আমি যথার্থ ভাবে মনেকরি, আজকাল আমাদের প্রাত্যহিক দৈনন্দিন জীবনে পরস্পরের সাথে সম্পর্কের অবনতির একটি প্রধান কারণ হচ্ছে আমরা ক্রমশঃ রেসপেক্ট শব্দটিকে বাক্সবন্দী করে রাখছি। এতেকরে, একদিকে যেমন আমরা নিজের সম্মান বা রেসপেক্ট হারাচ্ছি অন্যদিকে অপরকে অবহেলা করে নিজের আরও বিপদ টেনে আনছি। এরই ধারাবাহিকতায় একটি জাতি বা রাষ্ট্র যেমন আরেকটি জাতি বা রাষ্ট্রের কাছে সম্মান হারাচ্ছে , একইভাবে একেকজন মানুষ তার নিজ নিজ পরিবারের কাছে সম্মান খোয়াতে যেয়ে পাহাড় প্রমান বিপদ ডেকে আনছে। চলুন আগে জাতি বা রাষ্ট্র পর্যায়ে একটু বিশ্লেষণ করি:

আমি খুব অদ্ভুত ভাবে খেয়াল করেছি, আমরা কথা প্রসঙ্গে একটু কিছু হলেই দেশের নাম ধরে, জাতির নাম ধরে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে একধরণের বিকৃত আনন্দে উদ্বেলিত হই, মজা পাই । যেমন ধরুন, আমি যদি বিশেষ কোনো ধর্ম প্রধান দেশে থাকি, সেখানে বসে সংখ্যালঘু ভিন্নধর্মাবলম্বী জাতির রাষ্ট্রের নাম ধরে, অনেক সময় বিকৃত নাম দিয়ে গালি গালাজ করি। আমি আমার এই আলোচনায় সেই ধর্মগুলির নামের বর্ণনা বা সেই বিকৃত নামগুলির উল্লেখ করে আমার আলোচনাকে অরুচীকর ভাবে উপস্থাপন করতে চাই না। আমি শুধু আপনাদের কাছে সবিনয় নিবেদন করবো, দয়া করে একবার ভাবুন, একটি জাতি বা রাষ্ট্র কখনো খারাপ হতে পারে না। খারাপ যদি হয়েই থাকে যারা রাষ্ট্র প্রধান বা সে দেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে জড়িত রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ। আমি যেমন, আমাদের ধর্মকে, আমার দেশকে ভালোবাসি, আমার দেশের জাতীয় সংগীত শুনে উঠে দাঁড়াই, আমার নিজ দেশকে মায়ের অবস্থানে রেখে সম্মান করি, ঠিক একইভাবে আমি যে দেশকে গালি দিচ্ছি, সেই দেশের মানুষেরা সেই দেশকেও তাঁদের মায়ের সম্মানে দেখছে। সুতরাং, আমরা আমাদের মা কে যেমন সম্মান করবো তেমনি আরেকটি দেশকেও সম্মান করব, নিজেকে সেই দেশ সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ কথা থেকে বিরত রাখব। আমাদের মহান রাষ্ট্র নায়কেরা যদি উদারতার পরিচয় দিয়ে পাশের দেশকে সম্মানের চোখে দেখতো তাহলে জম্মু-কাশ্মীর, ইসরাইল-প্যালেস্টাইন, ইরাক-ইরান, ভারত-বাংলাদেশ পানি বন্টন বা সীমানা দ্বন্দ্ব প্রভৃতি সমস্যা নিমিষেই সমাধান হতো। কিন্তু, বাস্তবে তা হয় না, কারণ সেই মহান রাষ্ট্রনায়ক আমাদের নির্বাচিত, আমাদেরকে সন্তুষ্টি করতে যেয়ে আমাদের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রে বসে অপর রাষ্ট্রের সুবিধা-অসুবিধার কথা না ভেবে আমাদের নিজ নিজ দেশের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে, পরবর্তী ভোটের জয়লাভের কথা চিন্তা করে দেশের মানুষদের মধ্যে এক ধরনের বুনো Nationalism বুলি আওড়িয়ে নিজ দেশে নিজেকে জনপ্রিয় সরকার হিসাবে দেখতে যেয়ে  পাশের দেশের সাথে বিরাজমান  সমস্যাগুলিকে জিয়ে রাখেন, এ এক বিচিত্র রাজনীতির গেম।

চলুন এবার, রাষ্ট্র থেকে চোখ নামিয়ে আমাদের নিজেদের দিকে তাকাই। আমি তখন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে পড়ি। বাসা থেকে দূরে দূরে কিছু স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। একদিন আমার এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী বন্ধু উত্তম কুমার সিংহবল আমাকে তার বাইসাইকেলে বসিয়ে স্যারের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছে । বন্ধু উত্তম খুব জোরে জোরে সাইকেলের প্যাডেল চালাচ্ছে যাতে করে স্যারের বাসায় যেয়ে আমি মাগরিব নামাজ আদায় করতে পারি। ভিন্নধর্মের মানুষের ভিন্নধর্মের প্রতি কী চমৎকার সম্মান!!! আমি আমার ভিন্ন ধর্মের বন্ধুর এই কাজে অভিভূত হলাম।

কানাডাতে আসার আগদিয়ে আমি ইন্টারকর্পোরেশন (IC) নামে এক সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল নন-প্রফিট অর্গানানাইজেশনের ভি এফ এফ পি প্রজেক্টের ট্রেইনিং সেক্টরে কাজ করতাম। আমার ডিরেক্টরের নাম হচ্ছে জনাব ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, আমার দেখা একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান অমায়িক মানুষ। ফরিদ ভাই সরকারি চাকুরী থেকে লিয়েন নিয়ে আমাদের এই প্রজেক্টের ডিরেক্টর হিসাবে কর্মরত ছিলেন। উনার বেশভূষা, চালচলন দেখে কিছুতেই বুঝার উপায় নাই উনি কত বড়ো পজিশনে আছেন। অথচ, সেই ফরিদ ভাইকে দেখতাম আমাদের মতো কমবয়সী পুরুষ সহকর্মীদের সবসময় ‘বাবা’ আর মহিলা সহকর্মীয়দের ‘মা’ বলে সম্বোধন করছেন। অধীনস্থ স্টাফের প্রতি কী চমৎকার সম্মান !!!

আমি মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান। আমার অতিসাধারণ বাবাকে দেখতাম নিজহাতে বাসার সামনের ড্রেন পরিষ্কার করছেন, রিকশা করে বাসায় এলে রিকশা ওয়ালারা অভুক্ত থাকলে তাকে বাসার ভিতরে ডেকে এনে খাবার খেতে দিচ্ছেন, পাড়ায় কোনো ঝগড়া ফ্যাসাদ হলে যেচে যেয়ে সেসব মেটাতে চেষ্টা করতেন। আমি সেই বয়সেই খুব ভালো করে খেয়াল করেছি আমার অতিসাধারণ বাবাকে পাড়ার মানুষেরা অনেক সম্মান করতেন, দূর থেকে বাবাকে আসতে দেখলে হাতের সিগারেট ফেলে দিতেন এমনকি জ্বলন্ত সিগারেট হাতের তালুবন্দি করে রাখতেন যাতে বাবা দেখতে না পারেন। আমার বাবা সিগারেট খাওয়া দেখলে যে মারামারি চড় থাপ্পড় দিতেন তা না। এ হচ্ছে বাবার প্রতি একধরণের সম্মান দেখানো। সেই ছোটবেলা থেকে বাবার কাছে শিখেছি, সম্মান দিলে সম্মান পাওয়া যায়।

আমার ছেলেবেলার দেখা বাংলাদেশে দেখতাম মানুষ মানুষকে সম্বোধন করতে যেয়ে অনেক ক্লাসিফিকেশন করে। বয়স্কদের সাথে ‘আপনি’ করে বলে, সমাজের চোখে নিম্নবিত্তের মানুষদের তুই তুকারি করে কথা বলে। যদিও অনেকসময় আপন মানুষদের তুই করে কথা বলে কিন্তু এই তুই সেই তুই না, এ হচ্ছে আদর করে ডাকা তুই, কিন্তু রিকশা ওয়ালা, কাজের মানুষ, শ্রমিক প্রভৃতি মানুষদের সাথে ব্যাবহার করা সেই ‘তুই’ এর সাথে এই তুই এর শব্দচয়নে ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজে আকাশ- পাতাল পার্থক্য। একটির মাঝে জড়িয়ে আছে সম্মান আর আরেকটির মাঝে জড়িয়ে আছে ‘অসম্মান’ তথা ঘৃণা।

সম্মান অসম্মানের বিষয়টি অনেক সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার কালচারের উপরও নির্ভর করে। আমি যখন কানাডাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পড়াশুনা করছি, অবাক হয়ে খেয়াল করলাম ক্লাসে একেবারে সামনে বসেও অনেক ছাত্র ছাত্র ছাত্রী পা এর উপর পা তুলে শরীর এলিয়ে স্যারের লেকচার শুনছেন। ক্লাসের ব্রেকে, টিচার-স্টুডেন্ট একসাথে সিগারেট খাচ্ছেন, হাসি ঠাট্টা করছেন। আমি যে কালচার থেকে এসেছি, তার সাথে এসব দৃশ্য মোটেই মানানসই না । তবে একথা ঠিক, টিচার-স্টুডেন্ট অবমাননাকর, হাতাহাতি, মারামারি কালচার থেকে এসে আমি এখানে সেরকম ঘটনা কখনো দেখিনি। তাহলে, ব্যাপারটি দাঁড়াচ্ছে, সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে কালচার গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের কথাই ধরা যাক, বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশে রিকশা ওয়ালাদের, হোটেল হোস্টেলের বাবুর্চি বয় আয়াদের তুই করে কথা না বলে মামা খালা সম্বোধন করে আপনি করে কথা বলা হচ্ছে। আমি এই কালচারকে সাধুবাদ জানাই।

এখানে, আপনি তুমি বড়ো কথা না, বড়ো কথা হচ্ছে, আপনি কী দৃষ্টিতে দেখছেন? আপনার দৃষ্টিত মধ্যে কি সম্মান লুকিয়ে আছে কি না, সেটি। এদিক দিয়ে ইংরেজি ভাষার ক্রেডিট দিতে হয়, এক YOU দিয়ে এরা সবার সাথে কথা বলে। সম্মান অসম্মানের কোনো বালাই নেই।

আমাদের দেশে পুরুষতান্ত্রিকসমাজ ব্যাবস্থায় মহিলাদেরকে অনেকসময় অসম্মান দিয়ে কথা বলা হয়, কাজের জায়গায় এমনকি বন্ধু মহলে মহিলাদেরকে হেয় বা তুচ্ছ করে অনেক সময় কুরুচিপূর্ণ জোকস চুটকি বলে সস্তা আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করা হয়, আমি এই আনন্দ থেকে নিজেকে বিরত থাকার প্রার্থনা করি।

বাংলাদেশের কালচারে গার্জেনরা ছেলে মেয়েদেরকে শাসন করবে, ছেলে মেয়েরা বাবা মায়ের আদেশ সর্বদাই মাথায় পেতে নিবে, সম্মান করবে। ছেলেমেয়েদেরকেও যে সম্মান দিতে হয় এটি আমাদের অনেক পরিবারেই নেই। ছেলেমেয়েদের ডিসিশনকে অসম্মান করে ছেলেমেয়েরা এমনকি কোন বিষয় নিয়ে লেখা পড়া করবে সেটা গার্জেনরাই একতরফা ভাবে নির্ধারণ করে দেন। আমি অনেক আগে প্যারেন্টিং নিয়ে লিখতে যেয়ে চার ধরণের প্যারেন্টিং এর কথার বিশ্লেষণ করেছিলাম : AUTHORITARIAN, AUTHORITATIVE, PERMISSIVE আজ অত গভীরে না যেয়ে শুধু এতটুকু বলব, বাবা -মা ও ছেলেমেয়েদের সাথে উভমুখী সম্মানের সম্পর্ক থাকা উচিত সেটা দেখতে পাওয়া যায় AUTHORITATIVE টাইপ প্যারেন্টিং এর মাঝে।

এবার আসি, আমাদের বাংলাদেশীদের কমিউনিটিতে হাসবেন্ড-ওয়াইফ সম্পর্কের মাঝে রেসপেক্ট এর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনেকরি, বিগত প্রায় এক যুগ ধরে কৃষি বিপ্লবের মতো আমাদের দেশে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে আমূল বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। এই বিপ্লবের পিছনে শুধু শিক্ষার অগ্রগতিকে বড়ো করে দেখি না, আমি মনেকরি, দেশের সরকারি, বেসরকারি সবার অবদানের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক পরিবর্তন, চাকুরীর কারণে জয়েন্ট ফ্যামিলি থেকে সিঙ্গেল ফ্যামিলির শিফটিং, টেকনোলজির কারণে বা ইমিগ্রেশনের বৃদ্ধির কারণে বহির বিশ্বের কালচারের সংস্পর্শ ইত্যাদি কারণগুলিকেও বড়ো করে দেখা প্রয়োজন। কয়েক যুগ আগেও আমাদের বাবা-মা দের মধ্যে যে নিবিড় সম্পর্ক দেখেছি যেখানে শ্রদ্ধা ভক্তির নামে আমি একতরফা সুসম্পর্কের উপস্থিতি দেখলেও বাবার জন্যে অপেক্ষায় থাকা ক্ষুদার্থ মাকে দেখে আমি অবাক হয়েছি। এখন সময় বদলে গিয়েছে, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে পহেলা ফাগুন, ভালোবাসা দিবস, বর্ষবরণ প্রভৃতির অনুপ্রবেশের কারণে স্বামী-স্ত্রীতে রাস্তা-ঘাটে, পার্কে, বীচে হাতে ধরাধরি দৃশ্য দেখে আমাদের ভ্রম হতেই পারে, আমরা মনে করতেই পারি এই বুঝি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে বিপ্লব ঘটে গেল কিন্তু, খুবই পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, আমাদের এই চামড়ার চোখে দেখা স্বামী-স্ত্রীর এই লোক দেখানো মেকি ভালোবাসায় কতোখানি সম্মান জড়িয়ে আছে তা সন্দেহের উদ্রেক হয় যখন দেখি ছোট ছোট অবুঝ সংসার গুলি বিয়ের ৫/৭ বছরের মধ্যে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে।

এই প্রবাসে বসেও আমি আমাদের মাঝে পরস্পরের প্রতি অসম্মানকর অনেক ঘটনা দুর্ঘটনা দেখে নিজে নিজে কষ্ট পাই। বিশেষ করে, প্রবাসে উইকএন্ডের দাওয়াতগুলিতে আড্ডার আসরে যখন রাজনীতি চোলে আসে তখনতো আর কথাই নাই। চিৎকার চ্যাচামেচি করে ভিন্ন মতের অতিথিকে গালিগালাজ করি, অপমান করি এমন কী হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়ে দাওয়াতের বারোটা বাজাই । আমি প্রবাসে এক ইফতার পার্টিটার কথা জানি, ঠিক আজানের আগে দিয়ে কী নিয়ে যেন দুই গ্রূপ লেগে গেল, চুলায় গেল ইফতারি!!! ‘রেসপেক্ট’ শব্দটি মুচ্কি হেসে ইফতার পার্টি থেকে নীরবে বিদায় নিল। আমাকে প্লিজ ভুল বুঝবেন না, আমি নৈরাশ্যবাদী নই, আমি অপ্টিমিস্টিক। আমি অবশ্যই আশাকরি, একদিন আমরা আমাদের সংকীর্ণতা কাটিয়ে সেরা জাতিতে পরিণত হব।

এই প্রবাসে, আমি যখন প্রথম আসি, রেসপেক্ট এর এক অদ্ভুত উদাহরণ আমাকে আমার মনের মধ্যে আলোড়ন তৈরী করেছিল। আমি যে প্রভিন্স থাকি সেই অন্টারিও প্রভিন্স এ হাঁসেরা সামারের শুরুর দিকে বাচ্চা দিয়ে থাকে এবং বাচ্চাগুলি নিয়ে মা হাঁসিরা অনেক সময় ঝাঁক ধরে রাস্তা পারাপার করে। আমি একদিন দেখলাম এরকম একটি ঘটনা আমার সামনে হচ্ছে, সার ধরে রাস্তার দুই পাশে গাড়িগুলি পিন পতন নিস্তব্দতায় হাঁসগুলির রাস্তা পার হওয়ার সুযোগ করে দিয়ে চুপ করে অপেক্ষা করছে। কোনো গাড়ির হর্ন নেই , কারো মাঝে কোনো তাড়া নেই, পশু পাখির প্রতি এই সম্মান আমাকে অভিভূত করল।

এবার আসি এসময়ের জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা ফেসবুক প্রসঙ্গে। এই ফেসবুকে একেক মানুষ একেক বিচিত্র পোষ্ট দিয়ে মজা পেয়ে থাকেন, নিজের কিছু ভাল মন্দ অভিজ্ঞতার কথা সবার সাথে শেয়ার করেন। আমি মানছি, এসব পোষ্ট মাঝে মাঝে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায় কিন্তু তাই বলে কেন নিজের শিক্ষা কালচার ভুলে অরুচিকর কমেন্ট করে আরেকজনকে অসম্মান করব? আমার যদি সেই পোস্ট ভাল না লাগে, তবে এড়িয়ে গেলেই হলো, তাইবলে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিতে হবে এমন কথা নেই।

আসুন, আমাদের নিজেদের মধ্যে RESPECT এর কালচার তৈরী করি।
আমাদের বাবা মা কে RESPECT করি
আমাদের ছেলেমেয়েদের RESPECT করি

আমরা হাসবেন্ড-ওয়াইফরা পরস্পরকে যেন RESPECT করি
আমাদের মতের সাথে ভিন্ন বন্ধুদের অতিথিদের RESPECT করি
আমার মা বোনদের RESPECT করি
আমাদের সহকর্মীদের RESPECT করি
দোকানে কিছু কিনতে গেলে দোকানের স্টাফদের RESPECT করি
পশু পাখিদের RESPECT করি
চলতি পথে সবার সাথে RESPECT করি ।

একদিন এই কালচারে এই পৃথিবীটা ধর্ম,বর্ণ ও ভাষার উর্ধে থেকে সহনশীল সম্মানজনক এক সমাজ তথা দেশ বা জাতি তৈরী হবে যে জাতির নাম হবে ‘মানব জাতি’ ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাড়িয়ে দাও হাত-পর্ব ১০
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র ঈদুল আজহা ও কোভিড-১৯
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন