২০১৭ সালের মে মাসে মাত্র ২ জন ছাত্র আর ২ জন শিক্ষক নিয়ে শুরু হয়েছিল টরন্টো বাংলা স্কুলের পথ যাত্রা। আজ ২০২১ এর ২০ ফেব্রুয়ারী তার ছাত্র সংখ্যা প্রায় ৬০ জন আর শিক্ষক আছেন ৩ জন। বাংলা শেখার  সাথে সাথে আছে সংগীত, চিত্রাঙ্কন  ও আবৃতি  শেখার জন্যও নির্ধারিত  ক্লাস আছে । বর্তমানে করোনা কালীন  সময়ে অনলাইনে  প্রতি শনিবার সকাল ১১টা থাকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্কুলের কার্যক্রম চলছে।

টরন্টো বাংলা স্কুল – ভাষা,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চার একটি প্রগতিশীল ধারা। সেখানে মূলত বাংলা ভাষা শেখার সাথে সাথে দেশীয় ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির সাথেও ছাত্র ছাত্রীদের পরিচিত করে তোলা  হয়। শুধু পরিচিত করে তোলা হয় বললে হয়তো ভুল হবে, সেখানে উল্লেখিত বিষয়গুলি হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হয়। তাদের পরিচিত করে তোলা হয় দেশীয় সকল আচার-অনুষ্ঠানের সাথে। সেখানে পালিত হয় জাতীয় ও দেশীয় সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত সকল অনুষ্ঠানগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় ৫২ সালের ভাষা শহীদদের স্বরণে  টরন্টো বাংলা স্কুলের আজকের আয়োজন ছিল “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ” পালন।

সকাল ১০টায় রাফিয়া মকবুলের ঘোষণার পরপর স্কুলের সেক্রেটারি জনাব সিদ্ধার্থ সাহা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন এবং রাফিয়া মকবুল অনুষ্ঠান সূচি জানিয়ে দেন। এরপর ল্যান্ড অকনোলেজমেন্ট পড়ে শোনায় স্কুলের ছাত্রী আনজুম আশফাক। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এই পর্বের পরিচালনা করেন  টরন্টো বাংলা স্কুলের শিক্ষিকা নাসরিন ইসলাম।

অনুষ্ঠানে কবিতা / ছড়া আবৃতি করে – আফ্রিদা, নূর, আমরিন,আরিয়ান, সালওয়া, সোহানা,সামানিয়া, তাহমিদ, মাহিব, এলিসা, জোভান, সেজিন, সায়া ,অস্মিতা, তাজরীন, সোহা, জুলফা, ফাতিমা, আনজুম ,আরিশা ,তাবানসী , বেলামনি, রেহান ও স্বেচ্ছাসেবক আরজু মুন জেরিন।

অনুষ্ঠানে গান / গজাল পরিবেশন করে -আফিয়া ,দেবস্মিতা ,নামিরা,জয়ীন,স্মিআ ,রাইদ ,অনুষ্কা ,সাবিনা ও আনিসা।

নৃত্য পরিবেশন  করে – আনিসা এবং তবলা বাজিয়ে শোনায় দিব্যজিত।

২১শে ফেব্রুয়ারির একটি তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা নিয়ে আসে তরুণ সেচ্ছাসেবক নুরেন নাওয়ার। তার এই পরিবেশনার মধ্যদিয়ে শেষ হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

এরপর স্বাগত ভাষণ দেন  টরন্টো বাংলা স্কুলের প্রেসিডেন্ট ফকরুদ্দিন আহমেদ। তার বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানের মূল বক্তা বিশিষ্ট ভাষা শিক্ষক ,সমালোচক ও লেখক  জনাব মাসুদ রানা আজকের আলোচনার মূল বিষয় ” ২১শে ফেব্রুয়ারী উদযাপনঃ বহুসাংস্কৃতিক সমাজে মাতৃভাষার গুরুত্ব ” আর উপর  ওনার গুরুত্বপূর্ণ তাথ্য ভিত্তিক উপস্থপনাটি তুলে ধরেন। জনাব মাসুদ রানা যুক্ত হয়ে ছিলেন যুক্তরাজ্য থেকে।

এছাড়াও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সম্মানিত রাষ্ট্রদূত জনাব ডঃ  খলিলুর রহমান ওনার মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে আরো উপস্থিত  ছিলেন প্রাদেশিক সংসদের সদস্য ডলি বেগম ও  রিমা বার্নস-ম্যাকগোউন। সিটি কাউন্সিলর গ্যারি ক্র্যাফোর্ড ও ব্রাডফোর্ড ।  অতিথিদের  সকলেই সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন আর বাংলা স্কুলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন জনাব আব্দুল হালিম মিয়া।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ২টি বিভাগ ছিল। একটি জুনিয়র গ্রুপ – প্রী স্কুল থেকে ৩য় গ্রেড। সিনিয়র গ্রুপ – ৪র্থ থেকে ৮ম গ্রেড।

জুনিয়র গ্রুপে বিজয়ী –
১ম – আফিয়া ইসলাম
২য় – সেজিন মানহা চৌধুরী
৩য় – আব্রাহাম প্রামানিক
৩য় – এঞ্জেলিনা প্রামানিক
৪র্থ – প্রিমা  চৌধুরী
৪র্থ – তাহমিদ হাসান
৪র্থ – আরিশা জোয়ারদর

সিনিয়র গ্রুপে বিজয়ী –
১ম – রাইদ হাসান
২য় – জাফরিন নেওয়াজ
৩য় – সালওয়া মাহবুব
৩য় – স্নিআ মেলিসা গোমেজ
৪র্থ – লুবাবা জুরাইনাহ

অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ও মূল সঞ্চালনায় ছিলেন জনাব জান্নাতুল ইসলাম। অন্যুষ্ঠানটি টরন্টো বাংলা স্কুলের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন