এই জায়গাগুলোতে আমার বার বার যেতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে সামারে। সাজানো গোছানো প্রকৃতির মাঝে, কি নিঃস্তব্দতা তবুও অন্য রকম সুন্দর আর অনুভূতিকে নাড়া দেয়, চিন্তা শক্তিকে শানিত করে, নিজেকে বুঝতে বা বোঝাতে শিক্ষা দেয়, চুপ করে অনুধাবন করা যায়। হ্যা এদেরও জীবন ছিল, অদম্য যৌবন ছিল। প্রেম ভালোবাসা সবই ছিল। কেউ বা জীবনকে দেখার আগেই চলে গেছেন সৃষ্টি কর্তার ডাকে।

আমাদের সবার প্রিয় ডাঃমোর্তূজার জানাজায় শরীক হয়েছি, লোক বেশী হবার কারনে ডাঃ মোর্তূজার জন্য ২ বার জানাজা পড়ানো হয়েছে। আগে আরেকজনের জানাজায় উপস্থিত ছিলাম, নিউইয়র্কে হুমায়ন আহমেদের। মেয়েদের জন্য আলাদা জায়গা থাকে কিন্তু ইমাম একজন, সেন্ট্রাল মাইকে একামত দেয়া হয়। এখানে তারাবী নামাজ, ওয়াক্তের নামাজ, জুম্মা নামাজ এভাবেই হয়। যাহোক আমি সৌদি বা আরাবদের মসজিদ ইসনা, পাকিস্তানিদের আলফালা আল ফারুক বসনিয়ানদের মসজিদে একই নিয়ম দখেছি।

তারপর সেমিট্রিতে গেলাম। এইখানে আগে গিয়েছি কিন্তু দাফন করার পুরো প্রক্রিয়াটি এবার দেখলাম। লাশ কবর স্থান বা সেমিট্রতে আনার পর দোয়া পড়া হয়। যার যার প্লট নাম্বার অনুযায়ী কবর আগেই করে রাখে মিউনিসিপালিটি থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক। ওটা তাদের চাকুরী, সেমিট্রি পরিস্কার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে দেখাশোনা সব তাদের দায়িত্ব । মোনাজাত শেষে আত্মীয়পরিজন, বন্ধুবান্ধব সবাইকে নিরাপদ দূরুত্ত্বে দাড়াতে হবে।
কবরের উপরে রেলের পাতের মতো রাখে, তার উপরে কফিন থাকে। একটা সুইচ থাকে সেটা অন করে দেয় আস্তে আস্তে রেলের পাতগুলো সরতে থাকে আর ফেতায় বাধা কফিনটা নীচে নামতে থাকে। মনে হলো অনেক নীচেই যায়। রেলের পাত টা সরিয়ে ফেলার পর ড্রেজার দিয়ে আস্তে আস্তে মাটিগুলো কবরে দেয়া হয়। ওদের কাজ শেষ হলে সবাই আবার কবরের কাছে গিয়ে দোয়া দরুদ পড়তে থাকে। এখানে মেয়েদের কবরস্থানে যেতে কোন নিষেধ নাই।
আমরা পরের দিনও গেলাম দোয়া করতে।

এখানে একটা বিশাল এলাকা জুড়ে Cemetery বা কবর স্থান। জায়গা গুলো নির্দিষ্ট থাকে। মুসলিম ( শিয়া,সুন্নী), ইহুদি, খ্রিস্টান,খ্রীস্টানদের বিভিন্ন গ্রুপের আলাদা জায়গা আছে। ব্যাপ্টিস্ট, ক্যাথলিক (রোমান, প্রোটেস্টেন্ট), আবার ওওয়েস্টার্ন খ্রীস্টানদের মধ্য আছে সাউদার্ন ইউরোপ, সাবসারাহান, ইস্টার্ন ইউরোপ, অর্থডক্স খ্রীস্টান সবারই আলাদা প্লট আছে।
আমি গিয়েছি আমার কলিগ মারা গেছেন যখন তাদের ( visitation এবং অন্তেষ্টিক্রিয়ায়, আমার খুব প্রিয় তপা বৌদি (হিন্দু) আরোও ২/১ জনের অন্তেষ্টিক্রিয়া হবার পরে মন্দিরে) । আমাদের মুসলিম বন্ধুরা অনেকেই যান।
প্রত্যেক ধর্মেরই রিচুয়াল কিছু বিষয় থাকে। বোঝার জন্য, জানার জন্যও যাই।
আমরা সবাই জানি গন্তব্য সবারই এক। মাঝখানে কিছু কাজ করে যেতে হয়। সৃষ্টি কর্তার বিধান আমাদের জন্য দিয়ে দিয়েছেন। বিচার হবে আত্মার। যার আত্মা পরিস্কার তার জন্য পুরুস্কার, আর যার আত্মা অন্যায় অত্যাচার অবিচারে লিপ্ত তার জন্য তিরস্কার।
কঠিন কিছুই না, শুধু ভালো কাজ করে যাওয়া। হিসাব নিকাশ তিনিই নিবেন।
সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই, ওইখানে কোন বিভেদ নাই।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন