ভাইজান, চিনি আছে ? আমি চমকে উঠলাম। প্রবাসে এমনিতেই হুট্ করে অপরিচিত কেউ বাংলায় কথা বললে চমকে উঠতে হয়, তাঁর মধ্যে আবার উদ্ভট প্রশ্ন। আমি আসলে HWY 401 W ধরে ড্রাইভ করছিলাম। ছোট বাথরুম পাওয়ায় ভিক্টরিয়া পার্কে এক্সজিট নিয়ে লোকাল ধরে এগুচ্ছি কোনো টিমহর্টনের দোকান পেলেই বাথরুম করা যাবে, আবার কফিও খাওয়া যেতে পারে। হাতের ডান দিকে পেয়েও গেলাম একটি টিমহর্টনের দোকান। কিন্তু কপাল খারাপ। পুরুষ ও মহিলা উভয় বাথরুমই লক করা । অর্থাৎ ভিতরে কেউ আছে । আমি অপেক্ষায় আছি কখন ভিতরের লোক বের হবে । ঠিক এরকম সময় সেই আচমকা প্রশ্ন।

বাথরুম থেকে এখনো কেউ বের হয়নি। এরকম অবস্থায় মাথা একটু চড়া থাকে। তবুও আমি যতদূর সম্ভব মুখাবয়বে বিনয়ের ভাব ফুটে তুলে বললাম, ‘ভাই আপনার প্রশ্নটা বুঝতে পাচ্ছি না। এবার ভদ্রলোক একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘ভাইজান আপনার কি ডায়বেটিকস আছে ? যদি না থাকে তো আমি ..। এবার আমি যা বুঝার বুঝে নিলাম । পুরুষদের বাথরুম থেকে একজন বের হতেই আমি বিনয় দেখিয়ে বললাম , ‘ যান ভাই , আপনেই আগে যান।’ ভদ্রলোক আমার কথা শেষ হতে না হতেই পড়িমরি করে আমার পা মাড়িয়ে বাথরুমে ঢুকে গেলেন। আমি আবারও অপেক্ষায় থাকলাম।

আমার চরিত্রের মধ্যে প্রবল ভাবে নিজের ক্ষতি করে হলেও অন্যের মঙ্গলের জন্যে জানবাজি রেখে কিছু করার প্রবণতা ছোটবেলা থেকেই আমি লক্ষ্য করে আসছি। মেডিকেল কলেজে এডমিশন টেষ্টের সময় এক বন্ধুকে উজাড় করে নিজের খাতা দেখার সুযোগ করে দেয়ার খোটা আজও স্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে হয়। নিজের কাছে না থাকলেও ধার করে মানুষকে টাকা ধার দেয়ার উদাহরণ আমার অনেক রয়েছে। সুতরাং, লাইনের প্রথমে থেকেও নিজে বাথরুমে না যেয়ে অপরিচিত অন্য আরেকজনকে বাথরুমে যেতে দিয়ে আমি আমার চরিত্রের সাথে বেমানান এমন কিছু করিনি।

আমি বাথরুম থেকে বের হতেই দেখি ভদ্রলোক হাসি মুখে দুই হাতে দুই কফির মগ নিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এসে বললেন, ভাইজান কোনো তাড়া আছে ? আসেন না একসাথে দু’ভাই বসে দুকাপ কফি খেয়েই যে যার মতো আবার চলে যাবো। ফিরে তো যাবো সেই সংসারেই। গায়ে পড়ে ভদ্রলোকের এই আচরণে আমি খানিকটা হকচকিয়ে গেলাম, কোনো ব্রোকার নয় তো ! মানুষটার কথার মধ্যে কেমন যেন একটা আন্তরিকতার ব্যাপার ছিল। তাছাড়া আমার তেমন তাড়াও ছিল না। আমি বললাম, ‘চলুন বসি’।

বসতে বসতে তিনি বললেন, ‘ডায়াবেটিক্সটা বেশ ঝামেলায় ফেলে দেয় বুঝলেন ভাই, তাই পথে-ঘাটে বাথরুম সারতে হয়, আপনার চেহারা দেখে ভাবলাম দেশি, তাই রিস্ক নিয়ে আপনাকে রিকোয়েস্ট করতেই  ..।’ আমি ওনার কথা শেষ  না করতে দিয়ে বিনয়ের সাথে বললাম, ‘না না, কোনো ব্যাপার না, আমার তেমন অসুবিধা হয়নি। কে কীভাবে কফিতে দুধ/চিনি খায় সে জন্য ভদ্রলোক বুদ্ধি করে দুকাপ ব্ল্যাক কফি এবং ক্রিম, সুগার, মিল্ক প্রভৃতি আলাদা করে ঠোঙায় নিয়েছেন। আমি আমার কফিতে শুধু খানিকটা ক্রিম নিয়ে নাড়াচাড়া করতেই ভদ্রলোক নিজের কাপে চুমুক দিয়ে বললেন, ‘ভাইজান, বুকে অনেক কষ্ট তো তাই অপরিচিত মানুষের কাছে কষ্টের কথা বলে একটু হালকা হওয়ার চেষ্টা করি। আমি বললাম, ‘কেন ভাই, পরিচিত মানুষদের ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায় ?

এবার ভদ্রলোক খানিকটা গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘সমস্যা আছে রে ভাই, পরিচিত মানুষেরা আপনার সমস্যার কথা শুনে তাৎক্ষণিক মুখে হয়তো সমবেদনা জানাবে, কিন্তু কমিউনিটিতে সব বলে কয়ে আপনার মানসম্মান নিয়ে পরে দেখা যাবে টানাটানি। আমরা বসেছি টিমহর্টনের ভিতরে কোনার দিকে এক টেবিলে, আশেপাশের কোনো টেবিলেই বাঙালি কেউ নেই। একজন কমবয়সী ককেশিয়ান সাদা চামড়ার মহিলা তাঁর তিনটি বাচ্চাকে নিয়ে পাশের একটি টেবিলে বসেছেন। দুটি বাচ্চাকে চকলেট ডোনাট দিয়ে বসিয়ে রেখে নিজে শান্তভাবে বেকন স্যান্ডউইচ খাচ্ছেন। সবচেয়ে ছোট বাচ্চাকে স্ট্রোলারে বসিয়ে বেল্ট দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। সেই ছোট্ট বাচ্চাটির হাতেও একটি চকলেট স্প্রিঙ্কল ডোনাট। মাঝে মাঝে সেই ছোট্ট বাচ্চাটি স্ট্রলারে বসে মিষ্টি সুরে মাম্মি মাম্মি ডাকছে।

ভদ্রলোক আমার দিকে হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজের পরিচয় দিতে যেয়ে বললেন, ‘আমি একজন প্রকৌশুলি, আমার একছেলে, এক মেয়ে। একসময় এই টরেন্টোতে পরিবার নিয়ে থাকতাম, এখন থাকি ক্যালগেরিতে। ওখানকার সিটিতে হঠাৎ করে একটি ভালো জব পেয়ে যাওয়ায় হাইস্কুলে পড়া মেয়েকে আর ওয়াইফকে নিয়ে ক্যালগেরি চলে গেলাম। মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করে দিলাম। মেয়েটি ওখানেই হাইস্কুল শেষ করে এখন সেখানেই একটি ভালো ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে’। আমি হ্যান্ডশেক করে নিজের পরিচয় দিলাম, বললাম, ‘ভাই, আমি একজন সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার, হোমলেস, মেন্টালহেল্থ এসব ক্লায়েন্টদের নিয়ে কাজ করি।

ভদ্রলোক আমার দিকে এবার বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাকালেন, যেন অথৈ পানিতে ডুবন্ত কোনো মানুষ খড়কুটো পেয়ে আনন্দিত হয়ে আঁকড়ে ধরে ডাঙায় উঠতে চায়, ঠিক সেভাবে আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকলেন । এখানে পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলে রাখা ভালো, প্রফেশন্যালগত কারণে আমাদেরকে সবসময় ক্লায়েন্টদের কোনো কথা শোনার সময় Effective listener এর ভূমিকায় থাকতে হয়। sympathetic এর পাশাপাশি আমাদের Empathetic হয়ে বক্তার কথা খুঁটিনাটি শুনতে হয়। আমি বললাম, ভাই আপনি মেয়ের কথা বললেন, ছেলের কথা কিছু বললেন না ? এবার তিনি আমার পরিচয় পেয়ে আমার কাছ থেকে হয়তো সঠিক পরামর্শের আশায় উৎসুক হয়ে তাকিয়ে থেকে আবারো কফিতে চুমুক দিয়ে বলা শুরু করলেন, ‘ভাইজান, স্বয়ং আল্লাহ্পাক আজ আমাকে করুণা করে আপনার সাথে আমার দেখা করার ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন। আজ আপনাকে সব খুলে বলছি, আমার ভাগ্য ভালো ভাইজান, সঠিক মানুষকে পেয়েছি’ বলতে বলতে তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন।

পাশের টেবিলের বাচ্চাগুলো আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি ভদ্রলোককে আশ্বস্ত করে বললাম, ‘ভাইজান, আপনাকে কীভাবে হেল্প করতে পারবো জানি না, আগে পুরোটা বলুন, দেখি কি করা যায়। ভদ্রলোক চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘ ভাই, আমার যখন ক্যালগেরিতে ভালো চাকরি হলো, ছেলে এখানে সবেমাত্র ইউনিভার্সিটিতে কম্পিটার সায়েন্স নিয়ে সেকেন্ড ইয়ারে পড়তো। তাই, ছেলেকে বাসার বেজমেন্টে রেখে আমরা সবাই ক্যালগেরিতে গেলাম। ছেলে প্রায়ই টাকা চাইয়ে মায়ের কাছে ফোন দিতো। আমরাও টাকা পাঠাতাম। এক পর্যায়ে মায়ের মনে সন্দেহ হলে আমি টরেন্টোতে ছুঁটে এলাম।

গতকাল ইউনিভার্সিটিতে খোঁজ নিয়ে জানলাম দুই বছর আগে থেকেই আমার ছেলের ইউনিভার্সিটির সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। ফাস্ট ইয়ারের প্রত্যাকটি সাবজেক্টে ফেল করে ইউনিভার্সিটি থেকে ড্রপ আউট হয়েছে অনেক আগেই।’  ভদ্রলোকের দুচোখ আবারো টলমল করে উঠলো। আমরা যখন ছেলের সাথে টরেন্টোতে থাকতাম, তখন বুঝিনি ছেলে ড্রপ আউট হয়েছে। প্রত্যাকদিন নাস্তা খেয়ে ছেলে আমার ক্লাসে যেত । আসলে কোথায় যে যেত এখন সব বুঝতে পাচ্ছি ভাইজান। আজ, আচমকা ছেলের ঘরে যেয়ে দেখি নেশার সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এসব কথা এখনও আমার স্ত্রীকে জানায়নি ভাইজান। এই গত সপ্তাহেই এক হাজার ডলার পাঠিয়েছিলাম, আজ আবার আমার কাছে টাকা চাচ্ছে, আমি রাজি না হওয়ায় সুইসাইড করার হুমকি দিতেই পাঁচ শো ডলার দিয়ে এলাম। এভাবে আর কতদিন ভাইজান ! এ পর্যায়ে ভদ্রলোক আবারো ভেউ ভেউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমার ছেলেকে বাঁচান ভাইজান।

আমি যেহেতু, মেন্টাল হেলথ, হোমলেসদের নিয়ে কাজ করি, তাই এ জাতীয় সমস্যা আমাদের জানা গল্প। আমি ভদ্রলোককে আমার প্রফেশন্যাল ফোন নাম্বার দিলাম, এবং বললাম আমি আপনার সাথে যোগাযোগ রাখবো এবং আমার পক্ষ থেকে যথাসাদ্ধ চেষ্টা করবো।

প্রায় সাত আট বছর পরের কথা। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে বলছি, আমি ইতিমধ্যে ভদ্রলোকটির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে ওনার ছেলের ব্যাপারে যথাযত উপযুক্ত রিসোর্স পাঠিয়েছিলাম। ছেলেটার সাথে আমি কথা বলেছি, বেশ কয়েকবার দেখা করেছি, একটি এডিকশন সেন্টারে প্রোগ্রামের সাথে রেফার করে দিয়ে নিয়মিতভাবে ছেলেটির সাথে কফি-সপে অনেকবার ননফর্মাল কাউন্সিলিং করেছি। ছেলেটির মেন্টালহেল্থের কিছু ব্যাপার ছিল। ছেলেটিকে বুঝিয়ে রাজি করেছি যাতে ওর মানসিক সমস্যার কথা ফ্যামিলি ডাক্তারের কাছে খুলে বলে। ছেলেটি তাই করেছিল। সাইক্রিয়াটিস্ট এসেসমেন্ট করে জানা গিয়েছে সে ভয়ানক ডিপ্রেশন রোগে ভুগছে। ওষুধের পাশাপাশি ছেলেটির পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় অবশেষে ছেলেটি এখন অনেকটাই কার্যকরী (functional) অবস্থায় আছে। কলেজ থেকে একটি ডিপ্লোমা করে মোটামুটি বেতনের একটি চাকরি করেছে। একটি অন্ধকার জগৎ থেকে ছেলেটি ফিরে এসেছে। আজ টরেন্টোতে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ছেলেটির বিয়ে হচ্ছে।

ছেলেটি ও তার বাবামা আমাকে খুব করে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। চাকরিগত কারণে আমাদের অনেক প্রফেশনাল বাউন্ডারি থাকে। আমি কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলাম । পরে অবশ্য ওনাদের পীড়াপীড়িতে রাজি হতে হলো। মনকে প্রবোধ দিলাম, ছেলেটিতো আমার অফিসের কোনো ক্লায়েন্ট না। আমি তাকে ক্লায়েন্ট হিসাবে না দেখে আমার কমিউনিটি মেম্বার হিসাবে দেখেছি। অবশেষে, আমার পরিবার নিয়ে আজ বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছি। খাওয়াদাওয়া শেষে অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে ছেলেটি ও তার ফুটফুটে স্ত্রী আমাদের টেবিলের কাছে এসে আমার পা ছুঁয়ে ছালাম করলো। আমি ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে আশীর্বাদ করতে যেয়ে খেয়াল করলাম, আমার চোখ ভিজে উঠেছে। আমার চোখের পানি আড়াল করার জন্যে দ্রুত অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলাম।

পুনশ্চ:

১) বিষন্নতা বা Depression একটি মানসিক ব্যাধি। এটি কেবল আচরণগত (Behavioral ) সমস্যা না। এই রোগীরা বিষন্নতা এড়াতে ছোট খাটো থেকে ঝুঁকিপূর্ণ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে সুইসাইড পর্যন্ত করার চেষ্টা করে। সময়মতো বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে এই রোগের চিকিৎসা করা উচিত
“Clinical depression, sometimes called major depression, is a complex mood disorder caused by various factors, including genetic predisposition, personality, stress and brain chemistry.” (https://www.camh.ca/en/health-info/mental-illness-and-addiction-index/depression )

২ ) আবার, অনেক সময় আমাদের প্যারেন্টিং গত সমস্যার কারনে বাচ্চাদের মধ্যে বিরূপ ব্যক্তিত্ব তৈরী হয় যা তাদের আচরণে প্রকাশ পেয়ে থাকে। আমাদের উচিত আমাদের প্যারেন্টিংয়ে strength perspective অনুসরণ করা। উঠতে বসতে বাচ্চাদের কেবল ভুল না ধরে, ওদের সঠিক ব্যাপারগুলোকে হাইলাইট করে উৎসাহ দিতে হবে । আমাদের উচিত ছেলেমেয়েদের সাথে,ছোটবেলা থেকেই বন্ধুর মতো ওদের সুখেদুঃখে থাকা। ওদের চাওয়া-পাওয়া ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করা। টিন- এজেড ছেলেমেয়েরা অনেক সেনসেটিভ ও অভিমানী হয়। ওরা চরম ভাবে ব্যাক্তি স্বাধীনতা পছন্দ করে। আমাদের উচিত হবে না ওদের ব্যাক্তি স্বাধীনতাযা হস্তক্ষেপ করা, ওরা যা হতে চায় সেটিই ওদেরকে হতে দেওয়া উচিত।
মনে রাখতে হবে, আমাদের ভূমিকা ঠিক পুলিশ অফিসারের মতো না হয়ে হতে হবে ওদের একজন আন্তরিক বন্ধুর মতো। ছেলেমেয়েদের মধ্যে চারিত্রিকগত হোক বা মানসিক ব্যাধিগত হোক যে কোনো সমস্যাই ওদের সাথে বন্ধুর মতো মিশে জেনে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে সময়মতো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। এই হোক আমাদের এবারের New Year Regulation.

নতুন বছরে সবাইকে শুভেচ্ছা!!

Happy New Year!!!

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৃতীয় বিশ্বের গণতন্ত্রের রূপ -পর্ব ১০
পরবর্তী নিবন্ধএকজন রিফুজি ক্লেমেন্টের গল্প !
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন