ছোটবেলা থেকেই যে আমি বোকাসোকা এটা রীতিমতো মাতাপিতা আত্মীয় পরিজন স্বীকৃত। নানী আমার মা-কে বললেন, তোর ছেলের বুদ্ধি কম, মাঝে মাঝে নিয়ে আসিস, আমার ছাগীর দুধ খেলে বুদ্ধি বাড়বে। শহরের এমাথা ওমাথা দাদাবাড়ি আর নানাবাড়ি, মাঝে মাঝেই রিকশায় শাড়ী পেছিয়ে পর্দা করে মা আমাকে নিয়ে যেতেন নানাবাড়ি ছাগীর দুধ খাওয়াতে। রিকশা ভাড়া যাইতে আটআনা আসতে আটআনা, দুধ ফ্রী, তবুও ছেলের বুদ্ধি বাড়ুক!!
কিন্তু মাসখানেক পর হঠাৎ ছাগীটি মাঠ থেকে লাপাত্তা, খুঁটা আছে দড়িও আছে,ছাগী নেই! চোরে নিলো? না কোন পাঁঠার সাথে ভেগে গেলো? কেউ তা জানে না।
ব্যাস, আমার বুদ্ধিবৃদ্ধি অভিযান সেখানেই সমাপ্তি।
“প্রেম এবং বৈবাহিক জীবনেও একই অবস্থা। গিন্নির কাছে আমি গাধার চেয়েও নিন্মবুদ্ধি সম্পন্ন মনুষ্য প্রাণী বিশেষ। দুরারোগ্য ব্যধীতে আক্রান্ত হয়ে তিনি অকালে ইহলোক ত্যাগ করার আগে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বলে গেলেন, ” তোমার জন্য আমার মরেও শান্তি নেই, বুদ্ধি করে যে আর একটা বিয়ে করবে,তাও তুমি পারবে না”।
সত্যি পারিনি, বুদ্ধি এবং সাহস কোনটাতেই কুলায় নাই দ্বিতীয় দ্বার পরিগ্রহের।
অবশেষে সংসার বিবাগী হয়ে চলে এলাম মহামতি(!)ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রে।
ওমা!! এখানে এসে দেখি মার্কিনীদের মাথায় বুদ্ধি গিজগিজ করছে। এঁরা পরের ঘরে পোদ্দারি করতে ওস্তাদ কিন্তু নিজের ঘরে কাউকে ঢুকতে দেয় না।
আগেও দেখেছি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আর বিপক্ষ দলের বাঘা বাঘা নেতাদের উপসচিব পর্যায়ের একজন মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে পয়গম্বর মনে করে হুজুর হুজুর করতে করতে তাঁর কাছে একে অপরের বিরুদ্ধে কানভাঙানীর প্রতিযোগিতা!!
”’ চিন্তার সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম, মার্কিনীদের এতো বুদ্ধির উৎস কি? হঠাৎ একদিন, ইউরেকা!! ইউরেকা!! উৎস তো সেই নানীর প্রেসক্রিপশন!! ছাগীর দুধ!! সুপার সপ ভর্তি ছাগীর দুধ। এঁরা গ্যালন গ্যালন ছাগীর দুধ খায় আর বুদ্ধি বাড়ায়!!!
আফসোস যে, আমার বুদ্ধিবৃদ্ধির দিন শেষ, এখন শুধুই ক্ষয়।