শুচিতা কাজের শেষে মাবাবার বাসায় গিয়ে ছেলে দ্রুবকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে সুমিত মাঝে মাঝে এসে দ্রুবকে দেখে যায় । ছোট বাচ্চা এখনও এক বৎসর হয় নি, যার কাছে আদর পায় তার কাছেই যায়, সুমিত বাবা হলেও সব সময় আসে না, সে জন্য বাচ্চা তার কাছে যেতে চায় না । সুমিত  শুচিতার বাসায় আসলে জোর করে ওকে কোলে নিলে   কেঁদে কোল  থেকে নেমে যায় । সুমিত এর জন্য শুচিতা ও তার বাবামাকে দোষারুপ  করে, সে বলে যে এই ছোট বাচ্চা নিয়ে ও ওরা আমার সঙ্গে ট্রিকস খেলে । বাসায় গিয়ে সে আরতি ও কমলকে বলে দ্রুব আমার কাছে আসতে  চায় না । ওরা বলে তুমি বাবা আজ হোক, কাল হোক দ্রুব  তোমার কাছে আসবে । আরতি বলে এ গুলি ওদের ট্রিকস ওরা তোমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে । সুমিত আরও বলে প্রদীপকে দেখা মাত্র দ্রুব দৌড়ে গিয়ে কোলে উঠে আরতি বলে শুনেছি এই ছেলের সঙ্গে ও শুচিতার সম্পর্ক ছিল, এখন বাসায় এসে  বসেছে, দেখো কোন দিকের পানি কোন দিকে গড়ায়  ।

সুমিত এ নিয়ে শুচিতাকে বলে এর জন্য প্রদীপ ও দায়ী প্রদীপ না থাকলে এই বাচ্চা আমার কাছে অবশ্য আসতো শুচিতা  বলে তুমি এই বাচ্চা নিয়ে অযথা প্রদীপকে কেন দোষরোপ করছো?

সুমিত বলে আমার এবং তোমার মধ্যে  যে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে, তা একমাত্র প্রদীপের জন্য হচ্ছে শুচিতা বলে প্রদীপ কানাডা আসার পূর্বেও তোমার সঙ্গে আমার কি মধুর সম্পর্ক ছিল? 

না থাকলেও ততটা খারাপ সম্পর্ক ছিল না । শুচিতার মা আভা বলে ছোট বাচ্চা যার কাছে আদর পায় তার কাছে-ই  যায় ।

আমি তোমাদের বাসায় থাকাকালীন তুমি এবং তোমার লোকেরা আমাকে গহনা চুরি করেছি বলে দোষারুপ করেছো, কেন করেছো

কোনো কিছু হারানো গেলে যে কোনো লোক নিকটের লোকদের সন্দহ করতে পারে, তাছাড়া আমার মাবাবা তুমাকে চোর বলে নি । তুমি নিজেও বলেছো, শুচিতা মনে করে দেখো তো  তুমি কি কোথায় ও ভুলে রেখেছো?

আমি তোমার স্ত্রী,আমাকে তুমি সন্দেহ করছো কেন?

আমি তোমাকে সন্দেহ করিনি ।

আমি প্র্যাগনেন্ট, অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রতিদিন কাজ করেছি এবং তোমরা বাসায় এতগুলি লোক, বাসার  কিচেন, ডাইনিং টেবিল থেকে আরম্ভ করে  সব কাজ আমার জন্য কেন ফেলে রেখেছো

আমি এবং আমার লোকেরা অসুস্থ ছিল, তাছাড়া সবাই কাজ করেছে যে যা পেরেছে । আমাকে তোমরা পছন্দ করো না, কিন্তু আমার বাবামা কি করেছে ?

আমি কি তোমার বাবামাকে কিছু বলি? 

না বললেও ভালো ব্যবহার করো না ।    

প্রদীপ বাহির থেকে ঘরে ঢুকতেই দ্রুব দৌড়ে এসে আংকেল  আংকেল বলে কোলে উঠে  শুচিতা বলে কি দেখলে তুমি?

যে আদর করে ছোট বাচ্চা তার কাছেই যায় প্রদীপ বলে তোমার আব্বুর কাছে যাও এই বলে সুমিতের দিকে নিয়ে যেতেই  দ্রুব চিৎকার করে বলে না আমি যাবো না শুচিতা ওকে কোলে নিয়ে বলে সুমিত তুমি কি দেখলে , দ্রুব তোমার কাছে যায় না?

হ্যাঁ, তাইতো দেখলামতুমি বাসায় চলে এস তাহলে দ্রুব  আমাদের কাছে আসবে 

আমি আবারও বলছি যে তুমি যদি আমাকে নিয়ে বাসা করতে পারো আলাদা ভাবে, তাহলে আমি যাবো আমি এত লোকের মধ্যে থাকতে পারবো না । পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার না, আমি আলাদা তোমাকে নিয়ে থাকতে চাই ।

তোমার কি চাকুরী হয়েছে

না, আমি চেষ্টা করছি তবে এখনও কিছুই হয় নি । 

তোমার  তো চাকুরী আছে, আমাকে খাওয়াতে পারবে না?

শুচিতা বলে, সংসার খরচের পয়সা দুই জনকে সমান ভাবে ভাগ করে দিতে হবে, তুমি ঘরে থাকবে, আমি কাজ করবো এবং ঘরের কাজ করবো, এটা সম্ভব না  

এটাই কি তোমার শেষ কথা?

হ্যাঁ, এটাই আমার শেষ কথা   

সুমিতের বাবামা ব্রাহ্মণ বংশ, ব্রাহ্মণ বংশ সব চেয়ে উঁচু বংশের লোক এরা পূজা পারবনে ধর্মীয় কাজ নিয়ে দেশে ভালোভাবে চলেছে  । এদের ধারণা অন্য সব হিন্দু লোক ওদের  শ্রদ্ধা, প্রণাম ও খাওয়া পরা যোগাবে   কিন্তু এখানকার জীবন সম্পূর্ণ আলাদা,হয় কাজ করো নতুবা সরকারের অনুদান নিয়ে বেঁচে থাকো

আরতি  শুচিতাকে পছন্দ করে  না, বড়ো বংশ এবং নিচু  বংশ এর মধ্যে রয়েছে  একটা টানাপোড়ন ওরা মনে করে শুচিতা, ওর বাবামা অশুচি এবং তাদের  সঙ্গে উঠা বসা এবং তার হাতের রান্না খাওয়া ঠিক না ওরা নিত্য গঙ্গার পবিত্র জল  ঘরের জলের সঙ্গে মিশিয়ে সারা বাসায় ছিটিয়ে দিয়ে পবিত্র  রাখে  । তাছাড়া  গ্রোসারি দোকান থেকে  এই পবিত্র জল  সব সময় এনে  রাখে, শুচিতা রান্না  করা শেষ করলে   একটু জল  ছিটিয়ে দিয়ে  কমল ভগবানের নামে  মন্ত্র পড়ে ঘর পবিত্র করে  

শুচিতা আধুনিক যুগের মহিলা, সে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে,  সব সময় কমল ও আরতির সঙ্গে মন্দিরে যাওয়ার সময় হয় না বা  পছন্দ করে না কমল এবং আরতি বলে শুচিতাদের পূর্ব পুরুষ নিম্ন শ্রেণীর  হিন্দু  যারা মুচি(অস্পৃশ্য হিন্দু ) জুতা মেরামতের কাজ করতো শুচিতা বলে আমার দাদা রেলওয়েতে কাজ করতো, কিন্তু কেউ কি বলেছে, তোমারা অস্পৃশ্য হিন্দু আমার দাদা দাদি রেলওয়ে কোয়ার্টার  থাকতো আমি কোনো দিন শুনি নি যে আমার পূর্ব পুরুষ scheduled  caste  hindu  আমার শ্বাশুড়ি এবং শ্বশুর সব গুল্প বানিয়েছে আমাকে হেয় করার জন্য তা ছাড়া ইন্ডিয়া থেকে এই কাস্ট  সিস্টেম ১৯৪৭ সনের পর উঠিয়ে দিয়েছে

শুচিতা প্রদীপকে জিজ্ঞেস করে তুমি কি কখনো শুনেছ যে আমাদের পূর্ব পুরুষ মুচি (চামড়ার কাজ করতো)?

 প্রদীপ বলে আমি তা শুনিনি, তা ছাড়া এই সিস্টেম ইন্ডিয়া থেকে উঠিয়ে দিয়েছে, মানুষ কাজ করে রুটি রোজগার করবে, এতে সমস্যা কোথায়? 

প্রদীপ  বলে হিন্দু ধর্মে শ্রেণী বলতে একটা কথা আছে, সরকার নিয়ম করে উঠিয়ে দিলে ও এটা সমাজ থেকে চিরতরে  মুছে ফেলতে  যুগের পর যুগ সময় লাগবে ।  শুচিতা বলে আরতি এবং কমল আমাকে হেয় করার জন্য এ সব করছে ।

সুমিত বলে আমার মাবাবা কি মিথ্যা কথা বলে?

কিন্তু এটার প্রমান কি?

সুমিত বলে আমার মাবাবা খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছে যে তোমারা নিম্ন শ্রেণীর হিন্দু । 

শুচিতা বলে যদি তাই মনে করো যে আমরা নিম্ন শ্রেণীর হিন্দু, তা হলে তোমার সঙ্গে আমার আর এ নিয়ে কোনো কথা বলাই ঠিক হবে না । 

প্রদীপ বলে ধরো শুচিতা তোমার পূর্ব পুরুষ কেউ চামড়ার কাজ করতো?

তা হলে কি তুমি অশুচি হয়ে যাবে?

সুমিত এই কথার  জবাব না দিয়ে চলে যায় ।

শুচিতা বলে আমার শ্বাশুড়ি আরতি গোঁড়া হিন্দু, সে এ সব নিয়ে  কয়েকবার আমার সঙ্গে  তর্ক করেছে ।

শুচিতার  বাবা প্রীতম বলে আমার দাদার ছোট ভাই  হরিপদ মুচির কাজ করতো, আমার দাদা কৃষি কাজ এবং তার ভাইয়ের সঙ্গে জুতা সেলাই করতো । আমার বাবা রেলওয়েতে চাকরি করতো, আমরা কখনও ওই কাজ করি নি । আভা বলে আমার মাবাবা  কৃষি কাজ করতো, তারা তো আমাকে বিয়ে দিতে আপত্তি করে নি । এটা তো বহু যুগ আগের কাহিনী, এরা মূলত আমাদের পছন্দ করে না, এই সম্পর্ক কি ভাবে টিকে থাকবে? 

শুচিতা বলে  আমার শ্বাশুড়ি আরতি উঁচু বংশ আর নিচু বংশ নিয়ে সব সময় একটা বাহাদুরির ভাব নিয়ে চলে ।সে এই ঝামেলার সৃষ্টি করছে, তাছাড়া বাবা তুমি শিপে খালাসির কাজ করতে এবং কলে কারখানায় কাজ করো, এ নিয়ে ও  আমাকে অনেক কথা শুনায় ।  আমার শ্বাশুরি এই মহিলার দুনিয়া সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান নেই ।

বাবা এরা এই খবর কি ভাবে জেনেছে ? 

তোমাদের বিয়ের পর আরতি আমার বংশ পরিচয় জানতে চেয়েছে । আমি মিথ্যা কথা বলিনি ।

শুচিতা বলে সুমিত  আমাদের বিয়েকে কেন্দ্র করে তার মাবাবা এবং ভাই বোনদের দেশ  থেকে এনে স্থায়ী ভাবে থাকার সুবিধা দিয়েছে এবং এরা এখানে এসে আমাদের দাম্পত্য জীবনে বিঘ্ন ঘটিয়েছে । ওরা এ দেশে   না আসলে আমি এবং সুমিতের মধ্যে কোনো সমস্যা হতো না । 

প্রীতম বলে এরা মূলত স্বার্থপর লোক, যেই স্বার্থ  শেষ হয়েছে,সেই ফিরে দাঁড়িয়েছে । আভা বলে আমি তোকে আগেই বলেছি,তুই ভেবে চিনতে সিদ্ধান্ত নিবি । কিন্তু তুই আমাদের কোনো কথা শুনিস নি । এখন যা হবার হয়ে গেছে, শক্ত হয়ে সব কিছু সিদ্ধান্ত নিবি । 

আম্মু আমি ওকে দেখেছি,কিন্তু ওদের লোকজনকে দেখি নি । আমি কি ভাবে বুঝবো যে ওর মা আরতি এত কুটিল মানুষ?

সুমিত  বিয়ে করেছে, ওদের লোকজন আনার জন্য । আমি অনেকবার শুনেছি আরতি লোকজনকে বলতে,সুমিত কি দেখে বিয়ে করেছে? 

ও কি চায় আমি বুঝতে পারছি না । 

প্রদীপ মনে মনে ভাবে এই ঝামেলার মধ্যে না থাকাই ভালো । সে একটা শর্ট কোর্স করে চাকুরীর ব্যবস্থা করে নিয়েছে এবং একদিন আংকেল ও আন্টিকে বলে আমি আপনাদের কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি, এখন আলাদা থাকতে চাই, প্রীতম বলে কেন আলাদা থাকতে চাও?

সে বলে আংকেল আমি কাজের জায়গার কাছাকাছি থাকলে একটু সুবিধা হয়, তা ছাড়া আর একটু পড়াশুনা ও করতে চাই ।

প্রীতম বলে প্রদীপ তুমি চলে গেলে আমরা একাকী হয়ে যাবো । 

আংকেল আমি জানি আপনারা আমাকে অনেক ভালো বসেন, সে জন্য আমি অনেক কৃতজ্ঞ । কিন্তু আমার সুবিধা আর অসুবিধার দিকে ও দেখতে হবে । 

ঠিক আছে তুমি কবে যাবে?

আমি আগামী মাসে চলে যাবো । আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার যে ভাবে ভালো হয়  ।

আজ প্রদীপ কাজ থেকে বের হয়ে তার নিজের নেয়া বাসা দেখতে গিয়ে বাড়িওয়ালাকে বলে আমি আগামী সপ্তাহে কিছু ফার্নিচার এবং জরুরি এটা সেটা কিনে ঘর আস্তে আস্তে সাজাবো । বাড়িওয়ালা বলে এটা তোমার বাসা,তুমি যেভাবে ভালো মনে করো সাজাবে । প্রদীপ বাসায় আসতে  এক ঘন্টা দেরি হলো এবং  বাসায় ঢুকতে-ই  দ্রুব দৌড়ে এসে আংকেল আংকেল বলে কোলে গিয়ে উঠেছে ।  প্রীতম বলে তুমি চলে গেলে দ্রুবকে কে সামলাবে?

শুচিতা বলে প্রদীপ কোথায় যাবে?

প্রীতম বলে প্রদীপ তার কাজের জায়গার কাছাকাছি থাকার ব্যবস্থা করেছে ।

আভা কিছুই বলছে না, চুপ করে প্রদীপের দিকে চেয়ে আছে । শুচিতা বলে প্রদীপ তুমি একা একা কি ভাবে নিজেকে সামলাবে? 

প্রদীপ বলে চেষ্টা করে দেখি, যদি অসুবিধা হয় আংকেল আন্টি তো আছেই । যে কোনো সময় আসা যাবে । 

ঠিক আছে তুমি যা ভালো মনে করো । দ্রুব তোমাকে না পেলে অনেক যন্ত্রনা করবে, তাই না দ্রুব? 

দ্রুব ওর কোল থেকে  নিচে নামিয়ে দিলে প্রদীপকে ডাইনিং টেবিলে টেনে নিয়ে  বলে খাও খাও ।

শুচিতা সন্ধ্যার দিকে প্রদীপকে বলে, তুমি আমাদের অবস্থা অনুধাবন করে চলে যেতে চাও? 

না, শুচিতা তুমি আমাকে ভুল বুঝেছো, আমি কাজের একটু কাছাকাছি যেতে চাই । তোমার অফিস তো আমার অফিস থেকে ও  কাছে । তুমি আমাকে এড়িয়ে চলছো তাই না? 

না, শুচিতা আমি তোমাকে এড়িয়ে চলবো কেন?

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি,সুমিতের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি করে নেবো ।  যেখানে জাত বংশ নিয়ে কথা  হচ্ছে , সেখানে কিভাবে একত্রে থাকা যায়?

প্রদীপ বলে শুচিতা এটা তোমার নিজস্ব ব্যাপার, আমি এর মধ্যে কোনো রকম জড়াতে চাই না ।  

আমি জানি তুমি বলবে এটা তোমার ব্যাপার  না । প্রদীপ হেঁসে বলে আমি এর বেশি কি বলতে পারি?

হ্যাঁ, ঠিকই বলছো , তুমি এই অবস্থায় কি বলতে পারো?

তাছাড়া সুমিত এবং ওদের মাবাবা তোমাদের নিম্ন শ্রেণীর লোক বলে এতে আমি নিজেও তার মধ্যে জড়িয়ে পড়ি । এটা অত্যন্ত দুঃখ জনক ব্যাপার, আমাদের পূর্ব পুরুষ যদি মুচির কাজ করে তাতে অসুবিধা কোথায়? 

কেউ তো  চুরি করে না, কাজতো কাজ-ই , হয় বড়ো কাজ, না হয় ছোট কাজ, বেঁচে থাকার জন্য যে কোনো ধরণের কাজ করলে পয়সা আসে, এতে মান ইজ্জতের কি আছে?

এখানে স্কুল,কলেজে এবং উনিভার্সিটির ছেলে মেয়েরা প্রয়োজনে একজনের গাড়ি, বাড়ি পরিষ্কার করে  পয়সা নিয়ে যায়, তাতে ম্যান ইজ্জতের  কিছুই যায় এসে না । কানাডার প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী ব্রায়ান মালরোনি ছাত্র জীবনে যে রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন, এখনও অতীব গর্বের সঙ্গে বলে আমি এই রেস্টুরেন্টে কাজ করেছি ।  

এ নিয়ে মহাত্মা গান্ধী ভারতে জায়গায় জায়গায় মিছিল সভা সমিতি করে caste  প্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সারা ভারতের হিন্দুদের একত্রিত হতে বলেছিলেন । যদি ও  ভারত সরকার এই প্রথা উচ্ছেদ করেছে, কিন্তু লোকজনের মধ্যে এখনও lower  caste  হিন্দুদের  অবজ্ঞার চোখে দেখে, যেমন শুচিতার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি তোমাদের পরিবারকে নিম্ন মানের লোক হিসাবে দেখে । 

পরবর্তী মাসের প্রথম দিকে প্রদীপ নুতন বাসায় গিয়ে উঠে । দ্রুব আংকেল আংকেল বলে রোজ চিৎকার করে, রাত ঘুম থেকে উঠে প্রদীপের রুমে গিয়ে বলে আংকেল নেই,আংকেল নেই, আমি এখানে ঘুমাবো ।

শুচিতার বাবা প্রীতম প্রদীপকে খুব-ই পছন্দ করে এবং সে বলে শুচিতার ভুলের জন্য এই সমস্যা  এতদূর গড়িয়েছে । 

শুচিতা বলে আব্বু আমি কিভাবে বুঝবো সুমিত তার মাবাবাকে এনে এখানে  এই সমস্যার সৃষ্টি  করবে । আমি তো ওকে ভালো বেসেই বিয়ে করেছি, সুমিত প্ল্যান করে তার মাবাবা এবং ভাই বোনকে এনে এখানে এই ঝামেলার সৃষ্টি করবে তাতো আমি জানিনি । সুমিতের বাবা কমল  দেশে পূজা পার্বনের কাজ করতো । মানুষ এই দুনিয়াতে পরিশ্রম করে কি ভাবে দাঁড়ায়, এরা মানুষের শ্রমের সঠিক  মর্যাদা দিতে শিখে নি ।       

উইকেন্ডে শুচিতা দ্রুবকে নিয়ে প্রদীপের  বাসায় সারপ্রাইজ  দিয়ে বলে তোমাকে দেখতে আসলাম, দ্রুব দৌড়ে গিয়ে প্রদীপের কোলে উঠে । শুচিতা ঘরটা এ দিক সে দিক দেখে বলে বেশ সুন্দর করে সাজিয়েছ. কিচেনে গিয়ে দেখে প্রদীপ রান্না বসিয়েছে । সে জিজ্ঞেস করে  কি রান্না করো?

চাল,ডাল টমেটো, সবজি, কাঁচা মরিচ ও পিয়াজ মসলা একত্রে দিয়ে রান্না বসিয়েছি, তুমি খেয়ে যেও । আমরা মা ছেলে খেলে তুমি কি খাবে?

শুচিতা বাহিরে খাওয়ার অর্ডার দিয়ে বলে ১০ মিনিটের মধ্যে খাওয়া এসে যাবে । কয়েক মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি দরোজায় নক করে । শুচিতা ডেলিভারি নিয়ে   বলে প্রদীপ  ডাইনিং টেবিলে খেতে এস । প্রদীপ বলে তুমি আমার বাসায় এসে বাহির থেকে খাওয়া এনে খেয়ে যাবে? 

তাতে কি ?

আমি কি রান্না করলাম ওটা ও একটু খেয়ে দেখো, শুচিতা টেস্ট করে বলে বেশ তো মজা-ই হয়েছে । আর একদিন এসে তোমার হাতের রান্না খেয়ে যাবো, অনেক সময় বসে থেকে বলে এখন যাই । প্রদীপ বলে আমি কি তোমাদের  একটু এগিয়ে দিয়ে আসবো?

না, দরকার নেই। দ্রুব  হাত উঠিয়ে বলে বাই  বাই ।

রাস্তায় বের হয়ে শুচিতা এবং দ্রুব একটা ট্যাক্সি নিয়ে ঘরের দিকে রওয়ানা দিয়ে কিছুদূর যেতেই দেখে সুমিত একটা মহিলাকে নিয়ে রাস্তার পার্শে দাঁড়িয়ে আছে । শুচিতা  এই মহিলাকে এর পূর্বে কখনও দেখে নি ।

সে ভাবে ট্যাক্সিওয়ালাকে বলে  ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলে কেমন হয় ?

পর মুহূর্তে ভাবে আমি যেহেতু ওর সঙ্গে আর মিলতে চাই না,এ নিয়ে জিজ্ঞেস করে কি হবে?

ভাগ্গিস দ্রুব ওই দিকে খেয়াল করে নি, নতুবা   বাপ্পি, বাপ্পি বলে চিৎকার করতো এবং  আর  এক কাহিনী হতো, তা ছাড়া ট্যাক্সিওয়ালা এক ইন্ডিয়ান, সে অনায়াসেই ওদের কথোপকথন বোঝে নিতো এবং আর এক সমস্যা  হতো । শুচিতা রাগে বির বির করতে করতে বাসায় চলে আসে । বাবা প্রীতম এবং আভা বলে কেমন দেখলে প্রদীপের নুতন সংসার  ?

আম্মু সে মোটামোটি গুচিয়েছে ।

 কি খেলে ?

আম্মু ও ডাল,চাল, টমেটো এবং সবজি  দিয়ে  খিচুড়ি রান্না করেছে । আভা শুনে বলে ছেলেটা এখানে ভালো ছিল, এখন কত না কষ্ট হচ্ছে । শুচিতা বলে না আম্মু, ও ভালোই আছে এবং সে যে কোনো অবস্থায় খাপ খাইয়ে চলতে পারে । প্রীতম বলে ওর বাড়ির অবস্থা ভালো ছিল না, অনেক কষ্ট করে মানুষ হয়েছে । সব পরিবেশে সে খাপ খাইয়ে চলতে পারে । যারা ঘাত প্রতিঘাতে মানুষ হয়,তারা সচরাচর পরিশ্রম করতে শিখে । কাজেই সে জানে যে কোনো অবস্থায় নিজেকে মিলিয়ে চলতে।দেখবে ও রাতারাতি দাঁড়িয়ে যাবে, বাড়ি গাড়ি করা তো তার জন্য বড়ো কিছু না ।

শুচিতা সুমিতকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে তুমি কোথায়? 

সুমিত বলে কেন আমি বাসায়? 

তুমি বাসায় ! তোমার বাবা কমলকে দাওতো আমি একটু কথা বলবো ।

 কি কথা বলবে?

আমার দরকার আছে । আমি এখন দিতে পারবো না । শুচিতা  টেলিফোন রেখে দিয়ে বাসায় টেলিফোন করে এবং কমল টেলিফোন উঠিয়ে বলে শুচিতা তুমি কেমন আছো?

আমি ভালো আছি, সুমিতকে একটু দিবেন কি?

সুমিত বাসায় নেই । শুচিতা টেলিফোন রেখে দিয়ে পুনরায় সুমিতকে টেলিফোন করে বলে আমার সঙ্গে তুমি মিথ্যা কথা কেন বললে? 

শুচিতা বলে তুমি তো বাসায় নেই, এবং আমি তোমাকে রাস্তায় দেখেছি এবং আর একজন মহিলার সঙ্গে । সুমিত টেলিফোন রেখে দেয় ।  

রাতে সুমিত টেলিফোন করে শুচিতাকে বলে তুমি আমাকে আর একজন মহিলার সঙ্গে দেখে জ্বলে পুড়ে মরলে, তুমি সারাদিন প্রদীপের সঙ্গে উঠা বসা করো এবং আমার কেমন লাগে তাকি একবার ও চিন্তা করেছো?

শুচিতা বলে প্রদীপ আমার cousin  ,তুমি কি বলো, মাথা ঠিক আছে তোমার?

আমার মাথা ঠিক আছে, তুমি প্রদীপের সঙ্গে পরকীয়া করো, ঠিক বলছিনা ?

তোমার মাথা ঠিক নেই, আমি তোমার মতো যারা নোংরা কথা বলে, কথা বলতে চাই না ।  

সুমিত বলে  তুমি কোত্থেকে আসতে ছিলে আমাকে দেখলে রাস্তায় আর একজন মহিলাকে নিয়ে  দাঁড়িয়ে ছিলাম ? 

তোমার এত কথা জানার দরকার নেই এই বলে শুচিতা ফোন রেখে দিয়ে লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পরে ।

পর দিন শুচিতা অফিসে গিয়ে তার বান্ধবী মনিকাকে আগের দিনের সমস্ত কাহিনী বললে মনিকা বলে সুমিতের মাথা ঠিক নেই, সে কিছুদিন আগে আজিজকেও তোমার এবং প্রদীপ কে কেন্দ্র করে অনেক কথা বলেছে । তুমি দুঃখ পাবে সে জন্য কিছুই বলিনি । আমার মনে হয় না সুমিতের সঙ্গে তোমার কোনো রকম মিল হবে, তোমার মাবাবা কি বলে?

আমরা মাবাবা বলে এটা তোমার জীবন, এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না । শুচিতা তুমি ভুল একবার করেছো, এবার বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেবে । শুচিতা বলে ওরা সরল মানুষ আমাকে কোনো কিছু জোর করে বলতে চায় না । 

মনিকা বলে তোমার  এক বৎসর বয়সের ছেলে আছে, এ অবস্থায় তুমি  ছাড়াছাড়ি (ডিভোর্স) করলে আর একটা বিয়ে করা সম্ভব হবে কি ? 

যাকেই বিয়ে করো  সে হয়তো তোমাকে  করুনা করতে আসবে । কিছু দিন হয়তো ভালো থাকবে , তার পরে তোমাকে  প্রতি নিয়ত খোটা দেবে এবং বলবে ভালো হইলে তোমার  কেন ডিভোর্স হলো? 

তুমি  খারাপ ইত্যাদি ইত্যাদি, তখন এ সব সহ্য করে সংসার করতে হবে, নতুবা আর একবার ডিভোর্স নিতে হবে । সুমিত তোমার  প্রথম স্বামী এবং স্টুডেন্ট লাইফে তোমাদের  অনেক দিন ভালো সম্পর্ক ছিল । তার পরিবারের জন্য ভুল বুঝা বুঝি হয়েছে । এটার জন্য তার  মায়ের গোড়ামি,  ধর্মান্দতা ই একমাত্র দায়ী । এরা দেশে পূজাপার্বন করে মানুষের নমস্কার/আদাব  কুড়িয়েছে এবং মানুষ কতভাবে কষ্ট করে তার মর্যাদা দিতে শিখে নি । আমি আজিজকে দিয়ে সুমিতের সঙ্গে কথা বলবো,  দেখবো ওর সঙ্গে তোমার  যে ভুল বুঝা বুঝি হয়েছে, কতটা নিরসন করা যায় ।

মনিকা তুমি যা যা বলেছো আমি কি বুঝি না? 

কিন্তু সুমিতের মা আরতি যে ভাবে কথা বলে, এতে একত্রে সংসার করা কঠিন । ওর বাবা কমল কিছুটা নমনীয় ওর সঙ্গে আমার সমস্যা  হয় না । সুমিত তার মাকে ভয় পায় যে জন্য সব সময় চুপ থাকে । কিছু বললে আরতি ওকে দশটি কথা শুনিয়ে দেয় । সে এমনও বলে আমার ছেলে দ্রুবকে  দিয়ে দিতে, ওরা আমাকে চায় না ।

তুমি তোমার ছেলেকে কেন দেবে?

না, আমি ওকে দেব না, আমার মাবাবা ওকে অনেক আদর করে এবং ওরা ওকে ছাড়া থাকতে পারবে না । আমি আমার ছেলের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি আছি । 

মনিকা বলে নিজের ছেলে কে হাত ছাড়া করে । আমি আজিজকে বলে দেখতে পারি । ও মাঝে মধ্যে সুমিতের সঙ্গে কথা বলে । 

পর দিন আজিজ সুমিতকে ডেকেছে ওর সঙ্গে  Mcdonald  Canada  

রেস্টুরেন্ট এ চা খেতে ।  আজিজ সুমিতকে আকসিডেন্টের পর কয়েক বার দেখেছে তাও হাসপাতালে । এর মধ্যে সুমিত অনেক খানি শুকিয়ে যেন কাঠ হয়ে গিয়েছে । সে ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারে না । সুমিত বলে ওর সব সময় মাথা ব্যাথা থাকে এবং সে জন্য তাকে হাই পাওয়ার পেইন  কিলার খেতে হয় ।  সে অনেক দিন থেকে চাকরিচ্যুত, মানসিক ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলেছে । কথা বলে এবং তাতে মনে হয় যেন সে জীবনে অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছে ।  

চোখের পাওয়ার অনেকটা কমে গেছে এবং মোটা পুরো গ্লাস ব্যবহার করে । মাথার চুল অর্ধেকের মতো নেই. দেখলে মনে সে ৫০ বৎসর বয়েসের লোক । ওর অবস্থা দেখে  দুঃখ করা ব্যাতিত তেমন কিছু বলার ইচ্ছে হয় না । দুইজনে দুইটা বার্গার এবং কোল্ড ড্রিংক নেয়ার পর কফি অফার করলে সুমিত নিষেধ করে । 

অনেক সময় বসে এই কথা সেই কথা বলার পর সুমিত নিজ থেকে শুচিতার কথা উঠিয়ে বলে, শুচিতা স্বার্থপরের মতো আমাকে অবজ্ঞা করে তার বাবার বাসায়  চলে গেছে । ওর চাকুরী নেই এবং অশান্ত মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে আমি শুধু বললাম তুমি আলাদা বাসা নিয়ে থাকতে পারো কি না? 

সে বলে মাবাবা এবং ভাই বোন আমার উপর নির্ভরশীল । আমি ওকে বুঝিয়ে বললাম, তোমার সুখ শান্তির দিক বিবেচনা করে এক দিক স্যাক্রিফাইস করা দরকার । শুচিতা এবং তোমার অতি আদরের ছেলে এই মুহূর্তে তোমার কাছে থাকলে, তুমি দ্রুত  সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আমি মনে করি । 

ওকে এর বেশি কিছু বলতে ইচ্ছে করে নি, সুমিত বাসে আমার সঙ্গে দেখা করতে   এসেছে এবং আমাকে বলে তুমি চলে যাও আমি বাসে আস্তে আস্তে বাসায় পৌঁছবো । আমি বললাম, তা হয় না, তোমাকে নামিয়ে দেব এই বলে ওকে ড্রাইভ দিয়ে বাসায় পৌঁছতে দেরি হলে মনিকা রাগ করে এবং বলে তোমার এত দেরি?

আমি মনিকাকে বুঝিয়ে সব কিছু বলাতে সে  বলে ঠিক আছে । 

মনিকা বলে সুমিত কি আলাদা বাসা নেবে? 

সে বলে মাবাবা তার উপর নির্ভরশীল, কাজেই সে বাসা নেবে বলে মনে হলো  না । মনিকা বলে শুচিতা, সুমিতের মাবাবা ভাই বোনের  সঙ্গে থাকা সম্ভব না ।  

তাছাড়া সুমিতের তো কোনো রোজগার নেই,সে Disability  তে আছে ।   এ দেশের সরকার অসুস্থ লোকদের কোনো রকমে বাঁচার জন্য যে পয়সা দিয়ে থাকে তা দিয়ে তো আর বাসা ভাড়া নিয়ে স্বাচ্ছন্দে চলা যায় না ।  যেখানে সংসারে এত অশান্তি, শুচিতাই বা কেন ওদের জন্য স্যাক্রিফাইস করবে? 

তাহলে এখন কি হবে বলে সুমিত মনে করে?

সুমিত হয়তো মনে করে শুচিতা বাসা ভাড়া এবং সংসার চালাবে ।   কিন্তু সুমিতের মা আরতি লোয়ার কাস্ট এবং অপার কাস্ট নিয়ে যেভাবে শুচিতাকে সামাজিক ভাবে দূরে সরিয়েছে, তাতে কোনো সুফল আসবে বলে মনে হয় না । সুমিতের বাবা কমল যদি ও শুচিতাকে পছন্দ করে, কিন্তু আরতির সামনে সমাজ এবং  জাত গেলো, জাত গেলো এই অভিযোগের জন্য দাঁড়াতে পারছে না । আমি এর কোনো সঠিক সমাধান  খুঁজে পাচ্ছি না ।      

আজিজ বলে শুচিতা এবং প্রদীপকে নিয়ে সুমিত যে সন্দহ করে  মনিকা তুমি কি বলতে পারো এটা কতটুকু সঠিক?

এটা সম্পূর্ণ বানোয়াটি কথা, এর কোনো ভিত্তি নেই । প্রদীপ দেশে থাকা কালীন সময় শুচিতার  বাবা প্রীতম শুচিতাকে বিয়ে দিয়ে প্রদীপকে এখানে আনতে চেয়ে ছিল । কিন্তু শুচিতা সুমিতকে ভালো বাসে সে জন্য এই প্রস্তাব গ্রহণ করে নি । আমাদের ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য দেশের লোকজন সব সময় চায় নিজের ছেলে মেয়েকে দেশে বিয়ে দিয়ে আত্মীয় স্বজনকে সাহায্য করা । কিন্তু সব ক্ষেত্রে এটা সম্ভব হয় না, যেমন শুচিতা ।   

পরবর্তীতে প্রদীপ নিজের চেষ্টায় ইমিগ্রেশন নিয়ে অটোয়া তাদের (আত্মীয়ের) বাসায় উঠেছে । এই বিদেশের বাড়িতে ইমিগ্রেশন নিয়ে সবাই প্রথম দিকে নিজস্ব আত্মীয় স্বজনের বাসায় উঠে । এখন সে নিজে চাকুরী ও থাকার ব্যবস্থা করে সরে পড়েছে । প্রদীপ শুচিতার কাজিন, তার বেশি আর  কিছুই আমি জানি না ।  

পর দিন অফিসের এক ফাঁকে মনিকা শুচিতাকে বলে কাল আজিজ সুমিতের সঙ্গে কথা বলেছে । সুমিত  অসুস্থ্য , সে এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে উঠে নি । সে মাবাবাকে ছেড়ে তোমাকে নিয়ে আলাদা বাসা নেয়া সম্ভব না বলে জানিয়েছে । শুচিতা বলে তুমি বলো সুমিত অসুস্থ্য, কিন্তু আমি তাকে অন্য এক মহিলার সঙ্গে ঘুরা ঘুরি করতে দেখেছি ।  

মনিকা বলে তুমি কি নিশ্চিত যে সে কোনো মহিলা নিয়ে প্রেম ও ঘুরাঘুরি করে?

তাতো বলতে পারি না, আমি গাড়ি নিয়ে আসতেছি এবং আমার সঙ্গে দ্রুব ছিল যে জন্য দাড়াই নি । 

মনিকা বলে এমনও  তো হতে পারে, সে কোনো পরিচিত মহিলার সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছে আর তুমি তাকে দেখে সন্দেহ করছো ।

ক্রমশ :  

পূর্ববর্তী নিবন্ধভূগর্ভস্থ আর্তনাদ
পরবর্তী নিবন্ধঅলক দাস, কানাডার একটি নীরব অনুঘটক। Alok Das, a silent catalyst of Canada !!
নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম - জন্ম:- ১৯৪৮ সাল । এনায়েতপুর, কচুয়া, চাঁদপুর, বাংলাদেশ। শিক্ষা:- এম, কম ( ব্যাবস্থাপনা ), ঢাকা ইউনিভার্সিটি। এম, এ (অর্থনীতি ) জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি। চাকুরী জীবন:-ইসলামাবাদ, পাকিস্তান,বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া,আমেরিকা ও কানাডা। বর্তমানে :- অবসর জীবন- কানাডাতে। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। প্রকাশিত বই:-আমার সংগ্রামী জীবন,সাদা ঘোড়া,জীবন চক্র,শুচিতা ও জীবনের মুখোমুখি।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন