১৯৫৮ সালে নির্বাসিত পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দর আলী  মির্জা তাঁর  বাকী জীবন লন্ডন, ইংল্যান্ডে নির্বাসনে কাটিয়েছিলেন, যেখানে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একটি ছোট পাকিস্তানি হোটেল চালানোর জন্য আর্থিকভাবে লড়াই করেছিলেন। এটি পাকিস্তানি মিডিয়া দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল যে ধনী নবাব এবং অভিজাত পরিবার থেকে আসা  মির্জা ইংল্যান্ডে দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করেছিলেন এবং তাঁর নিয়মিত আয় প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা ও  রাষ্ট্রপতি হিসাবে  £৩,০০০   পাউনড (বাৎসরিক) অবসরপ্রাপ্ত পেনশন ভাতার   উপর ভিত্তি করে কোনোক্রমেই জীবন ধারণ সম্ভব ছিল না।  তাঁকে  বিদেশী গণ্যমান্য ব্যক্তি যেমন ইরানের শাহ এবং আরও অনেকের কাছে হাত পেতে যা পেতেন তা দিয়ে কোনো রকমে   চলতে  চেষ্টা করতেন ।  লন্ডনের যে হাসপাতালে তিনি মারা যান, একবার দুঃখ করে   তাঁর ইরানি  স্ত্রী নাহিদকে বলেছিলেন: “আমরা চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারব না, তাই আমাকে মরতে দাও “। ১৯৬৯ সালের ১৩ নভেম্বর তার ৭০তম জন্মদিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান তাঁকে  পূর্ব পাকিস্তানে দাফন করতে অনুমতি দেননি। ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি রাষ্ট্রপতি মির্জার মরদেহ তেহরানে নিয়ে আসার জন্য লন্ডনে তার ব্যক্তিগত বিমান পাঠিয়েছিলেন, ইরানে  তাকে  রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়  জানাজা ও দাফন  করা  হয়েছিল।

পাকিস্তানে বিতর্কিত নির্বাচনের ইতিহাস  নতুন কিছু নয় , তবে এবারের (২০২৪) নির্বাচন সবেমাত্র হয়ে গেলো যা  সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ – একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জনাব ইমরান খান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এবং জনাব নেওয়াজ শরীফ অতীতের অপরাধমূলক দোষী সাব্যস্ত হয়ে স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছেন। এ  নির্বাচনে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতীক ব্যবহার করতে  দেয়া হয় নি , প্রার্থীদের ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসাবে দাঁড় করানোর সুযোগ দেয়া হয়েছে ।  সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর  স্ত্রী বুশরা খানকে আদালত  সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন  দেশের শরিয়া আইন অমান্য করে বিয়ে করার জন্য। উপরন্তু, অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি সম্পর্কিত আর এক দুর্নীতির মামলায় তাদের পৃথকভাবে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 ১৯৪৭ সন থেকেই পাকিস্তানে  রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে চলে আসছে; এ দেশে একজন প্রধানমন্ত্রী জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টোকে  ফাঁসি, দুইজন প্রধান মন্ত্রী জনাব লিয়াকত আলী খান ও জনাবা বেনজির ভুট্টোকে   দিনের আলোতে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে।  একজন প্রধান মন্ত্রী জনাব হোসেইন শহীদ সারোয়ার্দি ও একজন প্রেসিডেন্ট জনাব ইস্কান্দার আলী মির্জাকে নির্বাসন দিয়েছে এবং ওরা দুইজনই   বিদেশে মৃত্যুবরণ করেছেন।  

প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দর আলী মির্জা ও প্রধান মন্ত্রী হোসায়েন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উভয়েই বাঙ্গালী  এবং  পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও দুই নেতার রাষ্ট্রীয় সরকার পরিচালনার বিষয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং উভয় নেতাই ব্যাক্তিগত  দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ছিলেন, যা জাতির ঐক্যের ক্ষতি করেছিল। ইস্কান্দর মির্জা সেনা বাহিনী থেকে স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন ; অপরপক্ষে সোহরাওয়ার্দী একজন পোক্ত রাজনীতিবিদ ও গণতন্ত্রের মহানায়ক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী সাহেব রাজনৈতিক জীবনে হিন্দু- মুসলমান  দাঙ্গা থেকে আরম্ভ করে সব ধরণের প্রতিকূল আবহাওয়ার মোকাবেলা করেছেন , হিন্দু মুসলমান বড়ো বড়ো নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি-শেরে বাংলা একে ফজলুল হক,মৌলানা আব্দুল হামিদ খান  ভাসানী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ,মহন চাঁদ করমচাঁদ  গান্ধী, চিত্তরঞ্জন দাস  ও অনেকের সঙ্গে দক্ষতার সঙ্গে কাজ  করেছেন।  তাছাড়া তিনি একজন বাঙ্গালীর শুভাকাঙ্খী ছিলেন। অপরপক্ষে মির্জা সেনাবাহিনী জেনারেল থেকে সরাসরি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে যোগদান করেন। তিনি  একজন দক্ষ সেনা কর্মকর্তা ; তবে রাজনীতিবিধ নন এবং দুইজনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায়ই স্বাভাবিক।  

  ২  

ইস্কান্দর আলী মির্জার পূর্ব পুরুষ  মীর জাফরের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায়  না।  আমরা স্কুল জীবনে  নবাব সিরাজউদ্দৌলার নাটক করতাম এবং সে থেকে আমাদের মনে মীর জাফর সম্পর্কে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া জন্ম নিয়েছিল। তাঁর নবাব হওয়ার স্বপ্ন ও কর্মকান্ডে পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হয়। ব্রিটিশদের ভারতে উপনিবেশ স্থাপনে তাঁর ভূমিকা এবং মুঘল সাম্রাজ্যের চূড়ান্ত পতনে তাঁর হাত ছিল ; মীর জাফর ভারতীয় উপমহাদেশে বিশ্বাসঘাতক হিসাবে নিন্দিত ব্যক্তি , বিশেষত ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের বাঙ্গালীদের  মধ্যে তাঁকে  বিশ্বাসঘাতক হিসাবে দেখে । মীর জাফরের সাথে আরও কয়েকজন সেনা সদস্য-  ইয়ার লতিফ  খান, রায় দুর্লভ, উমিচাঁদ নবাবের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিলেন।  আলীবর্দী খানের উত্তরসূরি সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীর জাফর ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করেছিলেন যে তাঁকে বাংলার নবাব করা হবে শর্তে   ইংরেজদের সাহায্য করবে।  এই  যুদ্ধে বাংলার নবাবের পক্ষে ৫০,০০০ সৈন্য  ও  ইংরেজদের  পক্ষে মাত্র  ৩,০০০ সৈন্য  ছিল ; যুদ্ধে বিশ্বাস ঘাতকতা, গোপনে  মীর জাফরের সঙ্গে ইংরেজদের আঁতাত হওয়াই ছিল এর মূল পরাজয়ের   কারণ। ইংরেজদের সঙ্গে শর্ত অনুসারে  মীর জাফর যুদ্ধ মাঠ থেকে নিজের বাহিনীকে  পিছনে সরিয়ে নিয়ে  ব্রিটিশ সৈন্যদের ভূখণ্ডের পুরো সুবিধা দিয়েছিলো  ; ফলে ব্রিটিশ বাহিনী সিরাজের সৈন্যদের পরাজিত করতে সক্ষম হয় ও  নবাব সিরাজুদ্দৌলা পালিয়ে  প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে ধরা পড়ে   মৃত্যু দন্ডে দণ্ডিত  হয় ।

তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, ইস্কান্দর মির্জা ক্ষমতার অপব্যাবহার করে তাঁর সময়ের প্রধান মন্ত্রী  হোসায়েন শহীদ  সোহরাওয়ার্দি, ইব্রাহিম ইসমাইল চন্দ্রিগর ও  ফিরোজ খান নুন  এর কার্যকাল সংক্ষিপ্ত করেছেন।  শুধু তাই নয়, সেনা বাহিনী সিনিয়র (বাঙ্গালী) মেজর জেনারেল ইশফাকুল মাজিদ কে এড়িয়ে  তাঁর জুনিয়র মেজর জেনারেল আয়ুব খানকে চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রধান মন্ত্রী ও প্রধান সামরিক আইন (CML ) প্রশাসক  নিয়োগ দিয়ে ছিলেন ।নিয়োগ দেয়ার অব্যবহিত পরে মির্জা বুঝতে পেরেছিলেন যে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি।  তিনি এ ও বুঝতে পেরেছিলেন যে অন্যদের মতো ভয় দেখিয়ে আয়ুব খানকে বরখাস্ত করা যাবে না। তাই তিনি  ১৯৫৮,২৪শে অক্টোবর,  সংক্ষেপে আয়ুব খানকে প্রধান মন্ত্রীর ভূমিকায় স্থানান্তরিত করতে চেয়ে ব্যর্থ  হন।  জেনারেল আয়ুব খান  তীব্র  প্রতিবাদ করে তাঁর ক্ষমতার ব্যবহার করবেন বলে ধমক দিয়ে ও বসে না থেকে মাত্র তিন দিন পর ১৯৫৮ সালের ২৬-২৭ অক্টোবর মধ্যরাতে এক ডিভিশন সৈন্য পাঠিয়ে মির্জার প্রাসাদ ঘেরাও দিয়ে  ফেলে।  আগে থেকেই বিমান তৈরী করে রাখা হয়েছিল  এবং ২-৩ ঘন্টার মধ্যেই মির্জাকে ইংল্যান্ডে নির্বাসনে পাঠানো হয়।হয়তঃ  পূর্ব থেকে ইস্কান্দর মির্জা বুঝতে পারেন নি  তাঁকে ও সারোয়ার্দি সাহেবের মতো নির্বাসনে যেতে হবে।   ইস্কান্দার মির্জা প্রায়ই পাকিস্তানি ঐতিহাসিকদের দ্বারা সামরিক আইন জারির জন্য সমালোচিত হন। পাকিস্তানী রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ মনে করে ইস্কান্দর মির্জা সামরিক শাসন দিয়ে দেশের জন্য ভুল করেছেন ।   অনেকে মনে করেন তিনি তাঁর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক প্রতি -পক্ষকে প্রতিহিংসামূলক কঠোর শাসনের মুখে ঠেলে দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেই নির্বাসনে গেলেন।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনে ছাত্র শহীদ হওয়ার পর থেকেই  পূর্ব বাংলায় রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়।  পরবর্তীতে  ১৯৫৪ সনে পূর্ব পাকিস্তানে যে নির্বাচন হয়, তাতে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ মাত্র ৯ সিট এবং দলনেতা  নুরুল আমিন ও পাশ করতে পারে নি। শেরে বাংলা একে ফজলুল হক পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্য মন্ত্রী হলেন।    কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলন ও অর্থনৈতিক বৈষম্যতা নিয়ে আবহাওয়া চরমে  উঠে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য  মালিক গোলাম মোহাম্মদ (গভর্নর জেনারেল)  ইস্কান্দর মির্জাকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান সামরিক  শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন । শীঘ্রই তিনি পূর্ব পাকিস্তানে নতুন দায়িত্ব পেয়ে প্রাদেশিক   আইন পরিষদ বাতিল করেন এবং সামরিক আইন জারি করেন। তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তি প্রয়োগের ঘোষণা দেন এবং মওলানা ভাসানীকে পরিবেশ উত্তক্ত করার জন্য গুলি করার হুমকি ও দেন ; পূর্ব পাকিস্তানের  ৩০০ জনেরও বেশি রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেন। অচিরেই তিনি পূর্ব পাকিস্তানে  জনসাধারণের তীব্র  সমালোচনার মুখে   করাচি ফিরে  যেতে বাধ্য হন।  

ইস্কান্দার মীর্জার ছেলে  হুমায়ুন মির্জা তাঁর বাবা ও পূর্ব পুরুষদের ইতিহাস নিয়ে একটা জন্মবৃত্তান্ত  ”  From  Palessy to Pakistan  “পালাসি থেকে পাকিস্তান ” বই লিখেছেন।  এই বইতে তিনি কিছু ব্যতিক্রম  দেখিয়েছেন।  তাঁর মতে    ১৭৫৬ সালের ২০ জুন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যদের সঙ্গে নবাবের বাহিনীর  কলিকাতা ফোর্ট উইলিয়ামের যে যুদ্ধ বা  দাঙ্গা হয় তাতে    একটা ছোট্ট ব্ল্যাক হোল (১৪ × ১৮  ফুট বা   (৪.৩ মিটার × ৫.৫ মিটার )     কক্ষে  ৬৪ জন ব্রিটিশ  বন্দীদের রাখা হয়, এর  মধ্যে ৪৩  জন ডিহাইড্রেশন এবং দমবন্ধ হয়ে মারা যায়। সে সময় এ নিয়ে ইংল্যান্ডের  রাজদরবার এবং জনগণের মধ্যে বিশেষ আলোড়ন হয়। তাদের অভিমত, যুদ্ধকালীন বন্দিদের প্রতি কোনোক্রমেই  এ ভাবে শাস্তিমূলক আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। নবাব সিরাজুদ্দৌলা  আন্তর্জাতিক আইন  উপেক্ষা করেছেন, ফলে এর সঠিক জবাব যুদ্ধের মাধ্যমে দেয়া উচিৎ।  তখন থেকেই এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রবার্ট ক্লাইভ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। তাঁর লেখা অনুযায়ী সে সময় ভারতে মোঘল সম্রাট  বা নবাবদের অ-দক্ষ সেনাবাহিনীর দ্বারা ব্রিটিশ সৈন্যের মোকাবেলা করা সম্ভব ছিল না। ব্রিটিশরা সারা পৃথিবী অস্ত্রের মুখে উপনিবেশ তৈরী করেছে, ভারতে এমন কোনো শক্তি ছিল না, যা দিয়ে  যুদ্ধে ব্রিটিশের মতো শত্রুর  মোকাবেলা করতে পারে। 

সমাপ্ত

পূর্ববর্তী নিবন্ধ“Community Meal and Friendship for Better Community”
পরবর্তী নিবন্ধমার্চ ব্রেকে কোথায় যাবেন। এক ঢিলে দুই পাখি।
নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম - জন্ম:- ১৯৪৮ সাল । এনায়েতপুর, কচুয়া, চাঁদপুর, বাংলাদেশ। শিক্ষা:- এম, কম ( ব্যাবস্থাপনা ), ঢাকা ইউনিভার্সিটি। এম, এ (অর্থনীতি ) জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি। চাকুরী জীবন:-ইসলামাবাদ, পাকিস্তান,বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া,আমেরিকা ও কানাডা। বর্তমানে :- অবসর জীবন- কানাডাতে। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। প্রকাশিত বই:-আমার সংগ্রামী জীবন,সাদা ঘোড়া,জীবন চক্র,শুচিতা ও জীবনের মুখোমুখি।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন