করোনার কারণে গত ২ বছর মঞ্চে অনুপস্থিত থাকার পর গত ৫ নভেম্বর শনিবার আবারো মঞ্চে ফিরে এসেছে শহরের সবার প্রিয় আবৃত্তি সংগঠন বাচনিক। বাচনিকের দশম বাৎসরিক পরিবেশনা “সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান” অনুষ্ঠিত হয় নন্দন ইভেন্টের মিলনায়তনে। কোনো বিরতি ছাড়া প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপি অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন মিলনায়তন ভর্তি সকল দর্শক-শ্রোতা। দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতির সংখ্যাই প্রমান করে এই শহরে বাচনিকের জনপ্রিয়তার।

কবিতা শুধু ভালোবাসার জন্য নয়, প্রেমের জন্য নয়। কবিতা প্রতিবাদের, কবিতা বিদ্রোহের, কবিতা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আওয়াজ। কবিতা একটি অস্ত্রহীন যুদ্ধের নাম। বর্তমান পৃথিবীর সকল অন্যায়-অত্যাচার ,যুদ্ধ-বিগ্ৰহ, পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ছিল বাচনিকের এবারের আয়োজন “সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান” ।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শুরু হয় বাচনিকের অনুষ্ঠান। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনে অংশগ্রহণ করে এঞ্জেলিনা ডি কষ্টা ও অনুরাগ আহমেদ। শুরুতে ছিল দলগত পরিবেশনার উচ্চারণ – “অন্তরমম বিকশিত করো, অন্তরতর হে”। এরপর ছিল বাচনিক সন্মাননা পর্ব। বাচনিক প্রতি বছর একজন সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বকে “বাচনিক সম্মাননা” প্রদান করে আসছেন। সংস্কৃতির অঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এবারের “বাচনিক সম্মাননা-২০২২” প্রদান করা হয় সংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব  মিথুন আহমেদকে । যিনি বর্তমানে নিউ ইয়র্কে বসবাস করছেন। সম্মাননা গ্রহণের পর মিথুন আহমেদ নিজের অভিব্যাক্তি বর্ণনার এক পর্যায়ে বলেন- আমি জানি বাচনিকের সঙ্গে যুক্ত আছেন অনেক গুণীজন।এই পর্বটি সঞ্চালনা করেন বাচনিক উপদেষ্টা রাশেদা মুনীর এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্টারিও প্রাদেশিক সংসদের মাননীয় সদস্য ডলি বেগম। এই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জনাব মিথুন আহমেদ, এমপিপি ডলি বেগম, বাচনিক উপদেষ্টা রুমানা চৌধুরী, উপদেষ্টা দেলওয়ার এলাহী ও বাচনিক আহ্বায়ক মেরী রাশেদীন। সম্মাননাপত্র পাঠ করেন রুমানা চৌধুরী। মিথুন আহমেদকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন বাচনিক উপদেষ্টা দেলওয়ার এলাহী, মিথুন আহমেদেকে বাচনিক সম্মাননার ক্রেস্ট প্রদান করেন এমপিপি ডলি বেগম । এমপিপি ডলি বেগম ও মিথুন আহমেদকে ফুলের তোড়া দিয়ে বাচনিকের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানা মেরী রাশেদীন।

এবারের বাচনিক পরিবেশনায় যারা ছিলেন, তারা হচ্ছেন –
শাপলা শালুক, তন্ময় রহমান, সাবরিনা নূর, নাজমা কাজী, ডটি শারমিন, আরিয়ান হক, শাহনাজ স্মৃতি, কামরুন নাহার হিরা, সুমি রহমান, সম্পূর্ণা সাহা,ইরা নাসরিন, শিখা আখতারী আহমাদ, লীনা এগনেস ডি কস্টা, হোসনে আরা জেমী, ফারহানা আহমদ, ফ্লোরা নাসরিন ইভা, কাজী হেলাল, মেরী রাশেদীন ও কামরান করিম। কবিতার সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন অরুনা হায়দার ও নাজিয়া হক। কীবোর্ডে ছিলেন জাহিদ হোসেন, তবলায় রনি পালমার, গিটারে মেহাইবিন আজিম অপূর্ব। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন রশীদ এম ডি মামুনুর, আলোক নিয়ন্ত্রণ করেন ফ্রান্সিস গোমেজ। মূল অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মেরী রাশেদীন ও কামরান করিম। নির্দেশনায় ছিলেন মেরী রাশেদীন। গ্রন্থনা করেন জামিল বিন খলিল ও দেলওয়ার এলাহী।

সবার ভলোবাসা নিয়ে এভাবেই এগিয়ে যাক বাচনিক, আরো সুন্দর আর সফল হোক বাচনিকের আগামী দিনগুলো-এত শুভ কামনা রইলো পরবাসী ব্লগ পরিবারের পক্ষ থেকে।

(অনুষ্ঠানের ছবির জন্য এই লিংকটা ক্লিক করুন) – সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন