টরেন্টো, কানাডা থেকে:-
সুইস ব্যাংকে একদিন গিয়েছিলাম।ব্যাংকে ঢুকে যে বিশেষ কিছু মনে হলো তা নয়। সুইস ব্যাংকের পরিচিতি তাদের চেহারা সুরতের জন্য নয়, মূলত তাদের কিছু নিয়ম কানুনের জন্য বিশেষ করে ব্যাংকিং গোপনীয়তার জন্য সেটা বোধকরি সবারই জানা।জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় থেকে দেয়া একটি চেক ভাঙ্গাতেই গিয়েছিলাম সুইস ব্যাংকে আর সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলাম হাই কমিশনারের একজন স্পেশাল রেপোর্টেয়ারের আমন্ত্রণে একটি বিশেষজ্ঞ মিটিং এ অংশগ্রহণ করতে। তবে সুইজারল্যান্ড ভ্রমনটা তেমন সুখকর ছিল না, কাহিনীটা আমার অন্যসব ভ্রমণ থেকে একটু ভিন্নতর।
সুইজারল্যান্ড-এর ভিসা পাওয়া এতটা সহজ হবে বুঝতে পারি নি।কোন ভিসা ফিও দিতে হলো না, জাতিসংঘের আমন্ত্রণপত্রই আমাকে এ সুবিধা এনে দিল।একটু চিন্তিত ছিলাম কারণ সুইজারল্যান্ড যাওয়ার আগে আমাকে আরেকটি মিটিং এ যেতে হয়েছিল তাঞ্জানিয়ায়। তাই স্বল্প সময়ে পাসর্পোট হাতে পাওয়া আমার জন্য ছিল জরুরি।প্রত্যাশিত সময়ের আগেই ভিসাসহ পাসর্পোট হাতে পেলাম।তাঞ্জানিয়া থেকে ফিরে এলাম যেদিন তার পরদিনই সুইজারল্যান্ড যাত্রা।
যাত্রা শুরু করতে বোধ হয় একটু দেরিই হয়ে গিয়েছিল।আসলে অন্য সময় হলে হয়তবা সমস্যা হতো না।ঢাকা থেকে ফ্লাইট ছিল সন্ধ্যা বেলা।প্রায় একই সময়ে তিনটি ফ্লাইট টেইক অফ করার কথা, আর এজন্যই ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রচন্ড ভিড়।আমি সবার পেছনে।এয়ারলাইন্স কর্মকর্তারা স্ব স্ব যাত্রীদের কাউন্টার পার করা নিয়ে ব্যস্ত।কাউন্টার পার হয়ে বোর্ডি রুমে যেতে যেতে আমার নাম কয়েকবার ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে।প্লেইনে যখন উঠছি আমার পেছনে আর কোন যাত্রীকে দেখলাম না।প্লেইনে উঠতেই ফ্লাইট এটেনড্যান্ট আমার কেবিন ব্যাগটা তাঁর কাছে দেয়ার অনুরোধ করলেন।কেন?- জানতে চাইলাম।তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানালেন যে ব্যাগটা কেবিনে রাখার মত জায়গা নেই।আমার সীট নম্বর জেনে নিয়ে তিনি ব্যাগটা রেখে দিলেন।এর রকম পরিস্থিতিতে ফ্লাইট এটেনড্যান্ট সাধারণত নিজ জিম্মায় যাত্রীদের জিনিসপত্র রেখে দেন এবং নামার সময় তা ফেরত দেন।এর আগেও দু’ একবার এ রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তাই কেবিন ব্যাগ নিয়ে কোন রকম না ভেবেই আমি তড়িঘড়ি করে আমার সীটে গিয়ে বসলাম।
দুবাই এ আট ঘন্টার মতো স্টপ ওভার ছিল।মিলিনিয়াম হোটেলে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা।প্লেইন থেকে নামার সময় ধন্যবাদ গ্রহণ করতে গিয়ে একজন ফ্লাইট এটেনড্যান্টকে আমার কেবিন ব্যাগেরর কথা জিজ্ঞাসা করলাম।সে আমাকে গ্রাউন্ড স্টাফকে জিজ্ঞাসা করার পরামর্শ দিলেন।ঢাকায় যে ফ্লাইট এটেনড্যান্ট আমার কেবিন ব্যাগটা রেখেছিল তার চেহার ছবি কিছুই মনে ছিল না, নাম দেখে রাখারও ফুসরত ছিল না।তাই বিশিষ্ট সেই ফ্লাইট এটেনড্যান্টকে খোঁজার বৃথা চেষ্টা না করে এমিরেটস্ অফিসে গেলাম।যথারীতি এমিরেটস্ স্টাফ আমার কাছে ‘ব্যাগ টেগ’ চাইলেন – সব ঘটনা খুলে বলার পর তিনি আমার কাছে একটু সময় চাইলেন।আমি আশাবাদী।দুবাইয়ে স্থানীয় সময় তখন রাত ১ টা।চোখ খুলে রাখতে পারছি না।আমার সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সেই কেবিন ব্যাগে।ব্যাগটা না পেলে আমার জন্য এ যাত্রায় অনেক কষ্ট অপেক্ষা করছে।এসব যখন ভাবছি ঠিক তখনই আমার জন্য দুঃসংবাদ এল।এমিরেটস্ এর সেই স্টাফ আমার ফাইনাল ডেস্টিনেশন জানতে চাইলেন, আমি বললাম জেনেভা।তিনি বললেন, ‘এখানে তোমার ব্যাগের কোন হদিস পেলাম না। আমি নিশ্চিত তুমি তোমার ব্যাগ জেনেভায় গিয়ে পাবে।এখানে খোঁজলে হয়তা তোমার ব্যাগ পাওয়া যাবে কিন্তু এ জন্য চার-পাঁচ ঘন্টা সময় লাগবে।তারচেয়ে ভালো হয় যে তুমি হোটেলে গিয়ে রেস্ট নাও। জেনেভা গিয়ে তুমি তোমার ব্যাগ রিসিভ করতে পারবে।’ সেই আশা নিয়ে হোটেলের দিকে যাত্রা করলাম কিন্তু ব্যাগটা না পাওয়ার আশংকা বাড়তে লাগল।
জেনেভার ফ্লাইটে উঠে আমি আমার আশংকার কথা সেই ফ্লাইটের এক ফ্লাইট এটেনড্যান্টকে বললাম।তাঁর কাছ থেকে একটা চাদর চেয়ে নিলাম।বললাম, আমার ওভার কোটটাও ছিল সেই ব্যাগটায়।আমার হ্যান্ড গ্লাভস্, ল্যাগিংস, মাফলার, ঔষুধসহ সব দরকারি জিনিস ঐ ব্যাগে।জেনেভায় তখন মাইনাস ফাইভ তাপমাত্রা।কিভাবে গরম কাপড় ছাড়া বরফের মধ্যে বেঁচে থাকব সেই ভাবনায় আমি ব্যকুল। প্লেইন থেকে নেমেই দৌড় – ব্যাগটা হাতে পেলেই স্বতি আসবে।
চেক ইন লাগেজটা পেয়ে গেলাম কিন্তু আমার সেই কেবিন ব্যাগ আর আসে না।লাগেজ কারোসেলে আর কোন ব্যাগ নেই, তারপরও ব্যাল্টের দিকে তাকিয়ে আছি যদি আমার ব্যাগটা আসে।নিরাশ হৃদয়ে হারানো ব্যাগের বিজ্ঞপ্তি দিতে গেলাম।আমার অভিযোগ নির্ধারিত ফরমে লিপিবদ্ধ করার পর কর্মকর্তা এমিরেটস্ এর একটা সেভিং কিটস্ হাতে ধরিয়ে দিলেন, আর জেনেভায় যে হোটেলে থাকব তার ফোন নম্বর রেখে বললেন যে আমার ব্যাগ পাওয়া মাত্র আমাকে জানানো হবে।শীতযুদ্ধ মোকাবেলার যেটুকু অস্ত্র ছিল (ভাগ্যিস কালো কোটটা আমার গায়ে ছিল!আর প্লেইন থেকে একটা চাদর নিয়েছিলাম!!)তা নিয়েই রণক্ষেত্রে পা দিলাম।
হোটেলে যাওয়ার সময় এক ভদ্রলোকের কাছে শীতের কাপড় কোথা থেকে কিনতে পারব জানতে চাইলাম।তিনি জানালানে ফ্রান্স এ গেলে তুমি ভালো শীতের কাপড় পাবে এবং সেগুলো দামেও সাশ্রয়ী।তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে দু’ধারে বরফে ঢাকা সরু রাস্তা দিয়ে হোটেলে যাচ্ছি আর ভাবছি, ‘শীতের কাপড় কেনার জন্য আমাকে ফ্রান্স যেতে হবে? মিটিংতো কাল থেকেই শুরু। তাহলে ফ্রান্স যাব কখন?’ হোটেলে ঢুকেই রিসিপশনে ব্যাগ হারানোর কাহিনী বললাম এবং যে কোন সময় এ সংক্রান্ত ফোন আসলে আমাকে জানানোর অনুরোধ করলাম।রিসিপশনিস্ট এবিষয়ে আমাকে জানানোর নিশ্চয়তা দিলেন।তিনি আমাকে হোটেলের একটি টুরিস্ট কার্ড দিলেন এবং জানালেন যে জেনেভায় আমি বিনাভাড়ায় পাবলিক যানবাহনে চলাচল করতে পারবো।প্রয়োজন হলে আমি আমার টুরিস্ট কার্ড দেখাতে পারবো, তবে তিনি এও বললেন যে সাধারণত কেউ কার্ড দেখতে চায় না।রিসিপশন থেকে একটা কলিং কার্ড কিনে বাংলাদেশে কথা বললাম।তারপর মনে হলো অনেক ধকল গিয়েছে, এবার একটু বিশ্রাম দরকার।
রুমে ঢুকেই শান্তি!কী গরম!শীতের কাঁপুনি অল্প সময়ের মধ্যে চলে গেল।কোন রকম ফ্রেশ হয়েই ঘুম।ঘড়িতে যখন সকাল সাতটা বাজে তখনও জেনেভায় রাতের আধাঁর কাটেনি।শীত মোকাবেলায় কয়েক পরতে কাপড় পরিধান করলাম।সকাল আটটায় যখন হোটেল থেকে বের হয়েছি তখনও আকাশে সূর্য দেখা যায় নি।একটা বড় বাসে (মনে হয় ৫০-৬০ জন যাত্রীর বাস)আমি একা, মানবাধিকার হাই কমিশনারের কার্যালয়ের দিকে আমার যাত্রা শুরু।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়, জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘ কার্যালয় সব পেছনে ফেলে আমি যাচ্ছি আমার গন্তব্যে।হঠাত আমার চোখ একটা লেখার উপর স্থির হলো- ‘ফ্রান্স’।তাহলে এই সেই ‘ফ্রান্স’, গতকাল ভদ্রলোক যেই ‘ফ্রান্স’ থেকে শীতের কাপড় কিনতে বলেছিলেন। তাহলে এই ‘ফ্রান্স’ সেই ‘ফ্রান্স’ না! মিটিং এ যথাসময়ে উপস্থিত হলাম, পূর্ব নির্ধারিত বিষয়ের উপর আমার উপস্থাপনা তুলে ধরলাম।একশনএইড আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ করে বাংলাদেশে কিভাবে অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেটাই ছিল আমার উপস্থাপনার মূল উপজীব্য।লাঞ্চ ব্রেকে হারানো ব্যাগ খোঁজার তদবির শুরু করলাম।খবর পেলাম আমার ব্যাগটার অবস্থান এখন দুবাই। আজ বা কালকের ফ্লাইটে আমার ব্যাগ জেনেভায় চলে আসবে।তাহলেতো শীতের কাপড় কিনতে হবে না। ব্যাগতো পেয়েই যাচ্ছি।তারপরও শহরটা একটু ঘুরে দেখার শখ জাগলো।
মিটিং শেষে শপিং সেন্টারে গেলাম, ঘড়ির দোকানে ঢুকলাম, উদ্দেশ্যহীনভাবে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করলাম।বৃষ্টি হচ্ছে, ঠান্ডাও লাগছে।বেশিক্ষণ ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগলো না।অনেকের কাছেই জেনেভা প্রিয় শহর, স্বপ্নের শহর।আমার কাছে কেন যেন তেমন ভালো লাগলো না।বরং লন্ডন, মেলবোর্ন, জোহানেসবার্গ, বাড়ির কাছের কুনমিং (চায়নায় অবস্থিত) আমার কাছে ভালো লেগেছে। থাক, সেসব গল্প আরেকদিন করা যাবে। জেনেভা ভালো না লাগার একটা কারণ হতে পারে যে এটা বেশি সুন্দর, ছবির মত।কেমন যেন স্থির, প্রাণহীন!হয়তবা তেমন ঘুরে দেখার সুযোগ হয় নি বলে আমার কাছে ভালো লাগে নি – মোল্লার দৌঁড় মসজিদ পর্যন্ত- আমার দৌঁড় ছিল মূলতঃ হোটেল থেকে মানবাধিকার কমিশনারের কার্যালয়।যাহোক, হোটেলে ফিরতে গিয়ে পড়লাম বিপদে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছেই আমার হোটেল।বাস থেকে নেমে একটু হেঁটে আঁকা বাঁকা কয়েকটি রাস্তা পার হলে একটু উঁচুতে আমার আবাসস্থল।বাস থেকে নেমে হোটেলের রাস্তা আর খুঁজে পাচ্ছি না। বরফে সব ঢেকে গিয়েছে, আমার কাছে সব উল্টো- পাল্টা লাগছে।সকালে দেখে যাওয়া রাস্তা এখন আর চিনতে পারছি না।হোটেলের ঠিকানা দেখিয়ে একজনের সহযোগিতা চাইলাম।প্রথমেই সে আমাকে প্রশ্ন করলো আমার কাছে কোন র্স্মাট ফোন আছে কি না।আমি উত্তরে না বললাম (আমার স্মার্ট ফোন থাকলেওতো সেটা জেনেভায় ব্যবহার করতে পারতাম না। সীম কার্ড ছাড়া কিভাবে ব্যবহার করতাম?)। সে তার স্মার্ট ফোনে গুগল ম্যাপ দেখে আমাকে রাস্তা বাতলে দিল।তার পরামর্শ অনুযায়ি আমি কিছুক্ষণ হাঁটলাম কিন্তু হোটেলের সন্ধান পেলাম না।চারদিকে বরফ, প্রচন্ড ঠান্ডা!একবার এদিক যাইতো, আরেকবার অন্যদিকে যাই।তখন ঘড়িতে হয়ত সন্ধ্যা ৮ টা বা ৯ টা বাজে।রাস্তায় একজন মানুষও নেই।মাঝে মধ্যে দু’ একটা গাড়ি শাঁ করে আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।কাউকে জিজ্ঞাসা করবো তারও কোন উপায় নেই।হোটেলের রাস্তা খোঁজে পেতে পেতে মনে হয় ঠান্ডায় মরতে হবে।কোন আশা দেখছি না।
হঠাত অনেক দূরে দু’জন মানুষকে দেখলাম।তাঁদের দিকে এগিয়ে গেলাম।হোটেলের পথ জানতে চাইলাম।তাঁরাও একই হোটেলে অবস্থান করছে জানাল।তাঁদেরকে অনুসরণ করে হোটেলে পৌছালাম।শেষ পর্যন্ত ঠান্ডায় বরফ হয়ে মরতে হলো না।রুমে ঢুকার আগে, ব্যাগের খবর নিলাম।না, বিমানবন্দর থেকে কোন ফোন আসে নি।ব্যাগ দিয়ে আর কী হবে? যে কষ্টটা একটু আগে পেলাম!প্রায়তো মরতেই বসেছিলাম।আগামীকাল মিটিং শেষ।পরশুদিনতো চলেই যাব।
চতুর্থ দিন জেনেভা বিমানবন্দরে গিয়ে ব্যাগের খোঁজ নিলাম।দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী আমাকে জানাল যে আমার ব্যাগটা এসেছে; আমাকে বসতে বলে সে ব্যাগটা আনতে গেল।তাহলে শেষ পর্যন্ত ব্যাগটা পাচ্ছি!আমার নামে যে ব্যাগ নিয়ে আসা হলো, তা আসলে আমার ব্যাগ না। আমি ফেরত দিলাম আর অনুরোধ করলাম যে ব্যাগ যদি পাওয়া যায় তবে যেন ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়।ঢাকায় ফিরে এলাম।বিমানবন্দরে এমিরেটস্ কর্মীদের সাথে কথা বললাম।তাঁরা আমাকে তাঁদের ব্যাগ রাখার আস্তানায় নিয়ে গেল।সেখানেও আমার ব্যাগ নেই।আবার নতুন করে একটি অভিযোগ দাখিল করে একজনের ফোন নম্বর নিয়ে বাসায় ফিরলাম। প্রায় প্রতিদিন ফোন করলাম সেই নম্বরে, ব্যাগের কোন হদিস নেই।সপ্তাহে খানেক পরে ফোন পেলাম – আমার ব্যাগ এখন ঢাকা বিমানবন্দরে।যে ব্যাগ আমি জেনেভায় ফেরত দিয়ে এসেছি সেই ব্যাগ আমাকে এনে দেয়া হলো ঢাকায়।আমি আরেকজনের ব্যাগ নিয়ে কি করবো?আমিতো আমার ব্যাগ চাই।খালি হাতে আবার বাসায় ফিরে এলাম।
এমিরেটস্ এর উপর আমার জেদ চাপল।কড়া করে ইমেইল দিলাম তাদের হোডকোয়ার্টারে, কপি দিলাম বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।অনেক ইমেইল চালাচালি হলো।সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মামলা করবো। উকিল নোটিশও দিয়েছিলাম। কিন্তু কানাডায় চলে আসায় আর মামলা করা হলো না।আমি এর শেষ দেখতে চেয়েছিলাম।টাকার মূল্যে আমার যে খুব বেশি ক্ষতি হয়েছিল তা নয় কিন্তু ফ্লাইট এটেনড্যান্টের কর্তব্য অবহেলায় আমার যে ভোগান্তি হয়েছিল তা থেকেই মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি মামলাবাজ না তবে উকিল ও মানবাধিকার কর্মী।সেজন্যই হয়ত এমন চিন্তা মাথায় এসেছিল।
জাকির ভাই,
আবারো একটি সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।
অপেক্ষায় থাকলাম পরের লেখার…
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই টাকার ওপর পিঠের কথা জানানোর জন্য।কারণ এমিরাটস এ অনেকবার ভ্রমন করেছি কিন্তু এমন পচা service পায়নি। ভালো একটা শিক্ষা হোলো কারণ ওই ধরনের ব্যাগ তাদের দায়িত্বে রাখার ঘটনা অহরহ ঘটে, তাই এবার থেকে বিমান বালার শুধু নামিই নয়, তার চেহারা ছবির বর্ণনাও মেমরিতে ধারণ করে রাখতে হবে। ঘটনাটি শুনে আমারই যে রাগ হস্ছে, আর আপনি তো সেটা suffer করেছেন। এমিরাটসকে আপনার কাছে অনেক স্ট্রং formal apology করা উচিত ছিল। ভুল হতেই পারে কিন্তু সেটাতো appropriately হ্যান্ডেল করতে হবে এবং আপনি যে তাদের ভুলের বেপারে তাদের হেড অফ্ফিসেকে জানিয়েছেন তাতে তাদের আপনাকে একটা ধন্য বাদ দেওয়া উচিত ছিলো। এই unpleasant অভিজ্ঞতাটা না হলে Switzerland হয়তো আপনার আরো ভালো লাগতো। আমার কাছে আলপস পর্বতের ধার এবং উপতাক্কাগুলির মধ্যের Swiss গ্রামগুলিকেই বেশি ভালো লাগে। আবারও ধন্যবাদ আপনার এই worst সার্ভিস এর খবর দেওয়ার জন্য, ভবিষ্যতে সতর্ক থাকা যাবে।
লেখাটা পড়ে ভাল লাগছিল কিন্তু আপনার অপারগতা প্রকাশ করতে গিয়ে আপনি যে প্রবাদ বাক্যটির আশ্রয় নিয়েছেন “মোল্লার দৌঁড় মসজিদ পর্যন্ত” একথাটি আপনার মানসিক দুর্বলতাই প্রকাশ পেল বৈকি? মোল্লা বলতে আপনি কাকে বু ঝেন? মোল্লা বলার সময় আপনার মনে কি কোন আলেমের ছবি ভেসে উঠে? আপনি ইচ্চে করেই এমন প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করেন?আলেম সমাজ কে অপমান করার জন্য?আপনি জানেন খাটি আলেমগন নবী স: এর উত্তরসূরী।আলেম কে অপমান করা মানে নবী কে অপমান করা। আপনি যদি একজন আলেম হতেন তাহলে আপনি কি এ প্রবাদ টি ব্যবহার করতেন? আপনার কী মনে হয় কোন আলেম মসজিদ ছেড়ে সুইজারল্যান্ডে যেতে পারেনা? মানুষ কে ঘৃনার করার মাঝে কোন আনন্দ আছে কী?
জাকির সাহেবের লেখায় “মোল্লারদৌড় মসজিদ পর্যন্ত” প্রবাদটি ব্যাবহার করাতে আপনি এত ঝলসে গেলেন কেন বুঝলাম না । উনার লেখার কোথাও আমি কোনো আলেমকে হেয় করার ইচ্ছা বা এর প্রকাশ দেখিনি । আলেম এবং মোল্লা শব্দ দুটির যথেষ্ট আভিধানিক পার্থক্য আছে। আপনি দুটি শব্দকে একই অর্থে ধরে নিয়ে আলেমদেরকে ঘৃনা করার “গায়েবী ইচ্ছা” আবিস্কার করেছেন। মানুষ নিজে যখন সংকীর্ণতায় ভুগে, তখন সব কিছুর মধ্যে সংকীর্ণতার গন্ধই খুঁজে বেড়ায়। একটি এয়ারলাইন্স এর যাত্রী সেবার বেক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখার মধ্যে আলেম সমাজকে হেয় করার প্রয়াস খুঁজে বের করা সংকীর্ণমনতা এবং নির্বুদ্ধিতারি পরিচায়ক. দয়া করে এই ব্লগে এই জাতীয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা থেকে বিরত থাকলেই উপকৃত হব।