নাজনীমা ৬ সপ্তাহের জন্য দেশে গিয়েছে। গত ৫ বৎসরে আমার শ্বাশুড়ি, ওর বড়ো ভাই এবং ছোট বোনের স্বামী মারা গেছেন ; এত এত মৃত্যু সংবাদ স্বত্তেও ওর দেশে যাওয়া হয় নি। আমরা যারা বিদেশে থাকি, এই সমস্যা আমাদের সবার ক্ষেত্রেই রয়েছে ; এ দেশ থেকে হুট্ করে দেশে যাওয়া যায় না, আর্থিক সংকট যা আমাদের আত্মীয়স্বজন বুঝতে চায় না , কাজের ছুটিছাটা এবং ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা এ সব মিলিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা দরকার হয়। এবার নাজনীমা দেশে গিয়ে গেঁড়াকলে পড়েছে ; তার ছোট এক ভাই বহুদিন থেকে অসুস্থ্য; হাসপাতাল আর বাসা এই করে বেঁচে আছে। সেদিন শুনলাম সে লাইফ সাপোর্টে আছে, কাল শুনলাম অক্সিজেনে আছে, ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন। ওর আর এক ভাইয়ের শারীরিক সমস্যা -হাঁটতে পারে না – ওর স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে।
টেলিফোন করলেই- কারও স্ট্রোক,কারও প্রস্রাব বন্ধ, কারও দৈনিক দুইবার ইন্সুলিন নিতে হয়, – কেউ এক বৎসর দুই বৎসর থেকে বেডে পড়ে আছে। টাকা নেই,চিকিৎসা খরচ কিভাবে বহন করবে ? বাংলাদেশের হাসপাতাল তো ডাকাতের জায়গা ,এক মাস হাসপাতালে রোগী রাখলে বাড়িঘর বিক্রি করে ও দেনা পরিশোধ করা যায় না। অনেকে বলতে শুনেছি ,রোগী মারা গেছে তার পরে ও লাইফ সাপোর্টে রেখে দিয়ে বিলের অংক বাড়ায়। এতো ডাকাতি,এর থেকে পরিত্রান পাওয়ার উপায় কি ? প্রতি বৎসরই ডেঙ্গু বাংলাদেশে বহু লোক মারা যায় । কয়েক বৎসর হলো,আমার আর এক আত্মীয়ের শ্বশুর ও শাশুড়ি একই হাসপাতালে এক সপ্তাহ আগে পরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। শুনেছি এবার গ্রামেও ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগ দেখা দিয়েছে । গ্রাম বা শহর পরিষ্কার না রাখা হলে মশা মাছির উপদ্রব অবশ্যই বাড়বে । গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ুর এই বাংলাদেশ , বর্ষায় প্রচন্ড বৃষ্টি,খাল বিল, নালা নর্দমা সর্বত্রই পানি জমা হয়ে থাকে।আমাদের সে যুগে বর্ষার মৌসুমে নৌকা ব্যাতিত ঘর থেকে বের হওয়া যেত না;এত নর্দমা, মশা মাছি পোকামাকড় সর্বত্র জন্মায়। শুনেছিলাম মুঘল আমলে তৎকালীন এক ঢাকার নবাব মশামাছির যন্ত্রনায় ঢাকা থেকে অফিস মুর্শিদাবাদে সরিয়ে নেয় ;যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, মশামাছি, পোকামাকড় নিদন কঠিন।
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে জনগণের সচতনতার ও অভাব রয়েছে। সরকারি সংস্থার লোকজন দুর্নীতি পরায়ণ,মশার ঔষধ ছিটানোর পরিবর্তে পাউডার ছিটিয়ে টাকা পকেটস্থ করে। “তোমরা এমনই চতুর,উন্নয়নের নামে পকেট ভরিয়া দেশকে করেছো ফতুর। ” কাজেই মশা নিদন আর হয়ে উঠছে না। আমাদের সে যুগে কলেরা,বসন্ত আর ম্যালেরিয়ায় প্রতি বৎসর বহু লোকের মৃত্যু হতো, এ দেশকে “এশিয়াটিক কলেরার দেশ” বলা হতো,যদি ও আজকাল সে ভাবে দেখা যায় না ।
আমি নাইজেরিয়ায় চাকুরীকালীন সময় চার বৎসরের মধ্যে দুইবার ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হই , আমার প্রতিবেশী ভারতীয় মিস্টার শর্মা (আর্কিটেক্ট ) ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এমন দুর্বল হয়ে পড়ে -বমি আর বুমি -শেষে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। শহরে বাড়িঘরের চারিদিকে ঝোপজঙ্গল , শুধু কি মশা ? সাপের ভয়ে রাতে ঘুম থেকে উঠে নিচে পা পেলার আগে ভালোভাবে দেখে নিতাম কোথায় ও সাপ শুয়ে আছে কি ? বাথরুমে ছিদ্র দিয়ে ঘরে সাপ ঢুকতো। আমি ঘরের বাইরে মুরগি পোষতাম; একদিন নাজনীমা ঘরের বাইরে সাপ দেখে চিৎকার , এর পর থেকে আমি মুরগি পোষা বন্ধ করে দেই। সে অনেক স্মৃতি -পরে আর এক দিন বলা যাবে- – কানাডার কথা আগে বলি।
নাজনীমা দেশে, আমার বড়ো ছেলে গালিব ও আমি বাসায়- ভাগ্গিস কিছু রান্না শিখেছি। মেয়ে রুমকি বার বার ফোন দিয়ে বলে “ আব্বু আমি কিছু খাওয়া নিয়ে আসি”; আমি বলেছি কারও ঝামেলা করার প্রয়োজন নেই, নিজেরা যা পারি তাই রান্না করে খাবো। নাজনীমা যা কিছু রান্না করে দিয়ে গিয়েছে তাও এরই মধ্যে ফুরুৎ, আমি যা রান্না জানি, নিজে কোনোরকমে খেতে পারি। গালিব তার মায়ের রান্না পছন্দ করে , আমাকে বলে আব্বু তুমি যা রান্না করো মশলা, লবন ঠিক ভাবে দাও না, তরকারিতে পানি বেশি রাখো ,ভালো লাগে না । আমি হেঁসে বলি,তোমার আম্মু না আসা পর্যন্ত এভাবেই চলবে। সে বলে ” আমি রান্না করতে পারি”; আমি ভরসা পাই না, তাই বলি না থাক তোমার রান্না করতে হবে না । মাঝে মধ্যে বাইরে গিয়ে খেয়ে আসি। শেষে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিলাম এ ফাঁকে কিছু দিনের জন্য হ্যালিফ্যাক্স, নোভাস্কোশিয়া ঘুরে আসি ।
২
গালিব বলে কোথায় ও গিয়ে ঘোরে আসলে ভালোই হয়; ওর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে যাওয়া হলো। আদিব বলে আব্বু আমি অটোয়া থেকে আসতেছি, সব কিছু ঠিকঠাক করে তোমাদের এয়ারপোর্টে দিয়ে আসবো । ছেলের আগ্রহ দেখে বললাম আসতে পারো। ২৮ অক্টোবর আমরা বাপ্- বেটা হ্যালিফ্যাক্স (নোভাস্কোশিয়া) চলে গেলাম। আগেই AIRBNB র মাধ্যমে ৮ দিন থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দুই ঘন্টার শর্ট জার্নি; “পোর্টার ” ছোট উড়ো জাহাজ, ১২০ জনের সিট । গালিব বলে আব্বু এয়ারলাইন বড়ো কিপ্টা,একটা চকলেট এবং আধা কাপ ড্রিংক দিয়েছে। ওর কথা শুনে না হেঁসে পারলাম না। এয়ারপোর্ট থেকে ডাউনটাউন হ্যালিফ্যাক্স অনেক দূর ;৪০ মিনিটের মতো ট্যাক্সিতে সময় লাগলো।
পরদিন থেকে আমাদের হালিফ্যাক্সের ঘোরাঘুরির পর্ব শুরু হলো । থাকার জায়গা ভালো ছিল,দুইকামরা বাসা, লিভিং ও ডাইনিং সহ একসপ্তাহের জন্য নেয়া হয়েছে । দোকান থেকে রুটি মাখন, ডিম্ নিয়ে আসি এবং সকালে চা তৈরী করে খেয়ে দুইজনে নিকটেই টিমহর্টন্স গিয়ে কপির অর্ডার দিয়ে বসে গাইড দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কোথায় আজ যাওয়া যাবে। হালিফ্যাক্সে ( ওয়াটার ফ্রন্ট), মেরিন মিউজিয়াম, ১৯৪০-১৯৪৫ ব্যবহৃত যুদ্ধজাহাজ, আর্ট গ্যালারি, ঐতিহাসিক স্থান না দেখলে কানাডার আদিম অভিবাসীদের ইতিহাসই জানা হলো না। হ্যালিফ্যাক্স সমুদ্র সৈকতে ১৯৪০ -১৯৪৫ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ব্যবহৃত একটা যুদ্ধ জাহাজ রাখা হয়েছে ; যুদ্ধকালীন সময় কিভাবে সৈন্যগণ এই জাহাজ ব্যবহার করতো তা একজন গাইড অতি সুন্দরভাবে ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছেন । সৈন্যগণ কিভাবে বেল্ট দিয়ে তৈরী ঝুলন্ত বেডে পাশাপাশি ঘুমাতো তা না দেখলে বুঝানো কঠিন। কানাডা থেকে দুই লক্ষ সৈন্য দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল যার ৫০ হাজার ফেরত আসে নি এবং ওর স্মৃতি এখানে বহন করে। তার পর শুরু হলো ধ্বংস হয়ে যাওয়া ইউরোপ থেকে রিফুজী নিয়ে আসার পর্ব। লক্ষ লক্ষ রিফুজী শিপে করে ইউরোপ থেকে এই বন্দরের মাধ্যমে নিয়ে এসে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ করে দেয়া হয়। কানাডা মানবতার দেশ, সারা পৃথিবী থেকে দুঃস্থ্য লোকদের নিয়ে এসে থাকার ব্যবস্থা করে ।
বাসা থেকে ৫ মিনিটের হাঁটার মধ্যে শপিং, রেস্টুরেন্ট, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এবং ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট এবং আর্ট গ্যালারি। হালিফ্যাক্সে ট্রানসিট বাস আরামদায়ক ; আমরা অধিকাংশ সময় ঘোরাঘুরি করে বিকেলের দিকে নিকটেই সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে গিয়ে আরাম করেছি। গালিব বইয়ের পোকা, লাইব্রেরিতে গেলে আর উঠতে চায় না। তাছাড়া তার লেখা বই এর কপি ( Fire in the unnamable country, Published by Penguin Canada ) এই লাইব্রেরিতে রয়েছে দেখে আমাদের আনন্দ লেগেছে। গালিব বলে আব্বু , পেংগুইন কানাডার বই সর্বত্রই পাওয়া যায়।
হালিফ্যাক্সে প্রতি মঙ্গলবার সিনিয়রদের জন্য বিনা ভাড়ায় শহরে বাসে বেড়ানোর সুবিধা রয়েছে। সেদিন ছিল মঙ্গলবার -আমি টিকেটের পয়সা দিতে চাইলে ড্রাইভার জানায় যে হ্যালিফ্যাক্স শহরে প্রতি সপ্তাহে একদিন সিনিয়রদের জন্য বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। বাসে তাকিয়ে দেখি আমার মতো অনেক সিনিয়র লোক আরাম করে বসে আছে গল্প করছে বা বাজার করে বাসায় চলে যাচ্ছে।
টরন্টো শহরের মতো হালিফ্যাক্সে রাস্তায় ট্যাক্সি বড়ো একটা দেখা যায় না। বেশির ভাগ লোক বাসে চলাচল করে। টরন্টো শহরের সাথে তুলনা করলে হালফ্যাক্সে বহুতল ভবন বড়ো একটা নজরে পড়ে না। অতি পুরানো শহর-বাড়িঘরের দিকে তাকালে মনে হয় ১০০ বৎসরের পুরানো বাড়িঘর। আমরা অক্টোবর মাসের শেষের দিকে গিয়েছি যে সময় ঠান্ডা শুরু হয়েছে; জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুন্দর আবহাওয়া এবং ভ্রমণকারীদের ভিড় থাকে।
আটলান্টিকের পাড়ে অভিবাসী (ইমিগ্রেশন) মিউজিয়াম দেখতে গেলাম, যেখানে ভিডিওর মাধ্যমে অতীতের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের (ইমিগ্র্যান্ট ) কানাডা আসার বৃত্তান্ত দেখানো হয়। কানাডা মূলতঃ একটা রেফিউজি কান্ট্রি, এখানে সব দেশের লোকই বাস করে । টরোন্টোতে আমার প্রতিবেশী এঞ্জেলো ১৯৪৬ কি ১৯৪৭ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইতালি থেকে শিপে হ্যালিফ্যাক্স এসে রেফিউজি ক্লেম করেছিল বলে গল্প শুনেছিলাম ।
১৯২১ সনের আদমশুমারি অনুযায়ী হালিফ্যাক্সের লোকসংখ্যা মাত্র ৩,৫০, ০০০ । হ্যালিফ্যাক্স কানাডার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর ও পর্যটন কেন্দ্র ।
সে যুগে নৌ এবং সেনাবাহিনীর কর্মীদের জন্য হ্যালিফ্যাক্সের প্রাথমিক মূল ভিত্তি ছিল, তবে এই বন্দরটি ব্রিটেন, উত্তর আমেরিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য আদর্শভাবে অবস্থিত এবং হ্যালিফ্যাক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ আমদানি-রফতানি কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এর আন্তর্জাতিক বন্দরের সাথে রেল সংযোগ করা হয়; আটলান্টিক কানাডায় অর্থ এবং শিক্ষাগত পরিষেবা কেন্দ্র হিসাবে অর্থনৈতিক অবস্থানকে বাড়িয়ে তোলে। টরন্টো থেকে ৩১ ঘন্টা একনাগাড়ে VIA রেলের মাধ্যমে যাওয়া যায়।
সামুদ্রিক প্রদেশের বৃহত্তম শহর হিসাবে, হ্যালিফ্যাক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয় , কিংস কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট মেরি বিশ্ববিদ্যালয়, এবং মাউন্ট সেন্ট ভিনসেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় । তাছাড়া এখানে অসংখ্য কমিউনিটি কলেজ রয়েছে।
দোকানে কর্মরত অনেক ভারতীয় ছেলেমেয়েদের সাথে দেখা হয়েছে , যারা পার্ট- টাইম কাজ করে অর্থ সংগ্রহ করে। টিমহর্টন্স এক কাপ পানির জন্য বলা হয়েছিল; ভারতীয় ওয়েট্রেস আমাকে পানির কাপে H2O লিখে সার্ভ করেছে , আমি একটু না হেঁসে পারলাম না। ছেলেমেয়েদের অধিকাংশই ভারতীয় পাঞ্জাব বা গুজরাটি , আমি অবাক হয়ে দেখেছিলাম কত পরিশ্রম করে পড়াশুনা করে। তা করবে না কেন ? পড়াশুনা শেষ হলে থাকার অনুমতি পাওয়া যায় এবং অনুমতি পাওয়ার তিন বৎসর পর নাগরিকত্ব দেয়া হয় -এমন সুযোগ কেউ কি হাতছাড়া করতে পারে? এ দেশে পড়াশুনার জন্য যারাই আসে- ফেরত যায় না। বাংলাদেশী কোনো ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেখা হয় নি বা সংখ্যায় অপেক্ষাকৃত কম। বাংলাদেশী ছেলেমেয়েরা এ সব সুযোগ নেয়া প্রয়োজন।
এক ভারতীয় ইউনিভার্সিটি ছাত্রী কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলো, সে তিনদিন বারঘন্টা করে এক হোটেলে কাজ করে নিজের থাকা-খাওয়া ও টুইশনির পয়সা রোজগার করে। হালিফেক্স এয়ারপোর্ট শহর থেকে অনেক দূরে ; সে শহর থেকে দুইটা বাস নিয়ে এয়ারপোর্ট এক হোটেলে কাজ করে রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে বাসায় ফিরে আসে। সে বলে এখানে জীবন অনেক কঠিন , দেশে থেকে আমরা বুঝতে পারি নি।তাছাড়া আটলান্টিক কানাডা অত্যধিক ঠান্ডা ও প্রচন্ড বরফ উপেক্ষা করে কাজে যেতে হয়। টরোন্টোতে সারা পৃথিবীর : কালো,সাদা,বিভিন্ন রঙের লোক নজরে পড়ে। তবে হালিফ্যাক্সে সাদা ইউরোপিয়ান লোক বেশি বলে মনে হয়েছে।
সমাপ্ত