আজ এই কিছুক্ষন আগে বর্তমান টেস্ট চ্যাম্পিয়ান নিউজিল্যান্ডের ঘরের মাঠে টানা ১৭ টি টেস্ট জয়ের রেকর্ডের অহংকারকে দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে এক দাপুটে জয় পেলো বাংলাদেশ, আবারোও রয়েল বেঙ্গলদের হাত ধরে দেশের বাহিরে বিশ্ব মানচিত্রে পরিচিতি পেলো বাংলাদেশ। সাবাস বাংলাদেশ। সাবাস রয়েল বেঙ্গল টাইগার্স।

আজকের দিনটি আরেকটি কারণে আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, আজ আমার ছেলে টরেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। দেশের ক্রিকেট খেলা নিয়ে অনেক দিন লেখা হয়নি,গত কয়েক দিন ধরে ছেলে আমার মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে খেলা দেখছিলো, আজ সেই ছেলের বাঁধ ভাঙা আবেগময় উচ্ছাসের কারণে আবারো লিখতে বসেছি। প্রবাসে বসে স্বদেশের প্রতি ছেলের এই আনন্দ উল্লাসে আবেগে চোখের পানি আটকে রাখতে পারলাম না

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ দিনের খেলা শুরু হয়ে ছিল গত ৩১ ডিসেম্বরে টরেন্ট সময় অনুযায়ী প্রায় বিকাল পাঁচটায়। শুরুর পর থেকে প্রতি সেশনে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরেও, টিভিতে এক ধারাভাষ্যকর বলেছিলেন নিউজিল্যান্ড জিততে চলেছে। আজ সকালে অফিসে যেয়েই খেলার খবর পড়তেই দেখলাম নিউজিল্যান্ড 147 / 5 উইকেট। লিড ছিল মাত্র ১৭ রানের। প্রথম আলো খবরের কাগজকে বড় করে লেখা দেখলাম সেই ধারাভাষ্যকর বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে মাফ চেয়েছেন । আজ অফিস থেকে এসে বাসায় পা দিতেই ছেলে দৌড়ে এসে জানালো আমরা জয় থেকে আর সামান্য রান দূরে। কোনোরকমে ফ্রেস হয়ে ছেলের সাথে টিভির সামনে বসলাম। জয়ের মুহূর্ত দেখার কিছুতেই তর সহ্য হচ্ছে না।

অবশেষে জয় এলো বগুড়ার ছোল ‘মুশফিকের’ চার রানের মাধ্যমে। ছেলের চিৎকারে কানে তালা লাগার মতো অবস্থা। হোক না হয় স্টেডিয়াম না হয়ে টেলিভিশন, এই ঐতিহাসিক খেলার দর্শক হিসাবে আমরা বাপ বেটা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকলাম।

এই কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে পাকিস্তান বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এসেছিলো, পাঁচ দিনের খেলা দু ই দিন বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও বাংলাদেশ সে খেলা বাঁচাতে পারেনি , ইনিংস ব্যাবধানে হারের লজ্জ্যায় একেবারে নুয়ে গিয়েছিলো টাইগারের দল। সেই অবস্থা থেকে আজকের এই জয় পৃথিবী এক অন্যরকম বাংলাদেশ দেখলো তাও আবার সাকিব, তামিম ছাড়া এক দল নিয়ে।

প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা ইবাদত ভালো ইংলিশ বলতে না পারলেও ম্যাচ শেষে লাজুক ভাবে তার বোলিংয়ের কথা শোনানোর আগে মহান সৃষ্টি কর্তাকে ধন্যবাদ দিতে ভুললেন না, দৃঢতার সাথে বললনে তাঁদের এই জয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিখবে তার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারাতে জানে।

New Zealand : 328 & 169
Bangladesh : 458 & 42/2
এই ঐতিহাসিক টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে মুমিনুল হকের এই দল।
অভিনন্দন রয়েল বেঙ্গল টাইগার্স !!

সাবাস বাংলাদেশ!!!

(ছবিঃ- সৌজন্যে ইত্তেফাক)

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২০২১ বছরটা কেমন গেল !!!
পরবর্তী নিবন্ধজীবন সংগ্রাম-পর্ব-১২
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন