হ্যালো আম্মা আপনে কি শুয়ে পড়ছেন ?”
-না মা, আমাদের এখানেতো মাত্র রাত সাড়ে নয়টা বাজে , এই মাত্র তোর বাবাকে খাবার দিয়ে টিভির খবর শুনছি. আমাদের এখানে তো, খবর বিশেষ ভালো নারে মা, দিন দিন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে । সরকার লম্বা ছুটি দিয়েছে, ঢাকা থেকে মানুষ জন পাগলের মতো নিজ নিজ দেশের বাড়ির দিকে ছুটছে । তোর বাবার কাশিটা কিছুতেই ভালো হচ্ছে না । সারাক্ষন বাসার মধ্যে খুক খুক করে কাশছে । তোর বাবাকে নিয়ে চিন্তার মধ্যে আছি, যাক, এসব কথা, তোদের ঐদিকের খবর কি রে মা” ?

-“আমাদের ঐদিকেও অবস্থা বিশেষ ভালো না, আমরা বাসায় থেকেই, অফিস করছি. আম্মা আপনার সাথে জরুরি কথা আছে.”

-“কি কথা রে মা , ঝটপট বলে ফেল”।

দিলারা আখতারকে অবাক করে বাবার কাশির প্রসঙ্গে না যেয়ে খানিকটা নিচু স্বরে তিশা মা কে বললো:

“বাবার মাথা নাকি পুরোটাই খারাপ হয়ে গেছে, বাবা পুরা চার তলা বাড়ি মন্টুর নামে উইল করে দিয়েছে। বাবার মাথা একটু একটু খারাপ সেটা আগেও জানতাম, আমরা কি ভুলে গেছি – পেনশনের টাকা তুলে বাসায় নিয়ে আসার পথে দুঃখের কথা শুনে বাবা গুনে গুনে ৮০ হাজার টাকা এক কথায় বেবিট্যাক্সি ওয়ালাকে দিয়ে দিলেন, ভ্যাগ্গিস আপনার কথা শুনে বাবা চার্ তালার বাড়িটা কমপ্লিট করতে পেরেছিলেন। তারপর, বুবুর বিয়ের সময় কি করলেন, আশুলিয়ার কাছে দুই কাঠা খাস জায়গাটা আব্বা দুম করে পানির দামে আমাদের সাথে কথা না বলে বিক্রি করে দিলেন। আর, এবার মন্টু গাধাটার নামে পুরা চার তালার বাড়ি লিখে দিলেন। আব্বা কি জানেনা, গাধাটার কোনো ছেলে পুলে নাই, এখন এই করোনা ভাইরাসের সময় কে কখন আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে ঠিক আছে? মন্টু গাধা টা মারা গেলে পুরা সম্পত্তি তো ওর বৌ লুটে পুটে খাবে। আম্মা, আপ্নেই বলেন, আমরা বোনেরা কি বানের জলে ভেসে আসছি ? আব্বা জানে না এদেশে আমাদের বাড়ির মালিক হচ্ছে ব্যাঙ্ক, ১/২ টি মর্টগেজ মিস করলে ব্যাঙ্ক তো পুরা বাড়ি নিয়ে নিবে , তখন আমাদের ছেলে পুলে কোথায় যেয়ে দাঁড়াবে আপ্নেই বলেন আম্মা” ? এই পর্যায়ে তিশা একেবারে বালিকাদের মতো করে শব্দ করে কান্না জুড়ে দিলো।

দিলারা আখতারের মনে পড়লো গতকালই নরওয়েতে থাকা বড় মেয়ে তুলির সাথে বাবা কে নিয়ে বাড়ির ব্যাপারে কিছু একটা শুধু বলেছিলো, এটাকেই বোধ হয় তিল কে তাল করে বোনের কাছে লাগিয়েছে। দিলারা আখতার এ ক্ষত্রে ইচ্ছা করলে বলতে পারতেন “কেন রে মা, তোদের ওখানে শুনলাম জাস্টিন ট্রুডো সাহেব মর্টগেজ কয়েক মাসের জন্য মাফ করে দিচ্ছেন। যাক, দিলারা আখতার এসব আর বললেন না। এমনকি মেয়ের কান্না থামানোর কোনোধরনের চেষ্টাই করলেন না। কারণ, উনি ভালোভাবেই জানেন, সে চেষ্টা করা একেবারেই বৃথা।

তিশার টেলিফোনে কান্নাকাটি করার একটি বিশেষ প্যাটার্ন আছে। কথা বলতে বলতে হটাৎ একটি ইস্যুতে পাঁচ থেকে দশ সেকেন্ড হাউমাউ করে কাঁদবে, তারপরে কয়েক সেকেন্ড একেবারে চুপ চাপ, মনে হবে যেন ফোন রেখে দিয়েছে, কিন্তু না । ২/৩ সেকেন্ড পরে নিজে থেকেই কান্না বন্ধ করে সম্পূর্ণ অন্য প্রসঙ্গে এমন একটি কথা বলবে যা থেকে একেবারেই বোঝার উপায় নাই , এই মেয়েটিই কিছুক্ষন আগে হাউমাউ করে কাঁদছিলো।

যেমন, গত সপ্তাহের কথাই ধরা যাক। মাকে ফোন করে তিশা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে যাবতীয় কথা বার্তা বলছিলো: আম্মা, যা বলছি মন দিয়ে শুনেন. মন্টু গাধাটাকে বলেন বেশি করে বাজার ঘাট বিশেষ করে, চাল, ডাল, তেল, লবন , আলু, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি যেন  কিনে রাখে। দেখবেন দুম করে একদিন দোকানপাট সবকিছু বন্ধ করে দিচ্ছে।  তিশা কথা বলতে বলতে হটাৎ করে বললো, ” আচ্ছা আম্মা, আপনাদের কথা না হয় বুঝলাম, আপ্নে, আব্বা বয়স্ক মানুষ, কিন্তু মন্টু গাধাটার তো কোনো কাজ নেই , সারাদিন ফেসবুকে কবিতা লিখে বেড়ায় আর এটা ওটা ইনিয়ে বিনিয়ে পাতা ভরে লেখা লেখি করে, আচ্ছা থাক, ওতো গাধাই ওর কথা নাহয় বাদই দিলাম , ওর বৌ তো আর আমাদের মতো চাকরি/ বাকরি করে না ওদের কোনোদিন কি বোনদেরকে ফোন করার ইচ্ছা হয় না ? এখনতো আর টেলিফোনে কথা বলতে হয় না, ইন্টারনেটে গিয়ে মেসেঞ্জারে কল দিলেই হলো , তাও করবে না । আমরা বোনেরা কি ওদের জন্য কিছুই করি নি আম্মা !!” এই বলে তিশা হাউমাউ করে কান্না কাটি শুরু করলো এবং বরাবরের মতো ঠিক দশ সেকেন্ডের মাথায় কান্না থামিয়ে একেবারেই স্বাভাবিক গলায় বললো , “আম্মা আপনার নাতনি অবন্তী জানেন কি কান্ড করেছে, সেদিন সন্ধ্যার সময় আমাদের জন্য সুপ্ বানিয়ে নিয়ে এসেছে। চিন্তা করতে পারেন, এতটুকু পুচকে মেয়ে যে কখনো নিজ থেকে কিচেন ঢোকে না সে কিনা এই মার্চ ব্রেকের স্কুল বন্ধের মধ্যে , ইউটিউব থেকে এটা একা এক শিখেছে, চিন্তা করতে পারছেন! দিলারা আখতার যখন তিশার মুখে ওর ছেলে মেয়েদের গুনের কথা শুনে, খুব সতর্কতার সাথে হ্যান্ডেল করে, কারণ , ভালো করেই জানে নাতি/নাতনিদের গুনের কথা শুনার পরে খুবই আনন্দিত হয়ে বিস্ময়ের সাথে  বলতে হবে , “তাই নিকিরে মা , সত্যিই অবাক করা ব্যাপারতো”!! কিন্তু সাবধান, অনভুতি প্রকাশের একটু এদিক ওদিক হলে তিশা আবার কান্নার মুডে চলে সমূহ সম্ভাবনা থাকে ।

আজকেও তিশা টেলিফোনে কান্নাকাটির প্যাটার্ন মেনে চলে দশ সেকেন্ডের মধ্যে বললো ,” আম্মা, আপনার জামাইয়ের হটাৎ করে শখ হয়েছে কচুর লতি দিয়ে ইলিশ মাছ এর চচ্চরি খাবে। কি এক ঝামেলার ব্যাপার বলেনতো আম্মা , এমনি আমরা করোনা ভাইরাসের ভয়ে প্রায় লকডাউন হয়ে ঘরে বসে আছি , এর মাঝে আপনার জামাইয়ের খাবারের বাতিক। কি আর করেন বলেন, বাঙালি পাড়ায় যেয়ে ইলিশ মাছ পাওয়া গেলো কিন্তু কিছুতেই কচুর লতি পাওয়া গেলো না । আমার এক বান্ধবীকে ফোন করায় ও বললো, চাইনিজ গ্রোসারি ষ্টোরে নাকি কচুর লতা পাওয়া যায়। মানুষের কান্ডকারখানা দেখেন, এই সময়ে চাইনিজ ষ্টোরে যাওয়া আর আত্মহত্যা করা সমান কথা, তাই না আম্মা !! এদিকে আপনার জামাই বাচ্চা ছেলের মতো মুখ কালো করে বসে আছে! লোকটার কবে যে বুদ্ধিশুদ্ধি হবে। যাক, পরে, সর্ষের তেলে ইলিশ মাছ ভাজা ভাজা করে কাঁচা আম আর টেমেটো দিয়ে ঘন ডাল রান্না করে পাতে দিয়েছি একেবারে চেটেপুটে খেলো। দিলারা আখতারকে হয়তো আরো কিছুক্ষন টেলিফোনে মেয়ের বকবকানি শুনতে হতো , কিন্তু বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে মেয়েকে কথা ঘুরিয়ে বললেন “মারে, তোর বাবাকে খাবার দিয়ে এসেছি কি লাগে না লাগে একটু দেখি। আজ থাকরে মা, আরেকদিন কথা হবে। তিশাও নাছোড় বান্দার মতো আরো কিছুক্ষন মন্টুকে চার তালার বাড়ি উইল বিষয়ে কিছুক্ষন কথাবার্তা বলার পরে বাবা যেন অবস্যই উইলটি ছিঁড়ে ফেলে, এই অঙ্গীকার মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আরো মিনিট দশেক কথা চালিয়ে ফোন ছাড়লো ।

দিলারা আখতার ফোন রেখে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। সম্পত্তি কি অদ্ভুৎ জিনিস। সংসারে একটি লোক সারা জীবন খেঁটে মোরে জীবনের শেষদিকে এক খন্ড বাড়ি করে, ছেলে মেয়েরা ক্ষুদার্ত শৃগালের মতো সেই বাড়ির দিকে চেয়ে থাকে মালিকানার আসায়। অংশীদারিত্বের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বৃদ্ধ বাবা মা অথবা বাকি ভাই.বোনদের সাথে কুৎসিত ঝগড়া হয়। অথচ, এই ছেলে মেয়েরাই ছোট সময় ভাই/বোন মিলে মিশে কত খেলাধুলা করেছে, ঈদের আগের রাতে কত মজা করেছে, বাবার সাথে হাট থেকে কোরবানির গরু কিনে গরুর গলায় দড়ি ধরে লম্বা রাস্তায় বাবার সাথে রাজ্যের গল্প করতে করতে বাড়ি এসেছে, গরমের সন্ধ্যায় লোড শেডিংএ কারেন্ট চলে গেলে, উঠানে গোল হয়ে বসে থেকে রেডিওতে ‘দুর্বার’ অনুষ্ঠান শোনা, বা বিবিসি চ্যানেলে বাংলা খবর শোনা, আকাশের দিকে তাকিয়ে সপ্তর্ষি মন্ডল খোঁজা, অথবা খাবার টেবিলে কে মুরগির রান খাবে সেটা নিয়ে হালকা খুনসুটি, পরে আবার এক সাথে একই বিছানায় গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে পড়া ইত্যাদি ইত্যাদি কত মধুর মুহূর্ত ।

সেই ছেলে মেয়েরাই এক সময় বড় হয়, নিজের নিজের সংসার হয়, নিজ নিজ বৃত্তের মাঝে ঘুরতে ঘুরতে ভাই/বোন এর দিকে দূরত্ব বাড়তে থাকে। অবশেষেএক সময় টুপ করে বাবা মা মোরে গেলে ভাই/বোনের মধ্যে যতটুকু সম্পর্ক থাকে তা আরও হালকা হতে হতে থাকে , বাবা মার রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ে আগের কুৎসিত ঝগড়াগুলি একসময়ে কোন্দলে রূপান্তরিত হয়ে সুম্পর্কের একেবারেই ইতি ঘটে। এখনকার বিষয়টা অবশ্য আলাদা। করোনা ভাইরাস নিয়ে সারা পৃথিবীতে লাশের লম্বা মিছিল। প্রথমে চীন, পরে ইতালি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, স্পেন, আমেরিকা, কানাডা প্রভৃতি বাঘা বিঘা দেশগুলি করোনা ভাইরাস সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখেও কি মানুষরা একটু সংশোধন হবে না!! এই সময়েও কি ছেলেমেয়েরা সম্পত্তির অংশীদারিত্বের কথা ভাৱবে !!! আমরা কবে পার্থিব লোভ-লালসার উর্ধে উঠবো!!

বর্তমান এই সংকটময় মুহূর্তের কথা ভাবতে যেয়ে, দিলারা আখতার আজ এসার নামাজের সময় বেতের নামাজের আগে চার রাকাত নফল নামাজ পরে ছেলে মেয়েদের জন্য, সারা দুনিয়ায় মরণমুখী করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে মুক্তির জন্য লম্বা দোয়া করছিলেন। হটাৎ নিচে অনেক গন্ডগোলের শব্দে দিলারা আখতার মুনাজাত সংক্ষিপ্ত করে জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকালেন রাস্তার পাশে কিছু মানুষ উর্ধশ্বাসে ছুটছে , পুলিশ কতগুলি রিক্সা আলাকে বেধড়ক পিটাচ্ছে। দিলারা আখতারের বুঝতে দেরি হলো না , রাস্তার পাশে ফুটপাতের চা স্টলে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্ট অমান্য করে হয়তো বেচারারা আড্ডা দিচ্ছিলো, তাই পুলিশের এই তান্ডব। দিলারা আখতারের একধরণের মিশ্র অনুভূতি হতে থাকে। একদিকে পুলিশের হাতে গোবেচারা রিক্সাঅলাদের মার খাওয়া নিয়ে মন খারাপ লাগে , আবার একই সঙ্গে সোসাল ডিস্ট্যান্টের করা নিয়ম মেনে চলার সরকারি পদক্ষেপে কিছুটা খুশি লাগে। আহা! ! সরকার যদি আরো আগে থেকে এয়ারপোর্ট থেকেই প্রবাসীদের উপর কড়াকড়ি নিয়ম রীতির আরোপ ব্যাপারে কড়াকড়ি করতো , একই সঙ্গে প্রবাসী ফেরত বাংলাদেশিরাও যদি সততার সাথে, আরেকটু ধর্যের পরিচয় দিয়ে বেঁধে দেয় নিয়ম কানুন মেলে চলতো
হয়তো দেশে করোনা ভাইরাসের ব্যাপকতা এতটা হতো না !! দেশের হর্তা/কর্তাদের ভুলের মাসুল কেন এই নিরীহ মানুষদের দিতে হবে ?

করোনা ভাইরাস পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ধোনি গরিব, জাত পাত ,ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার শরীরে মৃত্যুর বিষ ঢেলে দিচ্ছে তাও কি আমরা সংশোধন হবো না !! তাও কি আমরা নিজেদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থেকে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানি মামলা মোকদ্দমা করা থেকে বিরত থাকবোনা !!

দিলারা আখতার এসব উথাল-পাতাল চিন্তা করতে করতে কিছুতেই চোখ একত্রিত করতে পারে না । একসময়, রাতের তিমির কেটে ভোরের আলোর রেখা ফুটে উঠতে থাকে। . মুয়াজ্জিন সাহেবের সুরেলা কণ্ঠে আজানের ধ্বনি “…… আসসালাতু খাইরুম মিনাল নো উম …” কানে এসে মুধুর শুরে বাজতে থাকে । স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন সাহেব বাথরুমে ট্যাপের পানির ছেড়ে উযু করার সময় আবারো খুক খুক করে কাশতে থাকে । বাংলাদেশ সময় ভোর প্রায় সাড়ে চারটার মতো বাজে। কানাডার সময় হয়তো দুপুর আড়াইটার মতো হবে। তিশা হয়তো স্বামীর নতুন কোনো পছন্দের মেনু রান্না করে দুপুরের খাবার খেয়ে সোশাল আইসোলেশন এর নিয়ম মেনে চলে সবাই মিলে ঘড়ে বসে হয়তো টিভির কোনো মজার অনুষ্ঠান দেখছে। বিদেশ থেকে ফেরা প্রবাসীরা কোরানটাইনের নিয়ম ভেঙ্গে লোকালয়ে দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে । পুলিশের লাঠির পেটা খেয়ে গরিব রিকশা আলাগুলো হয়তো বিছানায় এখনো কাতরাচ্ছে । দিলারা আখতার ফজর নামাজ শেষ করে দীর্ঘ মোনাজাত করতে থাকে যার সারাংশ হলো ” হে আল্লাহ আমাদের এই অলুক্ষুনে বালামুসিব্বত থেকে রক্ষা করো, আমাদেরকে আরেকবার সুযোগ দাও, আমাদের আমরা লোভ লালসা ভুলে নিজেদের মধ্যে মারামারি হানাহানি বাদ দিয়ে আমরা যেন একটি সুখী সমৃদ্ধ পৃথিবী রচনা করি । আমিন ।

“অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি
বিচার দিনের স্বামী।
যত গুণগান হে চির মহান
তোমারি অন্তযামি।

দ্যুলোক-ভূলোক সবারে ছাড়িয়া
তোমারি চরনে পড়ি লুটাইয়া
তোমারি সকাশে যাচি হে শকতি
তোমারি করুনাকামী।

সরল সঠিক পুণ্য পন্থা
মোদের দাও গো বলি
চালাও সে পথে যে পথে তোমার
প্রিয়জন গেছে চলি।

যে-পথে তোমার চির-অভিশাপ
যে-পথে ভ্রান্তি, চির-পরিতাপ
হে মহাচালক, মোদের কখনও
করো না সে পথগামী”।

(কবিতাটি লিখেছেন কবি গোলাম মোস্তফা , কবিতার নাম ‘প্রার্থনা’)

পূর্ববর্তী নিবন্ধআপনি কি বাংলাদেশী ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট বতর্মানে টরন্টোতে আছেন?
পরবর্তী নিবন্ধকখন কোথায় জীবনের শেষ স্থিরচিত্র চিত্রায়িত হবে…
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন