ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন যে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মান জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে অর্থ না দেয়ায় এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নাম আসেনি।” উনি আরো বলেন, পাঠদান, গবেষণা, জ্ঞান আদান-প্রদান ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে র্যাংকিংয়ের প্রয়োজন নেই।”
১ আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থী ৩৮ জন থাকলে সেখানেতো র্যাংকিংয়ের প্রয়োজন হবে না। আর সেই কথা ভেবে পুলকিত হলে চলবে না। একথা সত্যি যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষ শিক্ষক, গবেষক এবং ছাত্র/ছাত্রী আছে, তবে এদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। আমি উনার কথার সাথে ১০০% একমত হতে পারি না, কারণ আমি নিজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এসেছি এবং এখনো অহরহ যারা নতুন বের হচ্ছে তাদের অনেকের সাথে যোগাযোগ হয়। অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। আপনাদেরকে র্যাংকিংয়ে যাওয়ার দরকার নেই, তবে দলাদলি, তাবেদারী আর চামচামি বাদ দিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে চেষ্টা করুন তাতে কাজ হবে। শুধু শুধু এর ওর দোষ দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে চললে ভবিৎষত শঙ্কামুক্ত হবে না।
আমাদের মধ্যে অন্যকে appreciation করার প্রবণতা যেমন নেই তেমনি নিজের কোথাও ভুল থাকলে সেটি স্বীকার করতেও অনেক কষ্ট হয়। দেশের জাতীয় রাজনীনিতিবিদ, সুশীল সমাজ, সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে যদি এই প্রচলন না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষ কি শিখবে। ডক্টর ইউনুছের নোবেল পাওয়া নিয়ে কোনো কোনো নেতাকে বলতে শুনেছি, কিছু সাদা পানি খাওয়ালে নাকি নোবেল পুরস্কার পাওয়া যায়। আমার সন্দেহ ওই নেতারা উনাকে কেন নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল তা হয়তো জানেনই না। মিঃ ইউনুছের সমস্যা থাকতে পারে, আপনার উনাকে পছন্দ নাও হতে পারে, আবার উনি অনিয়মও করতে পারেন, কিন্তু সেজন্য তো আপনি তার নোবেল প্রাপ্তি নিয়ে মশকারা করতে পারেন না।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের চর্চা কতখানি সেটি আমরা সবাই ভালো করে জানি। এখন কোনো প্রতিষ্ঠান যদি কোনো জরিপে দেশটিকে সঠিক গণতন্ত্র চর্চার দেশের লিস্টের বাইরে রাখেন তাহলে কি আমরা সেটিকে ভুল প্রমাণিত করার জন্য বিভিন্ন বাহানা দিয়ে উঠে পড়ে লাগবো। আরে ভাই, ওই র্যাংকিংয়ের কথা বাদ দিয়ে কিছু কাজ করেন। আর সেই ভালো কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না, আপনার দেশেই যোগ্য লোক আছে তাদের একটু সুযোগ দিন এবং তাদের কাছ থেকে শিখুন, তাহলে ওই র্যাংকিং ট্যাংকিং দরকার হবে না, মানুষ এমনিতেই চিনবে। আমি সবাইকে ঢালাও করে দোষী করিনি, আমার সবিনয় শ্রদ্ধা সেই সমস্ত (কিছু সংখক) নিবেদিত প্রাণ গবেষক, শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের জন্য যারা শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এবং যথাযত মূল্যায়ণ না পেয়েও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
ধন্যবাদ। মুকুল