মধ্য আকাশে সূর্য ডুবে গেলে…
এক সূর্যমুখীর বিষণ্ণতায় আমি হাসি ফোঁটাতে ব্যার্থ হই
সাদা প্রজাপতি তার ডানায় এক হিরন্ময় সকালের যে স্বপ্নকে নিয়ে…
অস্থির ছুটে বেড়ায়, আমি তারও কোন পাঠ উদ্ধার করতে পারি না!
আমি আসলে কিছুই পারি না…!!
অতি প্রত্যুষে দু’হাতের আঁজলায় তন্দ্রা ভাঙা নদীর জল নিয়ে
আমি তার অতলান্ত বুকের শোক আর ভালোবাসাকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি
কিন্তু আমি তার কোন অনুভূতিকেই স্পর্শ পারি না!
তার শান্ত জলে ঢেউ তুলে…
গতানুগতিক আর একটি নূতন দিনের প্রতিবিম্বকে ভেঙে দিয়ে
আমার কেমন যেন এক আনন্দ হয়…!
আমার দুই করতলে এখন আর কোন প্রার্থনার সংগীত বেজে ওঠে না,
আমার কলম থেকে এখন আর কোন ভালোবাসার স্বপ্ন নিসৃত হয় না…!
অঝোর সন্ধ্যার নিভানো আলোয় ব্যালকনির এক প্রান্তে নির্বিকার…
আমি শুধু তোর সেই ভিজে যাওয়া অভিমানের দিকে তাকিয়ে থাকি
আমি আর কিছু দেখিনা, আর কিছু ভাবতে পারি না…!
যে কলমে প্রতিদিনের প্রার্থনায় ছিলো…
একটা শব্দ, একটি লাইন, একটা মুক্ত আকাশ আর…
এক পৃথিবী ভালোবাসার মাঝে আমাদের অবাধ ডানায় মুক্ত স্নান
আজ সেখানে তেমন আর একটি শব্দও নেই…!
আমার চোখ অবরুদ্ধ,
আমি এখন আর কোন দূর আকাশের গল্প পড়তে পারি না
আমার মনের জঙ্গলে প্রতিদিন আমি একশ আটটি কেতকীর আর্তনাদ শুনি
আমি একটি সূর্যমুখীর যৌবনের চূড়ায় ভীড় করা বিষণ্ণতার দিকে…
নিষ্পলক তাকিয়ে থাকি, আমি তার ব্যাথাকে মুছে দিতে পারি না!
আমি তোর অভিমানকে খুঁড়ে খুঁড়ে হৃদয়ের মাঠে দিনমান…
কেবল এক বেনামী ব্যাথার ফসল ফলাই!
কলমের ডগায় আমার ভালোবাসার শব্দগুলো দিনে দিনে এখন…
ঈশ্বরের খাতায় এক অবাধ্যতার শিরোনাম হয়ে যাচ্ছে, আমি বিদ্রোহী হয়ে যাই
মৃত্যু অবধারিত জেনেও, সব প্রার্থনাকে অবজ্ঞা করে…
আমি এক অন্ধকার সুরঙ্গের পথে হারিয়ে যেতে থাকি
আমার স্মৃতির পাতাগুলো একে একে সব ধ্বংস হতে থাকে
আমি দেখি লক্ষ সূর্যমুখী তাদের বিষণ্ণতা ভুলে গিয়ে
ষোড়শী যৌবনের অমিয় উৎসবে মেতে উঠেছে
বর্ষান্ত সন্ধ্যায় অনাবিল উচ্ছাসে মত্ত হয় শত শত শাপ মুক্ত কেতকী
আমার অস্তিত্বের চারপাশ ঘিরে বয় জলধির শান্ত শীতল প্রবাহ…
অভিমানের সব ডালা খুলে আমি তোর সিক্ত অধরে এখন…
সেই শাপ মুক্ত কেতকীর শুভ্র হাসি ফোঁটাতে পারি!
পৃথিবীর মুখমন্ডলে কিছু মৃত সময়
তখনও উৎসবে মাতে নীরব রাতের নিঃসঙ্গতার ছায়া হয়ে!!
-ফরিদ তালুকদার / জুলাই ২৭, ২০২০