দীর্ঘদিন পর প্রায় হারিয়ে যাওয়া ভাই-বন্ধু ও সহকর্মীদের খুঁজে পাওয়া সত্যি পরম আনন্দের বিষয়। এ বিষয়টি প্রায় প্রতিদিনই ঘটেছে কানাডা পরিদর্শনে এসে।
কানাডায় এসে অনান্যদের মধ্যে যাদের সাথে সাক্ষাৎ হলো তাঁরা হলেন–
ড.শাফি, শরদিন্দু বাবু, মাসুদ, মাহমুদ, খালেক সাহেব, বিদ্যুত বাবু, গিয়াস ভাই, জিনাত হালীম, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, মাহবুব উসমানীসহ আরও অনেক।
বিদ্যুত বাবু ও আমি শ্রীমঙ্গল ডিগ্রী কলেজে একসাথে অধ্যাপনা করতাম। তিনি পদার্থ বিদ্যার আর আমি ছিলাম রাস্ট্রবিঙ্জানের।
বিদ্যুত বাবু আমার আগেই ১৯৭৮ সালে কলেজের চাকুরী ছেড়ে পেট্রো বাংলার চাকরিতে চলে যান। আমিও তারপর কলেজ ছেড়ে অন্যদিকে চলে যাই। যোগদান করি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে।
এরপর এতগুলো বছর! অনেকদিন পর বিদ্যুৎ বাবুর সাথে দেখা হলো কানাডার টরেন্টোতে। তিনি ইতোমধ্যে আমেরিকা হয়ে কানাডা এসে থিতু হয়েছেন। স্ত্রী পুত্র নাতিসহ কানাডায় স্হায়ীভাবে বসবাস করেন।
এ যেন হারানো ভাইকে খুঁজে পাওয়া। মনেমনে দূজন দুজনকে স্মরণ করলেও আর দেখা পাওয়ার আশা দুজনে ছেড়েই দিয়েছিলাম। আল্লাহ পাকের কী লীলাখেলা!
অবশেষে সাক্ষাৎ। প্রথম দিনেই একটানা ৩ ঘন্টা আড্ডা। কতো কথা, কতো স্মৃতি! ফাঁকে ফাঁকে কফি ও নাস্তা। প্রথম দর্শনেই সেদিন আমরা একটি অত্যন্ত আনন্দঘন সময় কাটালাম।
তারপর কৃষি খামারে পরিদর্শন। বিরাট মার্খাম এলাকা ঘুরে ফিরে দেখা। হেলোইনের সময়ে কৃষি খামার পরিদর্শনের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্যতো আছেই।
বাসায় খাবারের জন্যে দাদা বিদ্যুৎ বাবু ও নিরুপমা বৌদি বারবার তাগিদ দিতে থাকলো। আমরা বলছিলাম, প্রয়োজন নেই। বলছি, একসময় গিয়ে চা-নাস্তা খেয়ে আসবো।
বেশ কিছুদিন চুপচাপ। আসাযাওয়া, ফোনালাপ যোগাযোগ ঠিক আছে। কিন্তু বাসায় খাবার ব্যাপারে কোন কথা হয় না।
হঠাৎ ৮/১০ দিন আগে বিদ্যুৎ বাবু বল্লেন, ১৮ নভেম্বর বাসায় আসতে হবে। শব্জী, ডাল ও ভাতের আয়োজন করা হবে। একসাথে খাব। গল্প করবো।
কী আর করা! ১৮ নভেম্বর ২০১৯ সোমবার দুপুরের আগেই হাজির হলাম বিদ্যুৎ বাবুর বিমর্টন ড্রাইভের বাসায়। ঐখানে উনি স্ত্রী নিরুপমা, ২ ছেলে ও একমাত্র নাতিকে নিয়ে বসবাস করেন।
নিরুপমা বৌদি নিজের হাতে পছন্দমতো বাজার করেছেন। নিজহাতে অনেক পদের খাবারের আয়োজন করেছেন। উনার হাতের রান্নার প্রশংসা করতেই হয়। উনাদের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা আমাদের অনেকদিন মনে থাকবে।