রাতের শূন্য মাঠে পড়ে আছে শস্যদানা
হলদে মরা ঘাসে ডিজেলের দাগ,
ন্যাকড়ার পুতুল, খড়কুটোর অবশিষ্টাংশ…
কত কুড়োনো যায় এক জীবনে?
আমি ফিরে দাঁড়াই,…পাখিরা ফেরেনি এবছর।
বজ্রাঘাতে মরে গেছে এই গাছ,…বহুদিন,
এখন শুকনো ডালে নিশ্চিন্তে বসে কাক
ঝোলে গামছা বিবর্ণ মলিন, নীচে
বাতাসে নিঃশব্দে গড়ায় কাগজের ঠোঙা…
জানি, তুমি আছো ভোরের বাতাসে,
পরিত্যক্ত ঠাকুরঘরের বারান্দায়।
ক্ষমা করে দিও শারীরিকভাবে
দেখা হলো না বলে,..আর
ঘুঘু দেখানোর চাইতে বরং পক্ষীরাজের গল্প শুনিও
এইরাতে।
মন্থর দুপুরের আলোয় ভাসে নীলাকাশ
দোদুল্যমান ডালপালার ছায়া
চুপচাপ ছবি আঁকে আমার শরীরে
মনেহয়, বড় দামী এই জীবন!
বেলাশেষে রোদ্দুর মরে গেলে
পুকুরঘাটে খল হাসি হাসে শয়তানের স্যাঙাত,
কলকব্জা আর অকেজো যন্ত্রপাতির ভেতর
আঁধারে স্পষ্ট দেখি মৃত বালিকার পদচিহ্ন,
ভাঙা কলসি তার পিঁপড়েদের রাজত্ব এখন।
মনেহয়, আর ফেরা হলোনা,
শুধু দুঃখ পাওয়ার অভ্যাস আমায়
বেঁচে থাকার কথা মনে করিয়ে দ্যায়।
অনেক দূর থেকে আগুনের উত্তাপ
টেনে আনে অসুস্থ বাতাস,
আমি জ্বলে যাই, জ্বলে যাই…
সুবাতাস এখন শুধুই নাদের আলীর প্রতিশ্রুতি।
(গত অক্টোবরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিবসে কবিকে উৎসর্গ করে লিখেছিলাম এই কবিতাটা।)