ফেল করা আপনার একটি Option হতেই পারে, কিন্তু হাল ছেড়ে দেওয়া কোনো ক্রমেই আপনার option হতে পারে না।
যারা মনে করছেন বার বার চেষ্টা করেও কিছু হসছে না, কেউ আপনাকে অতি বিপদের মধ্যে একা ফেলে গেছে, সামনে আগানোর কোনো উপায় খুঁজে পাস্ছেন না, অনেক অনেক কিছু হয়তো আপনার জীবনে করা সম্ভব না, স্বাভাবিক জীবন যাপনের পথ অনেকটা কণ্টকাকীর্ণ, চেষ্টা করেও চাকরি হসছে না ইত্যাদি, তাদের জন্য নিচের ছোট ভিডিও ক্লিপটি।
এটি একটি সত্য ঘটনা। আমি ভদ্রমহিলার সাথে একমত, কারণ ফেল করা আমাদের কাম্য না হলেও ফেলই আমাদের জীবনে এনে দিতে পারে অনেক সাফল্য, কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে আপনি হয়তো physically বেঁচে থাকবেন কিন্তু সেই বাঁচা বাঁচা নয় বরং মৃত্যুর সমানই হবে। দরকার হলো আপনার দৃঢ়তা,ধৈর্য এবং একটি লক্ষে পৌঁছানোর অস্যংখ option তৈরী করা, যেটা দুর্ভাগ্যজনক আমরা অনেকেই করি না।
আমরা শুধু একিই পদ্ধতিতে বার বার চেষ্টা করি এবং ব্যর্থ হলে হাল ছেড়ে দেই। আমরা আমাদের লক্ষে পৌঁছানোর পথ বা পদ্ধতি পরিবর্তনের চেষ্টা করি না। আমি প্রায়ই একটি উদাহরণ দেই, আমি জানি নায়াগ্রা ফলসে QEW দিয়ে গেলে দ্রুত এবং ভালোভাবে পৌঁছানো যায় কিন্তু কোনো কারণে ওই পথ দিয়ে বার বার যেতে গিয়েও যদি সফলকাম না হই তাহলে তো আমি detour করবো তাই না? নাকি আমি বার বার ওই একই পথে একই পদ্ধতিতে যাওয়ার চেষ্টা করে সময় নষ্ট করে আমার চেষ্টা করার সামর্থ নষ্ট করে অবশেষে হাল ছেড়ে দিবো।
আমার এক সিনিয়র ক্লায়েন্টের এক ছেলে ছিল পাইলট। সে তার মাকে রেসিডেন্সিয়াল কেয়ার হোমে প্রায় দেখতে আসতো, এবং মাঝে মাঝে আমার সাথে অনেক আলাপ হতো। সে এবং তার স্ত্রী খুবই সাপোর্টিভ এবং কেয়ারিং ছিলো। ছেলেটির সাথে আলাপকালে আমি তার কাছ থেকে কৌতহল বসে তার প্লেন চালনার অনেক কিছু জানতে চাইতাম। তো, একদিন তাকে জিজ্ঞেস করলাম তার দীর্ঘ ট্রেইনিং এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বা বেশি বেশি প্র্যাক্টিস করার কি ছিল। সে আমাকে বলেছিলো বিভিন্ন ধরণের অল্টারনেটিভ জানা, অর্থাৎ একটা না হলে অন্য কি কি করা যেতে পারে। আমাদের জীবনেও ঠিক সেরকম করা উচিত, নিজেকে বিভিন্ন option এর জন্য তৈরী করা এবং সেগুলিকে কোনো বাধা অতিক্রমের জন্য বেবহার করা। ভদ্রলোকের কথাগুলি আমার অনেক কাজে এসেছিলো এবং এখনো কাজে আসে।
আমি নিশ্চিত আমাদের অধিকাংশই, যারা হাল ছেড়ে দেই তারা কিন্তু সমস্ত option প্রয়গ করি না।
আমরা একটি গাড়ি কিনলে, একটি সেল ফোন কিনলে, বা একটি বাদ্য যন্ত্র কিনলে সেটা চালানোর পদ্ধতি কিন্তু আমরা আস্তে আস্তে রপ্ত করে ফেলি কিন্তু আমাদের মন, দেহ বা বুদ্ধিকে কিন্তু আমরা পুরাপুরি ব্যবহারের বা চালানোর চেষ্টা সবসময় করি না। by ডিফল্ট যেটুকু করার অবস্থা আছে সেটুকু নিয়েই চেষ্টা করতে থাকি।
অনেক দিন আগের কথা, এখানে একজন দেশি ভাইয়ের সাথে আলাপ হয়েছিল। উনি অনেক চেষ্টা করেও এখানে একটি প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পরনে নাই, উনার কমুনিকেশনে এরও একটু সমস্যা ছিল, অনেক রেসুমে পাঠিয়ে এবং অনেক এজেন্সিতে ধন্না দিয়েও কিছু হসছিলো না। এখানে Ryerson Universityর একটি কমুনিকেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমি উনার মেন্টর হয়ে ছিলাম। প্রায় ২/৩ বছর কাজ করার পরে উনি উনার প্রফেশনে কাজ পেয়েছিলেন, এবং ওই চাকরিতে কানাডার জন্মগত ককেশিয়ান ক্যান্ডিডেটও উনার সাথে ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পান নাই। উনার এই সাফল্যের পিছনে উনার এফোর্টই ছিল প্রধান এবং আমি দেখেছি বিভিন্ন option প্রয়গ কাকে বলে।
অবশেষে সবাইকে অনুরোধ করছি, হাল ছেড়ে দেওয়ার আগে প্লিজ আপনার সমস্ত option প্রয়গ করুন, বিভিন্নভাবে। আর কখনো ব্যর্থ হলে থমকে যাওয়া যাবে না। ফেল করাকে বিশ্লেষণ করুন, দেখবেন নতুন পথ বের হয়ে আসবে।
অনেক আগে আমার Toronto General Hospital-এ সমস্ত ইন্টারভিউ ভালো হওয়ার পরেও চাকরিটা হয়নি। তবে এই ব্যর্থতা আমাকে কনফিডেন্ট করে তোলে এবং অনেক কিছু শিখি, এর পরে এক মাসের আমার মধ্যে দুটি চাকরি হয়, তাই আমি ওই ফেল বা ব্যর্থতাকে সৌভাগ্যই মনে করি।
আমরা কথায় কথায় বলি ১০০% এফোর্ট দেওয়া, কিন্তু আমরা সবাই কি আসলে কখনো ভেবে দেখি ১০০% এফোর্ট কাকে বলে।
সত্যি সত্যি ১০০% এফোর্ট দিলে তার ফল আসবেই, হয়তো বা ২/১% ক্ষেত্রে কোনো ফল আসবে না।
সবাই ভালো থাকবেন।
বি. মুকুল