ফ্লোরিডা থেকে:-

হিজল পরাগের মত তোমার দেহ বিন্যাস।
ভাদ্রের বিলের মত চোখের ডায়মন্ড।
রাতের নৈশব্দের মত দীর্ঘ কালো চুল। 
বালু-ঘড়ির মত বুক , কটি ও তলদেশ।
ফুলের দিকে হাত বাড়ানো যায় , আগুনের দিকে যায়না।
সময় ফুল ও আগুনের মধ্যে তফাত বুঝিয়ে দেয়।
তবে তুমি ফুল না আগুন সে বিতর্কে এখন যাবার কোন মানে হয়না ।

সৌন্দর্য ও বিনয় এক সাথে কোনদিন পাশাপাশি হাঁটেনি ।
অর্বাচীন তা জানেনা।
সৌন্দর্য ময়ুরের পালকের মত, আর বিনয় কাক-পুচ্ছ।
আমি বিলুপ্ত ডাইনোসোরের মত অর্বাচীন , সৌন্দর্য ও বিনয় এক সাথে খুঁজি ।

তুমি যেই শাড়িটি পড়েছ তার নাম কি ?
তোমার চোখে কোন ব্র্যান্ডের কাজল?
আসলে প্রশ্ন গুলো করলাম এজন্য নয় যে ওই উত্তর গুলো জানা আমার খুবই প্রয়োজন । কিছু প্রশ্নকে অবদমিত করার জন্যেই মানুষকে মাঝে মাঝে কখনও কখনও অন্য প্রশ্ন খুঁজতে হয়। যে উত্তর গুলো আসলেই জানতে ইচ্ছে হয় তা হলো তুমি কি আসলেই ভালো আছো?
তোমাকে কি মর্যাদা দেয়া হয়?
নাকি তুমি ঘরের অনেক দামী আসবাবের একটি?
আসলে এটিও একটি অবান্তর প্রশ্ন।
কারণ একজনের কাছে যা আসবাব , অন্যের কাছে তা নাও হতে পারে।
তোমার কাছেও পুরো ব্যাপারটাই হতে পারে খটখটে বিরক্তির ।

তুমি আগের মতই আমার কথায় বিরক্ত বোধ করো।
আমাকে অনুভূতিহীন পাথর মনে হয় ।
তুমি রক্ত মাংসের মানুষ, আমিও পাথর, বাতাস বা মেঘের তৈরী নই ।
অবশ্যই সব দেহেরই কিছুনা কিছু চাওয়া পাওয়া আছে।
আমারও আছে।
তোমার প্রশ্নে আমি খুব দুর্বল, কিন্তু বিলুপ্ত তুষার হস্তীর মত তোমার দিকে বাড়ানোর হাত আমার নেই।
প্রেমিকার দিকে কেউ কখনও পা বাড়িয়ে দেয়না।
তুমি তা জানো, আগেও যেমন ছিল এখনও তাই।

একটা কাঠ ঠোকরা খট খট করছে।
কোন গাছের কান্ডে না বুকের ভেতরে ঠিক ঠাহর হচ্ছেনা।
গাছের কান্ডে হলে আওয়াজটা টের পাওয়া যায় , ব্যথাটা নয়।
বুকে হলে সবটাই উল্টা। আমি উল্টোটাই টের পাচ্ছি ।

হাভাতের মত চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে দুপুর।
কথাও কয়না, নড়েও না।
আমি এই দুপুরের শ্বাস-প্রশ্বাস শুনতে পাই।
মনের দীঘল দহলিজে ছায়ারা খেলছে।
নারিকেল সুপারীর দীর্ঘ ছায়া, আশৈশব স্বপ্নচারী মনের কঙ্কালের মত।
একটি দীর্ঘনি:শ্বাস থম্ করে দাঁড়িয়ে আছে দূরে থর্ মরুভূমিতে,
আমি সেখানে পথ হারিয়ে তৃষ্ণার্ত ।
আমি সীমুর্গকে খুঁজিনি, সীমুর্গকে পাইনি।

তুমি রৌদ্রদগ্ধ দুপুরের করপুটে অজচ্ছল জলের প্রতিবিম্ব!

সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭

পারস্যের উপকথা : মিথিকাল পাখী সিমুর্গ ঈশ্বরের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয় কখনও কখনও । ফরিদ উদ্দীন আত্তারের “পাখীদের সম্মেলন” বইতে সাহসী ও বিজ্ঞ হুপো পাখী সব পাখীদের সিমুর্গের সন্ধানে পাহাড়, সমুদ্র, মরুভূমি ও ৭ টি প্রতীকি উপত্যকা পার হয়ে অনেক দূরে নিয়ে যায়। কিছু পাখী ভীতু হয়ে সেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে অস্বীকার করে।

লক্ষ লক্ষ পাখী সিমুর্গের অন্বেষায় গেলেও পথে প্রায় সবাই ধ্বংস হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ত্রিশটি পাখীর একটি দল অনেক দূরে কাফ পাহাড়ে পৌঁছে। সেখানে তারা পাহাড়ী হ্রদের স্বচ্ছ জলে তাদের নিজেদের অবয়ব দেখতে পায়।
ঈশ্বর বা সিমুর্গ যে তাদের প্রত্যেকের নিজেদের মধ্যেই অবস্থান করে শেষ পরয্ন্ত তারা তাই অনুধাবন করে। সুফিজমের এটি শ্রেষ্ঠতম বই হিসেবে গন্য।
পার্শিয়ান ভাষায়:
সী-ত্রিশ
মর্গ-পাখী
সিমুর্গ- ত্রিশটি পাখী।

ছবি সৌজন্যে:-Pinteres

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন