(দুই)
নিম্মুরা ছ’বোন। ওই সবার ছোট। কিন্তু কোণ্ কুক্ষণে যে জন্মগ্রহণ করেছিল, ওর জন্মলগ্নে যেন মহাপ্রলয় নেমে এসেছিল। মাতা-পিতার জীবনের অন্তিম ইস্যুতে যমজ কন্যা সন্তানের আগমনে সন্তুষ্ট ছিলেন না পিতা শশীমোহন। তিনি ক্ষোভে, দুঃখে মানসিকভাবে অত্যন্ত ভেঙ্গে পড়েছিলেন। পারেন নি অদৃষ্টকে মেনে নিতে। পারেন নি, জন্মদাতা পিতা হয়ে আপন সন্তানদ্বয়ের মুখদর্শণ করতে, সমাদরে তাদের গ্রহণ করতে। কিন্তু ভাগ্যের কি নিমর্ম পরিহাস। মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধান, হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বিষন্ন মনে ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ অন্যমনস্ক হয়ে পড়লে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বিশাল মালবাহী ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটলে মর্মান্তিকভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণ হারান। ঐ দুঃসংবাদটি শ্রুতিগোচর হতেই হৃদক্রীয়া বিকল হয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকন্যা দ্বয়ের জন্মধাত্রী মাতা উষারানি দেবী মৃত্যুবরণ করেন। অসহায় এবং এতিম করে রেখে গেলেন চারবোনসহ উর্মিলা ও নির্মলাকে। যাকে দত্তক নিয়ে সন্তানের অভাব পূরণ করেছিলেন ওর ছোটমাসি প্রমিলাদেবী।

মেসো ধীরেন মুখুজ্জ্যে ছিলেন স্থানীয় পলিটিক্যাল্পার্টির একজন বিশিষ্ট নেতা। যাকে পিতা বলে জানতো। আর পাঁচটা মেয়ের মতোই মাসি, মেসোমশাইএর সুশিক্ষায়-দীক্ষায় এবং স্নেহ-ভালোবাসার ছত্রছায়ায় গড়ে উঠতে থাকে নির্মলা। যার অন্ত ছিল না স্বাধীনতার। অন্ত ছিল না শৌখিন বিলাসিতার। কোনো কিছুর অভাব ছিল না। স্কুলের গন্ডি পার হয়ে, কৈশরের ধূলোবালি ঝেরে উঠতেই বাঁধভাঙ্গা যৌবনের ঢেউ যেন উপছে পড়ছিল ওর শরীরে। কি নিদারুণ স্নিগ্ধ-কোমণীয় রূপ, রঙ আর শরীরের গড়ন। লাল টুকটুকে দুষ্টমিষ্টি চেহারা। প্রজাপতির মতো চঞ্চল, প্রাণবন্ত পদাচরণ, মসৃণ নিতম্ব, তীক্ষ্ন নাসিকা, হরিণের মতো আঁখিপল্লব। মায়াবী চোখের চাউনি। মুখের বাঁ-পাশে সর্বদা ঝুলে থাকতো একগোছা কোঁকড়ানো রেশমী চুল। তন্মধ্যে ওর অনাবিল মুখের অনিন্দ্য সুন্দর মুক্তঝরা হাসিই ছিল সবচেয়ে হৃদয়াকর্ষক। যা কখনো ম্লান হতো না। রাজ্যের কথা নিয়ে সারাক্ষণ যেন খই ফুটতো মুখে। কখনো ক্লান্তও হতো না। কথায় কথায় রঙ্গ-ব্যঙ্গ, ঠাট্টা রসিকতা। কখনো মজার মজার চুটকি শোনাতো। নিজেও হাসতো, আর পাঁচজনকে হাসাতো। সর্বাবস্থায় ওর উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত আনন্দদায়ক। যা আমাদের বন্ধুমহলের সকলকে চুম্বকের মতো আবিষ্ট করে রাখতো। এরূপ প্রাণোৎচ্ছল দুষ্টুমিষ্টি কন্যা নির্মলার চোখ ধাঁধানো রূপে বিচলিত হয়ে পড়লেন ওর মাসিমনি প্রমিলাদেবী।

বলতে বলতে হঠাৎ ওর ঠোঁটের কোণে হাসির ঝিলিক দিয়ে ওঠে। হাসিটা বজায় রেখে বলল,-‘বাড়ি ফিরতে লেট হলে মামনি কি বলতেন জানিস! বলতেন,-‘সন্ধ্যের পর একা কক্ষনো বাইরে থেকো না নিলা। দিনকাল ভালো নয়, মেয়েদের প্রতি মুহূর্তে বিপদ। কোথাও সেফটি নেই। আমার বড্ড ভয় হয়।”

মাকে আশ্বাস দেয় নির্মলা। বলে,-‘ডোন্ট ওরি মম। বাপি থাকতে আমার ভয় কিসের! চোখ তুলে তাকাবার সাহস হবে কারো। চোখ গেলে দেবো না।’

শুনে আঁতকে উঠলেন প্রমিলাদেবী। তার কণ্ঠে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, চোখে বিভীষিকা। বড় বড় চোখ পাকিয়ে বললেন,-‘সর্বণাশ! ঠিক এই ভয়ই করেছিলাম। না নিলা না, তোমার কাউকে কিচ্ছু করবার দরকার নেই। তাতে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। আমি আজই তোমার বাপিকে বলে এর একটা বিহিত করবো। মানে
মানে পাত্রস্থ করে আমিও নিশ্চিন্ত হই!’

চটে যায় নির্মলা। ভ্রু-যুগল কুঁচকে বলে,-‘নিশ্চিন্ত হই মানে, তোমাদের বোঝা হয়ে গিয়েছি, তাই না!’

-‘বালাই ষাট, বোঝা হবে কেন! মা-বাবার কোলে সন্তান কখনো বোঝা হয়! তুমি আমাদের একমাত্র সন্তান। তোমায় নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন, কত আশা-আকাক্সক্ষা। কন্যা সন্তানকে পাত্রস্থ করা, সংসার বেঁধে দেওয়া, এ তো আবহমানকালের চিরাচরিত রীতি-নীতি। মাতা-পিতার চরম দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এর চে’ পরম সুখ-আনন্দ বাবা-মায়ের জীবনে আর কিছু আছে!’

ফোঁস করে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে নির্মলা বলল,-‘জামানা অভি বদল গয়ী মাম্মী। ওসব বিয়ে-টিয়ের চিন্তা এখন কোরো না। সাত পাকে বাঁধা এতো সহজে পড়ছি না। আগে আমার ক্যারিয়ার, তারপর অন্য কিছু।’

শুনে প্রতিবাদ করলেন প্রমিলাদেবী,-‘শোনো মেয়ের কথা। জামানা বদলে গেলেও বংশ পরস্পরা সামাজিক ও পারিবারিক রীতি-নীতি বলে একটা প্রথা আছে। যা আজও বদলায় নি, কোনদিন বদলাবেও না। এ তো মাবনজাতির পরম ধর্ম, নারী-পুরুষের চিরন্তন বন্ধন। কখনো উপেক্ষা করতে পারো না। মেয়েরা জন্মেছেই অন্যের জন্যে। চাইলেও কি সারাজীবন তোমায় বুকে বেঁধে রাখতে পারবো, কোনদিনও না। বাবা-মায়ের কোলে জন্ম নিলেও মেয়েরা হলো অন্যের সম্পদ। আমরা তো নিমিত্তমাত্র। আমাদের দায়িত্ব, কন্যা সন্তানকে সুশিক্ষায়, দীক্ষায় সাবলম্বী করে তোলা। সসম্মানে তাকে সুপাত্রস্থ করা। তোমার স্বামী হোক, ঘর-সংসার হোক, সন্তান হোক, আমরা নাতি-নাতনীর মুখ দর্শণ করি, মা হয়ে এটুকু আশাও কি করতে পারি নে নিলা!’

বলে নির্মলাকে বুকে নিয়ে সজোরে জড়িয়ে ধরেন প্রমিলাদেবী। আবেগের প্রবণতায় ওর কপালে আলতো একটা চুম্বন করে বললেন,-‘বেশ, মানলাম। বিয়ে না হয় এখন করলে না। কিন্তু পাত্রের ছবিখানা দেখতে তোমার আপত্তি কিসের! খুব ভালো একটা সম্বন্ধ এসেছে। পাত্র আমার খুব পছন্দ। তুমি মত দিলে আমরা এগোবো। জানো, আমাদের সমকালে নিজের মত প্রকাশ করবার স্বাধীনতাটুকুও মেয়েদের ছিল না।’

বলতে বলতে বেডরুমে ঢুকে আলমারীর ড্রয়ার খুলে একটি ছবি বের করে আনলেন। একগাল হেসে উৎফুল হয়ে বললেন,-‘দ্যাখ্াে, কেমন চমৎকার উজ্জ্বল গৌরবর্ণের সুঠাম সুদর্শণ পাত্রের সন্ধান পেয়েছি, দ্যাখো। নও, ধরো।’
সলজ্জে মায়ের হাত থেকে পাত্রের ছবিখানা বাজপাখীর মতো ছোঁ মেরে টেনে নিয়ে দৌড়ে নিজের রুমে ঢুকে পড়ে। ইত্যবসরে পলকমাত্র দৃষ্টিপাতেই পাত্রের ছবি ওকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। বিস্মিত হয়ে দ্যাখে, শুধু হ্যান্ডসাম, আভিজাত্যসম্পন্নই নয়, পাত্রের পৌরুষোচিত চেহারায় মিশ্র ব্যক্তিত্বের ছাপটাও নজর এড়ায় নি ওর। ওকে বেশ কিছুক্ষণ বুদ করে রেখেছিল। যার প্রথম দর্শণে যাদুমন্ত্রের মতো মুগ্ধ ও অভিভূত হয়ে পড়লে চকিতে বিলুপ্ত হয়ে গেল নির্মলার ক্যারিয়ার গড়া এবং নিজেকে সাবলম্বী করে তোলার স্বপ্ন, ইচ্ছানুভূতিগুলি। আকস্মিক প্রেমের পত্তনে এক অভাবনীয় নীরব ভালোলাগা আর ভালোবাসার অবগাহনে এমন তন্ময় হয়ে ডুবে গিয়েছিল, নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব পালনের দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ জীবনের আদর্শ ও ভাবনাগুলিকে অচীরেই ভুলে গেল। বেমালুম ভুলে গেল, অগাধ স্বাধীনতায় মুক্ত-বিহঙ্গের মতো সহেলিদের সাথে চিন্তাবিহীন জীবন জোয়ারে খুশীর পাল তুলে ভেসে বেড়ানোর সেই অবিস্মরণীয় সোনালী দিনগুলি। জীবনের সবচে’ পরম পাওয়া মনপসন্দ জীবনসাথীটিকে হাসিল করে নেবার একমাত্র প্রলোভনে সেদিন রাতারাতিই সমস্ত প্ল্যান-প্রোগ্রাম বদলে গেল নির্মলার। পাত্রের ছবি থেকে ওর নজরই সড়েনা। ঠিক এমনিই একজন জীবনসাথী চেয়েছিল নির্মলা। যাকে হৃদয়-মন-প্রাণ, ভালোবাসা সব উজার করে ঢেলে দেবে। সঁপে দেবে নিজেকে। ওর স্বপ্নের চীরকূট সেই রাজপুত্রুরটিই বটে! ভাবাই যায়না। কল্পনারও অতীত। যেদিন হৃদয়ের দূকূল প্ল্যাবিত করে, খুশীর তুফান উড়িয়ে কত যে রঙ্গিন স্বপ্ন দু’চোখের কোণে আঁকা শুরু করে দিয়েছিল, তার ইয়ত্তাই ছিল না।

ওদিকে প্রমিলাদেবী দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে মনে মনে ভাবছেন, না জানি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পাত্রের কত না দোষ-ক্রুটি বের করবে। হয়তো এক্ষুণি ছুটে এসে বলবে,-‘তোমার গুণধর পাত্রটি হাসতেও কি জানে না! কেমন গম্ভীর হয়ে আছে, দ্যাখো! তন্মধ্যে গাল ভর্তি দাড়ি। রাবিশ! এমন পাত্রই কি তোমার পছন্দ মাম্মী?’

কিন্তু নির্মলার কি ধরণের পাত্র পছন্দ, তা প্রমিলাদেবীর অবগত ছিলনা। ছোটবেলা থেকে লাগাম ছাড়া অগাধ স্বাধীনতায় গড়ে উঠেছে, নিজের ইচ্ছামতো জীবনকে পরিচালিত করেছে। আপত্তি করলে মেনে নেওয়া ছাড়া আর উপায় কি! প্রমিলাদেবী যখনই নিজের অধিকার জাহির করতে চেয়েছিল, মনকে দুর্বল করে দিয়েছে। বার বার মনে হয়েছে, কে যেন ওঁকে চেপে ধরে আছে। অগ্রসর হতে পারেনি। অনুভব করেছে, একধরণের কোমল বেদনাময় অনুভূতি। যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। প্রমিলাদেবীর ভয় হোতো, জীবনের একমাত্র সম্বল নির্মলা, মাতৃত্বের একাত্ম বন্ধন থেকে চিরদিনের মতো বিচ্ছেদ না হয়ে যায়। ওর আনন্দেই প্রমিলাদেবীর সুখ-শান্তি, মাতৃত্বের পূর্ণতৃপ্তি সব। একেই একরোখা মেয়ে, বিরল সেন্টিমেন্টাল। অনমণীয় জেদ। সর্বদা জীবনের একটাই লক্ষ্য, নিজের চাহিদা হাসিল করে নেওয়া। পেটে না ধরলেও নিজের মায়ের চে’একাংশও কম নয়। প্রবাদ বাক্যে আছে,-‘মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশী।’

সত্যিই তাই! মাসি হয়ে মায়ের ভূমিকা পালনে শুধুমাত্র দায় সাড়া নয়, ভুলক্রমেও এতটুকু কার্পণ্যতা কখনো করেনি। প্রমিলাদেবীর দৃঢ়ভাবে অবগত আছে, কোনো কারণে বিগড়ে গেলে, সহসা মাথা ঠান্ডা হয়না। মুখ গোমড়া করে সারাদিন একেলা নির্জনে অন্ধকার কক্ষে পড়ে থাকে। প্রমিলাদেবী না পারে সইতে, না পারে কিছু কইতে।

সবুর সয়না প্রমিলাদেবীর। অস্থির হয়ে ওঠে। মিনিট কুড়ি পার হয়ে গেল, নির্মলার কোনো সারা শব্দ নেই। ওর কমপ্লিমেন্ট জানার জন্য প্রচন্ড উতলা হয়েছিল। একসময় নিজেই গুটি গুটি পায়ে নৈঃশব্দে এগিয়ে যায় জানালার দিকে। চুপিচুপি জানালায় উঁকি দিয়ে দ্যাখে, বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে বিমুগ্ধ দৃষ্টিতে পাত্রের স্থির চিত্রের রূপ-রস একেবারে সহৃদয়ে আস্বাদন করছে। কখনো আপনমনে বিড় বিড় করছে। কখনো অব্যক্ত আনন্দে চোখমুখ ওর উজ্জ্বল দ্বীপ্তিময় হয়ে উঠছে। আবার কখনো গম্ভীর হয়ে কি যেন ভাবছে, চিন্তা করছে। কিন্তু যাই ভাবুক, পাত্র যে ওর পছন্দ হয়েছে, এ বিষয়েই দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত হয় প্রমিলাদেবী। ভিতরে ভিতরে নিজেও খুব খুশী হয়। উৎফুল হয়ে ওঠে আনন্দে।
মনস্থির করে, বিয়েটা আজই টেলিফোনে পাকা করে ফেলবে। কিন্তু বিয়ে সাধি বলে কথা, ছেলে খেলা নয়। বিবাহ মানে, দু’টি সবুজ ও কোমল আত্মার পরম মিলন। আরো কত ফর্মালিটি। তা ছাড়া পাত্রের ব্যক্তিগত একটা মতামত আছে, রুচী, অভিরুচী আছে। পাত্র-পাত্রী দুজনের একবার মুখোমুখি দর্শণ হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই একদিন যথারীতি একান্তে নির্জনে নিঃভৃতে পাত্র-পাত্রী মুখোমুখি হয়ে প্রাণবন্ত উচ্ছাসে নিঃসংকোচেই আলাপচারিতায় দুজন দুজনকে জেনে নেয়, চিনে নেয়। আপন করে নেয় দুজন দুজনকে। যেন কতদিনের চেনা, পরিচিত। কত ঘনিষ্ঠ নির্মলার। মনে হয় যেন, দুজন দুজনের জন্যই জন্মেছে। ওদের মিলন জন্ম-জন্মান্তরের। এই অঙ্গীকারেই অন্তরঙ্গ আলাপানে ওরা এতোটাই মর্শগুল হয়েছিল, ক্রমাণ্বয়ে অতিবাহিত হতে থাকে কত অগণিত প্রহর। সন্ধ্যে পেরিয়ে অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছে চারদিক। হুঁশই নেই কারো। অনুভব করে, আকাশের চাঁদটাই বুঝি ওরা পেয়ে গিয়েছে হাতে। তবু স্বপ্ন আর বাস্তবের সন্ধিক্ষণে হবু স্বামীর উপস্থিতি ও তার বন্ধুসুলভ অমায়িক আন্তরিকতার অভিব্যক্তিটুকুই নির্মলাকে এমন ভাবে বুদ করে রেখেছিল, অনুভব করে, বিদ্যুতের শখের মতো সারাশরীর জুড়ে এক অনবদ্য ভালোলাগার তীব্র অনুভূতির জাগরণ, সঞ্চালণ। যার বিশ্লষেণমূলক কোনো ব্যাখ্যা সেদিন জানা ছিলনা নির্মলার। যার নাম ভালোবাসা। অনুভত হয়, সেই গভীর ভালোবাসার এক অবিচ্ছেদ্য গভীর টান। যা অনন্তকালের, কখনো ছিন্ন হবার নয়। কিন্তু সেদিন স্বপ্নেও কি কল্পনা করতে পেরেছিল, ওর ঐ কাঙ্খিত কামনা-বাসনা, ভালোলাগা আর ভালোবাসার ইচ্ছানুভূতিগুলি কত অর্থহীন। কখনো কি ভেবেছিল, বাসররাতের চরম মুহূর্তে চমকিত উজ্জ্বল আলো হঠাৎ নিভে গিয়ে অন্ধকারে ছেয়ে যাবে নির্মলার মতো সহজ সরল একটি মাসুম মেয়ের জীবন। ক্ষণিকের অশ্রুজলে ওর স্বপনে আঁকা রঙ্গিন ছবিগুলি সব মুছে যাবে।

(চলবে)

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন