আমাদের বাংলাদেশ শিক্ষায়, শিল্পে ,ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক এগিয়েছে। এই দেশ গত কয়েক বৎসরে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে, যার ফলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। দেশে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প ,মেট্রো রেল ও পরিবহন ব্যবস্থার অভুত উন্নতি হয়েছে।

এক সময় বিদেশীরা বাংলাদেশকে “তলাবিহীন ঝুড়ি” বলে বিদ্রুপ করতো এবং এ থেকে আজ বেরিয়ে দ্রুত (miracle development) অলৌকিক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এইতো বেশিদিন আগে নয় , গ্রামে মাটির, ছনের বা টিনের দোচালা কি চার চালা ঘর দেখা যেত। এলাকাতে পুরানো যুগের জমিদার বা প্রতাফশালী লোকদের ভাঙা দালান নজরে পড়তো। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে আজকাল মাটির বা ছনের ঘর নজরে পড়ে না; এমন কি আজকাল কেউ টিনের ঘর ও করতে অনাগ্রহী। প্রতি গ্রামে নজরে পড়ে সুন্দর সুন্দর অট্টালিকা ।মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে রুচির পরিবর্তন ও হয়েছে। সে যুগে ভাঙা রাস্তা দিয়ে গাড়ি থাক দূরের কথা,রিক্সায় ও যাতায়াত করা যেত না। রাতে রাস্তায় সাপ দেখা যেত,চলাফেরায় অসাবধান হলে সাপের ধ্বংসনে মানুষ মারা যেত। গ্রামে ছোট ছোট খাল, বাঁশের বা কাঠের সেতু ; সুদূর কানাডা থেকে দেশে যাবো; জুতা,প্যান্ট শার্ট পড়ে গ্রামে যেতে পারবো তো ? খালের উপর সরু বাঁশ বা কাঠের সেতু ; স্ত্রী এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে বাড়ি যেতে পারবো ? বিদেশ থেকে দেশে যাওয়ার পূর্বে এ সব ও ভাবতে হতো ; আজকাল এ সব ভাবনায় আসে না। আজকাল ভাঙা কাঁচা রাস্তার পরিবর্তে পাক্কা রাস্তা হয়েছে এবং প্রতিটি বাড়িতে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। প্রতিটি গ্রামে চলাচলের জন্য রিক্সা বা CNG, প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করা যায় ; আবার অনেকে শহর থেকে গাড়ি নিয়ে গ্রামে নিজেদের ইচ্ছানুসারে থেকে বেড়িয়ে আসে। আজকাল অনেকে শহরে না থেকে গ্রামে খোলামেলা সুন্দর পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে; গ্রামে পুকুর কেটে মাছের চাষ এবং সুন্দর দালান ও ফুল ও ফলের বাগান নজরে পড়ে।

আমাদের পরিশ্রমী ছেলেমেয়েরা দেশ বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করে টাকা পাঠায় এবং এই পরিশ্রমের টাকা দিয়ে মাবাবা,আত্মীয়স্বজন গ্রামে ও শহরে সুন্দর সুন্দর রুচিশীল বাড়িঘর করেছে। দেশে না গেলে কেউ এই পরিবর্তন ভালোভাবে লক্ষ্য করা যায় না। আমি অনেক দিন পর পর দেশে যাই বলে এই পরিবর্তন বেশি বেশি লক্ষ্য করি।


আজকাল গ্রামে ভিখ্খুক খুঁজে পাওয়া যায় না ; আর্থিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ সব উঠে গেছে। তবে শহরে ফকির গিয়ে জড়ো হয়েছে , ঢাকা শহরে ফকির দেখা যায়। গ্রামে অনেক লোক এত গরিব ছিল যারা পরের নিকট হাত পেতে সাহায্য নিতে ইতঃস্ত করতো না ; আজকাল তাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে বা দেশে কাজ করে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করেছে, এটা সত্যি গর্বের বিষয়।

দেশে কিছু দিনের জন্য গিয়েছিলাম :আমার মাবাবা এবং চাচা জেঠাদের মধ্যে আব্দুল মজিদ, আব্দুল আজিজ ছিলেন আমার অতি পছন্দের মানুষ। বাড়ির কথা মনে পড়তেই এদের ছবি আমার চোখের সম্মুখে ভেসে উঠে। গ্রামে যাদের সঙ্গে ছোট সময়ে বেড়ে উঠা, হাঁসি ঠাট্টা,গল্প করে সময় অতিবাহিত করেছি, তাদের প্রায় সবাই নাফেরার দেশে চলে গেছেন। যেখানেই গিয়েছি নতুন প্রজন্মদের সঙ্গে দেখা হয়েছে; এরা কেন জানি আমার সঙ্গে ততটা ঘনিষ্ট হতে পারে না, গত ৪০ বৎসরে আমি অনেক আপনজন হারিয়েছি, তাছাড়া নতুনদের কাছ থেকে ও দূরে সরে পড়েছি।

আজকাল গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে ; কেউ আগের দিনের মতো শুধু লাঙ্গল, গরু নিয়ে মাঠে গিয়ে ধান, পাট চাষ করে না। সে যুগে লোকজন নুতন নিয়মে চাষাবাদ করতে জানতো না বা সুযোগ ছিল না। আজকাল জমিতে কয়েকবার ফসল ফলানো হয় , তাছাড়া পুকুরে, খালে মাছের চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছে। যেখানে পানি, সেখানেই মাছের চাষ করা হচ্ছে। গ্রামে বা শহরে যেখানে সেখানে মাছ ,তরিতরকারি বা ফলফলাদি কিনতে পাওয়া যায়। শহরে বা গ্রামে বা চলাচলের রাস্তার পাশে নানা জাতীয় ফলের দোকান নজরে পড়ে। মনে হয় অচিরেই গ্রামগুলি ও শহর হয়ে যাবে।
আমাদের সে যুগে নির্দিষ্ট দিনে হাঁটে বাজারে গেলে মাছ মাংস বা তরিতরকারি কিনতে পাওয়া যেত বা পুকুর থেকে মাছ ধরে নিজেরা বা মেহমানদারী করা হতো । আজকাল গ্রামে ও ফেরিওয়ালা বা মাছ ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি মাছ, তরিতরকারি বা ফলফলাদি বিক্রি করে । এখন আর বাজারে না গিয়ে ও বাড়িতে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কিনতে পাওয়া যায়। সুযোগ সুবিধার দিক থেকে গ্রামগুলি শহরের মতো হয়ে উঠছে।

সে যুগে গ্রামের খাল দিয়ে বিয়ে যাত্রী বা কেউ কলের গান বা গ্রামোফোন (gramophone ) বাজিয়ে গেলে আমরা বাড়ির ছেলেমেয়ে বা বয়স্করা গান শুনতে ঘর থেকে বের হয়ে শুনতাম আর ভাবতাম যদি আর একটু শুনতে পারতাম। “মনমাঝি তোর বৈঠা নেরে, আমি আর বাইতে পারলাম না …” আরও কত ভাটিয়ালি ,পল্লী বা আধুনিক গান ! সারা গ্রামে ও একটা রেডিও খুঁজে পাওয়া যেত না। কেউ হয়তো বিদেশ থেকে রেডিও নিয়ে আসলে লোকজন ভিড় জমিয়ে গান বা খবর শুনতো। গ্রামে বাজারে চায়ের দোকানে গেলে গান শুনে বা খবর শুনে তুষ্ট হতাম। আজকাল ঘরে ঘরে টেলিভশন , তাছাড়া সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন ; গান শুনা, খবর শুনা কোনো ব্যাপারই না।
সে যুগে চিঠিপত্র লিখে প্রিয়জনের খবর নেয়া হতো ; এ যুগে মোবাইল ফোন ইমো,হোয়াটস্যাপ এক সেকেন্ডে খবর নেয়া যায়। বিদেশ থেকে চিঠি দেয়া হলে মাসের পর মাস চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় থাকতে হতো; পোস্ট অফিস গিয়ে ধর্ণা দেয়া হতো চিঠি বা মানি অর্ডারের খোঁজে। আপনজনের একটা চিঠি আসলে কত আনন্দ !

সে যুগে মা চাচীরা বা দাদীরা খড়কুটা, শুকনা পাতা, কাঠ,পাটখড়ি দিয়ে মাটির চুলায় রান্না করতো। গ্রামে গঞ্জে মা চাচিদের রান্নার কত কষ্ট, ধুঁয়ায় নাকের পানি, চোখের পানি এক করে রান্না করা কত কষ্ট, সে না দেখলে বুঝানো যাবে না। এ যুগে গ্রামে ঘরে ঘরে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে। তাছাড়া রান্না করা ভাত , মাছ তরকারি সব নষ্ট হয়ে যেত ; পুরানো খাবার চুলাতে গরম করে খাওয়া হতো ; শহরে সরকারি চাকুরী জীবিরা বিদেশে ট্রেনিং নিতে গেলে রেডিও,টেলিভশন বা ফ্রীজ নিয়ে আসতো ; তাও কত পার্সেন্ট লোক এ সুযোগ পেতো ? এ যুগে ঘরে ফ্রীজে খাওয়া রাখা হয় ; কোনো কিছুই নষ্ট হয় না। এক বেলা রান্না করে কয়েকদিন খাওয়া যায়। সে জন্য বলছি দেশে উন্নতির জোয়ার এসেছে। আজকাল গ্রামে ও কারো কারো বাড়িতে গ্যাসের লাইন গিয়েছে ; মহিলাদের আর রান্নার ভোগান্তি হয় না। অগ্রহায়ণ -পৌষ মাসে ধান কাটা শেষ হলে কৃষক জমি থেকে খড় এনে বাড়িতে সারা বৎসরের জন্য জমা করে রাখতো রান্নার জন্য। এ ছাড়াও ঝাড়ু নিয়ে গাছের শুকনা পাতা কুড়িয়ে এনে রান্না করতে কত দেখেছি। প্রতিটি বাড়িতেই পাটখড়ি জমা করা হতো রান্নার জন্য।

আমাদের সে যুগে প্রতি উপজেলায় ৩-৪টি গ্রাম মিলে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। শুস্ক মৌসুমে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হলে ও বর্ষার মৌসুমে নৌকা ব্যাতিত যাওয়া যেত না; কি যে কষ্ট করে স্কুলে গিয়েছি, সে আর কি বলবো। প্রতি উপজেলায় ৩-৪টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। আমরা যারা পড়াশুনায় আগ্রহী ,শুধু তারাই ভর্তি হতাম; মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে গিয়ে বা কারো বাড়িতে ছাত্র/ছাত্রী পড়াশুনা করানোর বিনিময়ে থাকা খাওয়া ব্যবস্থা করেছি। বর্ষার দিনে নৌকা ব্যতীত যাওয়া যেত না। মেয়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধার জন্য আর পড়াশুনা করতে পারতো না। আজকাল গ্রামে রাস্তা ঘাট , রিক্সা, ছেলেমেয়েদের আনা -নেয়ার জন্য টেম্পু গাড়ি আছে এবং প্রতিটি উপজেলায় ৫-৭টা কলেজ এবং টেকনিকাল স্কুল হয়েছে। তাছাড়া গ্রামে ইংলিশ মিডিয়াম (কিন্ডার গার্টেন) স্কুল হয়েছে যেখানে গ্রামের মাবাবা পয়সা খরচ করে, এমন কি টিউটর রেখে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা করায়। সে যুগে গ্রামে ১% মেয়েরা ও পড়াশুনা করতে পারতো না; এ যুগে সব মেয়েরাই পড়াশুনা এবং হাতে মোবাইল নিয়ে ঘুরে। কি সব আজগুবি ফেসবুকের দুনিয়া এসেছে -ফেসবুকে বন্ধু খুঁজে বেড়ায়।
১৯৬৩ সনে আমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে বাড়ি থেকে ২৫ মাইল দূরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হয়ে কুমিল্লা/ত্রিপুরা বর্ডারের নিকট থাকার ব্যবস্থা করেছি। পায়ে হেঁটে কলেজে আসা যাওয়া, গোমতী নদীর খেয়া পার হতে দৈনিক ৮ পয়সা বা দুই আনা খরচ করতে ও অনেক কষ্ট হতো। আজকাল ছেলে মেয়েরা সুদূর পাড়াগাঁয়ে নিজের বাড়িতে থেকে কলেজে বা টেকনিকাল স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা করতে পারে।
১০
সে যুগে গরিব/ ধনীর মধ্যে একটা ব্যবধান ছিল ; জমিদার, চৌধুরী তালুকদার, যাদের জমিজমা বেশি ছিল ওরাই গ্রামে কুলীন লোক বলে গণ্য করা হতো । ১৯৫৪ সনে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হওয়ার ফলে,”লাঙ্গল যার জমি তার “এই আইন চালু হয়;যার ফলে কৃষক সরাসরি জমির মালিক হয়। আজকাল অতি সাধারণ মানুষ বা ওদের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছে ; যার ফলে সামাজিক ব্যবধান হ্রাস পেয়েছে।
১১
বাঙ্গালীরা আবেগে প্রবন : অনেক সময় আমাদের বাঙ্গালীরা অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা দিয়ে বিচার বিবেচনা না করে কাজ করে। একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করি ;আমরা ছোটকাল থেকে দেখে আসছি, অনেকগুলি পরিবার এক বাড়িতে বাস করতো, যাদের ছিল গোলাভরা ধান , পুকুর ভরা মাছ এবং গোয়াল ভরা গরু। আজকাল অনেকেই আলাদা আলাদা পুকুর কেটে বাড়ি করেছে । গ্রামে প্রতিটি বাড়ির চারিদিকে খাল দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা ছিল। আজকাল দেশে গেলে এই খাল আর খুঁজে পাওয়া যায় না ; সব খাল খন্দক ভরাট করে যার যেভাবে খুশি বাড়ি করে ফেলেছে। এমন কি যে সব জমিতে ভালো ফসল হতো এবং সারা বৎসরের ফসল ফলানো হতো তা যার যেভাবে খুশি পুকুর কেটে পুরাতন বাড়িতে না থেকে নতুন বাড়ি করে পুকুরে মাছের চাষ করে ফলফলাদির গাছ লাগিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে। গ্রামে প্রতিটি ঘরে কেউ না কেউ মধ্যপ্রাচ্য বা অন্য কোনো দেশে থেকে কাজ করে টাকা পাঠায়। কারো বাড়িতেই পূর্বের ন্যায় গরু ছাগল দেখা যায় না, গোয়াল শূন্য । আগের দিনে গ্রামে হাঁটে বাজারে খাঁটি গরু দুধ পাওয়া যেত, আজকাল গাভী নাই, তাই দুধ নাই, পাউডার দুধ বা ডেইরি ফার্মের, তাও সর্বত্র পাওয়া যায় না। একটা গ্রামে আমাদের ছোট সময়ে ৭-৮টা বাড়ি ছিল যা আজকাল ১৫-১৬টা বাড়ি হয়েছে। সবাই যার যেভাবে খুশি খাস জমি,খাল ভরাট বা নিজের জমি কেটে বাড়ি করে ফেলতেছে । দেশে অপরাধ ও অনেক বেড়েছে ; জোর জবরদস্তি করে লোকজনের জমি দখল নিতেছে । দুর্বল লোকেরা মামলা করে ও কোনো ফল পাচ্ছে না ; বৎসরের পর বৎসর মামলা ঝুলতে থাকে।
করিম,রাহিম বা জব্বার সাহেবের নতুন বাড়ি থাকলে আমার থাকবে না কেন ?গ্রামে প্রায়ই পুরানো বাড়ি খালি পড়ে আছে। এর পরিণতি কি ? সমগ্র দেশের লোকসংখ্যা ১৭-১৮কোটি, এক থেকে দেড় কোটি বিদেশে থাকে। বিদেশ থেকে টাকা পাঠায় এবং যার যেখানে খুশি দালান করে ফেলতেছে এবং এটাকে যদি উন্নতি বলা হয়, আমার কিছুই বলার নেই; লোকসংখ্যার অনুযায়ী দেশ অনেক ছোট; হিসাব করে জমি নষ্ট করতে হবে। টাকা পয়সা থাকলেই মন চাইলে একটা নতুন বাড়ি, নতুন পুকুর করে মাছের চাষ করতে হবে। আমরা ছেলেরা সে যুগে মাঠে খাস জমিতে খেলাধুলা করতাম, বাড়ির বাহিরে খালে নৌকা রাখা হতো, নৌকা নিয়ে হাঁটে বাজারে বা এখানে সেখানে বেড়াতাম । সে সব খাস জমি বা খাল গেলো কোথায় ? সবাই যার যে ভাবে খুশি দখল করতেছে। এ সব দেখাশুনা করার জন্য দেশে কি কোনো আইন কানুন নেই বা থাকলেও আইনের প্রয়োগ নেই ?
১২
আমার কেন জানি পুরানো দিনে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে; সেই ছনের ঘর , মাটির বা টিনের ঘর;বৃষ্টি বা একটু ঝড় শুরু হলেই বিপদ,কখন চালা উড়িয়ে নিয়ে যাবে, ঘরে টুপ্ টুপ্ করে বৃষ্টির পানি পড়বে। ঘর উড়িয়ে নিয়ে যাবে সেই ভয়ে “আল্লাহুআকবার” ধ্বনি দিয়ে আজান দেয়া, ঝড় থামলে আম কুড়ানের ধুম, কাঁচা আর পাকা আম আলাদা করে চোকির নিচে রেখে দেয়া। বেশি জোরে বৃষ্টি হলে, পুকুর আর খাল থেকে কই বা টাকি মাছ লাফিয়ে উপরে উঠার দৃশ্য। এক পয়সা, দুই পয়সা জমিয়ে মুরুলী, বাদাম খাওয়া অথবা বায়োস্কোপ দেখা, ওই দিনগুলি অনেক সুন্দর ছিল। কোথায় গেলো সে সব খেলার সাথীরা যাদের সঙ্গে ছিল অন্তরঙ্গতা।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন