পশ্চিমে এখন মধ্যরাত। আমার রাতের সাথি, বই, মুভি, নিউজ, ব্রাউজিং, টম এন্ড জেরি থেকে গোপাল ভাড়ও থাকেন । আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ, মেকস্ এ্যা ম্যান হেলদী ওয়েলদি এন্ড ওয়াইজ। এত সুন্দর কথাটা কোনদিন মাথায় ঢোকেনি। ফলাফল হলো, জ্ঞানের ছিটেফোঁটাও নেই। স্বাস্থ্য বলতে, প্রায় ছ‘ফুটের একটা তালপাতার সেপাই। চুয়ান্ন বছর তিন মাস ধরে তিনবেলা অন্ন ধংস করেও ওয়েট মেশিনের কাটা পঞ্চাশ এর উপরে ওঠে না। আর ওয়েলদি বলতে, সন্মান নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার মতো।
……. সো , টোটাল লস প্রজেক্ট।
ইদানিং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ই–বুক, উইকিপিডিয়া আর এনসাইক্লোপিডিয়ার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলছি । ভাবতে অবাক লাগে গুগল কি অসাধ্য সাধন করে যাচ্ছে।
কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের কল্যাণে পৃথিবীকে নিয়ে মানুষ এখন তর্জনী আর বুড়ো আঙুল দিয়ে খেলা করছে। ক্লিক অথবা টাচ্। কি চাই? সব হাজির।
আর এসব তৈরী করছে মানুষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একজন মানুষের মস্তিষ্ক চারশো সুপার কম্পিউটারের মেধা এবং স্মৃতি শক্তি সম্পন্ন। মেধা বিশেষে তা আরও বেশী। অতএব একজন মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার ঘাড়ের উপর চারশো সুপার কম্পিউটার বহন করে চলেছে। এখন সে এটা কিভাবে কোন কাজে ব্যাবহার করবে, সেটা তার ব্যাপার।
তাহলে আমরা ধরেই নিতে পারি যে, প্রত্যেক মানুষের মস্তিষ্কে একটা করে গুগল এ্যাপস আছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সে তার জীবনের শিক্ষা এবং অবস্থান অনুযায়ী জীবনচরিত নিয়মিত অটো আপলোড করে যাচ্ছে।
আর আছে একান্ত ব্যক্তিগত জীবনের উইকিপিডিয়া। যার মধ্যে জমা হচ্ছে তার বয়স অনুযায়ী শত শত এনসাইক্লোপিডিয়া ফাইল। যে ফাইল, সে ছাড়া আর কেউ খুলতে পারে না।
পঞ্চাশ ষাট অথবা তদঊর্ধ্ব একজন মানুষের মস্তিষ্কে হাজার হাজার ফাইল। শিশুকাল, শৈশব, কৈশোর, আর যৌবন থেকে অদ্যাবধি সুখ দুঃখ হাসি কান্না, পাওয়া, না পাওয়া, প্রেম বিরহের একান্ত আপন ইতিহাস।
সেই এনসাইক্লোপিডিয়া, তার কাছের মানুষগুলো কতটুকুই বা জানতে পারে?
একসময় প্রস্থান করতেই হয়। মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটে, সাথে সাথে তার উইকিপিডিয়া আর এনসাইক্লোপিডিয়া চিরতরে হারিয়ে যায়।
কেউ জানতে পারেনা, কতটুকু কষ্ট নিয়ে বেঁচে ছিলো, কতটুকু দুঃখ নিয়ে চলে গেলো।।।।