এই আক্ষেপটি করে জয়োৎসবে মেতে উঠল আমার আমার ছেলে অর্ণব। খেলা ও দাওয়াতে একটি অলিখিত নিয়ম হচ্ছে আমন্ত্রিত হলে আমন্ত্রণ জানাতে হয়। এই দাম্ভিক অস্ট্রেলিয়ানরা সে সৌজন্যতা দেখায়নি। গত এক যুগেরও অধিক সময় ওঁরা আমাদের খেলতে আমন্ত্রণ জানায়নি।

বাঘের বাচ্চারা এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিচ্ছে গতকাল থেকে। পাঁচ সিরিজের ২য় খেলা এই মাত্র শেষ হলো। আমি এতো বেশি আনন্দিত ও উত্তেজিত যে টাইপ করতে যেয়ে হাত কাঁপছে।

বিশেষ করে , আজকের যে জিনিসটি আমাকে সবচেয়ে আনন্দ দিয়েছে সেটা হচ্ছে বাঘের বাচ্চারা উইকেট হারালেও কোনোরকম ভয়ডর না করে খেলেছে বুক চেতিয়ে। খেলেছে একের পর এক বাহারি সব শট। আফিম হোসেনের দৃষ্টিনন্দন ৪ এর মাধ্যমে ৮ বল হাত রেখে ৫ উইকেটে আজ জিতে গেল বাংলাদেশ !!! পরম করুনাময়ের কাছে ধন্যবাদ, এ জীবনে এমন জয়ও দেখে যেতে পারলাম !!!!

আজকের খেলায় বাংলাদেশ ইনিংসের উল্লেখযোগ্য অবদান, আফিফের অপরাজিত ৩১ বলে ৩০, মেহেদী হাসানের ২৪ বলে ২৩, নুরুল হাসানের অপরাজিত ২১ বলে ২২ এর পাশাপাশি সাকিবের ১৭ বলে ২৬ । বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বলার মিচেল স্টার্ক এর বলে সাকিবের পরপর তিনটি ৪ মারার দৃশ্য যারা দেখননি তাঁরা অনেক আফসোস করতেই পারেন।

এর আগে বল হাতেও জ্বলে উঠেছিল, বাঘের বাচ্চারা। মুস্তাফিজ, শরিফুল, মাহ্দী হাসানের আগুন ঝরানো বোলিং এর তোপে মাত্র ১২১ রানে ক্যাঙ্গারুদের বেঁধে ফেলে বাঘের দল। মুস্তাফিজ ৪ ওভার বোলিং করে ৫.৭৫ ইকোনোমিক রেটে মাত্র ২৩ রানের বিনিময়ে মূল্যবান ৩ টি উইকেট নিয়ে অসি শিবিরে ধস নামান। শরিফুল ২৭ রানের বিনিময়ে নিয়েন ২ টি উইকেট। সাকিব ও মাহ্দী নিয়েছেন একটি করে উইকেট। গতকালের মতো আজও সৌম  ব্যাট ও বলে জ্বলে উঠতে পারেননি। মোহাম্মদ উল্লাহ জ্বলে ওঠেনি। সেই আফসোস করার আমাদের সময় নেই । আজ আমরা বাংলাদেশিরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন মেতে উঠবো এই আনন্দ জয়ের বুনো উৎসবে।

গতকাল বাংলাদেশের তরুণদের ১৩১ রানের টার্গেট ফেস করতে যেয়ে মাত্র ১০৮ রানে অল আউট হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছিলো ক্যাঙ্গারুর দল। অস্ট্রেলিয়ানদের এই দলে ডেভিড ওয়ার্নার, এরোন ফিঞ্চ দের মতো সিনিয়র প্লেয়ার না থেকেও নিয়মিত প্লেয়ারদের অনেকেই খেলছেন এই দলে যাদের আইপি এল খেলার অভিজ্ঞতা আছে । অপরদিকে, বাংলাদেশে খেলেছে তামিম, মুশফিক ছাড়াই। অস্ট্রেলিয়ানদের দম্ভকে মাটিতে মিশে দিয়েছে আজ আমাদের তরুণেরা।

জয় বাংলাদেশের ক্রিকেট । আপদে -বিপদে ও খুশিতে আমরা আছি তোমাদের সাথে!!!!!


 (ছবি: সংগৃহীত)

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিয় বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধজীবনের সংগ্রাম-পর্ব ৬
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন