নরওয়ে থেকে:-
সময় মতো সিদ্ধান্ত এবং সামাজিক দূরত্ত বজায় রাখার জন্য নরওয়েতে আজ পর্যন্ত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মাত্র ৭৫৭২ জন এবং মৃত্যু বরণ করেছেন মাত্র ২০১ জন,, নরওয়ের দু চারটা হাসপাতাল ব্যতীত বেশিরভাগ হাসপাতালগুলো গ্রীন সিগন্যাল দেয়ার কারণে কালকে থেকে নরওয়ের অনেক শহরে পরীক্ষামূলকভাবে শিশু বিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। আর সব কিছু ঠিকঠাক মতো চললে পর্যায়ক্রমে হাই স্কুলগুলো এবং উনিভার্সিটিগুলোও খুলে দেয়া হবে। তবে ঝুঁকি কমানোর জন্য নরওয়ের ১৭ মে ন্যাশনাল ডে প্যারেড সহ গ্রীষ্মে যত রকমের গান, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্টানগুলো হওয়ার কথা সব কিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সারা দেশের ব্যবসা প্রতিষ্টান এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বিশাল অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও বিশ্বের অন্নান্য দেশের সাথে তুলনা করলে নরওয়ে করোনা সংক্রান্ত মৃত্যু মিছিল থামাতে পুরোপুরি সফল হয়েছে বলা যায়।
বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রুগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৫৭৭২ জন এবং করোনা ভাইরাসের কারণে এ পর্যন্ত ১৪৫ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। বিশাল জনসংখ্যার ছোট্ট একটি দেশে এতো কম আক্রান্ত এবং এতো কম মৃত্যর সংখ্যা সত্যি আশ্চর্যজনক। করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের সরকার, বাংলাদেশের ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থকর্মী, পুলিশ প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, এবং বাংলাদেশের আপামর জনগণ এখন পর্যন্ত সফলই বলা চলে।
৯০% মুসলমান জনগণের দেশ বাংলাদেশে রমজান মাস বিশেষ একটা মাস এবং এই মাসটা সব সময়ই কোলাহলময় এবং উৎসব মুখর থাকে। তবে কষ্ট করে হলেও যদি দেশে বসবাসকারী সবাই আর একটা মাস সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ সংক্রান্ত নিয়মাবলী মেনে চলতে পারেন এবং যতটুকু সম্ভব ঘরে থাকতে পারেন তবে আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সফলভাবে বিরাট একটা মৃত্যু ঝুঁকি থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। নিজেদের ছেলে মেয়ে, মা বাবা সবাইকে নিয়ে আমরা সবাই বাঁচতে চাই। মহামারিকালীন এই মৃত্যুপুরীতে কষ্ট করে হলেও সবাইকে আইন মানতে হবে,, সামান্য কয়েকটা মাসের জন্য আইন মেনে চলার কারণে আমরা আমাদের পরিবার, পরিজন সহ পুরো জাতিকেই মৃত্যুকূপ থেকে টেনে তুলতে পারবো। আর আমরা যদি বেঁচে থাকতে পারি, তবে একবার কেন হাজার হাজার বার নামাজ পড়তে পারবো, ঈদ করতে পারবো এবং বন্ধু বান্ধব নিয়ে সারা দেশ ঘুরে বেড়াতে পারবো।
আমরা প্রবাসীরা বাংলাদেশে ফেলে আসা পরিবার পরিজনদের জন্য সব সময় চিন্তিত থাকি,, আপনারা একটু ধর্য্য এবং একটু দায়িত্ববোধ দেখিয়ে নিজেরা বাঁচুন। আপনারা যদি ভালো থাকেন, বাংলাদেশ যদি ভালো থাকে তবে সুদূর এই পরবাসে আমরাও ভালো থাকবো।
ভালো থেকো ( হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, ক্রিস্টিয়ান) সব ধর্মের সম্মানিত দেশবাসী,
ভালো থেকো প্রাণের প্রিয় বাংলাদেশ।