নরওয়ে থেকে:-

মান্দালের হিমশীতল এই রাতে মাকে মনে পড়ে।
সারাদিনের ব্যস্ততায় ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীর আমার ,
নিস্তব্দ জনমানবহীন এই শহরে, কুয়াশা ঢাকা রাতের মলিনতায় কাজ শেষে ইচ্ছে করে মায়ের হাতের এক কাপ চা।
বুক ফাটিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে  করে –
ইচ্ছে  করে নিস্তব্দ এ শহর ছেড়ে দূরে অনেক দূরে কোথাও হারিয়ে যাই !
কুয়াশার স্নিগ্ধতায় ঢাকা শিশিরে ভেজা শীতের সকাল গুলো দেখতে চাই আবার ।
ফিরে যেতে  ইচ্ছে  করে আমার বোন মান্নার কাছে।
সব হারানো এই আমি আগের মতো করে সব ফিরে পেতে চাই আবার।
সারাদিন প্রলোভনের মাঝে দিন কাটে,
লক্ষ টাকার প্রলোভন, সুন্দরী মেয়েদের প্রলোভন, সুখী সুন্দর জীবনের প্রলোভন !
তবুও কেন জানি ফিরে যেতে ইচ্ছে করে লাল সবুজের বাংলায়।
বুক ফেটে গেলেও যাওয়া হবেনা জানি ,
১৭০ মিলিয়ন জনগণের বাংলাদেশে আমাদের জন্য জায়গা আছে কি আর ??
তবু বাপ্ দাদাদের ভিটে মাটিতে ফিরে যেতে মন চায় ,
ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াতে রবি ঠাকুর, লালন ফকির, হাসন রাজা আর বঙ্গবন্ধুর দেশে,
ফুসফুস ভরে নিশ্বাস নিতে ইচ্ছে করে দারিদ্রতার যাঁতাকলে নিষ্পেষিত বাংলায়।
যে দেশের বাতাস আর মাটিতে মিশে আছে আমার বাপ্ দাদাদের ঘামের গন্ধ , স্বপ্ন আর না পাবার হাহাকার।
রাত গভীর হয়, দেশ বিদেশে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের কথা মনে পড়ে।
মনে পড়ে জেনিফা, বুবলি, আর শ্রীমঙ্গলের শতাব্দী রায়ের কথা ,,
কথা দিয়ে যারা কেউ কথা রাখেনি আর ।
জানি একদিন সব খেলা শেষ হবে,,
মিশে যাবো বড়ো বড়ো পাথরে ঢাকা নরওয়ের হিমশীতল কোনো এক চার্চের আঙিনায়,,
স্বশরীরে ফিরতে যদি নাও পারি , ভোরের কাক হয়ে বারে বারে ফিরি যেন জীবনানন্দের রূপসী বাংলায়।
যতই রং মাখি , যতই সং সাজি , দিনশেষে বাংলাকে কি আর ভুলে থাকতে পারি ?
ভুলতে পেরেছিলো কি কেউ কোনোদিন ??

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন