back to top
6.2 C
Toronto
বাড়ি ভ্রমন ভাগ্নে ভাগ্নিদের Fun-Day

ভাগ্নে ভাগ্নিদের Fun-Day

35
0
গতকাল আমাদের ভাগ্নি-ভাগ্নে এবং তাদের পরিবার নিয়ে বলতে গেলে আমাদের এই সামারের শেষ আউটিংএ যাই। গন্তব্য ছিল Kelso Conservation Park . টরন্টোর কাছাকাছি মিল্টন শহরে। যারা এখনো ওখানে যান নি তারা যেয়ে দেখতে পারেন। খুবই সুন্দর একটি জায়গা। সুউচ্চ এস্ক্র্যাপমেন্টের ধার ঘেঁষে গাছপালায় ঘেরা ছোট লেকের পাড়ের এই পার্কটি একটি ডে ট্রিপের জন্য সঠিক জায়গা। ওখানে বিচ থেকে শুরু করে, হ্যাকিং, রক ক্লাইম্বিং, স্কিইং, ফিশিং, বোটিং কানুইঙ ইত্যাদি বেবস্থা আছে। ওয়াশরুমগুলি relatively ক্লিন।

আপনার বেশি বড়ো গ্রূপ হলে ওখানকার পিকনিক শেল্টার ভাড়া করতে পারেন। পাশেই আছে Halton Hills Campground, যদি টরোন্টোর কাছাকাছি ক্যাম্পিং করতে চান। আপনি চাইলে মিল্টন শহরে পিজ্জার অর্ডার দিতে পারেন ওরা আপনাকে ডেলিভারি দিবে। খাওয়া-দাওয়া টানা টানা টানির ঝামেলা না করতে চাইলে এটি একটি ভালো ব্যবস্থা।

আমাদের আয়োজন শুরু হয় সকাল ১০:৩০ থেকে। ছোট খাটো স্নাক্স সেরে শুরু হয় বাচ্চাদের নিয়ে বিভিন্ন একটিভিটিস। চলে একেবারে রাত ৮টা পর্যন্ত। কেউ কেউ তাদের অন্য কমিটমেন্ট থাকায় একটু আগে চলে যান। প্রতিটি এক্টিভিটিসই বাচ্চারা উপভোগ করেছে। তবে তাদের সব থেকে প্রিয় ছিল ‘scavenger hunt’ এবং বিকালে লেকের পানিতে ময়ুরপঙ্খী নৌকায় (inflatable) ভেসে বেড়ানো। এই নৌকার বিশেষ আওয়জন করেন আমাদের ব্রান্টফোর্ডবাসি বনধু কবির, যাকে আমি তার backyard চাষ বাসের খ্যাতির জন্য গনি মিয়া বলে ডাকি। গতকাল তিনি গনি মিয়া কৃষক থেকে গনি মিয়া মাঝি হয়ে যান।

scavenger huntingএ বাচ্চাদেরকে আগে থেকে লুকিয়ে রাখা বিভিন্ন ধরণের আইটেম জঙ্গল বা গাছপালার মধ্যে থেকে খুঁজে বের করতে হয়। ছোট দুটি গ্রূপ করা হয়। ওদের মধ্যে থেকেই গ্রূপের লিডার নির্বাচিত করা হয় এবং সেই ক্ষুদে লিডারের নেতৃত্বে ক্ষুদে সদস্যরা টীম ওয়ার্কের মাধ্যমে খুঁজে বের করে বিভিন্ন আইটেম। এক একটি আইটেম পাওয়ার পরে ওদের আনন্দ উল্লাস দেখে মনে হস্ছিলো ওরা যেন হীরে খুঁজে পেয়েছে। উল্লেখ, উদ্দেশমূলকভাবে ওখানে প্রতিটি আইটেমই পরিবেশ রিলেটেড ছিল। আমাদের উদ্দ্যেশ্য ছিল ফানের সাথে সাথে তারা যেন পরিবেশ বিষয়ে সচেতন হয় এবং টিমওয়ার্ক ও লিডারশিপ শিখে, এবং সেটা পুরাপুরি দেখা গেছে।

দুপুরের দিকে একটু বৃষ্টি দেখা দিলে সেটা বলতে গেলে আমাদের জন্য একটু advantage বইয়ে আনে, কারণ লাঞ্চের জন্য কাউকে ডাকা ডাকি করতে হয়নি, সবাই শেডের মধ্যে এসে জড়ো হয়। লাঞ্চ সেরে আওয়জন হয় আড্ডার। এই পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন আমাদের অপেশাদার শিল্পী মাহাবুব এবং নাহিদ। ইতিমধ্যে বৃষ্টি শেষ হলে সবাই মাইল চলে যাই বিচে। বাচ্চারা এবং বোড়োরাও নেমে যান পানিতে। এই পর্বের শেষে শুরু হয় বিকালের নাস্তা পর্ব। নাস্তা এবং চা-কফির পরে কিছু সদস্য চলে যান। বাদবাকি নেমে পড়েন লেকের পানিতে ফ্লোটিং ডিভাইস (নৌকা) নিয়ে। এসময় weather খুবই comfortable ছিল।

পানিতে ময়ুরপঙ্খী নৌকায় ভেসে ভেসে ছোট বোরো সবাই মজা করে। দিনের এল শেষ হলে সবাই মিলে মিল্টন শহরের একটি রেস্টুরেন্টে ডিনার সারা হয়। এর পর পূর্ণিমা রাতের সুন্দর হাওয়ায় ওয়ার্কিং লটে বড়োরা কিছুক্ষণের জন্য খোস গল্পে মাতেন এবং ছোটরা ভরা পেটে মজা করতে থাকেন। এভাবেই শেষ হয় আমাদের এই সামারের আউটডোর একটিভিটিস। এই ধরণের এক্টিভিটিস এখানে মোটামুটি সব বাংলাদেশী ইম্মিগ্রান্টরাই করে থাকেন। আমার এই লেখার মূল উদ্দেশ্য দেশের বা এখানে সেই মানুষদের জন্য যারা এখানকার এখানকার গুটি কয়েক লোকের ভুল তথ্য শুনে মনে করেন এখানে বাঙালিরা মনে হয় শুধু গাধার খাটনি খাটে, কাজ, টাকা কামাই আর ৩ বেলা খাওয়া ছাড়া অন্য কোনো সময় নেই। জীবন এখানে দেশের মতো অতো রিলাক্স না, তবে এর মধ্যে দিয়েও আমাদের দেশীরা এখানে সময় বের করে জীবনের দৈনন্দিন কাজের বাইরে অনেক কিছু করে থাকেন। FB এর বিভিন্ন সাইটে বা ব্লগের মাধ্যমে এগুলি প্রায় আমরা দেখতে পাই।
সবাই ভালো থাকবেন। পরবর্তীতে fall বা winter এর কর্মকান্ড নিয়ে হাজির হবো বলে আশা রাখি।
মুকুল
টরন্টো

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন