-মোঃ মনিরুজ্জামান
সফরসূচি অনুযায়ী পরদিন আমরা রিও থেকে প্রায় ৬৮ কিলোমিটার দূরে সর্বশেষ পর্তুগিজ ‘KING DOM PEDRO-2’র রাজধানী শহর পেট্রোপোলিস (PETROPOLIS) যাত্রা করলাম সকাল নয়টার দিকে। আমরা সাতসিটের একটি ভ্যান ভাড়া করলাম সারাদিন ব্যাপী পেট্রোপোলিস ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শনের জন্য। পেট্রোপোলিস ঊনবিংশ শতাব্দীর পর্তুগিজ রাজাদের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী এবং অবকাশ যাপন কেন্দ্র। পেট্রোপোলিস সম্পর্কে আগে থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি ।এটি রিও’র কাছাকাছি টুরিস্ট/পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান। কিং পেড্রোর বিশাল রাজপ্রাসাদ ,ইম্পেরিয়াল মিউজিয়াম ,ক্রিস্টাল প্যালেস, রিও নেগ্রো প্যালেস ও আরো অনেক পর্তুগিজ ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন রয়েছে এ শহরে। রাজকীয় সব নিদর্শন বা ঐতিহ্য এবং সেইসাথে পর্তুগিজ রাজবংশের এলিটরা ছাড়াও বিংশ শতাব্দীর অনেক শিল্পী ,কলাকুশলী, সেলেব্রেটি এ শহরের বাসিন্দা বলেই ব্রাজিলিয়ানরা এ শহরকে ‘দি ইম্পেরিয়াল সিটি’ বলে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যত ভ্রমণ বিলাসী পর্যটক রিও আসেন তাদের সবাই একবার এই পার্বত্য শহরের সৌন্দর্য না দেখে যান না।
পেট্রোপোলিস সম্পর্কে আমি আগে থেকেই কৌতূহলী ভীষণ ছিলাম। পথে যেতে যেতে রাস্তার দুপাশের পার্বত্য এলাকা দেখে পেট্রোপোলিস শহর দেখার আগ্রহ আরো বেড়ে গেল। বিশাল সব পার্বত্য এলাকার মধ্যে দিয়ে কিভাবে সেই সময় রাস্তা নির্মাণ করে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছিল সেটি নিয়ে ভাবছিলাম। পর্তুগিজ রাজাদের এই বিলাসী খেয়াল আমাকে রীতিমতো চমকিত করেছে। সমুদ্র লেভেল থেকে প্রায় এক হাজার মিটার উচ্চতায় এমন বিলাস বহুল প্যালেস ও শহরের সৃষ্টি একটি অসাধারণ কর্মকান্ড বলে আমার মনে হয়েছে। ১৮৫৭ সালে এ শহরের গোড়াপত্তন হলেও রিও ‘র সাথে বর্তমান সড়ক যোগাযোগের রাস্তা নির্মাণ করা হয় ১৯১০ সালে। আমরা মুগ্ধ নয়নে পথের দু’দিকের পার্বত্য এলাকা দেখতে দেখতে একসময় পেট্রোপোলিস বা দি ইম্পেরিয়াল সিটির প্রধান ফটক পেরিয়ে কিং ডোম পেড্রোর রাজপ্রাসাদের দিকে অগ্রসর হলাম।
রাজপ্রাসাদটি এককথায় ঊনবিংশ শতাব্দীর একটি অপূর্ব সৌন্দর্যপূর্ণ স্থাপত্য নিদর্শন। এ রাজপ্রাসাদটির নাম পর্তুগিজ ভাষায় ” PALACIO QUINTANDINHA” রাজপ্রাসাদটির নির্মাণ শৈলী ‘ NORMAN -FRENCH STYLE ‘ স্থাপত্য প্রযুক্তির । পঞ্চাশ হাজার স্কোয়ার মিটার এলাকা নিয়ে তৈরি এ প্রাসাদে রয়েছে ৪৪০ টি কক্ষ। প্রাসাদের অভ্যান্তরে সব মেঝে ও দেয়াল উন্নতমানের রং বে রং এর পাথরের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ভাষ্কর্য ও তৈলচিত্র। এখানকার সব লেখাই পর্তুগিজ ভাষায় ,তাই অর্থ উদ্ধার করতে পারলাম না। তবে রাজপ্রাসাদের সৌন্দর্য ও জৌলুস দেখে আমি অবিভুত। প্রাসাদের পিছনে ও সামনের দু’দিকে উঁচু পাহাড়ের সারি। প্রাসাদের সম্মুখে বিশাল খোলা চত্বর। এ চত্বরের শেষে একটি লেক বা সরোবর। সেখানে হরেক রকম পাখিও দেখলাম। এমন মনোরম পরিবেশে শরীর ও মন অনেকটা অবচেতনভাবেই সুস্থ ও প্রসন্ন হয়ে উঠে। রাজা-বাদশারা এ সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় মনোরম পরিবেশে সময় কাটিয়ে প্রসন্নচিত্তে আবার তাদের কর্মব্যাস্ত রাজধানীতে ফিরে যেতেন ।
ছবি:-KING DOM PEDRO-2’র গ্রীষ্মকালীন রাজপ্রাসাদ “PALACIO QUINTANDINHA” পেট্রোপোলিস, ব্রাজিল
‘KING DOM PEDRO-2’র রাজপ্রাসাদ দেখার পর আমরা তার ওপর গ্রীষ্মকালীন রিসোর্ট ‘THE IMPERIAL MUSEUM’ দেখতে গেলাম। এটি মূল রাজপ্রাসাদ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার আর এটি পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ করা হয়েছিল। রাজা তার পরিবার পরিজন নিয়ে মাঝে মাঝে এসে দু’এক দিন এখানে এসে থাকতেন। নিও ক্লাসিকাল স্টাইলে নির্মিত এ দ্বিতল বিল্ডিং এর প্রবেশ পথ থেকে প্রধান হল ওয়ের মেঝে মেহগনি কাঠের এবং সেখান থেকে সব ফ্লোর ও আশে পাশের দেয়াল “CARRARA ও BELGIAN MARBEL” দ্বারা নির্মিত। যথাযথ সংরক্ষণের জন্য এখনো এ ভবনের চাকচিক্য অক্ষুন্ন রয়েছে। এ মিউজিয়ামে রাজার ব্যবহৃত রাজমুকুট ,তরবারি ,পোশাক সামগ্রী সহ রাজকার্যে ব্যাবহৃত সব কিছুই সংরক্ষণ করা হয়েছে। রাজা পেড্রো -২ একজন সংগীত অনুরাগী ব্যাক্তি ছিলেন। তার ব্যবহৃত মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট দেখে যে কেউ সেটা বুঝতে পারবেন। রানী তেরেসা ক্রিস্টিনা ও তার দুই প্রিন্সেস এর কক্ষ এবং তাদের ব্যবহার্য সব কিছুই আগের মতো সংরিক্ষিত আছে। রাজ্তন্ত্রের অবসানের পর ভবনটিকে যথাযথ ভাবে সংরক্ষণের জন্য এটিকে ব্রাজিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিউজিয়াম হিসাবে গণ্য করা হয়।
মিউজিয়াম দেখা শেষে আমরা রাস্তার ওপর পার্শে রাজা পেড্রোর সময়ে নির্মিত পেট্রোপোলিসের প্রধান চ্যাপেল বা গির্জা দেখতে গেলাম। গির্জাটি সত্তর মিটার বা ২৩০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট। প্রবেশ পথ থেকে অভ্যন্তর পর্যন্ত উন্নতমানের মার্বেল পাথরের কারুকাজ এক কথায় অসাধারণ। এটিও একটি উঁচু টিলার উপরে স্থাপিত বিধায় গির্জার চূড়াটি অনেক উঁচু মনে হয়। আমাদের সফরসঙ্গীদের কেউ কেউ গির্জায় সংক্ষিপ্ত প্রার্থনা করে নিল। গির্জা দর্শন শেষ করে বেরুতে বেলা প্রায় তিনটা বেজে গেল। শরীরে খাদ্যের চাহিদা অনুভব করলাম সকলে। উল্লেখ্য, মিউজিয়াম ও গির্জার অবস্থান পেট্রোপোলিস ডাউন টাউনের মধ্যেই। তাই আমরা দুপুরের খাবারের জন্য বেশি ঘুরাঘুরি না করে রাস্তা পেরিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকে গেলাম। এটি একটি সেলফ সার্ভিস বুফে। কাউন্টারে কথা বলে জেনে নিলাম খাবার প্রতি কেজি ত্রিশ রিয়াল। রিও থেকে অনেক সস্তা। খাবারের ভ্যারাইটিও কম নয়। আমরা যার যার পছন্দ মতো খাবার নিয়ে যথাযথ তৃপ্তি সহযোগে দুপুরের খাবার খেলাম। সকাল থেকে হাঁটা ও দাঁড়ানো অবস্থায় প্রায় বিকাল পর্যন্ত থেকে সবাই বেশ ক্লান্ত। তাই খাবার পর একটু হালকা রেস্ট নিয়ে আবার আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বিকাল সাড়ে চারটায় বের হলাম পেট্রোপোলিসের বাকি দর্শনীয় স্থান সমূহ দেখতে।
বিকালের ভ্রমণসূচি অনুযায়ী আমরা প্রথমে গেলাম ” PALACIO RIO NEGRO ” দেখতে। ১৮৮৯ সালে ‘ রিও নেগ্রো’র ব্যারন ম্যানুয়েল গোমেজ ডি কার্ভালহো এ প্রাসাদ নির্মাণ করেন। রিও ডি জেনেরিও ব্রাজিলের রাজধানী থাকাকালীন ১৯০৩ সালে এটি সরকার ক্রয় করে নেয়। পরবর্তীতে এটি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টদের গ্রীষ্মকালীন আবাসস্থল হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ব্রাজিলের ১৬ জন প্রেসিডেন্ট গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপনের জন্য এ ভবনে বিভিন্ন সময়ে বসবাস করেছেন বলে জানা যায়। এ ভবনটি এখনও রিও ডি জেনেরিও প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সময়ের স্বল্পতার জন্য বিল্ডিঙের ভিতরে না যেয়ে প্রবেশ পথ ও বহিরাঙ্গনের চারিদিকে দেখে আমরা পরবর্তী দর্শনীয় স্থানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
ছবি:- ক্রিস্টাল প্যালেস , পেট্রোপোলিস, ব্রাজিল
পরবর্তী গন্তব্য ক্রিস্টাল প্যালেস। এটিও পেট্রোপোলিস ডাউন টাউনের কাছাকাছি । কিং পেড্রোর দ্বিতীয় প্রিন্সেস ইসাবেলা এটি ব্যবহার করতেন অবকাশ যাপনের জন্য। প্যালেস টি খুব একটা বড় নয়। গম্বুজ বা ডোম আকৃতির এ ভবনটির সম্পূর্ণ বহিরাংশ ক্রিস্টাল ও বেলজিয়ান মার্বেলের তৈরি। ভবনটি এখনও উজ্জ্বল ও চকচকে রয়েছে। তবে প্রিন্সেসের ব্যবহৃত সব কিছু এখান থেকে ইম্পেরিয়াল মিউজিয়ামে স্থানান্তর করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা এখানে আসেন শুধু ভবনটির অসাধারণ নির্মাণশৈলী দেখতে। বর্তমানে এ ভবনটি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি গ্রীন হাউস হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রাচীন সব ঐতিহ্য সংরক্ষণে রিও সরকারের আন্তরিকতা রীতিমতো প্রশংসনীয়। শুধু এখানে নয়,আমি রিও’র যেখানেই গেছি সব জায়গাতেই দেখেছি সব কিছু যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
আমাদের ভ্রমণসূচি অনুযায়ী আরো কিছু দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার কথা থাকলেও সেগুলি বাদ দিতে হল। কারণ ইতোমধ্যে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে ও আমরা সবাই সারাদিনের কর্মকান্ডে খুবই ক্লান্ত। রিও ফিরে এপার্টমেন্টে যেয়ে রেস্ট নেবার জন্য সবাই উদগ্রীব। তাই আমরা পেট্রোপোলসের একটি কাফেতে হালকা স্ন্যাকস ও কফি পান করে রিও’র উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। শরীর ক্লান্ত থাকায় প্রায় সবাই পথে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ড্রাইভার রিও শহরে আমাদের এপার্টমেন্টে পৌঁছে দিল রাত নয়টায়। রাতে আর বাহিরে না যেয়ে কেউ আগ্রহী হল না। তাই এপার্টমেন্টের ফ্রিজে যা আছে সেগুলি খেয়ে যে যার মতো ঘুমাতে গেলাম।
পরদিন ১৫ মার্চ আমাদের ভ্রমণসূচি তে ছিল দিনব্যাপী ‘রিও সিটি ট্যুর’। এ দিনটি আমি ব্যাক্তিগত ভাবে ব্রাজিলে অবস্থানের স্মরণীয় একটি দিন বলে মনে করি। কারণ ঐ দিনই রিও শহরকে ভালো ভাবে জানার সুযোগ হয়েছিল । আমরা প্যারাডাইস ট্যুরিজমের একটি ১৬ সিটের প্রশস্ত মাইক্রোবাস পূর্ব থেকেই বুক করে রেখেছিলাম। মাইক্রোবাসের ড্রাইভার ও ট্যুর গাইড ফ্রান্সিসকো ও তার স্ত্রী রোজানা আমার বন্ধু রিনালদোর পূর্বপরিচিত। তারা দুজনেই হালকা ইংরেজি জানে। তারা দুজনে মিলেই ট্যুরিস্টদের সাথে থাকে এবং রিও সম্পর্কে ট্যুরিস্টদের গাইড করে । খুবই হাসিখুশি ও বন্ধুবৎসল এ জুটি। সকাল নয়টায় তাদের সুন্দর ও আরামদায়ক গাড়িটি নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হাজির। তাদের এ জুটি দেখে সকালে যাত্রার শুরুতে মনটা ভালো হয়ে গেল। সারাদিনের ভ্রমণ শেষে আমরা একে ওপরের ঘনিষ্ট বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলাম।
আগেই বলেছি রিও ভ্রমণকারীদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান। গত দু’তিন দিনে আমরা যতটুকু দেখেছি তাতে আমারও তাই মনে হয়েছে ।সেজন্য ঐ দিনের ‘ ডে ট্যুর ‘ উপভোগ করার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। ভ্রমণের শুরুতেই ফ্রান্সিসকো সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জানিয়ে দিল তার সারা দিনের কর্মসূচি। আমরা তার পরিকল্পনা মতে যাত্রা শুরু করলাম। প্রথমে আমরা আবহাওয়া ভালো থাকায় সুগারলুপ ও উরকা পর্বতের মধ্যে যাতায়াতের জন্য নির্মিত ক্যাবল কারে চড়ে রিও শহরের ভিউ দেখতে গেলাম।
পর্বত দুটির অবস্থান আটলান্টিকের পূর্বপ্রান্তে ‘GUANABARA BAY ‘ পেনিনসুলাতে। সরাসরি ওয়াটার লেভেল থেকে ১৪ শত মিটার ( ৪৬ হাজার ) ফুট উচ্চতায় দুটি পর্বত যেনো পরস্পরের সহোদর। ২০১২ সালে ইউনেস্কো এটাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষণা করেছে। পর্বতের চূড়া থেকে রিও শহর ও আটলান্টিক মহাসাগরকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করা যায়। পর্যটকদের জন্য এ দুটি পর্বতের চূড়ায় রেস্টুরেন্ট ,কাফে ও বিভিন্ন খাবারের দোকান আছে । উরকা পর্বতের পাদদেশে ‘MORRO DA BABILONIA’ পার্ক থেকে ক্যাবল কারে আরোহনের জন্য একটি প্লাটফর্ম নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্লাটফর্ম থেকে সুগার লুপ যেতে প্রথমে উরকা পর্বতে যাত্রা বিরতি এবং পরে আর একটি ক্যাবল কারে উরকা থেকে সুগার লুপ যেতে হয়। আরোহনের স্থান থেকে দুটি ক্যাবল কারে সুগারলুপের্ চূড়া পর্যন্ত দূরত্ব ১.৬ কিলোমিটার। ক্যাবল কারে প্রথমে উরকা পর্বতের চূড়ায় আমরা নামলাম পনেরো মিনিট পরে। সেখান থেকে রিও শহরের ভিউ দেখে ও ছবি তুলে আমরা হালকা স্ন্যাকস খেয়ে নিলাম। আবার আর একটি ক্যাবল কারে চড়ে আমরা সুগারলুপ পর্বতে গেলাম। এতো উঁচু দিয়ে যেতে যেতে বেশ রোমাঞ্চ অনুভব করলাম। সুগরলুপ উরকা থেকে আরো উঁচু। এখান থেকে রিও ,আটলান্টিক মহাসাগর , তিজুকা ন্যাশনাল পার্কের দৃশ্য ও আশে পাশের সব কিছুই পরিষ্কার দেখা যায়। আমরা চুড়ার বিভিন্ন প্রানের থেকে অনেক ছবি তুললাম।
ছবি:-SUGARLOOP MOUNTAIN ,রিও ডি জেনেরিও ,ব্রাজিল
ক্যাবল কার থেকে সুগারলুপের্ উঁচু চূড়ায় নেমে প্রচন্ড শিহরণ অনুভব করলাম। কিভাবে এবং কত শ্রম ব্যায় করে ট্যুরিস্টদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেটা নিয়ে ভ্রমণসঙ্গীদের সাথে মোট বিনিময় করছিলাম। রিও তথা ব্রাজিল সরকারের এ কর্মকান্ড আমরা রীতিমতো প্রশংসা করেছি ও সংরক্ষিত ভিসিটর্স বুকে সেটি লিখেছি। আমাদের গাইড রোজানা চূড়ার বিভিন্ন দিয়ে ঘুরিয়া দেখালো। এখানে একটি হেলিপ্যাড আছে। আগ্রহী ভ্রমণকারীরা ইচ্ছা করলে হেলিকপ্টারে করে সুগারলুপ ও তার আশেপাশের দৃশ্যাবলী দেখতে পারেন। সুগারলুপ পর্বত এলাকায় বেশ কিছু নামকরা চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছিল। এর মধ্যে জেমস বন্ডের ‘মুন রেকার ‘ উল্লেখযোগ্য। মুন রেকার ছায়াছবিতে যে কেবল কার্তি ব্যবহৃত হয়েছিল সেটি এখন দর্শনার্থীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। সেটির পাশে দাঁড়িয়ে আমরা কেউ কেউ ছবি তুললাম। চূড়ার চারিদিকে বৃত্তাকার রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে যাতে করে দর্শনার্থীরা সবদিক থেকে রিও শহর ও আটলান্টিকের ছবি তুলতে পারেন। সুগারলুপের চূড়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা প্রচুর ছবি তুললাম। বৃত্তাকার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বেশ কিছু নাম না জানা প্রাণী দেখলাম। দেখতে অনেকটা বড় ইঁদুর বা কোনো কোনোটা আবার কাঠবিড়ালির ,তবে এদের ঠোঁট বা মুখমন্ডল সাদা অনেকটা শুকরের মতো । রাস্তার পাশ দিয়ে আমাদের সাথে সাথে হাটছে আর কিছু খাবার পাবার প্রত্যাশায় ইতিউঁতি করছে। রোজানা জানালো এ প্রাণীটির নাম ‘WHITE-EARED OPPUSSAM’ দক্ষিণ আমেরিকার বনে জঙ্গলে এগুলি দেখা যায়।
সুগারলুপে ঘন্টা খানেক কাটিয়ে আমরা পুনরায় ক্যাবল কারে চড়ে মেইন ল্যান্ডে ফিরে আসলাম। ফ্রান্সিসকো-রোজানার প্ল্যান মোতে আমরা রিও’র বেশ কিছু আধুনিক ও প্রাচীন স্থাপনা পরিদর্শন করলাম। রিও শহরের পুরাতন অংশে পর্তুগিজ আমলের নাবিক ও সাগরে মাছ ধরা জেলেদের বসতবাড়ি দেখলাম। পরে দুপুরের খাবার জন্য সকলে একটি রেস্টুরেন্টে গেলাম। এ রেস্টুরেন্টটি সেলফ সার্ভিস বুফে নয়। তবে খাবার ভালো ও তুলনামূলক ভাবে সস্তা। প্রচুর ভিড়ের কারণে আমরা বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করে সিট্ পেলাম। দু প্লেট বিভিন্ন প্রকার মাংস,দু প্লেট সী ফুড, সালাদ , যার যার পছন্দমতো জুস বা সফট ড্রিঙ্কস দিয়ে আমরা আট জন দুপরেরে খাবার খেলাম। এখানে এক প্লেট খাবার চার জনের জন্য ধরা হয়। খাবার পর পরবর্তী গন্তব্যে যাবার জন্য তৈরি প্রস্তুত হলাম।
আমাদের পরবর্তী প্রোগ্রাম গত ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল উপলক্ষে নির্মিত বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়াম ও সংলগ্ন অন্নান্য স্থাপনা পরিদর্শন। গাইডের তত্ত্বাবধানে আমরা রিও’র ফুটবল পল্লীতে গেলাম। মারাকানা স্টেডিয়ামের বিশালতা ও নির্মাণশৈলী দেখে আমরা চমকিত ও বিমোহিত। উল্লেখ্য ,এ স্টেডিয়ামেই গত ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলের উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য খেলা অনুষ্ঠিত হয়। মারাকানা স্টেডিয়াম প্রথমে ১৯৫০ সালে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ টুর্নামেন্ট উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ ওয়ার্ল্ড কাপ টুর্নামেন্ট উপলক্ষে রেনোভেশন করে আরো বড় ও আধুনিক করা হয়। এ স্টেডিয়ামে আশি হাজার দর্শক একসাথে খেলা উপভোগ করতে পারেন। তবে গত ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনাল খেলায় এক লক্ষ্য চুয়াত্তর হাজার দর্শকের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়। আমাদের পরিদর্শনের সময় কিছু সংস্কার কাজের জন্য ভিতরে যাবার গেটগুলি বন্ধ থাকায় আমরা বাহির থেকে ঘুরে দেখলাম। স্টেডিয়ামের ভিতরে দেখতে না পেয়ে আমাদের মন খারাপ হয়ে গেল। মারাকানা স্টেডিয়ামের সাথেই ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল ও আরো বেশ কয়েকটি ফুটবল টিমের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবস্থিত। মারাকানা স্টেডিয়ামের পাশেই রয়েছে আরো দুটি স্টেডিয়াম। আসে পাশে ফুটবল খেলোয়াড়দের বসবাসের জন্য অনেক এপার্টমেন্ট ,হোটেল ও ফুটবল সরঞ্জামের দোকানপাট। এ এলাকায় এসে মনে হল ব্রাজিল আসলেই ফুটবলের দেশ।
ছবি:-বিশ্ব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট/ ১৪ উপলক্ষ্যে নির্মিত মারাকানা স্টেডিয়াম, রিও,ব্রাজিল
ফুটবল পল্লী দর্শন করতে বিকেল সাড়ে চারটা বাজলো। এবারে আমাদের গন্তব্য রিও তথা বিশ্বের অন্যতম একটি নিদর্শন কর্কোভাডো (CORCOVADO ) পর্বতের চূড়ায় নির্মিত “CHRIST THE REDEEMER” এর স্ট্যাচু পরিদর্শন। ব্রাজিল তথা সারা বিশ্বের মধ্যে কর্কোভাডো পর্বতের চূড়ায় এ স্ট্যাচুর কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কর্কোভাডো পর্বতের ৭১০ মিটার উচ্চতায় এ স্ট্যাটু কিভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল সেটা ভাবতে ভাবতে আমরা প্রায় সরাসরি খাড়া পথ ধরে পাহাড়ি পথে উপরে উঠছি। কর্কোভাডো পর্বতটি রিও’র তিজুকা ফরেস্ট ন্যাশনাল পার্ক এলাকায় অবস্থিত। ফ্রান্সিসকো ও রোজানা জানালো কর্কোভাডোর উপরে আকাশ ভালো থাকলে স্ট্যাটুর সম্পর্ণ অবয়ব দেখা যাবে।
কর্কোভাডো পর্বতের প্রায় দুহাজার মিটার উপরে কসমো ভেলো (COSME VELHO ) পর্যন্ত রিও থেকে বাস,ট্রেন বা ট্যাক্সি করে যাওয়া যায়। এ জায়গাটি থেকে বিশেষ ভাবে নির্মিত শক্তিশালী ইঞ্জিনের এক ধরণের ছোট গাড়িতে পর্বতের চূড়ায় যেতে আরোহন করতে হয় । কসমো ভেলো থেকে সর্বোচ্চ চূড়ায় “CHRIST THE REDEEMER” স্ট্যাচুর পাদদেশ পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। এখানে একটি কন্ট্রোল রুম আছে যেখান থেকে মনিটরে সর্বোচ্চ চূড়ায় জেসাসের স্ট্যাচুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা যায়। উপরে মেঘ বা আকাশ পরিষ্কার আছে কিনা সেটা দেখে সকলে চূড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। আমরা মনিটরে দেখলাম স্ট্যাচুর উপরিভাগ মেঘে ঢাকা রয়েছে। এ অবস্থায় উপরে যেয়ে পরিষ্কারভাবে স্ট্যাচু নাও দেখা যেতে পারে। আমরা রোজনার পরামর্শ মতে ঘন্টাখানেক স্যুভেনির শপে ঘুরাঘুরি ও কফি পান করে কাটালাম। কসমে ভেলো’তে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট ,কাফে ও স্যুভেনির শপ আছে। আবার মনিটরে চূড়ার অবস্থা দেখলাম। আগের মতোই অনেকটা ঘোলাটে আকাশ। তবুও আমরা চূড়ায় যাবার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। তাই বিশেষ ধরণের সেই গাড়ি ভাড়া করে চূড়ায় আরোহরের জন্য আমরা রওয়ানা দিলাম। এ সময় ভীষণ রোমাঞ্চ অনুভব করছিলাম। প্রায় খাড়াভাবে আস্তে আস্তে উপরে উঠছি। অবশেষে কর্কোভাডোর চূড়ায় ‘CHRIST THE REDEEMER ‘এর পাদদেশে পৌছালাম।
সমতল ভূমি থেকে এত উঁচুতে আবহাওয়া বেশ ঠান্ডা। গাড়ি থেকে নেমে শরীরে ঠান্ডা শিহরণ অনুভব করলাম। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য চূড়ার চারিপাশে রেলিং দিয়ে ঘেরা। আমরা স্ট্যাচুর পায়ের কাছে যেয়ে উপরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে যীশুর সম্পূর্ণ অবয়ব দেখার চেষ্টা করলাম। তবে আকাশ মেঘলা থাকায় পরিষ্কার ভাবে দেখা গেলো না। তার পরেও যতটুকু দেখলাম তাতে আমরা সবাই অবিভুত। যীশু খ্রিষ্ট যেন পর্বতের চূড়ায় আরোহন করে দুহাত প্রসারিত করে তার পাদদেশে অবস্থিত রিও বাসীদের আশীর্বাদ করছেন !! মাথায় এ চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল কিভাবে এতো উপরে এ স্ট্যাচু নির্মাণ করা হয়েছে !!! এ স্টাচু কে বর্তমান বিশ্বের নুতন সপ্তম আশ্চর্যের একটি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। স্ট্যাচুটি ৩৮ মিটার লম্বা ও পায়ের দৈর্ঘ্য ৮ মিটার। ১৯২২ থেকে ১৯৩১ সালের মধ্যে নয় বছরের এটি ‘REINFORCED CONCRETE AND SNAPSTONE’ দ্বারা নির্মাণ করা হয়। সম্পূর্ণ স্টাচু টির ওজন ১৪ শত টন। সুইডেন থেকে SNAPSTONE পাথর এনে পার্ট পার্ট করে নির্মাণ করে পর্বত চূড়ায় নিয়ে সংযোগ করে এটি নির্মাণ করা হয়। এটি বর্তমান বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম যীশু খৃষ্টের স্টাচু। এটির পাদদেশে অর্থাৎ পায়ের নিচে একটি গির্জা/ চ্যাপেল আছে যেখানে ১৫০ জন একত্রে প্রার্থনা করতে পারেন।
ছবি:-কর্কোভাডো পাহাড় চূড়ায় ‘CHRIST THE REDEEMER ‘ রিও, ব্রাজিল
ব্রাজিলে এসে CHRIST THE REDEEMER এর স্টাচু না দেখে গেলে ব্রাজিল ভ্রমণই অসুম্পূর্ণ থেকে যায় বলে অনেকে বলে থাকেন। ব্যাক্তিগতভাবে আমারও মনে হল এটি না দেখে গেলে অনেককিছুই যেন অদেখা থেকে যেতো। রেলিং এর চার পাশে ঘুরে মুগ্ধ নয়নে রিও শহর, তিজুকা রেইন্ ফরেস্ট ,মারাকানা ফুটবল পল্লী, রিও’র বিচ ও লেগুনা সমূহ দেখতে লাগলাম। এখন থেকে রিও শহরের অপরূপ সৌন্দর্য পূর্ণাঙ্গরূপে নজরে আসে। ক্যামেরায় আমার হাত মোটেই ভালো নয়। এতদসত্তেও যতদূর পেরেছি এখন থেকে রিও’র চারিদিকের অনেকগুলি ছবি তুললাম। সফর সঙ্গীরাও মুগ্ধ নয়নে চারিদিকের দৃশ্যাবলী দেখছে আর ছবি তুলছে। একসময় রোজানা বলল সন্ধ্যা হতে চলেছে। এখন ফেরার পথ না ধরলে পর্বতের ঢালু রাস্তাদিয়ে রাতের বেলা যাওয়া অনেক বিপদজনক। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদের অপেক্ষামান ছোট গাড়িতে আরোহন করলাম। কসমো ভেলো থেকে উপরে চূড়ায় উঠতে বিষ মিনিট লাগলেও নামতে লাগলো পনেরো মিনিট। ফ্রান্সিসকো কসমো ভেলোতে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো। কসমো ভেলো থেকে ভিন্ন আর একটি পাহাড়ি পথে নামতে লাগলাম। গাড়ি প্রায় খাড়া নিচে নামছে আর আমরা কেউ কেউ ভয়ে শিউরে উঠছি। অবশেষে বিষ মিনিট পরে আমরা রিও যাবার সংযোগ সড়কে পৌছালাম। তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হয়ে রাত নেমেছে । তার পরেও ফ্রান্সিসকো ও রোজানা গাইডদ্বয় তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক আমাদের নিয়ে রিও’র ‘LEBLON BEACH’ ও পাহাড় পর্বতে ঘেরা কিছু লেগুনা দর্শনের জন্য নিয়ে গেল। সেগুলি দর্শনের পর রাত নয়টার দিকে তারা আমাদের এপার্টমেন্টের গেটে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। তাদের যাবার সময় আমাদের সকলের খুব খারাপ লেগেছিল । স্বামী -স্ত্রী মিলে এ টুরিস্ট গাইডদ্বয় সারাদিন একসাথে থেকে আমাদের বন্ধুর মতো হয়ে গেছিল। যাবার সময় তারা বিনম্রচিত্তে অনুরোধ করেছিল তাদের কোম্পানি ‘প্যারাডাইজ ট্যুরিজম’ এর সেবার মান নিয়ে যেন আমরা প্রত্যেকে রিভিউ লিখি।
সারাদিন ব্যাপী রিও ‘ডে ট্যুর’ শেষে ‘LEBLON BEACH’ এ ফ্রান্সিসকো ও রোজানার সাথে আমাদের একটি ছবি
আমাদের রিও ভ্রমণ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। রিও’তে পাঁচ দিন থেকে আমাদের ‘FLORIANAPOLIS’ যাবার পরিকল্পনা রয়েছে। সকালে উঠে রিনালদো সবাইকে এ বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিল। সকালের ব্রেকফাস্ট শেষ করে কাপাকবানা বিচ এলাকায় কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করলাম। পরে একটি কাফেতে বসে হালকা স্নাক্স শেষে রিও’তে আমাদের অবস্থান ও ভ্রমণ বিষয়ে স্মৃতিচারণ করছিলাম। হটাৎ করেই যেনো রিও অবস্থানকাল শেষ হয়ে গেল । আমার মনে হল কেন আমরা রিও’তে আরো বেশি দিন থাকার প্ল্যান করিনি। আমার বলতে দ্বিধা নাই যে সমগ্র ব্রাজিল বা বিশ্বের সেরা পর্যটন নগরীর মধ্যে রিও অন্যতম । রিও’কে ঘিরে আরো অনেক কিছুই আছে কিন্তু আমরা যথাযথ পরিকল্পনা ও সময়ের অভাবে তার সব কিছু দেখতে বা উপভোগ করতে পারলাম না। তবে গত পাঁচদিনে রিও’কে যতটুকু জেনেছি তাতে রিও’কে এককথায় একটি ‘MARVELOUS’ নগরী বলে কোনো দ্বিধা নাই। রিও সম্পর্কে বলতে যেয়ে একজন নামকরা কমেডিয়ান MARVELOUS শব্দটি ব্যবহার করেছেন। রিও সম্পর্কে তিনি লিখেছেন,” “Darling, you look marvelous!!” He might have been speaking about Rio de Janeiro. This is a city with so many adjectives it puts a thesaurus to shame. Beautiful, breathtaking, fun, friendly, exciting and yes, marvelous! Rio de Janeiro is a city of wonder both in its surroundings and its people. There is no other place like it on Earth!”
রিও ভ্রমণ শেষে একজন টুরিস্ট তার রিভিউতে লিখেছেন,” There is nothing more marvelous than some of the major tourist attractions in the area. The beaches of Ipanema and Copacabana are famous world wide and filled with beautiful people, pristine white sand and cool ocean waters. The views from Sugar Loaf and Corcovado are jaw-dropping.” আর একজন টুরিস্ট লিখেছেন,”This is a city, top to bottom, filled with marvelous sights, sounds and people. The beauty and joy are so infectious; visitors cannot help but to feel blissfully happy during their stay in Rio.” রিও ভ্রমণ করে সকলেই এ ধরণের মন্তব্য/বিবৃতি দিয়েছেন । ভ্রমণ পিপাসু টুরিস্ট বা পর্যটক সকলেই ভ্রমণ শেষে বলেছেন,” I LOVE RIO “। রিও ভ্রমণের শুরুতেই আমি সেটা উল্লেখ করেছি । আমাদের ভ্রমণ শেষে সকল ভ্রমণ পিপাসু টুরিস্ট বা পর্যটকদের সাথে একাত্ম হয়ে আমরাও একই বাক্যের পুনঃউল্লেখ করছি ,” I LOVE RIO “।
To be contd /………….
আমি ব্রাজিল যেতে চাই