তমাল একটুর জন্য বাস মিস করে হতবম্ব হয়ে বাস স্টপে দাঁড়িয়ে আছে। আজ বোধ হয় কাজে লেট হয়ে  গেলো। আজ আবার ম্যানেজারের কথা শুনতে হবে। ক্রিস্টমাস সিজনে স্টোরে প্রচুর ব্যাস্ততা, তাই আজকাল এজেন্সি থেকে প্রায় প্রতি দিনেই কাজে ডাকছে। সঙ্গত কারণেই কোন স্টাফের লেট ম্যানেজারকে রাগিয়ে তোলাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার মানে এই না মুখ খারাপ করে কথা বলতে হবে। প্রথম প্রথম এদেশে এসে এখানে পথে ঘটে লোকজনের বিশ্রী রকমের মুখ খারাপ করা কথা শুনে তমাল বেশ অবাক হয়েছিল। দুই তিনটা কথার মধ্যে তিন চার বার ‘এফ’ ওয়ার্ড থাকা চাই। তমাল তাই আক্ষেপ করে বন্ধু পরাগকে বলেছিলো, ‘দোস্ত, আমাদের দেশ গরিব হতে পারে, তোদের এখানকার চেয়ে শিক্ষার হার অনেক অনেক কম হতে পারে কিন্তু আমাদের লোকেরা পথে ঘাটে তোদের এখানকার মতো অফিস আদালতে এরকম’ ‘এফ’ ওয়ার্ড ব্যাবহার করে কথা বলে না।’

নিয়ম অনুযায়ী ওন্টারিওতে সোশ্যাল এসিস্ট্যান্সের ভাতা খেলে মাসে দুই শত ডলারের বেশি কাজ করে আয় করার সুযোগ নাই। কেউ যদি সোশ্যাল এসিস্ট্যান্সে থেকে মাসে দুই শত ডলারের উপর আয় করে তবে আয়কৃত প্রতি এক ডলারের জন্য পঞ্চাশ সেন্ট সরকারকে ফেরত দিতে হয়,এবং ইনকামের পে স্টাব্স রিপোর্টিং এর সময় দাখিল করতে হয় । বন্ধু পরাগের পরামর্শ অনুযায়ী তমাল তাই এজেন্সির সাথে আগেই রফা করেছে যাতে পে স্টাব্স না দিয়ে ক্যাশে পে করা হয়। তমালের ধারণা, বেঁচে থাকার জন্য এসব সাদা মিথ্যা অল্প কিছু বললে অসুবিধা কোথায়! আর তাছাড়া সে তো সারা জীবনের জন্য এসব করছে না, নেক্সট ইয়ারে সোশ্যাল এসিস্টেন্স থেকে বেরিয়ে একেবারে OSAP নিয়ে ফুলটাইম পড়তে যাবে, আর পড়া শেষে জুতসই একটি চাকরি ম্যানেজ করতে পারলে আর পায় কে!!

আজ কাজের জায়গায় যেতে দেরি হওয়ার জন্য ম্যানেজারের মুখে খারাপ গালি শোনার সমূহ সম্ভবনার কথা ভেবে তমালের মন খারাপ হয়ে গেল। পরের বাস যে কতক্ষনে আসে তার ঠিক নাই। রাস্তা দিয়ে সাই সাই করে একেকটি গাড়ি যাচ্ছে আর তমাল হা করে তাকিয়ে আছে, আহা! কোনো একটি গাড়ি যদি থেমে রাইড দিতো !! তমাল একবার ট্যাক্সির কথা ভেবেছিলো কিন্তু টাকা/পয়সার কথা ভেবে আর ট্যাক্সি কল করেনি, এমনিতেই মিনিমাম ডলারের কাজ তার মধ্যে আবার ট্যাক্সিতেই যদি ২০/৩০ ডলার চলে যায়, হাতে থাকে কি !

তমালের কপাল ভালো গত কয়েকদিন ধরে ঠান্ডাটা কিছুটা কমেছে, না হলে এই ঠান্ডায় নেক্সট বাসের জন্য অপেক্ষা করতে যেয়ে রক্ত হিম হয়ে যেত। তমালকে যেতে হবে 116 নাম্বার বাস ধরে কেনেডি সাবষ্টেশনে, সেখান থেকে পনেরোটি স্টপেজ ডিঙিয়ে আধাঘন্টা পরে সেন্টজোর্জে নেমে ট্রেন চেঞ্জ করে ডাউন্সভিউয়ের দিকের আরেকটা ট্রেন ধরে পরে আবার 84 বাসে চড়ে সেপার্ড রাস্তায় প্রায় বিশ মিনিট খানিক যেয়ে তবে তার ফ্যাক্টরি। প্রায় ঘন্টা দুয়েকের পথ।

নিজের বোকামির জন্য তমালের নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছা হচ্ছে। বেজমেন্ট থেকে বের হওয়ার পথে বাড়িওয়ালা সোবহান সাহেবের সাথে সাত সকালে দেখা। ফজর নামাজ পরে সোবহান সাহেব বাড়িব সামনে রাস্তার উপর গার্বেজের বিন রাখছিলেন। আজ আবার গার্বেজ ডে। তমাল ইচ্ছা করলে যাষ্ট সালাম দিয়ে পাশ কেটে চলে গেলেই আর এই বাস মিস করতে হতো না। তমাল যেই না আগবাড়িয়ে বলতে গেল, ‘আংকেল, কালকে থেকে দেখছি উপরে বেশ শব্দ হচ্ছে, ঘর বাড়ি বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন, ব্যাপার কী?’ সোবাহান সাহেব অমনি বলা শুরু করলেন, ‘আজ দুপুরে তোমার আন্টি আসছে ফ্লোরিডায় মেয়ের বাড়ি থেকে, এই কয়েকদিন ম্যারিড ব্যাচেলর হিসাবে বাড়ি ঘরের যা অবস্থা করেছি। তোমার আন্টি এলে চাকরি নট হয়ে যাবে, বুঝলে আংকেল এসব দেশ হচ্ছে হান্ড্রেড পার্সেন্ট মহিলাদের হাতে, আইন আদালত সুযোগ সুবিধা সব মহিলাদের পক্ষে, খুব সাবধানে চলবে আঙ্কেল, ধরা খেয়েছেতো, জীবন একেবারে সালফিউরিক এসিডের চেয়োও ভয়াবহ হয়ে যাবে হাহাহা ! নতুন এসেছোতো, ধীরে ধীরে সব বুঝবে ……।’

অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে প্রায় একুশ মিনিট দেরিতে কাজের জায়গায় উপস্থিত হয়েও ম্যানেজার তমালকে হাসিমুখে বললো, ‘হ্যাপি বার্থ ডে মিস্টার তমাল’। তমাল ভুলেই গিয়েছিলো আজ ডিসেম্বরের বার তারিখ। আসলে এটি অরিজিনাল বার্থ ডে না বলে তমালের এই দিনের কথা মনে থাকে না। কাজের জায়গায় এই একাডেমিক বার্থ ডে ডেট দেওয়া ছিল, তাই ওরা মনে রেখেছে। আজকাল শুধু এসব দেশই না সারা দুনিয়ায় সবাই বার্থডে পালন নিয়ে বেশ মাতামাতি করে, যেন এই সুন্দর পৃথিবীতে আগমনী দিনটিকে ভালোবেসে স্বরণীয় করে রাখতে চায়, অথচ পৃথিবীর মানুষ যদি সত্যিকারভাবে এই পৃথিবীকে ভালোবাসতো তাহলে সেই সৌন্দর্য বজায় রাখার হাজার হাজার পথ খোলা ছিল, সেসব রাস্তায় হাঁটলে পৃথিবীটি সত্যই সবার উপভোগ্য হয়ে উঠতো !!

তমালের অরিজিনাল বার্থ ডে হচ্ছে বৈশাখ মাসে বুধবার, তবে তারিখ কেউ সঠিক ভাবে মনে করতে পারে না । তমাল মায়ের কাছে শুনেছিলো ওর জন্ম হয়েছিল এক কাল বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির রাতে। সেদিন ঝড়ে পাড়ার ট্রান্সফরমার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হওয়ায় বাসায় ইলেক্ট্রিসিটি ছিল না। বাবা বগুড়া পৌরসভার হেড ক্লার্ক তৈয়বুর রহমান সন্ধ্যার সময় ছাতা মাথায় দিয়ে টর্স লাইট জ্বালিয়ে ধাত্রী মোমেনা বেগমের সন্ধানে বের হয়েছেন, এখনো ফেরেননি। পাশের একটি ছোট রুমে মেঝেতে খড় বিছিয়ে তার উপর একটি বিছানা চাদর পেরে তমালের আম্মা জামিলা খাতুনকে শুয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসব বেদনার তীব্র জ্বালা যন্ত্রনায় জামিলা বেগম ছটফট করছেন, আর গগনবিদারী চিৎকার করছেন। তমালের বুবুর বয়স তখন মাত্র নয় বছর। ভয়ে ফ্যাকাসে হয়ে বুবু তখন দুই চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে । ওদিকে ঘন্টা খানিক বাদে তমালের বাবা ধাত্রীকে নিয়ে বাসার সামনে আসতেই বাতাসের দমকায় ছাতা উল্টিয়ে দুজনেই ভিজে একাকার অবস্থা। তৈবুর রহমান ও ধাত্রী দুইজনেই যখন কাক ভেজা হয়ে বাসায় এলেন, ততক্ষনে তমাল ভূমিষ্ঠ হয়ে অর্ধচেতন মায়ের পাশে শুয়ে বিড়ালের বাচ্চার মতো কাঁদছে।

ম্যানেজারের মুখে হ্যপি বার্থডে-র উইসের উত্তরে তমাল কোনোরকমে থ্যাংক ইউ বোলে দ্রুত কাজে লেগে গেল। সাধারণতঃ এজেন্সি থেকে একই ফ্যাক্টারিতে দুই এক দিনের বেশি কাজে পাঠায় না, কয়েক দিন পর পর ভিন্ন ভিন্ন ফ্যাক্টারিতে পাঠায়। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ হলো তমালকে একই ফ্যাক্টারিতে পাঠাচ্ছে। তাই এখানে সবার সাথে এই অল্প কয়েকদিনেই তমালের ভালই সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

এখানে কাজ অনেকটাই হালকা। এই ফ্যাক্টারিতে মূলত সিজন করা কাঠের তক্তা মেশিন দিয়ে কেটে ছবির ফ্রেমের কাঠ বানানো হয়। সাধারণতঃ যারা মেশিন চালায় তারা পার্মানেন্ট স্টাফ, তমালদের মতো যারা এজেন্সি থেকে আসে তাদেরকে হেলপার হিসাবে রাখা হয়। ভারী কাঠের ফ্রেমের বান্ডিল টেনে টেনে তমালের কিছুটা কোমর ব্যাথা করলেও তমাল সেই ব্যাথাকে আমল দেয় না, নিউ ইমিগ্রান্টদের অনেক কিছুই আমলে আনতে নেই !!

সন্ধ্যার আগে আগে বাসায় ঢুকতে না ঢুকতেই তিথি বললো, ফ্রেস হয়ে হালকা কিছু খেয়ে নাও আজ রাতে উপরতলায় আঙ্কেলদের বাসায় দাওয়াত, আন্টি এসেছেন তো সেই উপলক্ষে। আন্টিকে আমার খুব ভালো লেগেছে, বাড়ির মালিকের বৌ অথচ মনে কোনো অহংকার নেই, তুমি বাসায় নাই শুনে উনি নিচে আমাদের বেডরুমে বসে আমার সাথে অনেক্ষন গল্প করলেন, আমি চা বানিয়ে খাওয়ালাম, উনি তিতাসকে একটি হেডফোন উপহার দিলেন, তিতাসতো পেয়ে মহা খুশি!’ তমাল দার্শনিকের মতো বললো , ‘ সাবধানে থেকো, অধিকাংশ খুশির ব্যাপারগুলির পরিসমাপ্তি ঘটে দুঃখ /কষ্টের ভিতর দিয়ে!

সোবহান সাহেবের দাওয়াতে তমালের ছাড়াও আরো কয়েকজন অতিথি এসেছেন, সোবহান সাহেবের শ্যালক ইমতিয়াজ ও তার পরিবার, সোবাহান সাহেবের বন্ধু গোলজার সাহেব, তার স্ত্রী, মেয়ে, মেয়ে জামাই। সোবহান সাহেবের লম্বা ডাইনিং টেবিলে আলাপ বেশ জমে উঠেছে।

সাধারণতঃ প্রবাসে দাওয়াতে কোনো নিউ ইমিগ্রান্ট থাকলে ঘুরে ফিরে একসময় আলাপে কানাডার ইমিগ্রেশন টপিক্স চলে আসে। কেউ হয়তো হতাশাগ্রস্ত নিউ ইমিগ্রান্টদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলে, ‘ দেশ থেকে এতো এতো কুয়ালিটিফুল লোকজন নিয়ে এসে এখানে লেবারগিরির চাকরি করানোর কোনো মানেই হতে পারে না। আবার কেউ হয়তো বিপক্ষে যেয়ে বলে,’ কেন ভাই, কানাডা সরকার কী পা ধরে কাউকে নিয়ে এসেছিলো, দেশে যে ভালোভাবে করে খেতে পারে, সে এখানেও পারে, আমরা করে খাচ্ছি না খামাখা কানাডা সরকারের দোষ দিচ্ছেন কেন ? আবার কেউ হয়তো বলবে, ‘আরে ভাই দেশে থেকেই বা কী করবেন, দেশ ভরা খালি দুর্নীতি আর দুর্নীতি’। তর্ক বিতর্কের ঠিক এই পয়েন্ট থেকে আলোচনা রাজনীতির দিকে ঝুকে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তবে, হোস্টের বিচক্ষণতায় বা কপাল ভালো হলে হয়তো আলাপ রাজনীতি থেকে ডাইভার্সড হয়ে ক্রিকেটের দিকে বা কানাডার চলমান কোনো বিষয়ের দিকে যাওয়ার একটি ক্ষীণ সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না।

যেমন আজকের আলাপের মাঝখানে চতুর সোবাহান সাহেব আলাপের মোড় ঘুড়িয়ে রিয়েল এষ্টেটের দিকে নিয়ে যেয়ে কানাডায় বাড়ির দাম কীভাবে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে সেই আলাপের সুচনা করলেন। এতেকরে, তমালদের জন্য কিছুটা সুবিধা হয়েছে।এই টপিকে তমালদের প্রবেশ করার কোনো মানেই হয় না। যেখানে পয়সার কারণে বেজমেন্টের আঁধারে থেকে বসবাস করতে হয় সেখানে বাড়ির দাম বেড়ে আকাশে উঠুক
বা পানির নিচে তলিয়ে যাক তাতে তমালদের মতো নিউ ইমিগ্রান্টদের কোনো মাথা ব্যাথাই থাকার কথা না।

কিন্তু, তমালকে মাথা ঘামাতে হচ্ছে অন্য কারণে। সোফার এক কোনায় ডেজার্ট খেতে খেতে সোবাহান সাহেব তমালকে যা বললেন, তমাল শুনে একেবারে আকাশ থেকে পড়লো। সোবাহান সাহেব ফিসফিস করে তমালক বললেন,’বাবা, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে বাকিদিন ফ্লোরিডাতে মেয়ের সঙ্গে কাটাবো। দুইজনেরই বয়স হয়েছে, কানাডার ঠান্ডা আর ভালো লাগে না, তা ছাড়া এখন বাসা বাড়িব বিক্রির দর বেশ ভালো। তোমাদের হাতে দুই মাস সময় থাকলো, কাছে পিঠে কোথাও বাসা খুঁজে নাও। আমার নাম, ফোন নাম্বার রেফারেন্স হিসাবে ইউজ করতে পারো, নতুন কোথাও বাসা খুঁজতে গেলে ভালো রেফারেন্সের দরকার আছে।’

ভালো রেফারেন্সের দরকার যেমন তেমন নতুন কোথাও নতুন করে বেজমেন্টের বাসা ভাড়ার জন্য আবার ফার্স্ট মান্থ, লাস্ট মান্থ এর ভাড়া ডিপোজিট রাখার জন্য কম করে হলেও হাজার দুয়েক ডলার যে দরকার হবে এটি ভেবে তমাল অথৈ সাগরে পড়লো। আর সেই সাগরের উথাল পাতাল ঢেউয়ে ছোট্ট একটি ডিঙি নৌকা নিয়ে টিকে থাকার উপায় বের করার জন্য তমাল যখন গভীর রাতে বিছানায় এপাস অপাস করছে , তিথি তমালের চিবুক ধরে ফিস ফিস করে অদূরে গলায় বললো,’

‘ সাহেবের মনে আছে আজ যে তোমার জন্মদিন পার হয়ে গেল।’
তমাল বেজমেন্টের বেডরুমের ভেন্টিলেটারের মতো ছোট্ট জানালা দিয়ে চাদনি রাতের দ্যিপ্তমান আলকিত আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবলেশহীন ভাবে বললো ‘আমার আবার জন্মদিন! অরিজিনাল বার্থ ডে হলে তাও কথা ছিল।’

তিথির উষ্ণ স্পর্শ হতাশার সাগরে প্রায় নিমজ্জিত নিউ ইমিগ্রান্ট তমালকে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্যাটালিস্টের মতো জীবন সমীকরণকে তরান্বিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা যোগায়।


(চলবে)
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন, রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার, টরেন্টো, ২০২১

 

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাড়িয়ে দাও হাত-পর্ব ১৫
পরবর্তী নিবন্ধজীবনের সংগ্রাম-পর্ব ১১
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন