আখ্যান ৩:
আমার বাসা থেকে কলেজের দূরত্ব মাত্র(!) ২৬৩ কিমি!যেতে সময় লাগে ৩ঘন্টা ৩৭ মিনিট,আসতে সময় লাগে ৩ঘন্টা ৩৭ মিনিট (১মিনিট বেশিও না ১মিনিট কমও না)!ইউরোপের হিসেবে প্রতিদিন এইরকম ভ্রমণ পাগল ছাড়া কেউ করে না!বিদেশী যারাই শোনে এই প্রতিনিয়ত ভ্রমণের কথা, সবাই বলে ‘আর য়ু ক্রেজি?’…আমি মনে মনে হাসি…ঢাকায় বড় হইছি,ট্রাফিকজ্যাম কি জিনিস আমি জানি,এই ভ্রমণ আমার কাছে পান্তাভাত!জ্যাম থাকলে মতিঝিল টু জাহাঙ্গীরনগর যেতে কখনো কখনো এর থেকে বেশি সময় লাগতো!
যাই হোক এই ভ্রমণে আমাকে বাল্টিক সাগরের ৩টি সেতু অতিক্রম করতে হয়!এর মধ্যে সব থেকে আকর্ষণীয় সেতু হল ‘ওরেসুন্দ’!এটি ডেনমার্কের কোপেনহেগেন আর সুইডেনের মালমোর সংযোগ সেতু!মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিমি,যার ৮ কিমি পানির উপরে আর বাকি ৪কিমি পানির নিচে!মালমো থেকে কৃত্রিম দ্বীপ পেবারহোম (এই দ্বীপটা বানানো হয়েছে শুধুমাত্র এই সেতুর কারণে) পর্যন্ত সেতু তারপর ওখান থেকে কোপেনহেগেন এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সুড়ঙ্গপথ!সেতুর উপর দিয়ে যখন সাগর দেখতে দেখতে কলেজ যাই তখন চিন্তা করি যে কে ভেবেছিল এই আমি পড়ালেখার জন্য সাগর পাড়ি দেব!ঈশ্বর বাবুও মনে হয় সেটা করেন নাই (খালি উল্টাপাল্টা বোঝেন আপনারা,আমি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাবুর কথা বলছি) !
ফটো গুলো আমার তোলা নয়!গুগল থেকে ধার করা।
এক অদ্ভুত singer।
মনে আছে ইন্ডিয়ান আইডল বা বাংলাদেশী আইডলের কথা ( আমেরিকান আইডল থেকে অনুপ্রাণিত )আশা করি মনে থাকার ই কথা সবার।এখন শোনাবো সেই অনুষ্ঠানের ইউরোপ সংস্করণ Eurovision song contest এর ২০১৪ সালের বিজয়ীর কথা।
‘কনচিতা ওসত'(Conchita Wurst) জন্মে ছিলেন অস্ট্রিয়াতে ১৯৮৮ সালে। যদিও জন্মের পরে বাপ মা তার নাম দিয়েছিল ‘ঠমাছ নাইউঠ'(Thomas Neuwirth) ডাক নাম ‘টম’।ছোট বেলা থেকেই ফ্যাশনের প্রতি তার অতিতর আকর্ষণ।তার ফ্যাশন প্রতিমা ছিল ডেভিড ব্যাকহাম সাহেবের অর্ধাঙ্গী মিসেস ‘ভিক্টোরিয়া ব্যাকহাম’।
২০১৩ সালে অস্টি্রয়ার জাতীয় সম্প্রচার কার্যকর্তাগণ তাকে মনোনীত করে নিজ দেশের প্রতিনিধি হয়ে Eurovision song contest ২০১৪ তে অংশগ্রহন করার জন্য।তাকে মনোনীত করা নিয়ে সারা পূর্ব ইউরোপে বিতর্কের সৃস্টি হয় এবং সবাই সমালোচনা করতে থাকে। কিন্তু সবার মুখবন্ধ করে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিপুল পয়েন্টে বিজয় লাভ করেন তিনি।
৫১ বছর পর Eurovision তার হাত ধরে অস্ট্রিয়ার আসে।সর্বশেষ এসেছিল ১৯৬৬ সালে।
ব্যক্তিগত জীবনে সে নিজেকে ছেলে ও মেয়ে (উনি ব্যতিক্রম!) দুটোই মনে করেন।(ব্যতিক্রম বলছি এই কারনে ,অনেক পুরুষ সমকামী নিজেকে মেয়ে হিসেবে অথবা নারী সমকামী নিজেকে ছেলে হিসেবে দাবী করে।উনি নিজেকে পুরুষ ও নারী উভয় ই দাবী করেন।অবশ্যই তার প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেই লেখা টা লিখেছি!)তাই তিনি দাড়ি কাটেন না ও মেয়েদের পোষাক পরেন।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে মধ্যমারা বরিষ্ঠ!!