পার্থ , অস্ট্রেলিয়া থেকে:-
স্কুলজীবনে ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলের পটভূমিতে লেখা একটা উপন্যাসে পড়েছিলাম একজন বৃদ্ধ গল্পের মূল চরিত্র বালকটিকে দোয়া করছেন – ‘বাবা বড় হয়ে দারোগা হও’। সেকালে মনে হয় দারোগার কদর ছিল। আশির দশকে, আমার বালক বয়সে, দেখেছি সেই কদর দারোগা থেকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারে গিয়ে ঠেকেছিল। আর তা শুধু দোয়াতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ছেলেমেয়েদের ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোই বাবা-মায়ের লক্ষ্য ছিল, চাপও ছিলÑ আমার বেলাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সেই চাপ এখনকার চাপের মতো এত প্রচণ্ড ছিল না। পড়ার জীবন স্কুল আর বাড়ির পড়ার টেবিলেই সীমাবদ্ধ ছিল- ভারী ব্যাগ নিয়ে সারাদিন কোচিং আর প্রাইভেট শিক্ষকদের পেছনে ছুটতে হতো না।
আমিও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলাম। পাসও করেছিলাম। কিন্তু কোনোদিন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া হয়নি। চার বছরের সেই পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ ছিল না, মনযোগও ছিল না। ইলেকট্রনিক্স ক্লাসে একদিন এক স্যার আমাকে দাঁড় করিয়ে কঠিন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। অবশ্য প্রশ্নটা কঠিন কি সহজ তা বোঝার জ্ঞান ছিল না, আমার কাছে সবই কঠিন মনে হতো। উত্তর দিয়েছিলাম, ‘মনে নাই স্যার’। তার মানে পড়েছিলাম কিন্তু ভুলে গেছি। স্যার ছিলেন সুদর্শন ও অবিবাহিত। ক্যাম্পাসে প্রেম করে অথবা মেয়েবন্ধু আছে এমন ছেলেদের ওপর এ বয়েসী শিক্ষকদের অসন্তুষ্টি থাকে। কারণ জানি না, অনুমান করি। আমাকে স্যার বিদ্রুপের সঙ্গে বললেন, ‘মন থাকে কোথায়?’
মন থাকতো ক্যান্টিনের আড্ডায় অথবা লাইব্রেরিতে সহপাঠিনীর কাছে। সেই সহপাঠিনী ছিল ক্লাসে প্রথম, আমি বিপরীত দিক দিয়ে প্রথম না হলেও কাছাকাছি। সে লিস্ট করে দিত কি পড়তে হবে পাস করার জন্য, যাতে অল্প পড়ে পাস করা যায়। পরে সেই সহপাঠিনী বন্ধুতে পরিণত হয়, ছাত্রজীবন শেষে বন্ধু থেকে স্ত্রী। সে এখনও আগের মতোই লিস্ট ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। তবে তা বাজারের লিস্ট। সে বিভিন্ন রঙের কাগজে বাজারের লিস্ট করে। তার ধারণা কাগজের সেই রঙ আমার মনে লাগবে। রঙিন মন নিয়ে বাজার করলে লম্বা লিস্টও খাটো মনে হবে। হয়তো কিছুটা রঙ মনে লাগে। কিন্তু যে রঙিন মন শৈশব আর কৈশোরে ফেলে রেখে এসেছি, কাগজের রঙ তা ফিরিয়ে আনতে পারে না।
স্কুলজীবন ছিল অনেক রঙের মেলা। মাছধরা ছিল নেশা। বড়শি, জাল, বাঁশের কিছু উপকরণ, পানি সেচ পদ্ধতি, এমনকি গামছা দিয়েও মাছ ধরতাম। আমাদের বাড়ির পাশে খাল ছিল। খালটা এঁকেবেঁকে নদী এবং বিলকে সংযোগ করেছিল। একদিনের কথা মনে পড়ে। ধরমজালে তেইশটা ছোট কাতলা মাছ তুলেছিলাম। বড়রা বড় জাল দিয়ে আরও অনেক বেশি মাছ তুলত। সেই খাল-বিল এখনও আছে। পানি নেই। সারাদিন গভীর-অগভীর নলকূপ ঢিপ ঢিপ শব্দ করে চলতে থাকে। বিলের ধান ক্ষেতের মাটি যেন ফেটে চৌচির না হয়ে যায়। অপরিকল্পিত বাঁধ আর কালভার্ট এ খরার একটা কারণ হতে পারে। আমাদের পরিবেশ আমাদের সম্পদÑ তা ক্রমশই ধ্বংস করে যাচ্ছি। মনে পড়ে এ বিলেপ্রতিবছর নৌকা বাইচ হতো।
আজ সেই নৌকাবাইচের কথা মনে হলে চিন্তা করি – তা ছিল একটা অতি চমৎকার টিমওয়ার্ক। যারা বৈঠা চালাত, যে হাল ধরত অথবা যে মাঝে দাঁড়িয়ে গানের মধ্য দিয়ে বৈঠা চালানোর তাল দিত – তাদের কাজের কি অসাধারণ সমন্বয় ! নৌকাবাইচের বিজয়ী নৌকার বাড়িতে রাতে মানুষের ঢল দেখা যেত। গরু-খাসি জবাই হতো। রান্না হতো গ্রামের সবচেয়ে ভালো রাঁধুনিকে (অবশ্যই পুরুষ) দিয়ে। কলাপাতার থালে খাওয়া শেষ করে যে যার বাড়ি যেতাম। আজ প্রগতিশীল শিক্ষিত সুশীল সমাজ এবং রাজনীতিবিদদের মাঝে তেমন টিমওয়ার্ক দেখি না। যার হাল ধরার কথা সে যদি বৈঠাও চালায়, আবার গানও ধরে, আবার অন্য প্রতিযোগী নৌকাগুলোকে পেছনে ফেলার জন্য কূটকৌশলে মগ্ন থাকে তবে নিজের নৌকার হাল বেহাল হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে নৌকার গতি হারিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে অন্য নৌকার সঙ্গে ঠোকাঠুকি হয়ে সবাই ডুবে যাওয়ার কথা, ডুবে যায়ও।
বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার আগেই পানিতে পচানো পাট থেকে পাট ছাড়ানো হতো। পাট শুকানো হতো। পচানো পাটের গন্ধটা পচা নয়, সুগন্ধও নয়। এমন একটা গন্ধ যার মাঝে আমি আমার শৈশবকে অনুভব করি। সেই সময়টা সবকিছুই সাদা-সাদা লাগত। খালের তীর ঘেঁষে কাশফুল সাদা। মেঘ সাদা। ধরমজালে ওঠা ঝাঁকেঝাঁকে পুঁটিমাছ সাদা। বিলের নেমে যাওয়া কোমর পানিতে শেষবারের মতো ফোঁটা অগণিত শাপলা ফুল সাদা। বিলে একপায়ে দাঁড়ানো বকেরা সাদা। হাটভরা পাট সাদা। পাটের রং আমার কাছে সাদা লাগত – সোনালি না। সেকালে যদিও সোনালি আঁশ বলতাম। এখন কি বলা হয়? আমার জানা নেই। হয়তো বর্ণহীন। এ যেন হাঁসের সোনার ডিম ! তবুও সেকালে পাটের স্বীকৃতি ছিল সোনার মতো। কম বেশি সরকারি মনোযোগ ছিল পাট ও পাটের রপ্তানির ওপর। আজ পোশাকশিল্প সোনার ডিম দেওয়া হাঁসের ভূমিকায়। মনোযোগ না দিলে এর সোনালি রঙ হারাতে কতক্ষণ ! হয়তো পাটের চেয়ে দ্রুত গতিতেই হারাবে।
সব সাদা মিলিয়ে যেতে না যেতেই সবুজ ধান ক্ষেতের সঙ্গে বাতাসের খেলা। সেই সবুজ ধীরে ধীরে বাদামি। ক্ষেতে নুয়ে পড়া পাকা ধানের শীষ। এ নুয়েপড়া পাকা ধানের শীষ আমার কাছে খুব মূল্যবান একটা প্রতীক। দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীকের কথা বলছি না। পাকা ধানের শীষ দেখলে আমি একজনের কথা খুব শ্রদ্ধাভরে ভাবি। না, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের কেউ নন। তার অবস্থান আমার কাছে এসব থেকে অনেক উপরে। এমন মানব সন্তান আমাদের মতো দেশে হাজার বছরে দু-একজন জš§ায়। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। পাকা ধানের শীষ যেমন নুয়ে পড়ে মাটি ছুঁতে চায়, মানুষের পরিণত জ্ঞান তেমনি তাকে বিনয়ী করে। বিদ্যাসাগর তেমনি একজন ছিলেন। আমার সারাজীবন যদি তার একটা দিনের মতো হতো ! তার কথা আরেকদিন বলব। আমরা শুধু কথা বলি, আর কথা বলি। দেশে কোটি কোটি মানুষ। কথা শোনার মানুষের অভাব নেই। তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করার মানুষেরও অভাব নেই। কথা শুনি – টিভিতে, খবরের কাগজে। কচি ধানের শীষ উদ্ধত হয়ে আকাশ ছুঁতে চায়। কৃষকের অবহেলায় কচি ধানে পোকা ধরে – ধানগাছ তা পাকা অবদি ধরে রাখতে পারে না।
অতপর অগ্রহায়ণের শেষে নবান্ন, নতুন অন্ন। শীতের আবির্ভাব। প্রায়ই দু-এক সপ্তাহের জন্য চলে যেতাম খালার বাড়ি কালিয়াকৈরে। সেখানে প্রধান আকর্ষণ ছিল কাঁচা খেজুরের রস। বিকালে গাছে হাড়ি বাঁধলে পরদিন সকালে নামানো হতো। তের-চৌদ্দ বছরে যখন পা দিয়েছিলাম, তখন রসের জন্য সকাল পর্যন্ত বসে থাকতাম না। সমবয়েসীরা এক হলে যা হওয়ার তাই হতো। সকালবেলা গাছি প্রায় খালি কলস গাছ থেকে নামাত। খালুকে রসের পরিমাণ কমের কারণ কৈফিয়ত দিতে গাছি রস চোরদের চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার করতো। খালা হেসে বলতো, ‘চুপ কর, আধসের গুড় কম হইলে কম ভাগটা আমারে দিও’।
কিন্তু যতদিন রাতে বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না, ততদিন হয় রান্নাঘরে ছোট খালাদের ঢেকির পাশে ধান ভাঙানো দেখতাম, না হয় পিঠা বানানোর সময় পাশে বসে গল্প শুনতাম। আমার কাছে বেশি ভালো লাগত ভূত-পেতনীর কাহিনী। খালা এই ভূত-পেতনী না দেখলেও সত্যি মনে করতেন। অথবা ইচ্ছা করেই তেমন করে বলতেন যাতে আমি সত্যি বলে মনে করি। খুব সাধারণ গল্প। ভয় লাগত, সকাল হলে সে ভয় আর থাকত না। একদিন ছোটখালা রাতেরবেলা তেলের পিঠা ভাজছিলেন ছ্যাঁত ছ্যাঁত শব্দে। তার সে রাতের গল্পটা এরকমÑ একরাতে এক গৃহস্থিনী তেলের পিঠা ভাজছিল। হঠাৎ দেখে পাটের খড়ির বেড়ার ফাঁক দিয়ে একটা কালো হাত, নাকি স্বরে বলছেÑ ‘একটা পিঠা দিবি’? গৃহস্থিনী তো বুঝে ফেলল যে, এইটা মানুষের হাত না। পিচাশের হাত। তখন সে আগুন গরম লোহার ভাজাকাঠি দিয়ে পিচাশের হাতে দিল এক ছেঁকা। পিচাশ ইহিহিহি করে এক চিৎকার দিল, হাতটা উধাও হয়ে গেল। সকাল বেলা গৃহস্থ রান্না ঘরের বাইরে চুলা বরাবর একটা মরা কাক দেখল। ভূত-পেতনী তখন বিশ্বাস করতাম না দেখেই। এখনও বিশ্বাস করিÑ তবে দেখে। আজ দেশের শহরে-গ্রামে ভূত-পেতনীরা বাড়ি বাড়ি তেলের পিঠা খেয়ে যাচ্ছে। গৃহস্থিনী তাদের কালো হাতে গরম ছ্যাঁকা দিতে ভয় পায়। পাছে দলের অন্য ভূত-পেতনী তার ছেলেমেয়েদের ঘাড় মটকে দেয় ! ফকির-ওঝা এনে ঝার-ফুঁক দেবে বা বাড়ি বন্ধ করবে সে উপায় নেই। আজকের ফকির-ওঝারা ভূত-পেতনীর বশ।
দেখতে দেখতে শীত বিদায় নিত। অপেক্ষা আর অপেক্ষা। বৈশাখী মেলার জন্য অপেক্ষা। সারাবছর ধরে জমানো পয়সা মাটির ব্যাংকে। ভাঙা হবে। অনুমান করতাম, কত জমতে পারে? আমার বড় দুই ভাইও জমাত। তবে তাদের মেলার চেয়ে ফুটবলে বা গল্পের বই কেনায় আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। মেলার প্রতি আমার সীমাহীন আগ্রহ ছিল। চর্কিতে পয়সা ধরা, রসগোল্লা খাওয়া, বাশের বাঁশি কেনাÑ আরও কত কি! পুরো বৈশাখ মাসে অন্তত দশ-বারোটা মেলায় যেতাম, এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে চলে যেতাম পায়ে হেঁটে। সত্যি বলতে সেই বৈশাখে মেয়েদের কখনও লালপাড় সাদা শাড়ি পড়তে দেখিনি। আজ যখন পহেলা বৈশাখে শহরগুলোতে লালপাড় সাদা শাড়িতে তরুণীদের দেখি খুব ভালো লাগে। কিন্তু আমি ভেবে পাই না এ লালপাড় সাদা শাড়ির উৎস কোথায়! কোনোকালে বাঙালি মেয়েরা গ্রামগঞ্জে পহেলা বৈশাখে বা বৈশাখে লালপাড় সাদা শাড়ি পরতো? আমার জানা নেই। হয়তো এটা শহুরে বৈশাখী পোশাক। সেই সময় কোনোদিন কাউকে পান্তাভাত ইলিশভাজা দিয়েও খেতে দেখিনি। পান্তাভাত আমরা খেতাম কাঁচামরিচ আর সঙ্গে গতদিনের টকে যাওয়া ডাল বা তরকারি দিয়ে। মাঝখানে ইলিশভাজা এলো কি করে? আমি আমার মতো চিন্তা করি। শরতচন্দ্রের কুলীনসমাজের লোকজনের বাড়িতে রান্নায় যেমন ঘিয়ের আধিক্য থাকত, গাঁয়ের জেলে-বৈষ্টমীদের সঙ্গে তফাৎ তৈরির একটা সুক্ষ্য প্রয়াসে – এটা আমার কাছে তেমনি মনে হয়। আরেকটা কারণ হতে পারেÑ শুধু দুটো কাঁচা লংকা দিয়ে পান্তাভাত আজকের এই কুলীন সমাজের লোকজনদের গলা বেয়ে নামবে না। তাই ইলিশ মহাশয়ের আবির্ভাব।
এরপর গাছে গাছে কাঁঠাল আর আম। কাঁঠাল পাকার সময়ের একটা স্মৃতি মনে পড়ে। একদিন ভোরবেলা প্রতিবেশী দুঃসম্পর্কের এক চাচার গাছের একটা পাকা কাঁঠাল গাছের নিচে বসেই অনেকটা খেয়ে ফেলেছিলাম। কাঁঠালের আঁঠার যন্ত্রণায় আরাম করে খেতে পারিনি। যখন বাড়ি ফিরেছি তখন হাতে-মুখে কাঁঠালের আঁঠা। সেদিন শিখেছিলাম কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার আগে দুহাতে ভালো করে সরিষার তেল মেখে নিতে হয়। সরিষার তেল হাতে আঁঠা লাগতে দেয় না। আরাম করে খাওয়া যায়। তাই বোধহয় আমরা বলিÑ ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’। আমাদের প্রতিবেশী দেশ বোধকরি ভালো করেই জানে কি করে হাতে-গোঁফে সরিষার তেল মেখে কাঁঠাল খেতে হয়। সরকার যখন সরিষার তেলের ভূমিকায় তখন আর আঁঠার যন্ত্রণা নেইÑ যত ইচ্ছা খাওয়া যায়।
এসব তিরিশ বছর আগের কথা। আজ জীবনের কৃত্রিম লক্ষ্য অর্জনের জন্য ছেলেমেয়েদের যখন ভারী ব্যাগ নিয়ে কোচিং আর প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে ছোটাছুটি করতে দেখি, তখন ভাবি – এত অর্জন দিয়ে হবে কি যদি একটা রঙিন শৈশব না থাকে? স্কুল, কোচিং, প্রাইভেট পড়া, বাকি যে সময়টুকু থাকে তা কম্পুটার নামক এক বস্তুর পেছনে। আমি অতি আনন্দিত যে, এ যন্ত্রটি আমাদের শৈশবে ছিল না। আমি আরো আনন্দিত হতাম যদি এর আবির্ভাব আমার অবসরের পরে হতো। টেকনোলজি এগিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রজীবনের সাদাকালো স্ক্রিনের আইবিএম এখন ট্যাবলেটে গিয়ে ঠেকেছে। ছেলেমেয়েদের জীবন কবছর আগেও ছিল চার দেয়ালে বন্দি, এখন তা ট্যাবলেটে বন্দি হয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্তি কি? একটা ভালো পেশা আর শরৎচন্দ্রের কুলীনসমাজে টিকে থাকা? চিকন চালের দুটো পান্তাভাতের সঙ্গে ইলিশভাজা খাওয়া?
পৃথিবীতে যত পিঁপড়া আছে তাদের ওজন পৃথিবীর এ সাতশ কোটি মানুষের ওজনের চেয়ে বেশি। আনুমানিক একজন মানুষের বিপরীতে এক কোটি পিঁপড়া আছে। সৃষ্টিকর্তার প্রতিটি সৃষ্টির কারণ আছে, অহেতুক কিছুই নয়Ñ আমরা জানি না তা ভিন্ন কথা। আমার মেয়ের স্কুলের রিপোর্ট দেখে আমার স্ত্রী বলে, ‘ওর অংকের অবস্থা তো আরও ভালো করা দরকার, তুমি একটু দেখ না ! না হয় কোচিংয়ে দাও’। আমি বলি, ‘হিসাব বুঝলেই হবে, আগ্রহ না থাকলে জোর করব না। ও তো এ নয় বছর বয়েসেই অনেক সুন্দর গল্প লিখে। লিখতে দাও। শৈশব রঙিন। লেট হার হ্যাভ ইট’।
আপনার লেখাটি পড়লাম। ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে পরে গেল। আমরা অনেকেই বাংলদেশের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি ,এধরনের অতীত স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা প্রায় সকলেরই আছে। কিন্তু বর্তমানের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে যেয়ে এসব হারিয়ে ফেলেছি। মাঝে মাঝে মনে হয় আবার যদি ঐ জীবনে ফিরে যেতে পারতাম!! *good*