ভর সন্ধ্যায় সহপাঠিনী বান্ধবীর ফোন:
” এই ত্যাড়া কি করিস্? ”
– বই পড়ি।
“কি বই? ”
– হুমায়ুন আজাদের, ” মানুষ হিসেবে আমার অপরাধসমূহ “।
” তুই আমেরিকা থেকে আমার জন্য ফাঁসির দড়ি পাঠা। এদেশের দড়ি আমার ভার সইতে পারবে বলে মনে হয়না। দড়ি ছিঁড়ে কোমর ভাঙার রিক্স নেয়া যাবে না। এবার ফাইনাল ডিসিশন পাক্কা, সুইসাইড কনফার্ম।”
– হা হা হা,,, কেন রে?
“তুই শালা ষড়যন্ত্র করে এক সরকারি আমলার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিস, সে আমার জীবনটা তন্দুরীর চুলা বানিয়ে ফেলেছে।”
– আরে হলো কি বলবি তো?
“স্বজন প্রীতি, তার স্বজন প্রীতির যন্ত্রণায় আমার জীবন কালি কালি, দেশের কতো আত্মীয় স্বজন গ্রামবাসীরে সে চাকরি দিছে তা গুনে শেষ করা যাবেনা।”
– ভাল তো, এটাই তো করা উচিৎ। তাতে তোর সমস্যা কি?
“আরে তার স্বজন প্রীতি নিয়ে তো আমার আপত্তি নাই। কিন্তু বিয়ের ২৫ বছর পর যদি “স্বজন পি-রি-তি” ধরা পড়ে!!! তাইলে বাঁচতে ইচ্ছে হয়?”
– ঝেড়ে কেশে ঘটনা খুলে বল,,, মোটি।
“আরে শুনলে তোরও চোখ কপালে উঠবে!! ওর মামাতো বোন দুই বাচ্চা সহ বেড়াতে এসেছে, আসার পর থেকেই মাসুদের নামে -প্রশংসার ফোয়ারাটা ছুটাচ্ছে!! আচ্ছা তুই বল, স্বামী আমার, সে লজ্জায় লাল হয়ে তার গুনগান গাচ্ছে!!! সহ্য হয়!! শেষ পর্যন্ত মামাতো বোন!!! স্বজন পি-রি-তি !!! উফ্!!! ”
– হা হা হা, হিংসে হয়??
“হাসবি না শা,,,লা। আমি শিওর ওদের মধ্যে কোন ইটিসপিটিস ছিলো। আজ আসুক বাসায়, এক রাতের রিমান্ড মঞ্জুর করেছি, ১৬৪ ধারায় ওর স্বজন পিরিতির স্বীকারোক্তি জবানবন্দি আমি রেকর্ড করবোই করবো। ”
-আচ্ছা তুই এখনো এসব পাগলীপনা করিস কেন? বিয়ের ২৫ বছর পার হলো, তোরাও তো পঞ্চাশ পেরিয়েছিস। ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। এখনো হট্টগোল চালিয়ে যাবি?
কতক্ষণ চুপ থেকে মাধুরী বললো, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক কখনো বুড়ো হয়না রে। বুড়ো হতে দিতে নেই। হট্টগোল করে তরুণ রাখতে হয়। নারীবাদ পুরুষবাদ কোন বাদই কোন কাজে লাগেনা।
যদি বুকের ভেতর জ্বলুনিটা না থাকে।
আর ঐ জ্বলুনির নামই ভালবাসা।।।।