চোখের উপরে চশমাটা ইদানিং খুব বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়
অথচ এমন নয় যে-
বাঁশের ঝাড়ে নিঃসঙ্গ দোয়েলের শিস শুনতে শুনতে, দাবদাহ চৈত্রের ঝাঁঝালো দুপুরকে আমি চশমাহীন চোখে স্বাগত জানাতে চাই
কিংবা-
নীলিমার ভালোবাসাকে বারুদ করে-
জীবনের যাবতীয় বিরুদ্ধ বৈরীতাকে জয় করার অদম্য স্পৃহায়, অর্ধ উদোম শরীর নিয়ে বলি—
এসো—
আমি প্রস্তুত!
এই সবকিছুই তো বহুদিন হ’লো চলে গেছে ঠিকানাহীন কোনো এক পরবাসে
তাহলে?—
এ শহরে এখন খুব বৃষ্টি হয়
নুয়ে পড়া বৃক্ষের ক্লান্ত শাখায়, স্মৃতির পাতা খুলে এক কাক অবিরাম ডেকে যায় আহ্নিক বেলায়
আমি তার ভাষা পড়তে পারি না
শ্বেতকাঞ্চনের হাসিতে কোনো ব্যথা লুকানো থাকে কিনা, আমি তার কিছুই পড়তে পারি না!
সেই কোনো এক শীতে এক বৃক্ষকে শুধিয়েছিলাম— সূর্যের কাছে কীভাবে তুমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো?
মৃদু হেসে সে বললো—
আগামী বসন্তে এসে দেখে যেও
আমি সেই একটি বসন্তের প্রতীক্ষায় আছি আজ কতো বসন্ত পার করে
কিন্তু সেই বৃক্ষটি আর নেই!
নিধনে পারদর্শী মানুষ আমরা
সৃষ্টি করি শুধু নিজেরই প্রয়োজনে
আর-
নিধন করে যাই প্রায়শই অপ্রয়োজনে; অথবা কৃত্রিম প্রয়োজনে
এ কী ভীষণ এক কৃতজ্ঞতাহীন অতিভোগ!?—
সেই বৃক্ষের কাছে এখন আর আমার কোনো প্রশ্ন নেই, কোনো উত্তরের অপেক্ষা নেই
আমি যে খুব জেনে গেছি-
বৃক্ষেরা কখনো কোনোদিন ঝণ ধরে রাখে না!
অন্ধত্ব, আঁধার, এ পোড়া পরানে স্বস্তি আনে কখনো কখনো
চশমাটাকে তাই ছুঁড়ে ফেলে রাখি বেশিটা সময়ই
কিন্তু এই জীবন?
অতিভোগের নেশায় উন্মত্ত এ জীবন!?—
#চশমা
(‘নক্ষত্রহীন রাতের আকাশ’ এর একটি উপস্থাপন / A presentation from ‘Starless Night Sky’)
______© ফরিদ / ডিসেম্বর ২২, ২০২৩