ধন্যবাদ জাকারিয়া ভাই। আমি যদিও খুব বেশি ফ্রয়েড ভক্ত নোই তথাপি আপনার বিশ্লেষণের জন্য আপনি যে বিষয়গুলিকে বেবহার করেছেন সেগুলির সাথে একমত। সমস্যা হোলো আমল করা নিয়ে, সক্রেটিস হাজার বছর আগে বলে গেছেন ” know thyself ‘ তাছাড়া সম্ভবত সব ধর্মেই এবং সব সমাজেই (self-deprecation) আত্ম সমালোচনা এবং আত্মবিশ্লেষণের কথা বলা হয়েছে এবং আমরা বলতে গেলে সবাই সেটা জানি এবং অন্যকে বলিও কিন্তু অনুশীলন করি না। আর এই আত্ম সমালোচনা এবং আত্মবিশ্লেষণের সাথে সাথে আমাদেরকে আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে হবে।
আমাদের আসে পাশে যা ঘটে তার উপর বা কেউ কিছু করলে তার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নাও থাকে পারে কিন্তু একটি জায়গাতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই আছে সেটা হল আমাদের নিজের তথা নিজের প্রতিক্রিয়ার প্রতি এবং সেটা যদি করা যায় তাহলে অনেক সমস্যা এবং সংঘাত এড়ানো সম্ভব।
আমার প্লেসমেন্ট স্টুডেন্টদেরকে আমি ক্রাইছেস ইন্টারভেনশন বা কনফিলক্ট রেসুলেশন এর নাম্বার ওয়ান যে জিনিসটি শেখাই সেটা হলো ক্রাইছেস হ্যান্ডেল করা বা কোনো কনফ্লিক্ট হ্যান্ডেল করার আগে নিজেকে প্রথম শান্ত করা তা না হলে ক্রাইছেস হ্যান্ডেল এর পরিবর্তে নতুন ক্রাইছেস তৈরী হবে এবং নিজে তাতে জড়িয়ে পড়তে হবে।
চৈনিক ভাষাতে ক্রাইসিস লিখতে দুইটি চিহ্ন বেবহার করা হয় অর্থাৎ এই দুইটি শব্দ একসঙ্গে ক্রাইছেস বা সঙ্কট বোঝায় কিন্তু দুইটি চিহ্নর আলাদা করলে একটির মানে হলো বিপদ এবং অপরটির মানে হোলো সুযোগ, তাই ঠিকমতো হ্যান্ডেল করলে ক্রাইছেসকে সুযোগে পরিনিত করা যায় আর তা না হলে সেটা বিপদে পরিনিত হতে পারে।
আমরা বর্ডার লাইন পার্সোনালিটির মানসিক রুগী না হলেও সম্ভবত কম বেশি সবাই narcissist বা নিজেকে ভালোবাসি এবং তাতে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু সমস্যাটা তখনই হয় যখন এই ভালোবাসার মাত্রাটা একটু বেশি হয়ে যায়, এবং মাত্রাটা বেশি হওয়ার কারণে আমরা নিজের ত্রূটি দেখার ক্ষেত্রে প্রায় অন্ধ হয়ে যাই আবার অন্যের ত্রূটি ধরার ক্ষেত্রে খুব তৎপর থাকি। বিশেষ করে আমাদের সমাজে এটা এমন করে গেড়ে বসেছে যে অনেক ক্ষেত্রে কেউ যদি তার ত্রূটি মেনে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলে অনেকে তাকে দুর্বল মনে করে। আগেকার দিনে বিনয় বা নমনীয় জিনিষগুলি ছিল কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কারণে সেটা আর নেই তাই এখন দৃষ্টের উপর ভরসা না করে আমাদেরকে এর চর্চা শুরু করতে হবে, এবং সেটা একেবারে পারিবারিক পর্যায় থেকে।
আমি বড়ো, মুরব্বি, শিক্ষক, নেতা তাই আমার কোনো ভুল হবে না বা থাকবে না এই ধারণাটি বদলাতে হবে এবং সেটার অনুশীলন ছোটরা না দেখলে তারা বড়ো হলে মনে করবে তাদের কোনো ভুল হয় না বা ভুল হলে শিকার করাটা দুর্বলতার লক্ষণ।
আবারো ধন্যবাদ জাকারিয়া ভাই আপনার গুরুত্বপূর্ণ লেখার জন্য, আপনি বা আমরা একদিনে সব কিছু বদলে দিতে পারবোনা এবং সেটা সম্ববও না তবে অন্তত পক্ষে এধরণের লেখা যদি দু একজনের মধ্যেও আলোচনার জন্ম দেয় তাহলেই তো শুরু!
মুকুল টরন্টো ২০১৬
Thanks Mukul vai.