১৯৮৭ সাল।
অন্য অনেক দিনের মতো ঝকঝকে একটা দিন
কিন্তু উত্তাল ঢাকার রাজপথ
বারুদের গন্ধ, জলপাই রঙা ট্রাকের ছুটোছুটি
টিএসসি ফুটছে, কলাভবন, ফুলার রোড
কোথায় নেই উত্তাপ!
নতুন করে স্বাধীনতার জন্য
মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য
ছাত্রজনতার সম্মিলিত শক্তি উড়িয়ে দিচ্ছে বারুদের গন্ধ
রক্তে তাদের যোশ
ফুটছে রক্ত, নুর হোসেনের রক্ত
উত্তপ্ত রোদ যেন নুর হোসেনের রক্ত
পুড়িয়ে দিচ্ছে সব
চলন্ত পোস্টার নুর হোসেন
‘স্বৈরাচার নিপাত যাক
গণতন্ত্র মুক্তি পাক’!
চোখে তার আগুন, মুষ্টিবদ্ধ হাত
উঠছে নামছে
যেন পদ্মা মেঘনা যমুনার পানির জলোচ্ছ্বাস
ও ভাসিয়ে নেবে সব
ভাসিয়ে নেবে অন্যায়
খুলে নেবে স্বৈরাচারের গায়ের পোশাক—
টিভি ক্যামেরা, ফটো সাংবাদিক, পুলিশ , জনতা
সব চোখ নুর হোসেনের দিকে তাকিয়ে
অথচ ভ্রূক্ষেপ নেই তার
মরণ নেশায় এগিয়ে যাচ্ছে দীপ্ত পায়ে।
কার কাছ থেকে পেয়েছে এই প্রেরণা
অটোচালক পিতার ছেলে নুর হোসেন
স্কুলের গন্ডি পেরুনো হয়নি তার
অথচ দারিদ্র্য তাকে করেছে মহান।
রাজনীতি তাকে থাকতে দেয়নি ঘরে
বেরিয়ে গেছে গণতন্ত্রের নেশায়—
অকস্মাৎ বুলেটে ঝাঁঝরা হয় বুক তার
মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আরেক বাংলাদেশ
রক্ত পিয়ে এ মাটিতেই ফলে আবার মানুষের অধিকার
কথা বলার অধিকার
গণতন্ত্রের অধিকার
জাতির পিতার দেখানো গনতন্ত্রের অধিকার।