অনেকদিন কিছু লিখি না বা লেখার সময় পাই না। কিছুটা মিথ্যাও হয়ে যায় সময় পেলেও ইচ্ছে করে না বা মন বসে না।।।
অনেক কিছুই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্যাচিয়ে ফেললাম।
উদ্দেশ্য জন সাধারন— উদ্দেশ্য মানুষ — অন্য কিছুই না।।।

টাইটানিক জাহাজে যাত্রী সংখ্যা ছিলো ২২৩০ জন ৷
জীবিত উদ্ধার হয়েছিল ৭০৬ জন ৷ডুবে প্রাণ হারায় মোট ১৫২৪ জন যাত্রী ৷ 

টাইটানিক মুভিতে দেখা যায়, অধিকাংশ যাত্রী পানিতে ডুবে মারা যায় ৷
কিন্তু মুভির হিরো “জ্যাক” বরফ শীতল পানিতে শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রার কারণে মারা যায় ৷
একজন দর্শক যখন মুভিটি দেখে তখন তিনি জ্যাকের মৃত্যুতে যতটা শোকাহত হন,
জাহাজের অন্যান্য যাত্রীদের জন্য তার ততটা শোক হয় না ৷
তখন দর্শকের অবস্থা হয় এমন যে, সব মরে যাক তবুও নায়ক জ্যাক বেঁচে থাক ৷দুনিয়া
এ পাশ ওপাশ হয়ে যাক তাতে কিছুই না জ্যাক এর জেনো কিছু না হয়।

কখনো কি নিজেকে প্রশ্ন করেছেন,
কেনো এমন হলো? মানুষ হিসেবে সকল
যাত্রীর মৃত্যুতে সমান দুঃখ পাবার কথা ছিলো ৷ তাই নয় কি?
আমিও যখন জীবনের প্রথম কোন এক সুযেগ এ এই মুভিটা দেখি অল্প বয়সের আবেগে ওটাই ভেবেছি। জ্যাকের জেনো মৃত্যু না হয়।
অথচ নায়ক জ্যাকের প্রতি দর্শকের এতো দরদ হয় কেনো?

জ্যাক একজন জুয়ারী, মদ্যপ,
ধুমপায়ী, অশ্লীল ছবি অঙ্কনকারী, সর্বপরি
জ্যাক।একজন ব্যভিচারী ৷বিভিন্ন গুনে গুন্নানিত্য।

এতকিছুর পরও দর্শকের
কাছে জ্যাকের জীবন অন্যদের চেয়ে বেশি মূল্য রাখে কেনো?

এগুলা কি খুবই ভালো কাজ?
এগুলা কি প্রশংসনীয় করার যোগ্য??
এ গুলা কি সমাজে স্ট্যাটাস বাড়ায়???
না কি এগুলা কোন শিক্ষানীয় বিষয়????

উত্তর খুবই সহজ-প্রযোজক ক্যামেরাটি শুধু “জ্যাক ও রোজ” এর দিকে ফিরিয়ে রাখে আর সমাজে এক ধরনের শ্রেণী আছে যাদের জন্য প্রযোজক পরিচালক এমন কিছু একটা বানায় যা সাধারন শ্রেণী র দর্শক অত্যন্ত নির্বিকার হয়ে গ্রহন করে।
একটা পর্যদায়ে দর্শকের মনেহয়, জাহাজে যাত্রী শুধু ওরা দুজনই ৷
কিন্তু একই সময় ক্যামেরার অপর প্রান্তে হাজার হাজার নারী ও শিশুর চিৎকার ও আর্তনাদ দর্শকের কানে পৌঁছে না ৷
ফলে দর্শক তা অনুধাবনের চেষ্টাও করে না ৷

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনও এমন ৷
আমেরিকা,ব্রিটেন, ফ্রান্সে সামান্য ককটেল ফুটলেই মিডিয়া তা কয়েক সপ্তাহ হাইলাইট করতে থাকে ৷
ন্তুএকই সময় এই মিডিয়ার অপর প্রান্তে আফগানিস্তান, ওয়াজিরিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেনে প্রতি দিন শত শত বোমা ফেলা হচ্ছে ৷
হাজার হাজার মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে ৷ তাদের মর্মভেদী আর্তনাদ আকাশ বিদীর্ণ করে আরশে পৌঁছে যায় ৷
শুধু পৌঁছে না আমাদের কর্ণ কুহরে ৷
পৃথিবীর সকল পাপের উৎস এই পশ্চিমারা ৷
ওরাই মানুষকে শিখিয়েছে। সমকামিতা, পশুকামিতা,লিভটুগেদার আরো কত কী ৷
ওরা হিরশিমা ও নাগাসাকিতে তিন লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে ৷
ইরাকে দশ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে ৷
আফগানিস্তানে ওদের হত্যাযজ্ঞ এখনো চলছে ৷

এতকিছুর পরও পশ্চিমারা আমাদের চোখে হিরো ৷
টাইটানিক ডুবে যাক।
হাজার হাজার যাত্রী মরে যাক ৷
নায়ক জ্যাক ও নায়িকা রোজ বেঁচে থাক।

জ্যাক, রোজ জিন্দাবাদ। বাকি সব মরে যাক।।।।।।।

সময় –পড়ন্ত

 

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন