ঘুণে ধরা জীবনে দিনের ব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত, অবসন্ন শরীরে
নেতিয়ে পড়ি বিছানায়, চোখ বন্ধ করি
কিন্তু ঘুম হয় না
কেটে যায় প্রহর, রাতের অন্ধকার আধোঘুম, আধো জাগরণে-
বন্ধ চোখে অন্তর্লোকে দেখি- করোনা আক্রান্ত মানুষের ঢল
মিনিটে নিভে যাচ্ছে কত প্রাণ, তারপর অস্পৃশ্য তারা
ফেবু’তে ভেসে ওঠে পরিচিত মুখ-
না, এই দেখাই শেষ দেখা।
কখনো আর দেখা হবে না- মৃদু হেঁসে বলবে না-
বোন ভাল আছো বিদেশ বিভুঁয়ে!
কোভিড-১৯ জেঁকে বসেছে শরীরে ও মনে
নাম শুনলেই ঝাঁকুনি দেয় শরীর-
ও নাম মুখে আনতে চাই না।
পৃথিবী থেকে মুছে যাক- অভিশপ্ত এই নাম।
পারি না
পারি না মন থেকে মুছতে যখন শুনি সারা পৃথিবী
মড়াশ্মশান, সবাই লুকিয়েছে ঘরে, জানালায় উঁকি দেয় না ছোট্ট খুকিও।
কোভিড শব্দ আর ১৯ সংখ্যাটি এভর আতঙ্ক আর অস্থিরতার
আণুবীক্ষণিক, তবু তাকে নিয়ে কত্ত ভয়
স্বপ্নে এসে ঘুম ভাঙিয়ে দেয়- একটু কাশিতেই চমকে ওঠে মন
গলাটা কি ব্যাথা করছে?
শরীরের টেম্পারেচার বেড়ে যায়নি তো!
বার বার হাত ধুই সাবান, গরম পানিতে ।
নিস্তব্ধ রাতের আধার ফুঁড়ে ভেসে আসে এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন
কি বিকট সেই শব্দ উফ!
কি ভয়ানক!
কার যেন বিদায় ঘন্টা বাজাচ্ছে সে।
দূর থেকে ভেসে আসে কারো আর্ত চিৎকার
অনুরণন তোলে মস্তিষ্কে
বুকের পাঁজর ভেদ করে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস
হৃদয়ের গভীর থেকে বলে চলি-
হে খোদা রক্ষা কর, ক্ষমা কর আমাদের
যে যাচ্ছে এম্বুলেন্সে বিচ্ছিন্ন লোকালয়ে
সে যেন ফেরে সুস্থ হয়ে মুখে নিয়ে হাসি ।
হয়তো সে ফেলে যাচ্ছে বুকের ধন ছোট্ট মানিককে
হয়তো প্রিয়তম স্বামী তার স্ত্রীকে
অথবা ভীষণ ব্যস্ত মেয়েটি তার বৃদ্ধ বাবা মাকে
আবার হবে কি দেখা
নাকি এটাই শেষ বিদায় ?
এ কেমন বিদায়?
যেখানে প্রিয়জনের নেই স্নেহমাখা হাতের পরশ
পাশে বসে কেউ ফেলে না দু’ফোটা অশ্রু
চলে যাওয়া শুধু
একা–একা–একা …………………