সভ্যতার অসভ্যতা দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে স্বাধীনতার পরাধীনতার কথা ভাবছিলাম।
হটাৎ করে, ছোটবেলার সেই দুরন্তপনার সময়ের প্রাইমারি স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেলো
পন্ডিত স্যার ক্লাসে বেত উঁচিয়ে সহসাই বললেন, ‘বলতো স্বাধীনতা মানে কী?’
মানিক, নিপেন, রঞ্জুর মতো সব বাঘা বাঘা
ভালো ছাত্ররা একে একে হুমড়ি খেয়ে গট গট
করে সব বই এর ভাষায় বলে দিলো, ” স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের গনতান্ত্রিক ভাবে…..’।
আমি আর নান্টু লাস্ট বেঞ্চিতে বসে ‘নয়ন মনি’ সিনেমার গল্প করছিলাম। পন্ডিত স্যার নান্টুকে
হটাৎ করে একই প্রশ্ন করায়, নান্টু ঘাবড়ে গিয়ে
কান চুলকাতে চুলকাতে বললো, ‘ স্যার স্বাধীনতা মানে, এই মনে যা কিছু এলো তাই পটাস করে বলে ফেললাম, মনে যা চাইলো তাই করলাম, মনে চাইলেই কারও পাছায় লাথি দিলাম, এই আর কি’।
নান্টুর কথা শুনে ক্লাসের সবাই হেসে কুটি কুটি।
পন্ডিত স্যার নান্টুর পিঠে একের পর এক বেত ভাংতে লাগলেন। নান্টু মুখে টু শব্দ না করে দাঁত চেপে স্যারের বেতের মার সহ্য করে গেল। আমি ফ্যাল ফ্যাল করে স্যারের স্বাধীনতা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম।
তবে, স্বাধীনতা মানে কি শুধুই দাঁতে দাঁত চেপে মার খেয়ে যাওয়া?? আমি আজও আমার প্রশ্নের জবাব খুঁজে না পেয়ে ড্যাবড্যাব করে চারিপাশে তাকিয়ে তাকিয়ে স্বাধীনতার পরাধীনতা দেখে লজ্জিত হয়ে কেবল ক্যাপসুলের মতো নিজেকে আবদ্ধ করে রাখি।