দুপুরের পর থেকে কয়েক পশলা ভারী থেকে মাঝারী আকারের বৃষ্টি হয়ে গেলো। টরোন্টোর কিছু কিছু এলাকাও প্লাবিত হয়ে গেছে। যেতে হবে ডেনফোর্থ , বহিরাগত একজন অথিতীর সাথে দেখা করে জন্য।
যাবো কি যাবো না , দোটানায় ভুগছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে পড়লাম। সারাটা পথেই বৃষ্টি ছিল। সময় মতো পৌঁছে দেখলাম আমার অথিতী এখনো পৌঁছুন নাই। বৃষ্টির কারণে এই বিলম্ব। টিপ্ টিপ্ করে তখনো বৃষ্টি পড়ছিলো। বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ডানফোর্থ এভিনিউ এ একটা দোকানের সান শেডের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম। চলছিল বৃষ্টি- বিলাস। হটাৎ করেই সম্বিত ফিরে পেলাম ।
একজন শেতাঙ্গ বৃদ্ধা তার বাজার নিয়ে যাচ্ছিলো, হাতে তার পলিথিনের ব্যাগ আর মাথায় ছাতি। আর তার কিছুটা পিছনে একজন বাঙালী ভদ্রলোক তার দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। উনিও বাজার করে ওনার শপিং কার্টে বাজার সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন।বাচ্চা দুটি আনুমানিক ৭-১০ বছর বয়েসের হবে। সামনের মহিলার ব্যাগটা ওজনের কারণে ছিড়ে কিছু জিনিস পড়ে যাবার উপক্রম হতেই ওই বাঙালী ভদ্রলোক এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধার হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে সামাল দিলেন। ব্যাগটা অনেক খানিক ছিড়ে গেছে। ওটা আর ব্যাবহার যোগ্য নয়। মহিলার কাছে আর কোনো ব্যাগও নাই। তখন ভদ্রলোক ওনার বাজার সামগ্ৰি শপিং কার্টের মধ্যে ঢেলে নিজের দুটি ব্যাগ খালি করে ওই মহিলার বাজার সামগ্ৰি ব্যাগ দুটির মধ্যে গুছিয়ে দিলেন। এই কাজে বাচ্চা দুজনও বাবাকে সাহায্য করছিলো।
শ্রদ্ধা জানাই সেই নাম না জানা মানুষটিকে , আর ভালোবাসা রইলো ওই দুটি শিশুর জন্য। মনে হলো এই প্রবাসী জীবনে আমাদের অনেক কিছুই হারিয়ে গেলেও “বিবেক এখনো মরেনি। ”
ছবি:-সৈজন্যে Reddit
সশ্রদ্ধ অভিনন্দন নাম না জানা ঐ পরিবারটিকে। মানুষের খারাপ দিকগুলোই আমাদের চোঁখে বেশি পড়ে, ভালো দিকগুলো নয়. এসব মানুষদের জন্যই মানবিক বোধ এখনো টিকে আছে, টিকে আছে পৃথিবী। চমৎকার পর্যবেক্ষণের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ,যাযাবর ভাই.