এ পর্যন্ত পাওয়া বর্তমান পরিস্থিতি সমন্ধে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী কিছু উপদেশ !
আমি নিশ্চিত আমার মতো আপনারাও বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং বিভিন্ন মিডিয়া থেকে বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে ভুরি ভুরি উপদেশ পাচ্ছেন। এই উপদেশগুলির মধ্যে খুব অল্প সংখক গ্রহণযোগ্য। যাহোক সঙ্গের লিংকে দেওয়া ডাক্তার ফাহিম তাজওয়ার এর খুব বাস্তবসম্মত উপদেশগুলি এ পর্যন্ত পাওয়া উপদেশের মধ্যে খুব ভালো লেগেছে, এবং তার কথাগুলির অধিকাংশই আমার এবং আমার অনেক ক্লায়েন্ট এর বেক্তিগত জীবনে অনেক কাজে এসেছে, সেজন্যই উপদেশগুলি আপনাদেরকে তুলে ধরছি।
 
আজ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে আমার ফ্যামিলি ডাক্তার আমাকে ঠিক ডাক্তার ফাহিমের কথাগুলিই বলেছিলেন। বেশি বেশি গ্রিন বা রঙিন সবজি, মাছ, লেবুর রস, বিভিন্ন ফল, চিমের বিচি ইত্যাদি খাওয়া, ডুব-তেলে ভাজা খাবার এবং ভাত জাতীয় কার্ব ও প্রসেস চিনি থেকে দূরে থাকার কথা বলেছিলেন। সাথে কিছুক্ষনের জন্য হলেও নিয়মিত শরীর চর্চা, নিদৃষ্ট পরিমানে ঘুম, স্ট্রেস ফ্রি থাকার কথাও বলেছিলেন। মদ-বিড়ি থেকেও দূরে থাকতে বলেছিলেন, যদিও ওগুলি আমার মেনুতে ছিল না। তার কথামতো চলাটা প্রথম দিকে সহজ ছিল না কিন্তু আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যায়। আপনারা অনেকে আমার ইতিপূর্বের একটি লেখায় জেনেছেন যে আমি এক নাগাড়ে ৩ বছর ভাত, রুটি, আলু, পাস্তা চিপস এবং প্রসেস চিনি খাওয়া থেকে বিরত ছিলাম এবং আল্লাহর রহমতে কোনো অসুবিধা হয়নি। তার পর থেকে যখন এই ভাত-রুটি খাওয়ার চেষ্টা করলাম তখন ওগুলি খাওয়া ঠিকই গেলো, কিন্তু ভালো দিকটা হলো তখন নিজের একটা কমপ্লিট কন্ট্রোল চলে আসলো, আর সেজন্যেই এখন আর ওগুলির প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। আপনাকে আমারমত কোনোকিছু একেবারে বাদ দেওয়া দরকার নেই, তবে অবশই আপনার পরিমাণটাকে খুবই সীমিত করতে হবে। তাহলে শুধু এই করোনা মহামারী কালীন সময় নয়, সব সময়ের জন্য ভালো থাকবেন, এবং উপরের ডাক আসলে চলে যাবেন ঠিকই কিন্তু আপনার কোনো আফচোছ থাকবে না।
একথা সবাই বলবেন যে, আপনার শরীরে immune শক্তি বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকলে আপনার অন্যান্য সময়ের মতো এই মহামারীতেও আপনার শরীর রোগ প্রতিরোধের যুদ্ধে খুব ভালো ভূমিকা রাখবে। ৮ বছর আগে আমার Wipple Surgeryতে আমার প্যানক্রিয়াটিক এর অনেক অংশ কেটে ফেলা হয়। মানুষের দেহের সব থেকে বড়ো সার্জারির মধ্যে এটি একটি। সার্জারির সময় যেমন এবং তার পর্বরবর্তিতেও অনেকের অনেক কমপ্লিকেশন এবং মৃত্যু ঘটে থাকে, কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমার সার্জারির পরে মাত্র ২/৩ সপ্তাহ পেইন কিলার ট্যাবলেট ছাড়া আজ পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কোনো ঔষধ খেতে হয়নি। শুধুমাত্র ২/১ বছর বাদে সিজেনাল ঠান্ডা-কাশির ঔষধ লেগেছে, তবে এই ঠান্ডা বা কাশির তীব্রতা বেশি হয়নি। বয়স বাড়লেও শরীরে আল্লাহর রহমতে আগের থেকে বলতে গেলে বেশিই স্টামিনা পাই।
আমার ধারণা নিম্নে বর্ণিত লাইফ স্টাইলের উপদেশ আপনার-আমার সবার ডাক্তার বা নিউট্রিশনিস্টরা দিয়ে থাকেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও আমাদের অধিকাংশসই সেগুলি পাত্তা দেয় না। ঠেলায় না পড়লে আমরা আমাদের ডাক্তারের সব পরামর্শ শুনতে চাই না। অথচ ওই উপদেশগুলি মেনে আমাদের লাইফ স্টাইলটাকে একটু বদলালে এই রকম বিপদে হা হুতাশ বা আতঙ্কে থাকতে হয় না। মরণ আসবে, সবাইকে মরতে হবে, তবে এমন ভাবে চলুন যাতে আপনাকে অনুশোচনা নিয়ে বা রিগ্রেট করে মরতে না হয়। দয়া করে ডাক্তার ফাহিমের দেওয়া নিচের উপদেশগুলি শুনুন এবং এখনো সময় আছে নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নিন, এবং মৃত্যু আসলে অনুশোচনাবিহীন মৃত্যুবোরন করুন।
 
আসুন এই মহামারীর অছিলায় নিজেদের লাইফ স্টাইলটাকে একটু পরিবর্তন করি, তাতে করে শুধু এই মহামারিকালীন সময়ই ভালো থাকবেন তা নয়, বরং সব সময়ের জন্যই আল্লাহতালা আপনাকে ভালো রাখবেন। আমি অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি যেই ব্যাক্তি “তোমার পেটে অন্তত একভাগ জায়গা খালি রেখে খাও” এই হাদীসটির কথা বলেন, তারা নিজেই খাবারের সামনে বসলে এটি ভুলে যান, এবং কিছু বাবা-মা তার বাচ্চাদেরকে গাদা গাদা না খাওয়াতে পারলে তাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে পারেন না। আমার বাইরে যাওয়ার দরকার নেই, নিজের আত্মীয়স্বজন এবং কাছের লোকদের মধ্যেও এই জিনিস দেখা যায়। এবার দেশে গিয়েও দেখেছি, আমার কিছু কিছু আত্মীয়স্বজন আমাকে বেশি বেশি খাওয়াতে না পেরে মনের মধ্যে কিছুটা অতৃপ্তি বোধ করছেন। অবশই তারা তাদের ভালোবাসা থেকে সেটি করেছেন, কিন্তু আমার জীবনতো আমার কাছে।
 
যাহোক, আর কথা না বলে আমরা ডাক্তার ফাহিমের দেওয়া স্বাস্থ্য/জীবন রক্ষার অতি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশগুলি শুনি এবং মেনে চলার চেষ্টা করি।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলের সহায় হউন।
ধন্যবাদ।
মুকুল
ডাঃ ফাহিমের ক্লিপটি সরবরাহের জন্য আমাদের ডাঃ সেলিনা খালাকে অনেক ধন্যবাদ।
 

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন