ইউক্রেন থেকে:-
আমাগো সময় এখনকার নববর্ষের অন্যতম প্রধান খাদ্য “ইলিশ মাছ” নিয়া এত ভন্ডামি হয় নাই। ছোটবেলায় পয়লা বৈশাখে কুমিল্লা টাউন হলের মেলায় এক হাতে তালপাতার সেপাই আর বগলে পোড়ামাটির ঘোড়া নিয়া মিঠাই খাইতে খাইতে গুরুজনের হাত ধইরা মহা আনন্দে ঘুইরা বেড়াইতাম।
আরও পরে আশি দশকের শুরুতে বইমেলায় ঘোরাফেরা কইরা কিংবা কোনো বৈশাখী মেলার আড্ডায় বাদাম-ফুচকা খাইয়া সময় কাটতো ভালই। শুটকি মাছ আর পান্তা ভাত দিয়া বর্ষবরন করার নতুন ট্রেডিশনের কথাটা ওইসময় সবেমাত্র কানে আইছিলো। তবে ইলিশ মাছ নিয়া এত শোরগোল হয় নাই তথন।
নববর্ষে কি খায় প্রবাসী বাঙালিরা? কইতে পারি না। তবে এইখানে ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না বইল্যা দুঃখ হয় না। টুনা মাছের (tuna) আকার অনেকখানি ইলিশের মত হইলেও ম্যাক্রেলের (mackerel) স্বাদ কিছুটা আমাগো জাতীয় মাছের কাছাকাছি।অতএব নববর্ষে রান্না করা হইল ম্যাক্রেল। সেইসাথে পাঙ্গাস মাছ। ওই দুই মাছেরই দাম এইখানে প্রায় US$ 2.4 কেজি। শুনতে ভালো লাগে না? দেশে নববর্ষের আগে ইলিশ মাছ নাকি বিশ হাজার টাকায় বিক্রি হয়, শুইন্যা ধাক্কা খাইলাম।হায়রে শোনার বাংলার শোনার ইলিশ!
গ্রিনডারে শুটকি, পেঁয়াজ, রসুন আর লংকা পেস্ট কইরা শুটকি ভর্তাও বানানো হইছিলো নববর্ষের দিন । চমত্কার! যা আছে, তা নিয়াই খুশি থাকতে হয়, বেহুদা ঝামেলা কইরা লাভ আছে?
নববর্ষ উদযাপনের কারনে চড়া দামে ইলিশ কিনার প্রতিযোগিতা কইরা লোক দেখানো সংস্কৃতি- প্রেমের মত ভন্ডামির কোনো মানে আছে কিনা জানিনা। যাই হোক, অভিযোগ কইরা লাভ নাই, ভন্ড আর ভাবের পাগলের অভাব কোনকালেই হয় নাই বইল্যা আমাগো “জাতীয় সমস্যারও” কমতি নাই কোনো!
দাদা,
প্রবাস জীবনে দুধের সাধ ঘোলেই মিটাতে হয়।
এইতো প্রবাস জীবন…!!!