তুমি নেই তাই-
রক্তে মিশে থাকা বিষন্ন লোহিতকণিকা
হাল ছেড়ে দিয়ে হয় নর্দমার পানি।
হৃদয়ে জমা হয় অনর্থক ক্লেদ।
হারাই সবই মনুষ্যত্ব ও পশুত্ব।

তুমি নেই তাই-
টলটলে দীঘির জলে দেখা দেয়
মনমরা প্রাণ ভ্রমরা।
অভিমানি তাড়কা রাক্ষসী
হয় আলসি – আমিষে অভক্তি
নির্জীব রাবণের সীতায় অনিহা দেখে
রূপকথায় লাথি দেয় বেপরোয়া শিশু।

তুমি নেই তাই-
চটকদার কম্পাসের কাঁটা
সুন্দরী মৎসকন্যার সন্ধান দিলেও
অন্যমনস্ক নাবিকের অনিহায়
ক্ষয়ে যায় হলুদ যৌবন।
সময় থমকে দাঁড়ায় পানসে
এক মূহুর্তে –

তুমি নেই তাই
সুউচ্চ রোলার কোস্টারের চূড়ায়
হাই তোলে টগবগে কিশোর।
লালটিপে ফ্যাকাশে হয় বিশ্বসুন্দরী
তীব্র প্রেমের কবিতাও
তিক্ত বিষাক্ত করে তোলে জিহ্বার স্বাদ।

তুমি নেই তাই
অর্থহীন হয় সকল অনুভূতি
মূল্যহীন স্বাধীনতা, আবর্জনাময় অর্থ
প্রাণের অপচয় আর অস্তিত্বের
অনাবশ্যকতা।
আকাঙ্খিত যমদূতের বিলম্বও
অসহ্য মনে হয়।

তুমি নেই তাই-
সকল সোনালী স্মৃতি
মোড্যুসার কেশরুপে
দংশায় বক্ষদ্বেশে।
সকল দোষ তোমাকে দিয়েও
অপরাধবোধ তাড়া করে
অশরীরী অতৃপ্ত আত্মা হয়ে।
একটিবার ফিরে পাবার আশায়
বাজি ধরতে রাজি
সহস্র জীবন।

আর যখন তুমি পাশে-
শুভ্র পঙ্খিরাজের ডানায় ভর করে
পৃথিবীর সব রঙে হৃদয়কে রাঙিয়ে
প্রস্ফুটিত চপল চন্চল উচ্ছ্বল
স্বর্গ মর্ত্য পাতালের ভোগে ব্যাস্ত
নিজেতে বিভোর আনন্দে মত্ত
ফিরেও তাকাই না
তোমার পানে।

৩০ জুলাই,২০২০
টরন্টো

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন