ডেলকার্নেগী সাফল্য এবং আনন্দের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, ”যেটা তুমি চাও সেটা হাসিল করাটাই হল সাফল্য। আর আনন্দ হল তুমি যা চাও তা পাওয়া।”
প্রত্যেক সুখী মানুষই সফল কিন্তু প্রত্যেক সফল মানুষই সুখী না। যেটা তুমি চাও সেটা হাসিল করতে না পেরেও ভালো থাকতে পারাটাই হল সুখ।
আপনার সুখ সাফল্যের উপর না, নির্ভর করছে জীবনকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির উপরে। দৃষ্টিভঙ্গি দু ধরনের। প্রো-একটিভ এবং রি- একটিভ। সোজা ভাষায় বলতে গেলে একটা গ্লাসে অর্ধেক গ্লাস পানি থাকলে সেখানে ‘অর্ধেক গ্লাস পানি নেই’ চিন্তা করাটা রিএকটিভ আর ‘ অর্ধেক গ্লাস পানি আছে’ চিন্তা করাটা প্রো-একটিভ।
যে জিনিসটাকে আপনার দুর্বল দিক মনে হচ্ছে আপনি চাইলেই সে জিনিসটা শক্তিতে রূপ নেবে। একটা উদাহারণ দেই…
অত্যন্ত দরিদ্র এবং রোগে শোকে মৃত্যুশয্যায় থাকা একটা মানুষ কতটা অসহায় হতে পারে সেটা আমরা জানি। কিন্তু মানুষটা ভীষণ সুখী ছিলেন কেননা তিনি তার দুর্বল দিক গুলোকেই আশীর্বাদ এবং শক্তি মনে করতেন। মানুষটা জ্ঞানী ছিলেন,
তার শীর্ষরা তাকে দেখতে এলে তিনি বললেন ‘ তিনটা জিনিস আমার খুব পছন্দ যেগুলো তোমরা অপছন্দ কর’
প্রথমটি হল – দারিদ্রতা। কেননা দরিদ্র আমাকে নম্র এবং বিনয় করে। দ্বিতীয়টি হল, অসুস্থতা। কেননা মানুষ যখন অসুস্থ থাকে তখন তার পাপ মোচন হয়। আর তৃতীয়টি হল মৃত্যু কেননা এটাই আমার জান্নাতে যাবার একমাত্র দরজা।
দরিদ্র , অসুস্থ এবং প্রায় মৃত্যুশয্যায় মানুষটা চাইলেই ফ্রাস্ট্রেশনে মরে যেতে পারতেন অথচ মানুষটা তার নিজের এই দুর্বল দিক গুলোকে কী সুন্দর করেই না শক্তিতে রূপ দিয়েছেন।
তোমাকে যদি চারটা মাত্র বাঁশের খুঁটি দিয়ে একটা ঘর বাঁধতে বলা হয় এবং সেখানে যদি একটা খুঁটি কিছুটা দুর্বল থাকে, তাহলে তুমি কী করবে ? তুমি নিশ্চয়ই তিনটা খুঁটি দিয়ে ঘর বানাবে না। বরং যে খুঁটিটা দুর্বল হয়ে আছে সেখানে বেশি মনোযোগ দেবে। এটা সেটা তার দিয়ে পেঁচিয়ে আরও শক্ত করে বাঁধবে। নিজের জীবনের সাথেও এই প্র্যাকটিসটা শুরু করে দাও।
যে কিনা কথা বলতে পারে না সে লিখে ইতিহাস রচনা করুক। ডাক্তার হবার স্বপ্ন ছিল যার, সে চাইলেই অর্থ উপার্জন করে একটা হসপিটাল অনুদান করতে পারে। বিমানে চড়তে ভয় পায়; এরকম মানুষও চাইলে বিমান বানিয়ে ফেলতে পারে; অসম্ভব কিছু না। যে কিনা হাঁটতে পারে না সে এমন কিছু করুক যেন অন্যেরা তাকে মাথায় তুলে হাঁটে।
নীলিকা নীলাচল ***