আবার যদি ফেরা যেত নির্বার কৈশোরে ! জীবনানন্দের রূপসী বাংলায়…
আবার যদি ফিরতে পারতাম গ্রীষ্মের রোদলা কোনো এক দুপুরে,-
শ্রান্ত নিবিড় গ্রাম্য কোনো এক মেঠো পথে। ফেরা যেত যদি, সদানন্দ, আতাহারিয়া , মদন মোহন, মুরারীচাঁদের শ্রেণী কক্ষগুলোতে।
ফেরা যেত যদি পৃথিবীর নিরাপদ স্থান আমার মায়ের আঁচল তলে !!
বোনদের স্নেহ,ভাইদের সহচার্য আর প্রিয়জনদের ভালোবাসায় ।
ভুলতে পারতাম যদি মাস শেষের লক্ষ লক্ষ টাকার অপরিশোধিত বিলের খামগুলো!
ভুলতাম যদি আমার সেই বখাটে ছেলের দল আর পাখির নীড়ের মতো বনলতা সেনের সেই দুটো চোখ ।
সব কিছু কি আর চাইলেই ভোলা যায় ?
সুরমার বান, করিমের গান, কতোয়ালপুরের টান,,
এত সহজে কি দূরে ঠেলে দেওয়া যায় ?? ঠেলতে পেরেছিলো কি কেউ কোনোদিন??
৩৫ বৎসরের এই জীবনে হেঁটে এসেছি অনেকটা পথ…
বাস্তবতার দরজায় ঠোকর খেতে খেতে হয়তোবা শিখেছি অনেক কিছু ,,
জীবন থেকে অনেকেই দূরে চলে গেছেন, ভালোবেসে অনেকেই এসেছেন পাশঘেঁষে ।
পেশীবহুল যে শরীর ছিল, সময় পরিক্রমায় তাতে মধ্য বয়সের নির্মম ছাপ,
বদলে গেছি অনেক। শুনেছি ,
বর্ষার মৌসুমে এখনো বনুয়ার বিল নাকি জলে ভাসে ,,
হেমন্তে এখনো ধানের গন্ধে মৌ মৌ করে সারা গ্রাম।
ঈদ, পূজা পার্বনে এখনো নাকি উৎসবের ধুম পড়ে শহর জুড়ে ,,
কিশোর ছেলেরা এখনো নাকি প্রেমে পড়ে,,
জাওয়াদের মতো নীলখামে চিঠি লেখে !!
৩৫ বৎসরের ব্যস্ত এই জীবনে কতজন, কত কিছু যে হারিয়ে গেছে ,
কৈশোরের সেই বন্ধুরা কোথায় যে গেছে নাই কোনো হদিস ,,
মান্ডালের রাতজুড়ে আজ ঝড় বৃষ্টির মাতলামি।
মখমলের চাদর মুড়ি দিয়ে সবাই শান্তির ঘুম ঘুমায়।
জীবনানন্দের বাংলাকে ভালোবেসে আমার দু চোখেই শুধু ঘুম নাই।