টিকা (Vaccine) হয়তো সব সমস্যার সমাধান নয় ! তবে অবশ্যই টিকা নিবেন। আমি নিয়েছি।আমি টিকা (COVID ১৯ Vaccine) নেওয়ার কথা এতদিন বিশেষভাবে বলি নাই, কারণ আমি চাচ্ছিলাম আগে নিজে নিয়ে তারপর অন্যকে নিতে বলবো। যাহোক অবশেষে গতকাল সকালে টিকার প্রথম ডোজ নিলাম। আমার কাছে ফুলু টিকার মতোই লেগেছে। দেওয়ার সময় তেমন কিছুই বুঝিনি। ঠিক ৮/৯ ঘন্টা পরে হাতে হালকা একটু ব্যাথা, যেটা আপনি যে কোনো ধরণের টিকা নিলেই হতে পারে, তবে সেটি কোনো অসহনীয় ব্যাথা নয়, এবং এই ব্যাথার জন্য আপনার দৈনন্দিন জীবনের কোনো কাজ থেমে থাকবে না।

পৃথিবীতে অনেক মানুষ আত্ম হত্যা করে, এবং সেই আত্মহত্যা যদি সুইসাইডাল কোনো আত্মহত্যা না হয় তাহলে শুধু মাত্র যেই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন সেই মারা যায়, তাছাড়া অন্য কেউ মারাও যান না, বা আহত হন না। কিন্তু এই মহামারিটি এমন যে আপনি যদি অবহেলা করে বা কেয়ার না করে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ভাইরাসকে আমন্ত্রণ করেন অথবা ভ্যারিসটির সংক্রামণের বাহক হন (নিজে আক্রান্ত না হলেও) তাহলে কিন্তু আপনি ওই আত্মঘাতী বোমাবাজদের মতো অন্যদের নিয়ে মরছেন, যেটি আপনার কখনো উচিত না। এক্ষেত্রে আপনাকে Individually চিন্তা করলে চলবে না, আপনাকে ভাবতে হবে Collectively.

শুরুতে যেটি বলেছি শুধুমাত্র টিকাটি (Vaccine) হয়তোবা একেবারে সব কিছু সমাধান করে দিবে না, কিন্তু তারপরেও আপনাকে অবশ্যই নিতে হবে, যদি কি না আপনার এমন কোনো কন্ডিশন না থাকে যাতে আপনার টিকাটা নেওয়া যাবে না, এবং এই ব্যাপারে আপনি কখনোই নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিবেন না, বরং আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

আপনার হাতের অস্ত্র দিয়ে আপনি ঠিক কি পরিমানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবেন বা শত্রু মোকাবেলা করতে পারবেন সেটি ভেবে বসে থাকলে তো প্রতিরোধ গড়ে তোলা বা শত্রু মোকাবেলা করা কিছুই হবে না, তাই হাতে যেই অস্ত্রই থাকুক না কেন তা দিয়েই আপনাকে যথাযথ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তৎকালীন পাকিস্তানিদের তুলনায় আমাদের বাংলাদেশিদের তেমন কোনো ভালো অস্ত্র তো ছিলই না, তারপর আবার কোনো uniformed মিলিটারিও ছিল না। ছিল শুধু পাকিস্তান আর্মিতে চাকরি করা যৎসামান্য বাঙালি। এখন যদি ওই জাতীয় অস্ত্র বা শক্তি নিয়ে কি করতে পারবো, এই ভেবে ওগুলির ব্যবহার না করে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যদি যুদ্ধে না নামতো তাহলে দেশ কি স্বাধীন হতো ? এই মুহূর্তে আমাদের কাছে টিকাটি যেহেতু আছে তাই সেটি নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে, সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায়ক হবেন ইনশাল্লাহ !

আমি অনেক বছর ধরে মানসিক সমস্যা নিয়ে কাজ করি। আমাদের কাজের অন্যতম একটি বিষয় হলো “Prevention”! একটি রুগীকে বিভিন্ন ধরণের Preventive Measure এর মাধ্যমে তাকে তার অবস্থার পুরাপুরি পরিবর্তন করা না গেলেও যতদূর সম্ভব তার ভোগান্তিটা কমিয়ে তাকে ফাংশনাল করে তোলা যায়। এখন যদি কোনো ধরণের Preventive Measure নাই নেয়াও হয় তাহলে তো সম্ভাবনা একেবারেই জিরো, জাস্ট নিজেকে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া এবং অন্যকেও বিপদে ফেলা, যেটি একজন সচেতন মানুষের করা উচিৎ না।

আপনার জন্য টিকা যখন Available হবে এবং আপনার যদি টিকা না নেওয়ার মতো কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আমার অনুরোধ আপনি অবশ্যই অবশ্যই টিকাটি নিবেন। নিজেকে রক্ষা করুন, দেশকে রক্ষা করুন, পুরা পৃথিবীকে রক্ষা করুন। পুরা পৃথিবী রক্ষার কাজে অংশগ্রহণের এমন কোনো প্রজেক্ট খুব সহজে পাবেন না। কোনো ধরনের কুসংস্কার জাতীয় কথাবার্তায় কান দিবেন না। দেখেন ঠিক গতবছর এই সময়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না, এই ভাইরাসের কোনো টিকা আসলে বের হবে কি না, বা কবেই বা বের হবে ইত্যাদি, কিন্তু আজ আমরা অনেকেই অলরেডি নিয়ে ফেলছি, এটাই আল্লাহর বা আপনি যেই ধর্মে বিশ্বাস করেন সেই সৃষ্টিকর্তার বা প্রকৃতির খেলা। আমি যেহেতু আল্লাহ্তালায় বিশ্বাস তাই বলছি যে, আল্লাহ এই পরীক্ষায় ফেলেছেন, আবার একবছরের মধ্যেই সেই আল্লহই সেই পরীক্ষা উত্তরণের উপায় বাতলে দিয়েছেন, আসেন আমরা তার দেয়া সেই উপায়কে সাদরে গ্রহণ করি। উনি নিশ্চয় আমাদের মঙ্গোল করবেন ইনশাল্লাহ !!

আমি অলরেডি আমার আত্মীয় স্বজন এবং কাছের লোকদের বলেছি তাদের মধ্যে যারা টিকা নেওয়ার যোগ্য থাকার পরেও নিবেন না, তাদের সাথে দুৰ্ভাগ্যবসত আমার In Person যোগাযোগ আপাতত বন্ধ থাকবে। এজন্য কিছু মনে করলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত !!

সবাই টিকা নিবেন, নিরাপদ থাকবেন এবং ভালো থাকবেন।

মুকুল।
টরন্টো।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন