ভালোবাসা প্রতিটা পদক্ষেপে কোন না কোন ভাবে সৃষ্টি হয়।  কোন না কোন ভাবে একধরনের অজানা ভালো লাগার সৃষ্টি হয়।  এ ভালো লাগাই একটা সময়ে তিলে তিলে বিন্দু বিন্দু কণা থেকেই জলের রূপ এ পরিণত হয়। কিছু ভালো লাগা ভালোবাসার আগেই ঝড়ে যায়, এখন অবাক লাগে মিথিলা কখনওই বলেনি,  হয়ত পাল্টা উত্তর কি হবে এটা ভেবেই।।। কাছের মানুষগুলোকে বুঝতে দেয়নি নিজেকে প্রকাশ করতে চাই নি।।।

সেই স্কুল জীবনে মিথিলার ধারে কাছে কখনও কেউ ভিড়তে পারতো না।  তার ভালো লাগা ছিলো ছঁবি আঁকা।  একটা সময় মিথিলা এই ছবি আঁকাকেই তার ভালোবাসায় রং তুলি দেবার চেষ্টা করলো।  কিন্তু আঁকায় সে পটু কখনওই না।  গরু আঁকলে মুরগি হয়ে যেতো,  আর মুরগি সে তো তেলাপোকার মতই কিছুটা ধরন হতো। সে আঁকবে ছবি???  ধীরে ধীরে ভালো লাগাটা মিলিয়ে গেলো অকপটে।স্কুল গন্ডী ছাড়ার আগে মিথিলা হঠাৎ কোচিং ক্লাস শেষ করে বের হবার পথে দুটিচোখ আর একটি হাত আবিষ্কার করলো।  চোখ দুটি তার দিকে তাকানো আর হাতটি বাড়িয়ে আছে তার অপেক্ষায়। আবির এর সাথে মিথিলার বন্ধুত্ব।  ১২/১৪ বছরের বন্ধুত্বে কখনও মিথিলা বলেনি তুই আমার ভালো বন্ধু সবার থেকে।

কলেজ থেকে ফিরে যখন তাকিয়ে দেখতো খাবার টেবিলে মা খাবার নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে তখনও বলতে পারিনি—                    মা আমি তোমাকে ভালোবাসি।।।।।।।

বাবা যখন বাইরে থেকে পছন্দের খাবারটা হাতে নিয়ে এসেই মিথিলার হাতে দিয়েছে তখনও বলতে পারিনি
বাবা আমি তোমাকে ভালোবাসি।।।।

ভুল করে যখন মিথিলা অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে তখন বোন তার অন্ধকার থেকে ঠেলে আলোর দিকে আপ্রাণ চেষ্টায় মগ্ন তখনও সে বোনকে বলেনি *** আমি তোকে ভালোবাসি।।।।।

আলো দেখেও যখন উঠার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে তখন ভাই তার নরম হাতটা শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছে।  তখনও সে বলেনি,  ভাই আমি তোমাকে ভালোবাসি।।।

কখনও বলেনি, বলা হয় নি,  কখনও হয়ত বলবেও না।  কারন মিথিলা এমনই। ।।।  প্রকাশহীন মানুষ। ।।  ভালোবাসলেই সেটা চিৎকার করে জানানোর প্রয়োজন করে না।  পড়ন্ত বিকালে নিজেকে ঝালাই করছিলো মিথিলা। ।।

একটা সময় মনে হলো অরুনেষকে সে কি ভালোবাসে???  না তাকে তার ভালো লাগে???  নাকি এক ছাদের তলে থেকে একধরনের মায়ার চাদরে আছে।  না কি দ্বায়িত্ব কর্তব্য এর মাঝে আছে???  মায়া তো পশুপাখিকে পুষলেও হয়।  হঠাৎ তার মনে হলো আমার প্রতি কি তার মায় না ভালোবাসা???

অনেকগুলো প্রশ্ন দানাবাধঁলো কিন্তু সবর্শেষে উত্তর টা একটা গোলোক ধাঁধার মাঝেই বিলিন হয়ে গেলো।।।

তারপরও মিথিলা একটু একটু করে ঐ মানুষটিকে ছায়ার মতন আগলে রাখতে চায় হয়ত এটাই ভালোবাসা।।।। দ্বি-পাক্ষিক না কি এক- পাক্ষিক সেটার মাপকাঠি না হয় নাই মাপল।।।  না হয় নাই জানলো,  না হয় নাই বুজলো তবুও তো পাতার রং ফ্যাকাসে না হয়ে সবুজ হলো।

কতবার তোর আয়না ভেঙেচূড়ে, ঘুরে তাকাই
আমার মতে তোর মতন কেউ নেই।
কতবার তোর কাঁচা আলোয় ভিজে, গান শুনাই
আমার মতে তোর মতন কেউ নেই।।।।

প্রসার কুকারের সিটির আওয়াজ তার সব কিছু তন্দ্রার ঘোর কেটে বাস্তবে ফিরলো।

ভালোবাসা প্রতিটা মূহুর্তের,  প্রতিটা ক্ষনিকের,  একটা দিনের জন্য ভালোবেসে মানুষ দেখায় কি লাভ।  কাছের মানুষগুলোই আমার। আমার জিনিস শুধুই আমার ওখানের দখল কারো না।

ভালোবাসা ভালোবাসে তাকেই, ভালোবেসে ভালোবাসা বেধে যে রাখে…….

***নীলিকা নীলাচল ***

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন