টরন্টোতে এখন অনেক সংগঠন , অনেক গুলি ক্লাব। বলতে গেলে প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো প্রোগ্রাম থাকে। আগে খুব একটা যাওয়া হতো না। বর্তমানে ব্লগের সাথে সম্পৃক্ততার কারনে সময় আর সুযোগ পেলেই গিয়ে হাজির হই।
১৮ ই ফেব্রুয়ারী ৯ ডজ রোডে অনুষ্ঠিত হলো ” গ্রেটার খুলনা এসোসিয়েশন অফ অন্টারিও ” এর “খুলনা ফ্যামিলি নাইট ”
বিকাল ৫টা নাগাদ ফোন করলাম কমিটির একজন গণ্যমান্য সাদস্যকে:-
: ভাই কখন আসবো ?
: সন্ধ্যা ৬:৩০মিঃ
:৭ টায় আসলে হয় না ?
:আমরা কিন্তু ৬:৩০মিঃ এ শুরু করবো।
যথাস্থ , ফোনটা রেখে দিলাম। বিকাল ৬:৪০মিঃ এর সময় পৌঁছে গেলাম , পার্কিং লট প্রায় শূন্য। নিজেকে শান্তনা দেবার জন্য অর্ধাঙ্গিনীকে বললাম “আজ মনে হয় সবাই গাড়ী আনেনি, তাই পার্কিং লট খালি” । কিন্তু হলের গেটে পৌঁছে দেখলাম আমরা চার নাম্বারে। ভাবলাম ইশ যদি আর ৫ মিনিট আগে আসতাম , তা হলে তৃতীয় স্হানটা দখল করতে পারতাম। ..!!!
খুলনা ফ্যামিলি নাইট এর আভিধানিক অর্থ যাই হোকনা কেন , এই টাইটেলটা সাধারনত আমরা ব্যবহার করে থাকি যে কোন সাংঘঠনের আয়োজিত কোনো সান্ধ অনুষ্ঠানের ক্ষেএে।সেই হিসাবে এইটা ছিল খুলনবাসীদের একটা সাংসকৃতিক আয়োজন।
চিরাচরিতো বাঙালী প্রথার হাত ধরে ৬:৩০মিঃ আর অনুষ্ঠান শুরু হলো সন্ধ্যা ৭:৩০মিঃ। পরিচয় পর্বের পর যখন প্রথম শিল্পী মঞ্চে আসলেন , তখন ঘড়ির কাটা ৮টা ছুঁই ছুঁই করছে। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারী, মনে করেছিলাম সেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুনতে পাবো ২/১টা একুশের বা দেশের গান। সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হলো যখন অনুষ্টানের দ্বিতীয় শিল্পি মঞ্চে এসে বলিউড স্টাইলে হিন্দি গান পরিবেশন শুরু করলেন। (এইটা খুলনা কালচারের কোন অধ্যায় আমার জানা নাই ), আমরা কি এতোই কাঙাল যে আমাদের ভান্ডারে কোনো ভালো বাংলা গান নাই যেটা আমাদের পরবর্তী জেনারেশনের মধ্যে তার সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে শেখায় ?
অনুষ্টানের যে জিনিষটা সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তা হচ্ছে আয়োজকদের প্রতি জনের আন্তরিকতা। বিশেষ করে যারা খাবার পরিবেশনায় ছিলেন , তাদের সবাই অত্যান্ত পারদর্শিতার সাথে , সুন্দর ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। খাবারের মানও ছিল সকল প্রশ্নের উর্ধে।
তবে কথায় আছে যার শেষ ভালো তার সব ভালো তার। আর এখানে আসেই অনুষ্ঠানের মান প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছে। অপত্তিকর পোষাক পরা একজন নৃত শিল্পীর সাথে , হিন্দি গানের তালে তালে একজন “কর্মকর্তার ” নাচটি অনেকের সমালোচনার বিষয় ছিল। অনেকে চলে যেতেও দেখছি। এই বিশেষ ধারাটা খুলনার সাংস্কৃতির সাথে কবে যুক্ত হলো আমার জানা নাই।
আশাকরি আগামীতে মহিলা দর্শকদের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা বোধ থেকে হলেও এই ধরণের বিষয়কে “আয়োজক কমিটি ” দূরে রাখবেন।
আসুন আমরা অতীতের ভুল থাকে শিক্ষা নেই – একই ভুল আর আগামীতে করবো না।