেলার ঐ মুড়ি ছিটিয়ে রাখে সেগুলো খেতে।

কয়েকদিন আনমনা হয়ে যাচ্ছি। মানুষ কি চিন্তার ভারে আনমনা হয় ! ফাঁকা মস্তিষ্ক আনমনার রাজত্ব …

____________ অন্তরীক্ষ কথন

অনেকদিন পর সীমাদি তোমায় দেখলাম। কোথায় যাচ্ছো? কবে এসেছো ওপাড় থেকে? বলতেই হঠাৎ করে খেয়াল করলাম তার চোখ টা ছলছল করছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমায় জড়িয়ে ধরলো। এই প্রথম এমন আবেগপ্রবণ হতে দেখলাম তাকে। মানুষ তখনই অবাক হয় যখন দেখে যেটা ঘটনা কখনোই ঘটেনি হয়নি সেই রূপ কিছু হলে। যতটা না অবাক ততটাই উদ্বিগ্ন হলাম তার এই পরিবর্তনে।

সীমাদিকে ছোট থেকেই চিনি ভীষণ চুপচাপ, শান্ত স্বভাবের। বিদ্যানন্দ বিদ্যাপাঠের দিদিমণি। শিক্ষিকা বা ম্যাডাম যাকে বলে। বাচ্চারা পছন্দ করতো ভীষণ কিন্তু বাচ্চাদের সামনে সহজ থাকলেও বাকি সময়টা ভীষণ গম্ভীর। আর আমিও তেমন ঐ গম্ভীরতার জন্য কিছু টা দূরত্ব বজায় থাকতাম। ও পাড়ে গিয়েছিল মায়ের চিকিৎসা করাবার জন্য। তাছাড়া পিসতুতো দাদা আরোও অনেকে আছে।

তার কথাতেই আমার ভাবনার চিড় ধরলো।

আমার কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে আমাকেই উল্টো বললো তুই কেমন আছিস? হেসে শুধু মাথাটা বাম দিকে ব্যাকা করলাম।

দুজন মিলে হাঁটছি কমলকাকার বাড়ির পিছনে আম বাগানের দিকে চোখ পড়তেই দুজনে বলে উঠলাম। গাছটা এখনও কত মায়াবী।

অভয় মাষ্টারের বাসাটা এখন পরিত্যক্ত অথচ আগে কতই না সুন্দর বলতেই সীমাদি বললো আমার মত ভাঙা কিছু বিভক্ত ইট দালান আর আগাছার শেওলা।

হলুদ বাড়িটার কিছু কিছু ভাঙা অংশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে লোনা জল গড়িয়ে ঠোঁটে একটা লবনাক্ত স্বাদ পেলাম। ইটগুলোর দিকে তাকিয়ে অজান্তেই মনে হলো ওরাও ভীষণ মায়ায় আছে কোন এক ভীটেহীন ভিন্ন পথে …

________ অন্তরীক্ষ কথন

নীলিকা নীলাচল  ***

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন